নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আবু জাকারিয়া

আমি খুব স্বাধারন মানুষ। স্বাধারনদের থেকেও স্বাধারন। জীবনে জাঁকজমক পছন্দ করিনা। স্বাধারন ভাবে বাঁচতে চাই। সব চেঁয়ে অপছন্দের কারো অধিনে থাকা। \nউক্তিঃ পরাধীনতার চেয়ে মৃত্যু অনেক ভাল, মৃত্যুযন্ত্রনার থেকে পরাধীনতা অনেক ভাল। [email protected]

আবু জাকারিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোথায় আমার মদের বোতল একটু দাও বাবা খেয়ে নিই।

১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২১

আধুনিক যুগের ছেলে আমি, তাই আধুনিক যুগের পরিবর্তনের ধারা একটু হলেও বুঝতে পারি।

ছোট বেলায় আমাদের গ্রামে আমাদের সমবয়সী একটা ছেলে সিগারেট খেয়েছিল- সে খবর সারা গ্রামময় ছড়িয়ে পড়েছিল; যদিও আমরা নিজের চোখে দেখিনি সিগারেট খেতে, শুধু লোকমূখে শুনছিলাম আর অবাক হচ্ছিলাম। আহারে কি অপরাধটাই না করল ছেলেটা, কি সাস্থি হবে কে জানে! ছেলেটার সাথে তারপর অনেকদিন দেখা হয়নি, হয়ত সাস্থি থেকে বাচার জন্য কোন আত্মিয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। ফিরে আসার পর তাকে কোন সাস্থি দেয়া হয়েছিল কিনা মনে নেই। তবে তার এমন অপরাধের খবর আমাদের গ্রাম ছাড়িয়ে পাশের গ্রামগুলোতেও পৌছে গিয়েছিল। আসলে তখনকার সময়ে আমাদের কাছে ঘটনাটা ছিল যেমন অবাক হওয়ার মত তেমনি বড়দের কাছেও। আমাদের গ্রামে তখন কেউ ধুমপান করত এমন খবর আমাদের জানা ছিল না। তাই একটা আট দশ বছরের ছেলের ধুমপানের খবর ছিল অবাক করার মত।

আমরা বিড়ি সিগারেট রাস্তাঘাটে অনেককে খেতে দেখতাম- কিন্তু মদ গাঁজার কথা মাঝে মাঝে লোক মুখে শুনতাম আর অবাক হতাম এই ভেবে যে, ওগুলো আবার কি জিনিস! মদ গাজার কথা শুনলে আমাদের মনে সামুয়িক কৌতুহল তৈরি হত।

একবার খবর বের হল, আমাদের গ্রামে কেউ একজন মদ খেয়েছে। মদ খেলে মাতাল হয়ে মাতলামি করতে দেখেছি সাদা কালো টেলিভিশনে। কিন্তু বাস্তবে দেখেনি।
লোকটি যে মদ খেয়ে মাতাল হয়েছিল, তার যথেচ্ছ প্রমান পেয়েছিল গণ্যমান্য সবাই। সুতারাং তাকে বিচারের আওতায় আনা হল। মুরব্বীদের নিয়ে বিচারের বৌঠক তৈরি হল। যে মদ খেয়েছে, তার বাবা মাও সন্তানের উচিৎ বিচার চায়। আমরা শুধু এটুকু দেখেছি আর এটুকুই জেনেছি; কিন্তু কিশের মদ, কোথায় পেয়েছে লোকটা তা আমরা জানতে পারিনি। কেননা আমরা ছিলাম ছোট, যেটুকু লোকমুখে শুনতাম, ততটুকুই জানতাম।

আমাদের গ্রামে প্রায় সবাই ছিলেন ইসলামী মাইন্ডের; অর্থাৎ তারা সবাই পীর আউলিয়ার বংশধর। সবাই ই কোন না কোন ভাবে সবার আত্মীয় ছিল। যার কারনে বংশের নামে কোন দুর্নাম ছড়াক তা কেউ চাইত না। তাই ছোট খাট অপরাধেও দেয়া হত গুরুদন্ড।

যে লোকটি মদ খেয়েছিল বলে প্রমান পাওয়া গিয়েছিল, তার ইসলামী নিয়ন অনুযায়ী বিচার হয়েছিল। বিচার হয়েছিল দোররা হিসেবে। ঠিক কিভাবে দোররা মারা হয়েছিল সেদিন আর কতগুলো মারা হয়েছিল তা মনে নেই।

এরপর এরকম বিচারের বৌঠক আর তেমন একটা দেখিনি। কারন যারা আমাদের গ্রামে বেশি ধার্মিক ছিলেন তাদের অনেকেই বার্ধক্যবশত মারা গিয়েছিলেন। এরপর যারা ছিলেন, তারা ততটা ধার্মিক ছিলেন না। তাই ছোট খাট অপরাধ করেও অনেকে পার পেয়ে যেত।
এখনকার সময়টা ঠিক বিপরীদ। আগেকার সেই দিনের সাথে সামান্য মিল খুজে পাওয়া যাবে না। অর্ধ যুগেই পাঁচ যুগের পরিবর্তন ঘটে এখন।

সেদিন কয়েকটা ছেলে রাস্তায় আড্ডা মারছিল আর গল্প করছিল। গল্পের মধ্যে সেল্ফি, ফেসবুক আর গার্ল্ফ্রেন্ড শব্দগুলো বার বার শোনা যাচ্ছিল।
একজন চিৎকার করে বলছিল, " ও আমার গার্ল ফ্রেন্ড,, ও আমার গার্ল ফ্রেন্ড। " আবার আরেকজন প্রতিবাদ করে বলছিল, " না ও আমার গার্ল ফ্রেন্ড,,,,। আসলে ওরা সবাই একে অন্যের সাথে ঠাট্টা করছিল।

আমার পাশেই এক বয়স্কমত ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমাকে দেখে ঠোট বাঁকিয়ে আর কপালটা ঘুচিয়ে জিজ্ঞেস করলেল, বাবা গার্ল ফ্রেন্ডটা আবার কি জিনিস! আমি কি উত্তর দেব বুঝতে পারলাম না। একজন বাবার বয়সী মানুষের কাছে গার্ল ফ্রেন্ডের অর্থ ব্যাখ্যা করার স্বস্থি পেলাম না।

বয়স্ক ভদ্রলোকটিও আমার কাছে গার্ল ফ্রেন্ডের অর্থ জানার জন্য প্রশ্ন করেনি; বরং সে প্রশ্ন করেছিল সময় ও যুগের বিশাল পরিবর্তন দেখে। আমি নিশ্চিত এই সময়টা ওনার মত আরো অনেককে অবাক করে দিচ্ছে।

এখনকার সময়ে প্রতি ছয় বছরে যুগের পরিবর্তন হয় ( হতে পারে তার চেয়েও কম সময়)। আগের যুগে প্রতি গ্রামে একজন ধুমপায়ী খুজে পাওয়া যেত না। আর এখনকার যুগে ছোট ছোট বাচ্চারাও ধুমপান করা শিখছে। আগেকার যুগে মদ গাজা কি জিনিস তা অনেকে জানতই না; আর এখন কার যুগে মদ গাজা হয়ে গেছে সহজ প্রাপ্য। আর এটাই যুগের পরিবর্তন।
কিছুদিন পরে এটাও হয়ত একটা স্বাধারন ঘটনা হয়ে দাঁড়াবে যে, ছেলে বাবাকে বলছে, কোথায় আমার মদের বোতল একটু দাও বাবা খেয়ে নিই।,,,

যুগের এমন পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমাদের কি কোন হাত নেই?? নাকি আমাদের হাত পা বাঁধা কোন অদৃশ্য সুতোয়!

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৩৬

বিজন রয় বলেছেন: মদ খাবেন? এই ব্লগে? হা হা হা হা!!!!

২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:৪২

আবু জাকারিয়া বলেছেন: মদ না খেলে স্মার্ট হব কিভাবে , এটাইতো দেখছি এযুগের ধারা::))

৩| ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৪৬

আমিই মিসির আলী বলেছেন: ভালো লাগলো।


(সাস্থি =শাস্তি )!

৪| ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১:১৬

আবু জাকারিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.