নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উতস

আবু সায়েদ

student

আবু সায়েদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় টংগী ট্র্যাজেডির করুন বয়ান

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০২

সবাই খেলোয়ার।শুধু অামরা ফুটবল। প্রশাসনও অাজ অামাদের নিয়ে খেলল..

"বেলা ৯ টা। এতায়াতীরা দলে দলে জড়ো হচ্ছে গেটের কাছে। মাঠে তখনো নিরীহ বয়ান চলছে। গেটের কাছে দাঁড়িয়ে পাহারায় আমরা। পুলিশ বারবার তাগাদা দিয়ে বলছে লাঠি ফেলে পাহাড়ায় আসতে। একপ্রকার চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে আমরা লাঠি সরিয়ে ফেলি।

এদিকে এতায়াতীরা বাইরে উগ্র বয়ান দিচ্ছে। মক্কা বিজয়ের ঘটনা, বদরের যুদ্ধের ঘটনা।জিহাদের স্পৃহায় জাগিয়ে তোলা হচ্ছে । প্রচন্ড ব্যাংগাত্মক ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছিল তারা। অথচ আমাদেরকে প্রশাসন ও ভেতর থেকে এতাতীদের প্রতি দুর্বল অথবা তাদেরই কিছু লোক আমাদের সাথে মিশে গিয়ে আমাদেরকে শান্ত নিরীহ থাকার জন্যে বলছিল।

আমরা গেট পাহাড়ায় শক্তি বাড়াতে চাইলাম, কিন্তু পুলিশ মাইকে বলছিল আমরা যেন শান্ত থাকি। ১১ টা বাজলে এতাতীদেরকে উঠিয়ে দেয়া হবে। একথা বলে আমাদেরকে বারবার বিভ্রান্ত করা হচ্ছিল। অপরদিকে এতাতীরা শক্তি সঞ্চয় করছিল আর উত্তেজিত হয়ে স্লোগান দিচ্ছিল।

বেলা ১১ টা বাজতেই তারা বড় বড় ইট নিয়ে শয়ে শয়ে ঢিল ছুড়তে থাকে। আমরা খোলা জায়গায় ঢিল থেকে বাচতে আশেপাশে সড়তে থাকি। যেই গেট ছেড়ে দেই সাথেসাথে গেট টপকে ও ভেংগে এতাতীরা আসতে শুরু করে। যারা গেটের পাশে ছিল, তারা কেও সুস্থভাবে ফিরতে পারে নি। পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। পিটানোর সময় প্রধান টার্গেট ছিল ছাত্রদের মাথা। এখানে প্রশাসনের ভূমিকা ছিল রহস্যময়। যারা আশ্বাস দিয়ে আমাদেরকে নিরস্ত্র করে রেখেছিল তারা ১১ টা বাজতে এতাতীদের উঠিয়ে দেয়ার বদলে সরে যায়। পুলিশ সরে গেলে এতাতীরা প্রবেশ করতে দুঃসাহসী হয়ে উঠে।

আমার বন্ধু ফোন করল সে টয়লেটে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছে। ফোনে ভীত গলায় বলল "বাইরে ছাত্রদের মেরে ফেলছে। টয়লেটের গেটেও বাড়ি দিচ্ছে। যদি বাচতে না পারি লাশ নিয়ে যেও"। একথা শুনে আমার হালত কী হতে পারে ভাষায় ব্যক্ত করতে পারব না। আমি সেদিকে এগিয়ে গেলাম কিছু ছেলেকে নিয়ে। কিন্তু বাটা গেটের কাছে একটু এগুতেই তারা ধেয়ে আসল। তাদের হাতে বিশাল বিশাল লাঠি। বিপরীতে আমাদের কাছে কিছু ইট মাটির ঢিলা।

আশ্চর্যের বিষয় হলো তারা বেছে বেছে শুধু ছাত্রদের মারছে। আর জেনারেলদের মধ্যে যাদের হাতে লাঠি ছিল তাদেরকে মেরেছে। মোহাম্মদপুরের কিছু এতাতি ক্যাডার লীড দিচ্ছিল। তারা দেখিয়ে দিচ্ছিল "এই ছেলে বেশি বাড়াবাড়ি করেছে। এই হুজুরকে মারেন। সাদ সাহেবের বিরুদ্ধে বেশি কথা বলেছে। এটাকে পিটান" এভাবে চিহ্নিত করে করে পিটাচ্ছিল ক্যাডাররা।

মুখে গালাগাল আর তাচ্ছিল্য তো লেগেই ছিল। অকথ্য ভাষায় গালাগাল করছিল আমাদের উস্তাদদেরে, উলামায়ে দেওবন্দকে। চোখের সামনে আহত রক্তাক্ত ছাত্রদেরকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেছি৷ একপর্যায়ে তারা আমাদেরকে চতুর্দিক থেকে মারতে মারতে মাঠের মাঝে নিয়ে আসে। এরপর আমাদেরকে বলে লাঠি ফেলে দিতে। আমরা লাঠি ফেলে দেই। তখন তারা আমাদেরকে মাঠ ছেড়ে চলে যেতে বলে। আমরা ক্লান্ত রক্তাক্ত দেহ নিয়ে মাঠ থেকে ফিরি। ফেরার পথে রাস্তা জুড়ে ছিল এতাতীরা৷ তাদের মুখে তাচ্ছিল্যের ভাষা লাগামহীন ছিল। কোন ঈমানদারের কথা এমন বেইমান মার্কা হতে পারে না।

তাদেরকে পুরো তান্ডবের সময়টাতে একবারও মনে হয় নাই তারা মুসলিম, তারা তাবলীগ করতেন। মনে হচ্ছিল কোন সন্ত্রাসী কাফের যুদ্ধ করতে এসেছে। অত্যন্ত পরিকল্পিত ছিল তারা। প্রতিটা পয়েন্টে প্লানমাফিক এগুচ্ছিলো। উপর থেকে কমান্ড ছিল সুসংহত ও বুদ্ধিদীপ্ত। বিন্যস্তভাবে সাজানো গোছানো আক্রমণ ছিল তাদের। বাটার গেট থেকে যে ছাত্ররা বের হচ্ছিল, তাদেরকে কান ধরে তওবা করে বের করেছে এই এতাতী জামাত....."

নিস্তব্ধ হয়ে এতক্ষণ বর্ণনাগুলো শুনছিলাম। আমার সামনে বসা, কাছের এক মাদ্রাসার ছাত্র। এপর্যন্ত শুনে চোখের অশ্রু সামলানো কঠিন হয়ে গেল। মাদ্রাসাওয়ালাদের মার খাওয়ার সিলসিলা সে যে বৃটিশদের থেকে সূচনা হয়েছিল.. তা থামে নি। ক্রমশ এর পরিধি বাড়ছে। এমনকি দ্বীনের লেবাস পরা একসময়ের বন্ধুরাও এখন পুরানো শত্রুদের চেয়ে আগ বাড়িয়েছে! এর শেষ কোথায়? জানা নেই! জানা নেই, আদৌ মাদ্রাসাগুলো তাদের খয়েরখাঁ খুজে পাবে কিনা। শাপলা থেকে টংগী ময়দান। ইতিহাস বলে আলেমদের রক্ত কখনো মুনাফেকি করে নি। একটি সুহাসিনী ভোরের প্রতীক্ষায়..

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০৯

আবু সায়েদ বলেছেন: যেভাবে এজতেমা মাঠের গেট ভেঙ্গে পংগপালের মত চড়াও হইল এতায়াতী সন্ত্রাসীরা

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩

মা.হাসান বলেছেন: যিনি মারা গেলেন উনি কোন মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন?

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৭

আবু সায়েদ বলেছেন: খোজ নিন

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: হুজুর রা এই কাজটা খুবই খারাপ করেছে। তারা ধর্ম টাকে কি ছেলে খেলা মনে করে?

বিশ্বে কাছে আমাদের মাথা নিচু হয়েছে।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৮

আবু সায়েদ বলেছেন: জি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.