নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু জাকারিয়া

আমি খুব স্বাধারন মানুষ। স্বাধারনদের থেকেও স্বাধারন। জীবনে জাঁকজমক পছন্দ করিনা। স্বাধারন ভাবে বাঁচতে চাই। সব চেঁয়ে অপছন্দের কারো অধিনে থাকা। \nউক্তিঃ পরাধীনতার চেয়ে মৃত্যু অনেক ভাল, মৃত্যুযন্ত্রনার থেকে পরাধীনতা অনেক ভাল। [email protected]

আবু জাকারিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বপ্ন রহস্য উম্মোচন..... মানব মস্তিস্কের স্মৃতি ধারন ক্ষমতা ১০ মেগাবাইটেরও কম...!

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:০৮

আমি এর আগে আমার 'স্বপ্ন' সম্পর্কে গবেষনা কার্যক্রমের উপরে আলোকপাত করার জন্য একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে মোটামুটি ভাবে তুলে ধরেছি, আমার গবেষনার ফলে স্বপ্ন সম্পর্কে কি কি রহস্য উদঘাটিত হতে পারে। আমার গবেষনার ফলগুলো যে একেবারে গ্রহনযোগ্য হবে তার কোন গ্যারান্টি আমি দিতে পারব না। এটা আমার একটা প্রচেষ্টা মাত্র। এটা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। অনেকে আমার এই কাজকে গবেষনা হিসেবেই মেনে নিতে পারছেন না। কেউ আমার এই কাজকে অনুসন্ধান মনে করছেন, আবার কেউ এই কাজকে কোন কাজের মধ্যেই ধরছেন না। তারপরেও আমি নিরুৎসাহিত হচ্ছিনা। কারন এটা বাংলাদেশ। এখানে আপনার ভূল সবাই ধরবে আর যেটা সঠিক সেটাকে ভূলের মধ্যে ফেলে দেবে। তাই বলে নিজেরা কোন কিছু করার চেষ্টা করবেনা। সব ক্ষেত্রে বিদেশিদের উপরে নির্ভরশীল থাকবে। বিদেশীরা যদি বলে দিন, তাহলে দিন আর যদি বলে রাত, তাহলে রাত। আমাদের দেশের কেউই তাদের কথায় বিজ্ঞান সম্মত কোন প্রতিক্রিয়া করবেনা। কথায় কথায় বলে, গোয়ালের ধারের ঘাস গরুতে খায় না। এটাও একটা রহস্য। গোয়ালের কাছে কতসুন্দর ঘাস জন্মে থাকে; কিন্তু গরুরা তা ছুয়েও দেখেনা। বরং ছুটে বেড়ায় যেখানে কোন ঘাস নেই।

যাই হোক, মূল প্রসংগে আসি। আমরা জানি, মানুষ যখন ঘুমায়, তখন এমন একটা পর্যায় আসে যখন তার চোঁখের পাতা তির তির কাঁপে। এথেকে বোঝা যায়, তার চোঁখের পাতার নিচের অক্ষিগোলক নড়াচড়া করছে। অর্থাৎ চোঁখ দুটো নড়ছে। ঘুমের মধ্যে চোঁখের এই নড়াচড়া বা কাঁপাকে ইংরেজীতে বলা হয়, Rapid Eyes Movement. যাকে সংক্ষেপে বলা হয় REM. চোঁখের এই নড়াচড়ার উপর ভিত্তি করে ঘুমের কালকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। একটি হল REM ঘুম বা, অপরটি NREM (None Rapid Eyes Movement) ঘুম। REM ঘুমের সময় চোঁখের পাতা নড়াচড়া করে কিন্তু NREM পর্যায়ে চোঁখ নড়াচড়া করেনা। অর্থাৎ চোঁখ দুটোকে শান্ত থাকতে দেখা যায় NREM ঘুমের পর্যায়ে।
পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, মানুষ প্রধানত ঘুমের REM পর্যায়ে স্বপ্ন দেখে থাকে। আর NREM পর্যায়ে মানুষ স্বাধারনত কোন স্বপ্ন দেখেনা। তার মানে এটা নয় যে, REM পর্যায়ে মানুষ স্বপ্ন দেখবেই। আপনি যদি ঘুমের সময় কারো চোঁখ নড়াচড়া করতে দেখেন, তাহলেই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না যে স্বপ্ন দেখছে। বরং স্বপ্ন দেখে থাকতে পারে। অনেকে REM পর্যায়ে এসে অনেক সময় ধরে স্বপ্ন দেখে থাকেন, আবার অনেকে মোটেও দেখেন না। তবে স্বপ্ন সবসময় REM পর্যায়ে হয়ে থাকে।
স্বপ্ন নিয়ে যত মনিষীর মতবাদ প্রচলিত আছে, তাদের মধ্যে সিগমুন্ড ফ্রুয়েড হলেন সবচেয়ে জনপ্রিয়। তার ভাষায়, স্বপ্ন
উৎসরিত হয় মানুষের অবদমিত
মন হতে। তার মতে, মানুষ জাগ্রত অবস্থায় যা মনের মধ্যে চেপে রাখতে চায়, সেগুলোই স্বপ্নের মাধ্যমে প্রকাশ ঘটায়। অনেকাংশে ঠিক। তবে, মানুষ এমন অনেক স্বপ্ন দেখে যেগুলোর অবদমিত মনের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। যেমন স্বপ্নে আপনি একটি ফুল দেখতে পেলেন, সেটার কি অবদমিত মনের সাথে কোন সম্পর্ক আছে? সে দৃশ্য আপনি কেন অবদমিত রাখতে চাইবেন? আবার আমাদের মনে অনেক অবদমিত ঘটনা স্মৃতি হিসেবে রয়ে যায়, যা কখনই স্বপ্নে দেখা যায় না। যেমন, আমার ক্ষেত্রে। আমার একার সাথে প্রায় ৯ বছর আগে একটা ঘটনা ঘটেছিল যা আজ পর্যন্ত কেউ জানতে পারেনি। আর আমি চাইও না আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি কেউ জানুক। জানলে মানুষিক সমস্যায় পড়ব। ঘটনা ঘটার পর থেকে আমার অবদমিত মনে তাড়া করছে। কিন্তু আজ প্রায় নয় বছর হল আমার সাথে ঘটনাটা ঘটেছে, যা আমাকেও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এবং যা আমি আজ পর্যন্ত গোপন রেখেছি; কিন্তু ঘটনাটা আজ পর্যন্ত স্বপ্নে দেখেছি বলে মনে হয় না। যাই হোক সিগমুন্ড ফ্রুয়েডের মতবাদে অনেক মার প্যাঁচ আছে। অনেকে তার মতবাদকে বিজ্ঞান সম্মত মনে করেন না। আমিও তাদের সাথে একমত। কারন, সিগমুন্ড ফ্রুয়েডের মতবাদে স্বপ্ন দেখার বিজ্ঞান সম্মত কোন কারন জানা যায় না। আমি স্বপ্ন নিয়ে যে ব্যাখ্যা দেব, তা হয়ত বিজ্ঞানের ধারে কাছে নাও পৌছাতে পারে। কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কি?
কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে আমি মস্তিস্ককে নিম্নোক্ত তিন ভাগে ভাগ করেছি (যদিও মানব মনকে সিগমুন্ড ফ্রুয়েড- সচেতন, অচেতন ও অবচেতন এই তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন)।
১।সংকেত সক্রিয় মস্তিস্ক।
২।সংকেত নিষ্ক্রিয় মস্তিস্ক।
৩।স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্ক।
★শর্তঃ একটি মস্তিস্ক একই সময়ে একাধিক অবস্থায় চলতে পারেনা।
অর্থাৎ যখন কোন মস্তিস্ক সংকেত সক্রিয় অবস্থায় থাকবে, তখন সে শুধু সংকেত গ্রহন করতে পারবে; কিন্তু একই সময়ে নিষ্ক্রিয় কিংবা স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্ক হতে পারবে না। অর্থাৎ যে কোন মস্তিস্ক একই সময়ে যে কোন একটি রূপেই অবস্থান করতে পারবে।
এবার একটু বিস্তারিত বলি,
১।সংকেত সক্রিয় মস্তিস্কঃ সংকেত সক্রিয় মস্তিস্ক কি তা বুঝতে হলে আগে জানতে হবে সংকেত কি। সংকেত বলতে আমরা যে কোন কিছুর উপরে প্রভাব ফেলে এমন সব জিনিসকে বুঝি। কিন্তু মস্তিস্ক ক্ষেত্রে একটু বেতিক্রম। মস্তিস্ক সংকেত বলতে বোঝায়, যে সংকেতগুলো মস্তিস্কে প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, আলো, শব্দ, তাপ, গন্ধ ইত্যাদি। এই সংকেত সমূহ মস্তিস্ক যখন অনুভব করতে পারে, মস্তিস্কের এই অবস্থাকে বলা যেতে পারে সংকেত সক্রিয় মস্তিস্ক। অর্থাৎ এই সময়ে মস্তিস্ক সংকেত গ্রহন ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনা। এমনকি এই সময়ে স্মৃতি সক্রিয় করার ক্ষমতাও মস্তিস্কের থাকেনা। আমরা যখন জেগে থাকি, তখন অধিকাংশ সময় মস্তিস্ক সংকেত সক্রিয় থাকে।

২।সংকেত নিষ্ক্রিয় মস্তিস্কঃ সংকেত নিষ্ক্রিয় মস্তিস্ক বলতে বোঝায়, যে মস্তিস্ক বাহির থেকে কোন সংকেত গ্রহন করতে পারেনা। এই অবস্থায় যত উচ্চ মানের সংকেত হোকনা কেন, মস্তিস্ক তা কিছুতেই গ্রহন করতে পারবে না। সংকেত গ্রহন করার জন্য মস্তিস্ককে অবশ্যই সংকেত সক্রিয় হতে হবে। সংকেত নিষ্ক্রিয় অবস্থা স্বাধারনত ঘুমের সময়ের মধ্যে বেশি হয়ে থাকে। তাছাড়া মৃত মস্তিস্কও সংকেত নিষ্ক্রিয় মস্তিস্কের অন্তর্ভুক্ত।

৩।স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্কঃ এই অবস্থায় মস্তিস্ক শুধু সংরক্ষিত স্মৃতিকে সংকেত হিসেবে প্রদান করবে এবং সে হিসেবে কাজ করবে। এই অবস্থায় কোন মস্তিস্ক সংকেত গ্রহন করতে পারেনা।

স্মৃতির কার্যকারীতার উপর ভিত্তি করে স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্ককে আবার ২ ভাগে ভাগ করা যায়।
১।দির্ঘমেয়াদী স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্ক।
এটাকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়-
যথা-স্থায়ী ও অস্থায়ী।
এবং ২।তাৎক্ষণিক স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্ক।
দির্ঘমেয়াদী স্মৃতি সংকেত প্রদানকারী মস্তিস্ক দুই ধরনের সংকেত প্রদান করে। একটি হল কল্পনা আর অন্যটি স্বপ্ন। সে হিসেবে কল্পনা আর স্বপ্ন মূলত একই জিনিসের দুইটা রূপ। স্বপ্ন আর কল্পনার মধ্যে বিজ্ঞান সম্মতভাবে কোন পার্থক্য নেই। তবে সময়ের তারতম্যে ও স্থায়ীত্বর ক্ষেত্রে পার্থক্য আছে। যেমন আমরা কল্পনা করে থাকি খুব সামান্য সময়ের জন্য। আর স্বপ্ন দেখে থাকি অনেক সময় ধরে। আমার মতে এই পার্থক্যটি ছাড়া স্বপ্ন আর কল্পনার মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।

এবার আসি সংজ্ঞার ক্ষেত্রে। যেহেতু স্বপ্ন আর কল্পনা মূলত একই জিনিস; তাই স্বপ্ন আর কল্পনার সংজ্ঞাও হবে প্রায় একই। নিচে শুধু স্বপ্নের সংজ্ঞা দেয়া হল।
"স্বপ্ন হল, সংকেত নিষ্ক্রিয় মস্তিস্কের সংরক্ষিত অতিত স্মৃতির স্বাধীন বিচরন, যা কোন মস্তিস্ক সংকেত সক্রিয় থাকা অবস্থায় করতে পারেনা।" এখন প্রশ্ন হল, স্মৃতির 'স্বাধীন বিচরন' বা 'পরাধীন বিচরন' কি?
আমদের মস্তিস্ক সবসময় অতীতের সংরক্ষিত স্মৃতি নিয়ে কাজ করে। কিন্তু এই স্মৃতিগুলো কিভাবে কাজ করবে তা নির্ভর করে আমাদের মস্তিস্কের বর্তমান অবস্থার উপর ভিত্তি করে। আমাদের মস্তিস্ক যদি সংকেত সক্রিয় হয়, তবে প্রাপ্ত সংকেতের সাপেক্ষে অতীত স্মৃতিকে কাজে লাগাবে। এই অবস্থাকে স্মৃতির পরাধীন বিচরন বলে। আবার যদি সংকেত নিষ্ক্রিয় মস্তিস্ক হয়, তাহলে স্মৃতি সমূহ নিজের ইচ্ছা মত মস্তিস্কে ক্রিয়াশীল থাকবে। এ অবস্থাকে স্মৃতির স্বাধীন বিচরন বলে।
যেমন ধরুন, আপনি অনেক বছর পরে বাড়ি ফিরে গেলেন। আপনার ভাপা পিঠা খুব পছন্দ। আপনার মা আপনার জন্য ভাপা পিঠা তৈরি করল। তখন আপনার মনে পড়বে বা আপনি মনে করার চেষ্টা করবেন, সর্বশেষ কবে ভাপা পিঠা খেয়েছিলেন। আর এটাই হল অতিত স্মৃতির পরাধীন বিচরন। অর্থাৎ, আপনি যদি ঐ মুহুর্তে পিঠা না খেয়ে অন্য কাজ করতেন, তাহলে পিঠা খাওয়ার অতিত স্মৃতি মনে আসত না; বরং অন্য যে কাজ করতেন তার সাথে সম্পর্কিত স্মৃতি মনে আসত। কিন্তু মস্তিস্ক যখন সংকেত নিষ্ক্রিয় থাকে, শুধু মাত্র তখনই অতীতের স্মৃতিগুলো স্বাধীনভাবে বিচরন করতে পারে। আর এটার সবচেয়ে উন্নত রূপ হল স্বপ্ন। যদিও কল্পনার ক্ষেত্রে অতীত স্মৃতির স্বাধীন বিচরন সম্ভব নয়। তবে স্বপ্ন ও কল্পনার সূচনা যে কোন সংকেতের প্রভাবে ঘটতে পারে। এই সমস্ত সংকেত সমূহকে 'স্বপ্ন প্রভাবক' বলে। লেখা দির্ঘ হয়ে যাবে বলে স্বপ্ন প্রভাবক নিয়ে কোন আলোচনা করলাম না।
তাৎক্ষণিক স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্কের স্মৃতি সমূহ স্বপ্ন দেখার জন্য কোন ভূমিকা পালন করেনা বলে শুধু মাত্র দির্ঘমেয়াদী স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্ক নিয়ে আলোচনা করলাম।
দির্ঘমেয়াদী স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্ক দুই ধরনের। এক হল অস্থায়ী আর দুই স্থায়ী। অস্থায়ী স্মৃতি একবার কল্পনা করা কিংবা স্বপ্ন দেখার পরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। কিন্তু দির্ঘমেয়াদী স্থায়ী স্মৃতি একাধিক বার সক্রিয় হতে পারে। উদাহরন দিলে বুঝতে সুবিধা হবে। ধরুন, আপনি উজ্জল সূর্যের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে চোঁখ ফিরিয়ে আনলেন অথবা অন্ধকারে আসলেন। তখনও আপনি চোখের সামনে সূর্যের ছাপ দেখতে পাবেন। এই অবস্থা অনেক্ষন চলতে থাকে। আর এটাই হল দির্ঘমেয়াদী স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্কের অস্থায়ী স্মৃতি। এই স্মৃতিগুলো একবার কল্পনা করা হয়ে গেলেও দ্বিতীয়বার কল্পনা করা যায় না। তবে মাঝে মাঝে দির্ঘমেয়াদী স্থায়ী স্মৃতি হিসেবে ফিরে আসতে পারে যা প্রকৃত রূপ থেকে সম্পূর্ন আলাদা। এই স্মৃতির সাহায্যে মস্তিস্ক সাময়ীক কল্পনা করতে পারলেও স্বপ্ন দেখা একেবারেই অসম্ভব। কারন, স্বপ্ন দেখার সময় আসতে আসতেই এই স্মৃতি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। আমরা যত স্বপ্ন দেখে থাকি তা দির্ঘমেয়াদী স্মৃতি সক্রিয় মস্তিস্কের স্থায়ী স্মৃতির মাধ্যমে।

উপরুক্ত আলোচনা থেকে এটা স্পস্ট যে মস্তিস্ক স্মৃতি সক্রিয় পর্যায়ে বা অবস্থায় স্বপ্ন দেখে। আর স্বপ্ন হল কল্পনার উন্নতরূপ মাত্র। মানুষ যখন কল্পনা করে, কিংবা স্বপ্ন দেখে তখন কোন ইন্দ্রিয় তার মস্তিস্কে কাজ করেনা। এখন যদি কেউ বলেন, আমি একই সাথে সিনেমার একটি দৃশ্য কল্পনা করছি, আবার আমার বন্ধুর গল্পও শুনছি। এটা কি করে সম্ভব? প্রকৃতপক্ষে এটা সম্ভব নয়। কারন, ★একটি মস্তিস্ক একই সাথে একাধিক অবস্থায় থাকতে পারে না। এক্ষেত্রে যা ঘটে, আপনি একবার বন্ধুর গল্পের দিকে মনযোগ দিচ্ছেন ; অন্যবার সিনেমার দৃশ্য কল্পনা করছেন। কিন্তু আপনার কাছে মনে হবে আপনি দুটি কাজই একসাথে করছেন। কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব নয়। স্বপ্নের ক্ষেত্রেও তাই ঘটে, যখন আপনি স্বপ্ন দেখবেন, তখন আপনি শুধু স্বপ্নই দেখবেন; অন্য কোন ইন্দ্রিয় তখন কাজ করবে না। তাহলে এখন অনেকের মনে প্রশ্ন, আমরা যখন স্বপ্ন দেখি কিংবা ঘুমিয়ে থাকি, তখন আমাদের মস্তিস্ক কেন কোন ইন্দ্রিয় অনুভুতি পায় না? এটার জন্য আমাদের মস্তিস্কই দায়ী। অন্য কোন সময় এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব, ঠিক কি কাজের জন্য আমাদের মস্তিস্ক স্বপ্ন দেখার সময় ইন্দ্রিয় অনুভুতি মুক্ত থাকে।
আর REM পর্যায়েই বা কেন স্বপ্ন দেখবে আমাদের মস্তিস্ক? এসব বিস্তারিত আলোচনা করব অন্য এক সময়। সাথে আলোচনা করব মস্তিস্কের স্মৃতি ধারন কৌশল।

আমাদের মস্তিস্ক কত স্মৃতি ধারন করতে পারে?
খুব কমন প্রশ্ন। অনেকে বলবেন আনলিমিটেড আবার কেউ কম্পিউটারের সাথে তুলনা দিয়ে বলবেন কয়েক হাজার টেরা বাইটেরও বেশি। কিন্তু বাস্তব হল, আমাদের মস্তিস্কের স্মৃতি ধারন ক্ষমতা মাত্র ১০ মেগাবাইটেরও কম! কি অবাক হলেন। ভাবছেন, কি সব উদ্ভট কথা! কিন্তু মোটেও উদ্ভট নয়; এটাই সত্য আর এটাই বাস্তবতা। আমাদের মস্তিস্ক ১০ মেগাবাইটের থেকেও কম স্মৃতি সংরক্ষন করতে পারে। আর কেউ যদি প্রমান করতে পারে যে আমাদের মস্তিস্কের ধারন ক্ষমতা মাত্র ৫১২ কিলোবাইট, তাতেও অবাক হব না। কিন্তু কিভাবে এত কম স্মৃতি ধারন করে এত বেশি কাজ করতে পারে আমাদের মস্তিস্ক? আমি আমার গবেষনার মাধ্যমে মস্তিস্কের 'স্মৃতি সংরক্ষন' নিতীর একটা মডেল তৈরি করেছি। সে মডেল অনুযায়ী আমাদের মস্তিস্কের স্মৃতি ধারন ক্ষমতা ১০ মেগাবাইটের বেশি হবে না। আর এই অল্প স্মৃতির মাধ্যমেই মস্তিস্ক কিভাবে অনেক বড় বড় ঘটনা বর্নানা করতে পারে, তা বিস্তারিত জানা যাবে।
আমি মানব মস্তিস্কের স্মৃতিকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছি, একটি গৌন স্মৃতি অপরটি মূখ্য স্মৃতি। এই স্মৃতিগুলো কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে 'স্মৃতি সংরক্ষন মডেল' থেকে জানা যাবে।

আমরা স্বপ্নে এমন সব মানুষ দেখে থাকি যাদের আমরা আগে কখনও দেখেছি বলে মনে হয় না। এই কথাটা প্রচলিত আছে যে, আমরা যে সকল নতুন মুখ স্বপ্নে দেখি, তাদের আমরা কোন না কোন সময় দেখেছি। যা আমরা মনে করতে পারিনা। কিন্তু আমাদের সাবকনসাস মন তা মনে রাখে আর স্বপ্ন হিসেবে প্রকাশ ঘটায়। সাবকন্সাস! সাবকন্সাস মন!? হোয়াট ইজ ইট?
কেউ মানেন আর না মানেন, সাব কন্সাস মন বলতে কিছুই নেই।
আমরা স্বপ্নে যে নতুন মুখ দেখি, তারা আসলেই নতুন মুখ, যাদের তৈরি করে থাকে আমাদের মস্তিস্ক। কিন্তু কিভাবে এসব নতুন মুখ তৈরি হয় আমাদের মস্তিস্কে?
এটা দেখানোর জন্য যে মডেলটি তৈরি করেছি, তার নাম দিয়েছি 'মস্তিস্কের দর্শন নিতী'। এই নিতীর মাধ্যমে জানা যাবে, আমাদের মস্তিস্ক স্বপ্নে কিভাবে নতুন মুখ নিয়ে আসে।


মস্তিস্ক আর স্বপ্ন- মা আর সন্তানের মত। তাই স্বপ্নকে ব্যাখ্যা করার জন্য, মস্তিস্ককে বার বার টেনে আনতে হয়েছে। আসলে মস্তিস্কের বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা ছাড়া স্বপ্নের ব্যাখ্যা অসম্ভব। তারপরে ও দুইটার সম্মনয় ঘটিয়ে সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যাখ্যা প্রদানের চেষ্টা করেছি।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:২০

কৃষ্ণবিবর বলেছেন: এত ভাল গান্জা কই থেকে কিনেন?

২| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:১০

আবু জাকারিয়া বলেছেন: আগে মন্তব্য করার যোগ্যতা অর্জন করেন।

৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:১৫

নতুন বলেছেন: শর্তঃ একটি মস্তিস্ক একই সময়ে একাধিক অবস্থায় চলতে পারেনা।

সাধারন কম্পিউটার মাল্টিটাক্সিং করতে পারে... তবে মস্তিস্ক কেন পারবেনা?


আমার মতে এই পার্থক্যটি ছাড়া স্বপ্ন আর কল্পনার মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।

কল্পনা আমাদের নিয়ন্ত্রনে থাকে.>> অথা`ত আমি চোখ বন্ধ করে আইফেল টাওয়ার কল্পনা করতে পারি...

স্বপ্ন আমাদের নিয়ন্ত্রনে থাকেনা..>> আমি ইচ্ছা করলেই আইফেল টাওয়ার স্বপ্নে দেথতে পারিনা...

কিন্তু বাস্তব হল, আমাদের মস্তিস্কের স্মৃতি ধারন ক্ষমতা মাত্র ১০ মেগাবাইটেরও কম! কি অবাক হলেন।

অনেক মানুষ আছে যারা অনেক কিছু মুখস্ত করতে পারে.... তাদের স্মৃতিও কি ১০ এমবি??

চালিয়ে যান আপনার গবেষনা...

৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:২৮

আবু জাকারিয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এমন একটি বিজ্ঞান সম্মত প্রশ্ন করার জন্য। আমি এমন একটি প্রশ্নের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। মানুষের স্মৃতি ধারন ক্ষমতা ১০ মেগাবাইটের কম, এটা শুধু তুলনা করার জন্য ব্যাবহার করেছি। সম্ভবত এর থেকেও কম হবে। এই বিষয়টা আলোচনা করতে যেহেতু অনেক সময় লাগবে, তাই আলোচনা করলাম না। তবে একটা ক্লু দিতে পারি। তা হল আপনি যদি একটা সাদা কাগজের দিকে একঘন্টা তাকিয়ে থাকেন, তাহলে কি আপনার মস্তিস্ক এক ঘন্টারই দৃশ্য রেকর্ড করবে? কখনই না। আপনি একটি সাদা কাগজের দিকে সারা জীবনও যদি তাকিয়ে থালেন, মস্তিস্ক শুধু মাত্র দৃশ্যের একটি অংশই রেকর্ড করবে। সুতারাং মস্তিস্কে সংরক্ষিত স্মৃতির একটা দৃশ্যের আকার সর্বোচ্চ কত হতে পারে। বড় জোর ১ মেগাবাইট। আর মুখস্তের ব্যাপারে বলব, কেউ যদি মুখস্ত করে সে কাজের জন্য মস্তিস্ক কোন স্মৃতি ধারন করে না। এগুলো ব্যাখ্যা আমার কাছে আছে যা অল্প পরিসরে বর্ননা করা সম্ভব নয়।

৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ২:৪৭

নতুন বলেছেন: সময় নিয়ে লিখবেন আশা করি...

স্বপ্ন এবং অবচেতন মনের বিষয় খুবই ইন্টারেস্টিং একটা বিষয়... জানতে ইচ্ছা করে... :)

৬| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:০০

আবু জাকারিয়া বলেছেন: হ্যা, চেষ্টা করব। স্বপ্ন আর অবচেতন মন আসলেই ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। এগুলো বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা করা গেলে আরো মজার হবে আশা করি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১১

অনিকেত বলেছেন: ইন্টারেস্টিং ।

৮| ০৪ ঠা মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬

আবু জাকারিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.