নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা ভাবি, যা দেখি, যা বিশ্বাস করি

আমি খুব সাধারন একটা মানুষ। সাধারন হয়েই থাকতে চাই

শিশু বিড়াল

স্বাধীন দেশের স্বাধীন এক নাগরিক। পেশায় ডাক্তার হলেও নেশা ছবি আঁকা। সবই সখের বশে। ভালবাসি দেশ ও দেশ এর মানুষ।

শিশু বিড়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আবারও ধর্ষণ বনাম অশালীন পোশাক

০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫৮

মেয়েদের ধর্ষণ হওয়ার পেছনে নাকি অশালীন পোশাক দায়ী। এই কথাটা আমি একদমই মানতে পারিনা। কোন যুক্তি খুঁজে পাইনা মানার। কিন্তু চারপাশের অনেক মানুষ পুরুষের পাশাপাশি কিছু নারীদেরও এই অন্ধযুক্তি যে ধর্ষণ হওয়ার কারন কি?



"নিশ্চয়ই মেয়েটার জামা কাপড় ঠিক ছিলনা।"



আসলেই কি তাই? চারপাশে যত ধর্ষণের ঘটনা আমরা দেখতে পাই তার মধ্যে কয়টি "অশালীন পোশাক" এর কারনে হয় এটা একটা চিন্তার ব্যাপার বটে। সংক্ষেপে কিছু প্রশ্ন করব, ভেবে দেখবেন।



১। যখন ৫ বছর বয়সের একটা মেয়ে ধর্ষিত হয় তখন তাকে আপনারা কি বলবেন যে ঐ মেয়েটির যৌবন অকালেই এতটাই পেকে গেছে যে তাকে ধর্ষক ধর্ষণ না করে পারেনি?



২। যখন ৫০ বছর বা তারও উপরের বয়সের মহিলা কে ধর্ষণ করা হয় তখন আপনি কি বলবেন যে এই বুড়ি যৌবন রস এই বয়সেও কমেনি যার আকর্ষণে ধর্ষক তাকে ধর্ষণ করতে বাধ্য হয়েছে?



৩। মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের অসংখ্য মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। শুধু এদেশে কেন, সব দেশেই যুদ্ধের পরপর বা পাশাপাশি পরাজিত বা অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশের মেয়েদের ধর্ষিত হওয়া একপ্রকার সাধারণ একটা ঘটনা। ঐ মেয়েরা বোরকা পরে চলুক বা না চলুক। এটাকে কি বলবেন? ঐ মেয়েদের রুপ যুদ্ধকালিন সময়ে এতই বেড়ে গিয়েছিল যে সৈনিকরা নিজেদের সংবরণ করতে পারেননি, এই তো?



৪। শুধু মেয়েরা নয় ছেলেরাও কিন্তু ধর্ষিত হয়। "ঘেঁটু পুত্র কমলা" চলচ্চিত্রটি এদেশেরই আবহমান কাল থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছিল। সেক্ষেত্রে আপনারা কি বলবেন? ঐ ছেলেটির মধ্যে মেয়েলি ভাব এতই তীব্র যে ধর্ষকের আর তর সয়নি?



আরও উদাহরণ দেয়া যায় চাইলে। উপরের ঘটনাগুলোতে কোথাও কিন্তু পোশাক আশাকের কারনে ধর্ষণ হয়নি। হয়েছে ধর্ষকের অসুস্থ মানসিকতার জন্য, প্রতিহিংসাপরায়নতার জন্য, বিকৃত মনোবৈকল্যের জন্য। আর যেসব মেয়েরা ধর্ষিত হয় তাদের কয়জন আসলেই অশালীন পোশাক পরে আগে খোঁজ নিয়ে দেখুন। চোখ কান বন্ধ করে একটি মাত্র খোঁড়া যুক্তি প্রলাপের মত আওড়াতে থাকবেন না।



কীভাবে কিছু মানুষ ধর্ষিতা একটা মেয়ের দোষ খুঁজে বেড়ায় আমি বুঝিনা। এরা কি আসলেই মানুষ? এদের নিজেদের মা, বোন, বন্ধু, প্রেমিকা বা কাছের কেউ যদি এমন হত তখন সে কী বলত? মাঝে মাঝে এই অসুস্থ ইচ্ছাটিও আমার হয়।



ধর্ষণকে যেকোন ভাবে যারা সমর্থন করার জন্য যারা যুক্তি দেখায় বা দেখানোর চেষ্টা করে তারা ধর্ষকের চাইতে কম অসুস্থ নয়। কোন ধর্ষণই যৌন উত্তেজনা নিবৃত করার জন্য করা হয় না, এটা অন্য একটা মানুষকে যন্ত্রনা দিয়ে, কষ্ট দিয়ে পাশবিক এক আনন্দ পাবার জন্য করা হয়। এটা এক প্রকার অসুস্থতা। যৌনতা এখানে কোন কারন না। পাশবিক বলা ভুল হল কারন কোন পশু আরেক পশুকে ধর্ষণ করে না যেভাবে মানুষ মানুষকে করে।



একটা মেয়ের পূর্ণ স্বাধীনতা আছে সে কী পড়বে কীভাবে পড়বে। তাকে অশালীন কিছু পড়তে দেখলেই তাকে উপুড় করে সাথে সাথেই এফোঁড় ওফোঁড় করতে হবে এই অধিকার কিন্তু কোন মানুষের নেই। একটা নগ্ন দেহের সুন্দরী মেয়েকে দেখে যদি কোন ছেলের উত্তেজনা হয়, তাতে সমস্যা নেই, সমস্যা হল উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে সেই মেয়েকে যদি কেউ ধর্ষণ করতে চায় বা করে সেখানে। সমস্যা সেই ছেলের যে তার দুই পায়ের মাঝের অঙ্গের উত্তেজনা সংবরণ করতে না পেরে দিগ্বিদিক জ্ঞ্যান হারিয়ে মস্তিষ্ক বিলুপ্ত প্রাণীর ন্যায় মেয়েটাকে ধর্ষণ করার চিন্তা করে বা ইচ্ছা পোষণ করে। এখানে মেয়েটার কোন দোষ নেই। মেয়েটার যদি দোষ থাকেও যে কাপড় কম পরেছে তা এত বড় নয় যে তাকে ধর্ষণ করতে হবে। এই যুক্তি যারা দেয় তারাও ধর্ষকের মতই অসুস্থ বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী।



নারীই হোক আর পুরুষই হোক আমরা যে প্রথমে একজন মানুষ এটাই আমাদের বড় পরিচয় এটা আমরা বেশিরভাগ সময়ই ভুলে যাই। তবে আমি আশাবাদী কিছু মানুষদের নিয়ে যাদের মধ্যে আমার কিছু ভাইয়েরাও আছেন যারা নিজেরা পুরুষ এই পরিচয়ের চাইতে বেশি তারা যে মানুষ এটা মনে রেখেছেন। স্যালুট আপনাদেরকে।



মানব প্রজন্মের একটি অংশ নারী ও একটি পুরুষ। তুলনামূলক ভাবে নারীরা অনেকাংশে এখনও অবহেলিত। কাজেই তাদের সচেতনতার পাশাপাশি যদি পুরুষরাও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় তবেই সম্ভব একটা সুন্দর আগামি পৃথিবীর সৃষ্টি হওয়া। যেখানে একটা মানুষের ধর্ষণ হওয়ার কথা কেউ কোনভাবেই "যৌক্তিক" প্রমান করার চেষ্টা করবে না, কারন তারা জানবে এটা সবদিক থেকে একটা মানুষের প্রতি আরেকটা অসুস্থ মানুষের অন্যায়। আর এই অসুস্থতার জন্য শাস্তির পাশাপাশি চিকিৎসাও দরকার।



শুধু নারী বা পুরুষ নয়, মানুষ হোন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৩৩

দ্য েস্লভ বলেছেন: পোষাকে শালিন হতে হবে কিন্তু ধর্ষনের কারন হিসেবে পোষাক মুখ্য নয়। অপরাধীকে শাস্তির পাশাপাশি মানুষিক চিকিৎস্যা প্রয়োজন। আর সমাজ-রাষ্ট্রকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে মানুষ ভাল-মন্দ বুঝতে পারে। মোটিভেশনের ব্যবস্থাটাই আসল

২| ০৮ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৪৩

চড়ুই বলেছেন: +++++ দিলাম।

৩| ০৮ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৪৭

তাসজিদ বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।
আসলে সমাজে যৌনতার আগুন সব সময়েই জ্বলে। মিডিয়ার কাজ হচ্ছে তাকে উস্কে দেয়া। আগুনে ঘি দেয়া।
এই যে ভারতে যৌন নির্যাতন এত বেড়ে গেয়েছে কেন? এখন আমি যদি বলি যে সানি শইতান কে দিয়ে ধর্ষণের পরিবেশ সৃষ্টি করছেন তাহলে কি ভুল বলা হবে?
সানি, পুনম এদের দেখে সমাজ উত্তেজিত হচ্ছে। কিন্তু সমাজের পক্ষে সানি বা পুনম কে স্পর্শ করা সম্ভব নয়।
কিন্তু যখন কোন সুযোগ তারা পেয়ে যায় তখনই তারা সে পাপাচারে লিপ্ত হয়।
এখন সুশীল রা বলবে তাহলে ত সবাই ধর্ষণে লিপ্ত হত।
সমাজে সবাই যেমন সাধু হয় না, সবাই চোর হয় না। তেমনি সবাই ধর্ষক হয় না

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৯

আনপ্রেডিক্টেবল ম্যান বলেছেন: ধর্ষণ একটি অপরাধ এর কোন অজুহাত নাই এর জন্য শাস্তি মৃত্যু দণ্ড করা হোক এতেও কোন আপত্তি নাই , কিন্তু প্রশ্ন হল নারীদের পোশাক পরার স্বাধীনতা নিয়ে ! যে পোশাক পরলে মস্তিষ্ক বিকৃত হতে পারে সেই পোশাক অবশ্যই নারী ধর্ষণের অন্যতম কারনের একটি !

৫| ২৯ শে জুলাই, ২০১৪ ভোর ৬:৪৪

ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: একটা পুরুষকে ধর্ষক হতে কোন কারণ লাগেনা, তার বিকৃত মন আর নষ্ট শরীরটাই যথেষ্ট।

আপনার ছবি পোস্ট খুব মিস করি।

৬| ২৯ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৪০

সুস্মিতা শ্যামা বলেছেন: Click This Link khub jouktik ekta lekha. Bhalo laglo. Ei eki topic ER amio likhechilam. Link Ta diye gelam.

৭| ২৯ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:২১

ইমরান হক সজীব বলেছেন: দারুন লিখেছ ভাই ! ভেবেছিলাম সামু থেকে সব মুক্তচিন্তা, মুক্তমনের লেখকরা বিদায় নিয়েছে । কেও এখনো আছে দেখছি !

এই সংক্রান্ত বছর দুয়েক আগের একটা ফেসবুকিও ঘটনার কথা শেয়ার করার ইচ্ছে হচ্ছে ।
কোন একজনার এক পোষ্টে এক জনার সাথে ধর্ষণ, নারীর পোশাক ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা হচ্ছিল ।
কথার শেষের দিকের অংশটা অনেকটা এরকম ছিল-
বললাম, সুশিক্ষা থাকলে কারো সামনে যদি নগ্ন নারিও থাকে তো সে দুই একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করলেও তার ধর্ষণ করার কোনরূপ ইচ্ছা জাগবে না । আর সুশিক্ষা না থাকলে নারী বস্তা বন্দি হয়ে থাকলেও কারো ধর্ষণের ইচ্ছা জাগতে পারে ।
সে দ্রুত কমেন্ট করলো, আপনার সামনে একাকি কোন নগ্ন নারী থাকলে কি করবেন ।
বললাম, আমার পূর্ণ আস্থা আছে যে ধর্ষণ করার মত কোন ইচ্ছা আমার মনের সুদূরেও জাগবে না । হয়তো দুই একবার তাকাবো, দেখে ভালোও লাগবে এই ।
সে বললো, আপনার সমস্যা আছে, ডাক্তার দেখান ।

আর কোন কমেন্ট করিনি । ধৈর্য রাখতে পারনি ।
অথচ আমার কোন সমস্যা নাই, শাররিক মানসিক সম্পূর্ণ সুস্থ । সুস্বাস্থ্য বজাই রাখার জন্য নিয়ম মেনে চলি, ধুম্পান মদ্যপান করিনা, সেই কৈশোর কাল থেকে শরির চর্চা করি । দেশের সবচেয়ে সুস্থ ১% (১৬ লক্ষ) মানুষকে যদি বাছায় করা হয় তো নিশ্চিত বিশ্বাস যে আমি তার মধ্যে থাকবো । আর আমাকে কিনা বলে সমস্যা আছে! হাহা ।

যাকগে, অনেক কথা বললাম, আর এত দিন পর সেই লোকের উপর আপনার পোষ্টে কিছুটা ঝাল মেটালাম -০-

০১ লা আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:২২

শিশু বিড়াল বলেছেন: আপনি অবশ্যই সুস্থ মানুষ ভাই। এটাই স্বাভাবিক।

৮| ০১ লা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১৩

নতুন বলেছেন: যারা বলে পোষাকের কারনে ধষ`নে উতসায়িত হয় তারা বড় মাপের বলদ ছাড়া কিছু না......

এরা বাইরের দেশের মেয়েদের পোষাখ দেখেনাই..... বাইরের অনেক দেশের মেয়েদের চেয়ে আমাদের দেশের মেয়েদের পোষাখ হাজার ভাগ স্বালীন....

যারা ধষ`ন করে তারা অবশ্যই খেয়াল করে যে কে দূবল..সামাজিক/রাজনিতিক ক্ষমতা নাই ..দরিদ্র এই সব পরিবারের মেয়েদেরই টাগেট করে.... কারন এদের উপরে অত্যাচার করে পার পাওয়া যাবে....

আর নগ্ন নারী দেখলে যাদের ধষ`ন করতে ইচ্ছা করবে তারা নিজেদের সুস্হ ভাবে কিভাবে???

৯| ০২ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:২৮

নতুন বলেছেন:

উপরের ছবিগুলি ভারতের কিছু ধষ`নের স্বীকার নারীর.... এতে বোরকা আছে...স্কুল ড্রেস আছে ফ্রক আছে... Satyamev Jayate এর এক সাভে`তে এই ছবি গুলি ভারতের বিভিন্ন স্হান থেকে পাঠিয়েছে...



আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.