নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা ভাবি, যা দেখি, যা বিশ্বাস করি

আমি খুব সাধারন একটা মানুষ। সাধারন হয়েই থাকতে চাই

শিশু বিড়াল

স্বাধীন দেশের স্বাধীন এক নাগরিক। পেশায় ডাক্তার হলেও নেশা ছবি আঁকা। সবই সখের বশে। ভালবাসি দেশ ও দেশ এর মানুষ।

শিশু বিড়াল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিয়ে ও কিছু কথা

০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৪:৫৭

ইদানিং বিয়ে করা এবং বিয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠান যেমন হলুদ, বৌভাত এসবের খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছে। নতুন আমদানি "মেহেদি" নামক আরেকটি উপদ্রব।গত দশ বছর আগেও "বিয়ে" নামক উৎসব কে কেন্দ্র করে এত জাঁকজমকের বাহার ছিল না। অবশ্য তখন ডিভোর্সের হারও এত বেশি ছিল না। দুইটাই হাস্যকরভাবে সমানুপাতিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে।



যাদের খরচ করার সামর্থ্য আছে তাদের কথা আলাদা, কিন্তু গ্রাজুয়েশন শেষ করে বা করবে এই অবস্থায় যেই ছেলে মেয়ে গুলো বিয়ে করার কথা চিন্তা করে তাদের জন্য পাশাপাশি থাকা, জীবন সাথীকে কাছে পাওয়া এই ব্যাপার গুলোর চাইতে নিজে কোথায় সাজবে, কত দামী কাপড় পড়বে, কি পরিমাণ গয়না পড়বে, কোথায় বিয়ের অনুষ্ঠান হলে "আভিজাত্য" বজায় থাকবে আর সবশেষে "ফটোগ্রাফি" তো আছেই, এই বিষয় গুলোই দাঁড়িপাল্লার ভারে একদিকে বেশি ভারী হয়ে দাঁড়ায়। শুধু এই বিয়ের ফটোগ্রাফি কে কেন্দ্র করেই এক বিশাল ব্যবসা গড়ে উঠেছে। আর বিয়ের সাজ বা মেক আপ। আমি বুঝিনা ৪ ঘণ্টা বা ৬ ঘণ্টার একটা অনুষ্ঠানে যে মেকআপ করা হয় তা ১০ হাজার, ২০ হাজার টাকা বা আরও বেশি দিয়ে করানোর হেতু কি? কি লাভ হয়? এমন তো না যে জামাই বাবু বা শশুরবাড়ির লোকেরা মেক আপের রুপ দেখে ভালবাসার হার ১০ পারসেন্ট ও বাড়িয়ে দেয়, তাহলে এত টাকা খরচ করার অর্থ কি?



দুঃখজনক হলেও সত্যি এই বিশাল বোঝার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবার দায়ভার মেয়েদের উপরই পরে। মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে সত্যি, আগের চেয়ে মেয়েদের কর্মসংস্থান বেড়েছে সত্যি কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে তারা আজও প্রাচীনকালের অশিক্ষিত, অজ্ঞ, পরগাছা, শিকড়বিহীন মেয়েদের মতই আচরণ করে। কিছু ব্যতিক্রম থাকতে পারে তবে তা উদাহরণ নয়। আর ভোগান্তি হয় ছেলেদের।



অনেকে আমার কাছে অনেক ব্যাপারে কথা বলতে আসে। একজন দুঃখ করে বলছিল, "আমার প্রেমিকাকে বাগদান বা এঙ্গেজমেন্টের সময় হীরার আংটি দিতে না পারলে মান সম্মান থাকবে না।" ছেলেটি এখনও পড়াশোনা শেষ করেনি। তার আগেই এই চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে। কি হয় হীরার আংটি দিয়ে? হীরা সবচেয়ে শক্ত, মজবুত তাই আমরা জানি। ভালবাসার চেয়ে বড় হীরা আর নেই, তা যে পায় সেই জানে। বাগদানের জন্য হীরার আংটিই হতে হবে এই আবশ্যিকতার কোন যৌক্তিকতা আমি খুঁজে পাইনা। এতো গেল শুধু আংটির কথা। এমন শত শত খরচ আছে যেগুলোর দায়ভার শুধু ছেলে পক্ষকেই আর প্রেমের বিয়ে হলে অনেক সময় ছেলেকেই দিতে হয়।



আমার প্রশ্ন কেন?



সম বয়সী দুটো ছেলেমেয়ের বিয়ে হলে দুইজনই যদি কর্মক্ষম হয়, বিয়ের ক্ষেত্রে দুইজনেরই খরচ করা উচিৎ, তা হয়না কেন?

যে মেয়ে শিক্ষিত, স্বাবলম্বী, উন্নত চেতনার অধিকারী তাকেও দেখা যায় তার প্রেমিক বা প্রেমিকের পরিবার বা পারিবারিকভাবে বিয়ে হলে পাত্রপক্ষ বিয়েতে কত খরচ করতে পারবে তা নিয়ে দর কষাকষি করতে, কেউ কম বা কেউ বেশি, কিন্তু এই দর অবশ্যই কষা হয়, কেন?



সাধ্যাতীত খরচ করার একটা অদৃশ্য চাপ ছেলেদের উপরই কাজ করে, মেয়েদের উপর করে না কেন?



বিয়ে নামক বাজারে, বাজার বললাম একারনে যেভাবে এখনও নিজের মুল্য ঠিক করতে হয় এবং নিজেকে বিক্রি করতে হয় তাতে বিয়েকে সম্পর্কের চাইতে বাজার বলাই শ্রেয়, একটা মেয়ে বুঝেও জেনেও কীভাবে নিজেকে এমন অবস্থায় দাঁড় করায়? যারা বোঝেনা, তাদেরকে বোঝানোর দায়িত্ব আমাদের সবারই। কিন্তু যারা বোঝে তারাও নিজেদের পণ্যের মতই বিক্রি করে দেয়, কেন করে?



বিক্রি হয়ে যাবার পর শশুরবাড়িতে যদি তার সম্মান, আদর যথাযথ ভাবে না হয় তার জন্য শুধু ঐ পরিবারের লোকদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। একটা কথা আছে শাশুড়ির কাছে ছেলের বৌ নাকি কখনও নিজের মেয়ের মত আপন হয়না। কীভাবে হবে? নিজের মেয়েকে তো পেটে ধরে বের করা হয় কিন্তু বৌকে তো কিনে আনতে হয়। আর যা কেনা হয় তার একটা মুল্য উসুলের ব্যাপার সবসময়ই থাকে। আমি বলছিনা নিজেকে বিক্রি না করলেই শাশুড়ি "মা" হয়ে যাবে, তবে তখন অন্তত নিজের ঐটুক জোর থাকে কিছু বলার। আর এই দুই দিক বৌ ও মা চাপে পরে স্বামীর অবস্থা আরও খারাপ হয়, কোনদিকে যাবে দিশে পায় না।



পরিবেশ পরিস্থিতি পরিবার সবকিছু অনুকুলে থাকা সত্ত্বেও কেন বেশিরভাগ মেয়ে এখনও পরগাছা হয়ে থাকতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, বটগাছ কেন নয়? পরগাছা মানসিকতায় বেড়ে ওঠা অনেক সহজ একারনে? অন্যের অবলম্বনে গড়িয়ে গড়িয়ে এক জীবন পার করে দেয়া যায়, বটগাছ হয়ে বেড়ে ওঠা অনেক কষ্টের তাই? কিন্তু জেনে রেখো বটগাছ যখন দাঁড়িয়ে যায় তখন সেই হয়ে ওঠে শত সহস্র লতানো গাছের অবলম্বন।



নারী স্বাধীনতার কথা বেগম রোকেয়া বলে গেছেন, সুফিয়া কামাল বলে গেছেন, তসলিমা নাসরিন বলে গেছেন, কিন্তু আমি যখন তাকাই অনেক ছোট ছোট ব্যাপার, আপাতদৃষ্টিতে কিছুই হয়ত না বা অনেক কিছু, মেয়েদের মানসিকতা এখনও সেই ১০০ বছর আগেই পরে আছে, যেটুকু অগ্রগতি হবার কথা ছিল, তা না হয়ে অনেকাংশেই উল্টো পথে হাঁটা দিয়েছে। মেয়েই রয়ে গেছে, মানুষ হব, মানুষ হব বলে শুধু চিৎকার করতে শিখেছে, মানুষ হয়ে উঠেনি, ওঠার প্রচেষ্টাও নেই।



কথা গুলো হয়ত অনেকেরই ভাল লাগবেনা, কিন্তু ঘরে ঘরে প্রতিটা নারী যদি তার আশেপাশের পুরুষদের কাছ থেকে সম্মান আদায় করতে পারে আমার মনে হয় মেয়েদের সম্মান সামগ্রিকভাবে অনেক বাড়বে। এখানে পুরুষ বলতে বাবা, ভাই, প্রেমিক, স্বামী বোঝাচ্ছি। বাবাকে বুঝতে দাও যে তুমি তার ছেলে হলে যা করতে তার চেয়ে কিছু মাত্র কম নও, ভাইয়ের পাশে আরেক ভাইয়ের মত দাঁড়াও, আর প্রেমিককে বুঝতে দাও তুমি অমুল্য, তুমি সম্পদ, কোন সম্পত্তি না যে তোমাকে একটা নির্দিষ্ট মুল্য দিয়ে কিনে নিতে হবে বা নেয়া যাবে। আর স্বামী, সে তো তোমার সারাজীবনের সাথী, তাকে জীবনে সাফল্যের জন্য অনুপ্রানিত করো, হয়ে ওঠো তার জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য, ঘাড়ের উপর বোঝা না। টাকা থাকলে জীবনের অনেক সমস্যা সমাধান করা যায় এবং এই সমস্যা সমাধানের দায়ভার যতটুকু তোমার স্বামীর, ততটুকুই তোমার যদি তুমিও মানুষ হয়ে থাকো, কোন বিকলাঙ্গ, অকেজো পরগাছা না হও। তুমি যে শুধু মেয়ে মানুষ নও, একজন মানুষ তা তোমাকেই দেখাতে হবে। কোন মেয়ে যদি এভাবে ভাবে এবং তা করে আমার মনে হয় না কোন সুস্থ মস্তিষ্কের বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন পুরুষ তাকে সম্মান না করে পারবে।



যে পরিমাণ শক্তি, সময়, অর্থ নিজেকে সুন্দর দেখানোর চিন্তায়, পরিকল্পনায় ব্যয় করা হয় তার অর্ধেক অন্তত নিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের যত্নে কাজে লাগাও, তোমার মস্তিষ্ক। একটা বয়সের পর রূপের আলো স্তিমিত হয়ে আসে, তার চেয়ে মগজের পরিচর্যা করো, সারাজীবন কাজে দিবে

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৬:৩৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: এসব ভাল কথা আজকাল অচল!

২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:১৮

নতুন ভাবুক বলেছেন: একটা বয়সের পর রূপের আলো স্তিমিত হয়ে আসে, তার চেয়ে মগজের পরিচর্যা করো, সারাজীবন কাজে দিবে - বাস্তব কথা

৩| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩

এম হাবিব আহসান বলেছেন: এখনই এসব ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার।

৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:১৫

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে সত্যি, আগের চেয়ে মেয়েদের কর্মসংস্থান বেড়েছে সত্যি কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে তারা আজও প্রাচীনকালের অশিক্ষিত, অজ্ঞ, পরগাছা, শিকড়বিহীন মেয়েদের মতই আচরণ করে।

একদম হক কথা। B:-/

৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩৫

নতুন বলেছেন: লোক দেখানোর ব্যাপারটা এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে...

মনের থেকে কিছু করার চেয়ে লোক দেখানো যখন বড় হয়ে যায় তার থেকে ভাল কিছু আসে না...

৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

সোহানী বলেছেন: পোস্টের সাথে একমত হলে কিছু ব্যাপারে দ্বিমত পোষন করছি কারন একটি ছেলে বা মেয়ে যখন বিয়ে করে তারা তা জীবনে একবারই করবে সে আশা নিয়েই করে তাই সবাই চায় জমকালো একটা অনুস্ঠান। আর সাজ গোজ বা মেহেদি উৎসবকে ও আমি পজিটিভলি দেখি... জীবনে তো একবা্রই মাত্র সাজবে তাতে ১০/২০ হাজার টাকা কি খুব বেশী?

তবে বিয়ের ব্যাপারে মেয়েরা যেমন এখনো রক্ষনশীল তেমনি খরচের সিংহ ভাগ ও তাদের বাবাদের কপালই জোটে।

৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১০

শায়লা িসিদ্দক বলেছেন: ভালো বলেছেন :)

৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:১৩

সাদাসিধা মানুষ বলেছেন: পারিপার্শিকতা ( সামাাজিক কালচার) এই সমস্যা বাদ দিলে মুল সমস্যাটা হল মেয়েরা তালগাছটা আমার" এর মত বলে জীবনে একবারই তো বিয়ে হবে! তো সেটা ধুমধাম করে করতে হবে। প্রত্যেক মেয়ের স্বপ্নই থাকে
" আমার বিয়েতে আমি রাজকন্যার মত সাজব। অনুষ্ঠান এত বড় হবে,এত জাকজমকপুর্ন হবে, যাতে পৃথিবীর সব মানুষ মনে রাখে এবং আমিও বাকীজীবন বিয়ের কথা গর্ব করে সবার কাছে বলে বেড়াতে পারি।"
/:)

৯| ১২ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫৩

বটপাকুড় বলেছেন: ''মুল সমস্যাটা হল মেয়েরা তালগাছটা আমার" এর মত বলে জীবনে একবারই তো বিয়ে হবে! তো সেটা ধুমধাম করে করতে হবে। প্রত্যেক মেয়ের স্বপ্নই থাকে
" আমার বিয়েতে আমি রাজকন্যার মত সাজব। অনুষ্ঠান এত বড় হবে,এত জাকজমকপুর্ন হবে, যাতে পৃথিবীর সব মানুষ মনে রাখে এবং আমিও বাকীজীবন বিয়ের কথা গর্ব করে সবার কাছে বলে বেড়াতে পারি।"

কঠিন ভাবে সহমত। আমার নিজের চোখে দেখা। অনেক সময় মেয়ে রা তাদের বান্ধবীদের সাথে পাল্লা দিয়ে এই কাজগুলো করে। এমন কি স রকারী মেডিক্যাল থেকে পাস করা মেয়ের বেলায় এই সমস্যা দেখেছি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.