নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিরুদ্ধ চেতনার দ্বারে V for Vendetta

আহমাদ ইবনে আরিফ

নিভৃতচারী নই, পড়ি-লিখি-গান গাই উল্লাসে। ক্ষ্যাপা একটা ভাব আছে পণ্য- ভোক্তা আর অর্থনৈতিক চালবাজির প্রতি। পিশাচ এবং পৈশাচিক যা কিছু আছে সেগুলো ছাড়া সবকিছুকেই বেশ ভালবাসি। সঙ্গীত আমার জ্বালানী, লাল-সবুজ হৃদয়ের রঙ। কিঞ্চিৎ লিখালিখি করি, পেশাদারী- নেশাদারী নয়- কেবল শখের বশেই। কিছু কর্ণিয়া না হয় জানল এই সত্য!

আহমাদ ইবনে আরিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিবিএ এবং বব মার্লি

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:৩০

আমি বহুদিন যাবৎ দেশের বেশ স্বনামধন্য একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে BBA অধ্যয়ন করছি!

এই অধ্যয়নকালে BBA জিনিসটার কিছু মর্মান্তিক বিষয়ে আমার কিছু সহজ হাইপোথিসিস দাঁড় হয়ে গেছে। যেমনঃ,



BBA নামক জিনিসটাতে enterprenuership কেন বিশদভাবে পড়ানো হয়না?

শিক্ষার্থীরাই যদি নিজে দাঁড়িয়ে যাওয়ার মত 'পা' অর্জন করে ফেলে, তাহলে কর্পোরেট দুনিয়ার এতগুলা 'পা' ধুয়ে-মুছে রাখবে কে?

ওদের রাক্ষসের মত এতবড়বড় 'পা' নিজের মাটিতে রাখলে ভূমিধ্বসের প্রবল সম্ভাবনা থাকার দরুণ ওরা কিছু হতভাগা ভূমি বেছে নেয়। সহজবোধ্যতার খাতিরে ঐ ভূমিকে তারা একটা নামও দেয়, 'তৃতীয় বিশ্ব'।

রাক্ষস-সন্তান যখন স্কুলজীবন শুরু করতে না করতে কোডিং শিখে সফটওয়্যার বানানোর সহজাত দক্ষতা লাভের পথে এগুতে থাকে, আমাদের তৃতীয় বিশ্বের সন্তানাদি তখন পাওয়ার বাটন চেপে চেপে, মাউস নাড়িয়ে নাড়িয়ে কম্পিউঁটার চালাতে শিখে। মূলত, তখন থেকেই সে অর্জন করতে থাকে রাক্ষস-সন্তানের অ্যাসিস্ট্যান্ট হওয়ার আদিম-যোগ্যতাটুকু। কর্পোরেট রাক্ষস যখন গোগ্রাসে গিলে ভূমি, জল, আসমান; তখন এগিয়ে যাওয়ার পথটাকে মসৃণ করে দিতে তার দরকার হয় কিছু দাস। যে আকাশসম সুউচ্চস্থানে ওদের দেখি, অত উঁচুতে দাঁড়াতে ভর দেওয়ার জন্য দরকার হয় অসংখ্য কাঁধ। আর,আমরা কপালদোষে কিংবা যোগ্যতাদোষে রাক্ষসকুল-কে তাদের কাংক্ষিত ঐ কাঁধ সাপ্লাই দিই।

ওদের ডিমান্ড=আমাদের সাপ্লাই, এটাই হচ্ছে মূল সমীকরণ!

এজন্যই BBA trend চালু করে যে শিক্ষা আমাদের দেওয়া হচ্ছে তা ইতোমধ্যে সৃষ্ট কোন কিছু চালানোর কিংবা দেখভালের জন্য যোগ্য করে তুলে আমাদের - নিজে কিছু সৃষ্টি করার জন্য নয়।

এধরনের শিক্ষাকে তাই বলা হয়ে থাকে slave education। সব থেকে দুঃখের বিষয় এটা নয় যে, আমরা এই 'slave education' এবং এই রাক্ষুসে ব্যবস্থার নির্মম শিকার! বরং, সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় এটাই, আমরা ভয়ানক এই ব্যবস্থার শিকার হয়েও 'ব্যাপক-সুখী'। বড় বড় কোম্পানীতে মোটা মজুরীর বিনিময়ে 'ভাল চাকুরী' নামের যে কলাটা দেখিয়ে রাক্ষস-শিক্ষা-বঞ্চিত হয়েও কিছু গড়ে ফেলার মত মেধাবী সন্তানগুলোকে টেনে নেওয়া হয়, সেটাই হল এ ব্যবস্থা সচল রাখার সবথেকে বড় কৌশল। ঐ কলার লোভে সন্তানাদি তাই BBA , MBA করতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অতঃপর, রাক্ষসসেবা কিংবা রাক্ষসপূজা......

ঝুলিয়ে রাখা ঐ কলাটার বিষয়ে বলছিলাম। উহার একটা ধর্ম আছে। উহা অধরা। চাকুরী করতে করতে যত প্রমোশন হতে থাকবে ততই ব্যাক্তিসাধারণ ভাববে সে কলার তত কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। একসময় যখন শেষ হবে ওই প্রমোশন-যাত্রা, হায়! কলাটা তখনও ঝুলতে থাকবে একটু উপরেই। রাক্ষুসে এ 'ফাঁদ' যতদিনে ধরা পড়বে, ততদিনে আর নতুন করে কিছু গড়ার সময়-সামর্থ্য কিছুই থাকবেনা, নিতান্ত পগারপার ছাড়া। আর, একটা নিরীহ-অসহায় জাতি যখন এভাবে তড়পাতে থাকবে, রাক্ষস তখন উল্লাসে মাতবে "ফাঁদে পড়িয়া বগা কান্দে" বলে।

এ উল্লাস বন্ধ হওয়া চাই! ফাঁদে না পড়া চাই! তাছাড়া,মূলা-গাজর খেয়ে বাঁচতে শিখলে, কলার লোভে চিৎপটাং হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসারই তো কথা। কলাটাকে ভুলতে হবে আগে, 'মন' নামের অবাস্তব জিনিসটাকে দাসত্বের শৃঙ্খলমুক্ত করতে হবে। আমি মহাজ্ঞানী নই, এতকিছু বুঝিনা। তবে এটুকু ঠিকই বুঝতে পারি, মানসিক দাসত্বে ভুগতে থাকলে পার্থিব মুক্তি আর মিলবেনা।



এসব ভাবতে গিয়ে অনুধাবন করলামঃ

যেদিন থেকে আমি চাকুরীজীবন শুরু করব- যত যাই হোক, সেদিন আমি জীবনের কাছে পুরোপুরিভাবে পরাজিত।

এ বিষয়টাকে অনেকে বাস্তবধর্মী না বলতে পারে। আমি বলব, তোমাদের রাক্ষস-বাস্তবের আমি ধার ধারি না।

#creating employment opportunity should be the leading aim of life in our social context#being a free man is on the contrary of being a corporate-servant#it's fair for a free man to be the boss of his own#



পরিশেষে Bob Marley- এর একটা কথা,

"Emancipate yourselves from mental slavery, cause none but ourselves can free our mind."

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:০৪

এ্যরন বলেছেন: ওদের ডিমান্ড=আমাদের সাপ্লাই, এটাই হচ্ছে মূল সমীকরণ!

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:১৯

আহমাদ ইবনে আরিফ বলেছেন: মূল :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.