নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুখ ও মুখোশ নিয়ের খেলা

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২১

যাব-যাচ্ছি করেও মা হিসেবে খালেদা জিয়ার লন্ডনে বিলম্ব করে যাওয়াটা যেমন ছিল অস্বাভাবিক; ঠিক তেমনি এখন বিএনপি-জামায়াতের ২০ দলীয় জোটের নেত্রী হয়ে আসব-আসছি করে দেশে ফিরে না আসাটাও অস্বাভাবিক। পক্ষে-বিপক্ষে যার যে অবস্থানই হোক না কেন, এটা বোধকরি সবাই স্বীকার করবেন যে, খালেদা জিয়ার পারিবারিক অবস্থান ও অবস্থা বেশ বেদনাদায়ক। স্বামী নিহত হয়েছেন মুখ ও মুখোশ পরে সহযোগীদের সঙ্গে খেলতে খেলতে সহযোগীদেরই বুলেটে ঝাঁজরা হয়ে। তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে স্বামী হত্যার ‘বিচার হয় নাই’ কথাটা বলেও বিচার করতে পারেননি। সাধারণ স্বাভাবিক একজন নাগরিক প্রিয়জনের বিচার চায় এবং ব্যতিক্রম বাদে বিচারও পায়। সেই স্বাভাবিকতা তিনি দেখাতে পারেননি। তাই বিষয়টা একদিকে যেমন বেদনাদায়ক, অপরদিকে তেমনি অস্বাভাবিক ও রহস্যময়। দুর্নীতিসহ বিভিন্ন মামলায় দুই পুত্রের সপরিবারে বিদেশে যেতে বাধ্য হওয়াটাও অস্বাভাবিক ও বেদনাদায়ক। ছোট ছেলে অকালে মারা গেল। মামলার ভয়ে বড় ছেলে দেশে আসতে পারল না। তিনি যেতে পারতেন লন্ডনে; কিন্তু যেতে করলেন অহেতুক টালবাহানা, যা অস্বাভাবিক ও রহস্যময়। পারিবারিক জীবনে এমন সব ঘটনা দিয়ে ঘেরা জিয়া পতœী ও তারেক-কোকোর মা সত্তর বছর বয়েসী খালেদা জিয়া।

একইভাবে রাজনৈতিক জীবনকেও তিনি অস্বাভাবিক বেদনাদায়ক ও রহস্যময় করে ফেলেছেন কিংবা করে রেখেছেন। এটা বলা যাবে এ কারণে যে, বাস্তবতা হলো নির্বাচন করলে তিনি প্রধানমন্ত্রী কিংবা বিরোধীদলীয় নেত্রী যে হবেন, এটা শতভাগ নিশ্চিত। কিন্তু তিনি গণতন্ত্রের চিরাচরিত কতক প্রথা, যা সুযোগ হিসেবে চিরস্বীকৃত, সেই সব পথ-পন্থা গ্রহণ করলেন না। সংসদের ভেতরে ও বাইরে আন্দোলনের সুযোগ, টেলিফোনে সংলাপের জন্য আমন্ত্রণের সুযোগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রভৃতি অবলীলায় প্রত্যাখ্যান করলেন। আর আন্দোলন-সংগ্রাম করার সময়ে নেতাকে থাকতে-চলতে-ফিরতে হয় স্বাভাবিকতা দেখিয়ে, কারণ এতেই মানুষ হয় অনুপ্রাণিত। কিন্তু তিনি ওই পথে না গিয়ে অফিসে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে সেখানে উঠলেন।

প্রকৃত বিচারে গণআস্থাসম্পন্ন একটি দলের নেতা হিসেবে ধৈর্য ধরে সুকৌশলী হয়ে জনগণকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সর্বোচ্চ পর্যায় হরতাল-অবরোধে নিয়ে যেতে তিনি প্রচেষ্টা নিলেন না। ভয়তাল আর নাইরোধের দিকে দেশকে ঠেলে দিয়ে ভাড়া করা মাস্তান-ক্যাডার ও গোপন মার্কেট থেকে কেনা পেট্রলবোমা প্রভৃতি নিয়ে যুদ্ধে নামলেন। বিফল হচ্ছে দেখেও দিনের পর দিন গোপন স্থান থেকে বিবৃতি পাঠিয়ে নেতাকর্মী ও জনগণকে মাঠে নামানোর প্রচেষ্টা নেলেন। চার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিলেন ঠিকই, কিন্তু কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারার আগে হঠাৎ করেই সরে দাঁড়ালেন। এমন আরো কত কি ঘটনা। সবশেষে লন্ডনে গিয়ে দেড় মাস অপ্রকাশ্য থেকে গত ১ নভেম্বর রোববার প্রকাশ্য সভায় এসে বক্তৃতা দিলেন। যা বললেন, তা আরো অস্বাভাবিক ও রহস্যময়। দুই বড় দলের এক দলের নেতার গতিবিধি ও কথাবার্তা প্রভৃতি সব দিক থেকে যদি এরকম হয়, তবে দেশবাসীর জন্য তা কতটা অশনি সংকেত, তা কি কল্পনা করা চলে!

নেত্রী খালেদা জিয়া এটা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন যে, এত দীর্ঘ সময় লন্ডনে থাকাটা অস্বাভাবিক ও রহস্যময় বিধায় তিনি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন কেবল নেতাকর্মীদের কাছে নয়, দেশবাসীর কাছেও। তাই বলেছেন, ‘চিকিৎসা ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে’ তিনি লন্ডনে এসেছেন। ‘পরিবারের লোকজন তাকে আরো কিছু দিন রেখে দিতে চায়।.. আপনারা জানেন দেশের কি অবস্থা। সেজন্য আমাকে যেতেই হবে।’ তিনি ‘বেশ সুস্থ ও ভালো আছেন’ বলেও জানান। প্রসঙ্গত পুত্র তারেক রহমান কেবল নেত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলেই নয়, বিএনপির দুই নন্বর নেতা, জামায়াত ও কথিত তালেবানপন্থীদের নিয়ে জোট গঠনের প্রধান কারিগর ও স্বপ্নদ্রষ্টা, পরিচালকও বটে। তাই কেবল পারিবারিক কারণে তারেক রহমান মাকে লন্ডনে রেখে দিতে চায়, বিষয়টা একেবারেই অস্বাভাবিক ও রহস্যময়। আর ‘আমাকে যেতেই হবে’ কথাটা বলা হচ্ছে কেন? এই কথা থেকে স্বাভাবিকভাবেই মনে হতে পারে, স্বেচ্ছা নির্বাসন বিষয়টা ইতোমধ্যে বিবেচনায় এসেছে। কিন্তু উল্লিখিত সব অস্বাভাবিক ও রহস্যময় আচরণ অবস্থান ও কথাবার্তা যদি বিবেচনায় নেয়া যায়, তবে থলের ভেতরে বিড়াল যে আছে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না।

পাঠকরা স্মরণ করুন, আর্মি ও নিরপেক্ষ দাবিদার সুশীল সমাজ ব্যাকড মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের কথা! যে খালেদা জিয়া ছেলে-বৌ-নাতিদের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটবে জেনেও বিদেশে যেতে রাজি হননি, সেই খালেদা জিয়াই এখন পরিবারের কারণ সামনে এনে লন্ডনে থাকতে চাইছেন। এদিকে দেশে জনগণ এবং এমনকি দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে তিনি কি আদৌ আসবেন? ‘মাইনাস ওয়ান’ কি হয়ে গেল? এসব প্রশ্ন থাকলেও কোনো হিসাবেই ন্যূনতমভাবেও মনে করার কোনো কারণ নেই, তিনি আসবেন না। মাইনাস কিংবা প্লাস কারো ইচ্ছা অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে না, করে জনগণের ওপর। দেশে থাকলেও কেউ ‘মাইনাস’ হতে পারেন। যেমন অতীতে অনেক বড় বড় নেতা হয়েছেন। আবার নির্বাসনে থেকেও বিজয়ীর বেশে ফিরতে পারেন। পরিস্থিতি বিশ্লেষণে মনে হচ্ছে, আশু বিজয় তিনি চাইছেন এবং বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরতে তিনি অতি আগ্রহী। এই চাওয়ার মধ্যেই লুকায়িত রয়েছে বর্তমানে দেশের সব অস্বাভাবিকতা ও রহস্যময়তা।

এটাই তো বাস্তব সত্য যে, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে লন্ডনে বসে তিনি রাজনীতির বিষয়ে যেসব বক্তব্য রাখছেন, তা বিদ্যমান বাস্তবতায় আদায় কিংবা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। উল্লিখিত সভার বক্তৃতায় তিনি মূলত চারটি দিক তুলে ধরেছেন।

এক. বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ধ্বংস নয়, গড়ার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। সব কিছু ভুলে যেতে হবে। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সবাইকে নামতে হবে। তিনি জাতীয় সংলাপের আহ্বানও জানিয়েছেন।

দুই. জঙ্গির কথা বলে শেখ হাসিনা বিদেশিদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন। বোঝাতে চাইছেন যে তিনি ক্ষমতায় না থাকলে বাংলাদেশে জঙ্গির উত্থান ঘটবে।

তিন. সব কিছুর জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী। শেখ হাসিনা ও এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

চার. নির্বাচনে অংশ না নেয়াসহ সব সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। অংশগ্রহণ করলে সরকার বৈধতা পেয়ে যেত।

একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী সাকা ও মুজাহিদের রিভিউ ১৭ নভেম্বর নিয়ে যখন সারা দেশ আলোড়িত এবং নিবন্ধনহীন দল জামায়াতের সঙ্গে ঐক্য নিয়ে যখন বিএনপির নিজ ঘর থেকেই প্রশ্ন উঠছে, তখন ওই সব প্রশ্নে নেত্রী খালেদা জিয়া নীরব। এদিকে মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন পুরনো ভাঙা রেকর্ডের মতো বলে যাচ্ছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তারা চায়। তবে তা হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের। জামায়াতকে জোটে রেখে এই অবস্থান যে বর্তমান বিচার ও শাস্তি প্রদানের বিরোধিতা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অর্থাৎ এই ক্ষেত্রেও রাজনীতি করতে বিএনপি দ্বিমুখী কৌশল অব্যাহত রেখেছে। এভাবে মুখ ও মুখোশের অস্বাভাবিক ও রহস্যময় রাজনীতি কিন্তু সব ক্ষেত্রেই তিনি করে চলেছেন। একদিকে শেখ হাসিনাকে উগ্র ভাষায় দায়ী করছেন আর অন্যদিকে জাতীয় ঐক্য ও সংলাপের কথা বলছেন। বলুন তো পাঠকরা মুখ ও মুখোশের খেলা মানুষ খেলে কখন? এটা ভাবনায় আনলেই বিজয়ীর বেশে ফেরার দিকটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে যাবে।

প্রবাদ বলে, শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না। পেটের কথা কোনো না কোনোভাবে মুখে প্রকাশ পাবেই। তিনি যখন উল্লিখিতভাবে জঙ্গি উত্থান সম্পর্কে বলে চলেছেন এবং দেশের মানুষ নয়, বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়াটাকেই উদ্দেশ্য সাধনের পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছেন; তখন মুখ ও মুখোশের খেলা বিপজ্জনক বলে বিবেচিত হতে বাধ্য। ইতালীয় নাগরিক তাবেলা হত্যায় বিএনপির নেতারা যখন ধৃত অপরাধীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসামি হন ও দেশ থেকে পলায়ন করেন এবং পাকিস্তানিসহ জঙ্গি বিভিন্ন গ্রুপের কার্যকলাপ প্রকাশ পায় ও গ্রেপ্তার হয়; তখন অস্বাভাবিকতা ও রহস্যময়তা আরো ঘনীভূত রূপে প্রকাশ পায়। প্রকৃত বিচারে গণতান্ত্রিক ধারায় আন্দোলনের ভেতর দিয়ে খালেদা জিয়ার যেহেতু বিজয়ী হওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই, তখন সুস্পষ্ট হয়ে যায় কোন দিক থেকে কোন কৌশল কার্যকরী করে তিনি বিজয়ী হতে চাইছেন। বিদেশি প্রভু সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন রূপে তিনি যেভাবে খেলে চলেছেন, তা আগুন নিয়ে খেলারই সমতুল্য।

বর্তমানে অন্যদিক থেকে একটি বিষয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণে অনেকটাই অস্বাভাবিক ও রহস্যময় ঠেকছে। এই মাসেই মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে দুবার বাংলাদেশ সফর করে গেলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম ই টড। সফর শেষে বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে দুই দেশ একই দৃষ্টিভঙ্গি ও লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। অংশীদারিত্বের ফলে যা অর্জিত হয়েছে তাতে আমি গর্বিত এবং আত্মবিশ্বাসী। তবে আমরা আজ যে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি তা আমরা একত্রে মোকাবেলা করব। ভবিষ্যৎ সম্পর্ক অনেক প্রতিশ্রæতিপূর্ণ।’ এদিকে ওই সফরকে কেন্দ্র করে মার্কিন দূতাবাস থেকে জানানো হয়েছে গণতন্ত্রের অগ্রসরতা, মানবাধিকার, স্থিতিশীলতা, সন্ত্রাস প্রতিরোধ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে তিনি পারদর্শী এবং কম্বোডিয়া ও কাবুলে কাজ করে সাফল্য পেয়েছেন। দুবার সফর, সফরকারীর ব্যক্তিগত পরিচিত প্রচার ও সফরকারীর বিবৃতি প্রভৃতি থেকে মনে এমন ধারণা আসে যে, মূলত চরমপন্থার মূল উৎপাটন ও বাণিজ্য-বিনিয়োগই এই সফরের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য। তবে চরমপন্থা বিষয়ে অর্জনের জন্য ‘গর্বিত’ হলেও দেশটি রেডএলার্ড এখনো তুলে নিয়েছে কিনা তা জানা যাচ্ছে না।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন যে, সরকারবিরোধী দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। চক্রান্তকারীদের বহু পরিকল্পনা আছে। তারা আরো বেশিদূর যেতে চায়। তিনি আরো বলেছেন, বাংলাদেশকে কোনোমতে অনিরাপদ ঘোষণা ও আইএস আছে স্বীকার করলেই তারা হামলে পড়তে পারে। প্রচণ্ড চাপ আছে, কেন আইএস স্বীকার করি না। প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোলামেলা সব বলেন। এতে অনেকে বিরক্ত কিংবা শঙ্কাগ্রস্ত হন। কিন্তু একটু গভীরে গিয়ে ভাবলেই বুঝা যাবে, যার হারাবার কিছু নেই, তাকে মুখ ও মুখোশ পরতে হয় না। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে সোজাসাপ্টা সব কথা বলেছেন। কথাগুলো বিদেশি কাকে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তা দেশবাসীর কাছে সুস্পষ্ট। আর কাদের মোল্লার ফাঁসির আগে কেরি সাহেব ফোন করার ভেতর দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, চাপা কারা কিভাবে কত প্রকারে দিতে পারে। এই সঙ্গে চলছে এমিন্যান্টির ন্যাস্টি খেলা।

এদিকে দেশি ও বিদেশি মহল বিশেষের মুখ ও মুখোশ নিয়ে চাপের খেলার সঙ্গে আরেক চাপ যুক্ত হয়েছে সরকারের ওপরে। তা হচ্ছে জনগণের ধর্মীয় অনুভূতি বনাম সীমানাহীন মুক্তচিন্তার সমর্থকদের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের চাপ। এই চাপের মুখে খোলামেলা ও সুস্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেছেন, ‘ধর্ম নিয়ে বিকৃত করে লিখলে, নোংরা লেখা লিখলে তা আমার সেন্টিমেন্টে লাগবে। হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সব ধর্মের বিরুদ্ধে লিখলেও তাদের লাগবে। তাই লেখার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কথা যেন লেখা বা বলা না হয়। কেউ যদি ধর্ম মানতে না চান সেটা তার ব্যাপার। তার বিশ্বাস নিয়ে সে থাকবে। কিন্তু অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিতে পারবে না। এটাই হচ্ছে মানবিক গুণ। বিকৃত লেখা কোনো মানবিকতা নয়।’ তিনি বলেন, ‘আমি খোলামেলা কথা বলি। আমি সব ধর্মকে সম্মান করি। কিন্তু আমি আমার ধর্ম পালন করি।’ তিনি ‘জীবনের পরোয়া’ করেননি এবং করবেন না কথার পুনরুক্তি করেছেন। কিন্তু কেবল তো এই চাপ নয়, বারবার হত্যা প্রচেষ্টা বিশেষভাবে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ভয়াবহ অভিজ্ঞতাও এই চাপের সঙ্গে নিঃসন্দেহে যুক্ত হবে।

সর্বোপরি পঁচাত্তরে সপরিবারে কেবল নয়, সহযোগী চার নেতাকে হত্যা করে নেতৃত্বশূন্য করার বিষয়টাও এখানে বোঝার ওপরে শাকের আঁটি নয়, বোঝার ওপরে বোঝা বলে বিবেচিত হতে বাধ্য। উল্লিখিত সব চাপ নিয়ে যাকে অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও জনগণের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নের লক্ষাভিমুখী কাজ অগ্রসর করতে হয়, কেবল তিনিই বুঝতে পারেন কোন বিপদসংকুল পথ তাকে পাড়ি দিতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঐক্যবদ্ধ না হলে ভয়ঙ্কর কিছু একটা ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। এই আশঙ্কা অমূলক নয়। দেশবাসী চায় খালেদা জিয়া মুখোশ খুলে কেবল মুখ নিয়ে দেশে ফিরে আসুন। নতুন আগুন নিয়ে খেলার ভেতর দিয়ে নিজের মুখই পুড়বে। তিনি যদি মুখোশ খুলে দেশে, ফিরেন, তবে দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে পর্যবেক্ষণে অনুমিত হয়। খালেদা জিয়াকে এটা বুঝতে হবে যে, বিজয়ী হতে হলে জনগণকে নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিজয়ী হয়েই সংলাপে সরকারি জোটকে কেবল বাধ্য করা যাবে। অন্য কোনো পথ অজানা-অস্বাভাবিক-রহস্যময় পথ। যে পথে আলোর রেখা পাওয়া যাবে না, কেবল অন্ধকার নেত্রীকে ঘিরে ধরবে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩৯

প্রবালরক বলেছেন: রহস্যসময় একচোখা সুশীল বয়ান।

২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৩

রাফা বলেছেন: উনি শর্টকার্টে বিশ্বাসী ।বাংলাদেশের মানুষের উপর আস্থা নেই খা.জি.-র তাই বিদেশি নিয়োগ দিয়েছে।যদি সেই শক্তিতে ক্ষমতায় আসা যায়।আন্দোলনের তরিঘড়ি ছিলো রাজাকারদের রক্ষা করার জন্যই।কিন্তু দুঃখের বিষয় সাধারন মানুষ তার সেই স্বপ্ন পূরণ না করাতেই পুড়িয়ে হত্যা করা হলো নিরিহ জনগণকে।
যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে পরিস্কার অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে মা ও ছেলের।সা.কা.-নামক জানোয়ারটার সমস্ত অপরাধ প্রমান হওয়ার পর সাস্তি হয়েছে ফাসি-অথচ এখনও নিতী নির্ধারনি কমিটির সদস্য বিএনপির।এরপরও যদি তাল বাহানার কিছু আছে বলে মনে হয়না।শুধু একটু উচ্চারণ করে বলে দিলেই হয় আমরা যুদ্ধাপরাধি নয় মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার করবো ক্ষমতায় এলে।

৩| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আপনি বেশি বুঝে ফেলেছেন । X((

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.