নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্তানি বর্বরতা’র আরেকটি জ্বলন্ত উদাহরণ

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২০

বুকের ওপর সোনালি বর্ডার দেওয়া সবুজ রঙের হাতাকাটা ছোট্ট একটি জামা। ১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল এই জামাটিই পরে ছিল চার মাসের শিশু রেহেনা। রেহানার কোনো ছবি নেই, থেকে গেছে শুধু জামাটি। এটি এখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত সাক্ষী।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে লোহার প্যাঁচানো সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠলে শুরুতে চার নম্বর কক্ষ। এখানেই রাখা রেহেনার জামাটি। দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মৃতিচিহ্ন দেখতে দেখতে এই একটি নিদর্শনের সামনে এসে থমকে যান। অনেকের চোখের পানি আটকে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
খুলনার দিঘলিয়া থানার সেনহাটি গ্রামের ঘটনা। বাড়ির পাশের জঙ্গলে মেয়েকে নিয়ে আরও অনেকের সঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন মা। রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনীর সেনারা তাদের সেখান থেকে ধরে আনে। মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেয় রেহেনাকে। আছড়ে ফেলে বাড়ির উঠানে। তারপর বুটের তলায় পিষে মেরে ফেলে একরত্তি শিশুটিকে। কারণ, রেহানার বাবা আবদুস সালাম গেছেন মুক্তিযুদ্ধে।
রক্তে-মাংসে মাখামাখি হয়ে গিয়েছিল সেই জামা। পরে এই জামা ধুয়ে পরিষ্কার করে ছবির মতো করে কাচের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রেখেছিলেন বাবা।
মার্চের শুরুতেই যুদ্ধে গিয়েছিলেন আবদুস সালাম। সম্মুখ সমরে ছিলেন ৯ নম্বর সেক্টরে। ঘটনার দিন রাজাকাররা পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে এসেছিল তাঁর বাড়িতে। রাজাকাররাই লুকিয়ে থাকা তাঁর বাড়ির লোকদের ধরে আনে ঘাতকদের সামনে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের গ্যালারি পরিদর্শক লিনা সরকার জানান, অনেকেই এখানে এসে থমকে দাঁড়ান। ঘটনার বিবরণ পড়ে ও ভিডিও ক্লিপে আবদুস সালামের কথা শুনে তাঁরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
পাশেই পাঁচ নম্বর কক্ষটিতে আছে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গোলাবারুদ। সেখানে আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি তির-ধনুক, দা, ছুরি এসবও রয়েছে। এই ঘরের পশ্চিম পাশের দেয়ালে আটকানো একটি লম্বা দা। ‘সকিনার দা’ নামে বিখ্যাত। করিমগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা (যিনি ঘটকী বেগম নামে অধিক পরিচিত) এই দা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন যুদ্ধে। দায়ের পাশে লেখা তথ্য জানাচ্ছে সকিনাকে এই দাটি দিয়েছিলেন তাঁর কোম্পানি কমান্ডার আবদুল মুতালিব মিয়া। ঘাতক বাহিনীর দোসর পাঁচ রাজাকারকে এই দা দিয়ে কুপিয়েছিলেন সকিনা।
শেষ অর্থাৎ ছয় নম্বর কক্ষে আছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিদর্শন। ঢাকার মুসলিম বাজার বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার করা গণহত্যার শিকার বাঙালির করোটি-কঙ্কাল, হানাদারদের আত্মসমর্পণের নিদর্শন।
রেহেনার জামা কেমন করে সংগ্রহ হলো, তা বললেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক: ‘জাদুঘরের কাজ শুরু করার আগে আমরা নিদর্শন সংগ্রহের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ করেছিলাম। খুলনায় ১৯৯৬ সালে এমনি এক সমাবেশে এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম। সমাবেশের পর তিনি প্রায় ২৫ বছর বুকে আগলে রাখা মেয়ের জামাটি আমাদের হাতে তুলে দেন। সেদিন আমরা খুবই আপ্লুত হয়েছিলাম। এটি আমাদের প্রথম দিকের সংগ্রহ। এখানে যে গণহত্যা চালানো হয়েছিল, অবোধ শিশুরা পর্যন্ত যে সেই বর্বরতা থেকে রেহাই পায়নি, এই জামা তার বড় প্রমাণ।’ Click This Link

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩২

আমি মুক্তবাতাস বলেছেন: আহ! ভাই, মনে আঁচ কাটল!

২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১৪

আহমেদ রশীদ বলেছেন: হুমম! বড় কষ্ট লাগে। তারা মুসলমান হয়ে আরেক মুসলমান ভাইকে এভাবে কষ্ট দিতে একটুও কি মায়া লেগেছিল না!!!!

৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:২৪

লেখোয়াড়. বলেছেন:
আমার মনে হয়না বাংলাদেশে বেশিভাগ মানুষ এসব নিয়ে চিন্তা করে।
যদি চিন্তা করতো, যদি এই বিষয়গুলো এদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হতো তো এদশে অনেক ব্যক্তি ও দল রাজনীতি করতে পারত না।

আর একটি কথা..............তারা মুসলমান হয়ে আরেক মুসলমান ভাইকে এভাবে কষ্ট দিতে............... সমস্যা এখানেও।

ধন্যবাদ।

৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৫

রানার ব্লগ বলেছেন: যতোই অস্বীকার করুক, ইতিহাস কে মিথ্যা প্রমান করার ক্ষমতা জানওার গুলার নাই। বিচার হবে অবশ্যই হবে। বাংলাদেশ তার পাওনা অবশ্যই বুঝে নিবে। আল্লাহ ও তার জমিন সাক্ষী।

৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৪

আহমেদ রশীদ বলেছেন: কিন্তু কোন যুদ্ধাপরাধী ঘোলাজলের আড়ালে যেন পার পেয়ে না যায় সে বিষয়েও খেয়াল করতে হবে। অনেকে সরকারী দলে যোগ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। আর যারা পলাতক সেইসব জানোয়ারদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা কার্যকর করা বড় জরুরী।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.