নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলা আসছে রেলওয়ের আওতায়

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১১

দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলা রেলওয়ের আওতায় আনার জন্য পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ করা হচ্ছে। ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চূড়ান্ত করা হয়েছে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্প। দুটি পর্যায়ে নির্মাণ করা হবে ১৬৮ কিলোমিটারের এই রেলপথ। প্রথম পর্যায় রাজধানীর গে-ারিয়া থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার ও দ্বিতীয় পর্যায় ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পেই বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীসহ মোট ছোট-বড় ১২৫টি সেতু নির্মিত হবে। এছাড়া এই রেলপথে তিনটি ফ্লাইওভারসহ ৪০ পয়েন্টে নির্মাণ করা হবে লেভেল ক্রসিং ও আন্ডারপাস। তাই আগামী জুনের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হচ্ছে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।জানা গেছে, দুই পর্যায়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা ও ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করেছে রেলওয়ে। ১৬৮ কিলোমিটার রেলপথের বিস্তারিত নকশা প্রণয়নও সম্পন্ন হয়েছে। জিটুজি ভিত্তিতে প্রকল্পের দুটি অংশই বাস্তবায়নে আগ্রহী চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। এরই মধ্যে প্রকল্প ব্যয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দরকষাকষি সম্পন্ন করেছে রেলওয়ে। শীঘ্রই তা অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠানো হবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মূল রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হবে ২৫ হাজার ৯৬০ কোটিটাকা। প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে ১৭ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। এছাড়া ৭ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে নিজস্ব অর্থায়নে। এজন্য চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে। আর বাকি অর্থ জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন, পরামর্শক ও অন্য খাতে ব্যয় করা হবে। এ অর্থ সরকারি তহবিল থেকে সরবরাহ করা হবে। শীঘ্রই এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হবে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।এ ব্যাপারে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব ফিরোজ সালাহউদ্দীন সংবাদকে বলেন, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগের কাজ এগিয়ে চলছে। দুই পর্যায়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা ও ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করা হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত করা হচ্ছে। রেলপথটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাই আশা করা যাচ্ছে আগামী বছরের জুনের মধ্যে রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে।রেলওয়ের তথ্য মতে, প্রথম পর্যায়ে রাজধানীর গে-ারিয়া থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এই রেলপথে মেইন লাইন হবে ৮২ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এছাড়া লুপ লাইন হবে ২৭ কিলোমিটার। প্রথম পর্যায় ১২৫টি সেতু নির্মাণ করা হবে। বুড়িগঙ্গা এবং ধলেশ্বরী নদীতে নৌ-চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ক্লিয়ারেন্স দেয়ার লক্ষ্যে গে-ারিয়ার পরে ১৬ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড রেলপথ এবং দু'প্রান্তে ২ দশমিক ২০ কিলোমিটার র‌্যাম্প নির্মাণসহ মোট ১৯ কিলোমিটার এলিভেটেড রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া পদ্মা সেতুর দু'পাশে সেতু কর্তৃপক্ষ ০ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ করবে। নবনির্মিত রেলপথ এবং সকড়পথে পৃথক লেভেল করার লক্ষ্যে ৪০টি আন্ডারপাস সেতু এবং ৩টি ওভারপাস নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় বুড়িগঙ্গা, ধলেরশ্বরীসহ চারটি বড় ও ৫৬টি ছোট রেল সেতু নির্মাণ করতে হবে প্রথম পর্যায়ে। এছাড়া মোট ৩৬০ হেক্টর জমির মধ্যে ৮৬ দশমিক ২৭ হেক্টর সড়ক ও জনপথ থেকে, ১৮ দশমিক ৬৯ হেক্টর সেতু কর্তৃপক্ষ এবং ১০ দশমিক ২৭ হেক্টর সরকারি জলমহাল থেকে পাওয়া যাবে। অবশিষ্ট ২৪৫ দশমিক ৭২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। প্রথম পর্যায়ে স্টেশন থাকবে ৭টি। এগুলো হলো-কেরানীগঞ্জ, নিমতলা, শ্রীনগর, মাওয়া, জাজিরা, শিবচর ও ভাঙ্গা। পাশাপাশি গে-ারিয়া স্টেশন ভবন রি-মডেলিং (আধুনিক) ও ঢাকা স্টেশন ইয়ার্ড রিমডেলিং করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায় ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ৯৬ রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ২৭ কিলোমিটার থাকবে লুপ লাইন। ভাঙ্গা-যশোর অংশে জমি লাগবে ২৮৬ একর। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছোট-বড় ৬৫ সেতু নির্মাণ করতে হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে নতুন আটটি রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এগুলো হলো- ভাঙ্গা জংশন, নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নরাইল, জামদিয়া ও পদ্মাবিল।বহুমুখী এ সেতুর ছয় কিলোমিটার রেল সংযোগ অংশটি হবে আধুনিক প্রযুক্তির পাথরবিহীন রেলপথ (ব্যালাস্ট লেস ট্র্যাক)। পাশাপাশি ঢাকা-মাওয়া অংশে ২২ কিলোমিটারও হবে পাথরবিহীন। ঢাকা-ভাঙ্গা-যশোর রেলপথ প্রকল্পের আওতায় মোট ২৮ কিলোমিটার অংশে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করবে রেলওয়ে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এ রেলপথ নির্মাণে ব্যয় কিছুটা বেশি হলেও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে কংক্রিটের ঢালাই করা ভিত্তির (বেইজ) ওপর রেলপাত বসানো হবে। এ ধরনের রেলপথের আয়ুষ্কালও অনেক বেশি। মূলত উচ্চগতির ট্রেন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন মেট্রো ও টানেলে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ার স্ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল গত মাসে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বলে রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।এ ব্যাপারে রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (প্রকল্প) সাগরকৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, বহুদিন ধরেই রেলওয়ে পাথরবিহীন রেলপথ প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে। পদ্মা সেতু দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প। তাই এ সেতুতে প্রথম নতুন প্রযুক্তিটি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-মাওয়া অংশে উড়াল (এলিভেটেড) রেলপথ হবে প্রায় ২২ কিলোমিটার। সে অংশেও পাথরবিহীন প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে।রেলওয়ের তথ্য মতে, পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করতে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ দশমিক ৩২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ৩২ কিলোমিটার, সেতুর ওপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার ও সেতু থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এ রেলপথে ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত আরও প্রায় ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এটি যশোর-খুলনা রেলপথের সঙ্গে যুক্ত হবে। প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে।রেলওয়ে মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা-যশোর পর্যন্ত নতুন রেললাইন স্থাপনের কাজ রেলওয়ের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে রেলপথ মন্ত্রণালয় তথা সংশ্লিষ্টরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সড়কযানের পাশাপাশি ট্রেনও চলবে। একই দিন থেকে সড়কযান ও ট্রেন চলাচল করবে পদ্মা সেতু দিয়ে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সারাদেশের সঙ্গে নতুন করে আরও ২১টি জেলা সংযোগ হবে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে। প্রক্রিয়াটি দ্রুত এগিয়ে নিতে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তাগিদ দিয়েছেন। তাই শীঘ্রই প্রকল্পটি অনুমোদনে কার্যক্রম শুরু করা হবে।এ ব্যাপারে রেলপথমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক জানান, বর্তমান সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত রেললিংক নির্মাণ ইতিহাস হয়ে থাকবে। রেলওয়েতে চলমান ৪৬টি উন্নয়ন প্রকল্পসহ নতুন এ রেললিংক প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে রেলওয়েতে আমূল পরিবর্তন আসবে। ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি পদ্মা সেতুর সংশোধিত প্রকল্পে রেলপথ সেতুর নির্মাণের নকশা চূড়ান্ত করা হয়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

গোধুলী রঙ বলেছেন: সাতক্ষীরা পর্যন্ত যায় না ক্যান??

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৫৫

আহমেদ রশীদ বলেছেন: অপেক্ষা এবং ধৈর্য্য ধরুন সব হবে ইনশাল্লাহ!!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.