নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্তানের নব্য ষড়যন্ত্র

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:২২

ফরিনা আরশাদ, ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের গোয়েন্দা কর্মকর্তা ফারিনা আরশাদ, চম্পট দিয়েছেন ঢাকা থেকে। তার ছবি ছাপা হয়েছে পত্রিকায়। খুবসুরত তন্বী-তরুণী। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে আছেন বাংলাদেশের দফারফা করার জন্য। নাকি ফারিনাকে আইএস দায়িত্ব দিয়েছিল বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলে, পতন ঘটিয়ে বিএনপি জামায়াতকে ক্ষমতায় বসাতে; সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে পাকিস্তান যে আমাদের পিছু ছাড়েনি, লেগেই আছে, সেটা ভালো ভাবে প্রমাণিত। বিএনপি জামায়াতকে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আনতে পারলে পাকিস্তান বর্তে যায়, যেন বেহেস্ত হাতে পায়। সেই কাজে পাঠিয়েছিলো ফারিনা আরশাদকে পাকিস্তান। কিন্তু ফারিনা শেখ হাসিনার দৃঢ়তা সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন না বলে এমন দুঃস্বপ্ন দেখেছিলেন।

ফারিনা ঢাকায় জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটানোর নীলনকশা প্রণয়ন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ক‚টনৈতিক তৎপরতার আড়ালে ওই পাকি নারী জালমুদ্রা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া এবং বাংলাদেশ ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক নষ্ট করার পরকল্পনায় লিপ্ত ছিলেন। এমন গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর ফারিনার চানতারা পতাকাওয়ালা সরকার তাকে রাতের অন্ধকারে ফেরৎ নিয়ে গেছে।

ফারিনা কী ভেবেছিলেন, ‘পাকিস্তানের ভাবনা কি ভাই পাকিস্তানের ভাবনা কি, বিএনপি জামায়াত থাকতে আবার পাকিস্তানের ভাবনা কি?’ ফারিনার সে ভাবনার গোড়ে বালি হলো। তাকে ফিরে যেতে হলো স্বদেশে, লুকিয়ে, পালিয়ে। ফারিনার পলায়নকে তাই পাকিস্তানেরই পলায়ন বলা চলে।

এই দৃষ্টান্ত আরো আছে, ‘চলতি বছরের জানুয়ারিতে এমনি অপরাধে জড়িত থাকায় মাযহার খান নামে ঢাকায় পাকিস্তান হাই কমিশনের আরেক গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে, পাকিস্তান সরকার ফেরত নিয়েছে।’ শেখ হাসিনা যখন ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসেন, তখন পাকিস্তানের চাকাস্থ হাইকমিশনার এরফান রাজা বাংলাদেশ সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করে ছিলেন। শেখ হাসিনা কালবিলম্ব না করে ওই কুটনীতিককে পাকভূমিতে ফেরৎ যেতে বাধ্য করেছিলেন। পাকিস্তানের আইএসআই তারেক জিয়ার হাত শক্তিশালী করছে সব ধরনের সাহায্য দিয়ে। সাধারণ মানুষেরও প্রশ্ন, তারেকের এত খরচ কারা চালায়? ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে বিএনপি সে সময়ে বিতর্কিত ভূমিকা রাখা তিন বিচারপতিকে পাকিস্তানের আইএআইয়ের টাকায় কিনেছিলেন বলে আমজনতা ধারণা করেন। আমজনতার ধারনার কথাই তুলে ধরলাম আমি। তাদের এটাও বদ্ধমূল ধারণা, পাকিস্তানের শিখণ্ডি হিসেবে খাড়া করার জন্য আইএসআই ঢালাও টাকা দিয়ে যাচ্ছে হাওয়া ভবনের যুবরাজকে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জল্লাদ জিয়াউল হকের ফাঁসির দড়িতে সটান ঝুলে পড়ার আগ পর্যন্ত বাকসর্বস্ব-ঔদ্ধত্যপরায়ন ভুট্টো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছেন। তবে ‘বেজন্মা’ উপাধিটা বোধ করি তার জন্য অপ্রযোজ্য নয়।

বঙ্গবন্ধু সশরীরে ১৯৭৪ সালে লাহোরে গিয়েছিলেন ইসলামী সম্মেলনে যোগদান করতে। এ ব্যাপারে মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ও আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ারি বুমেদিন ভূমিকা রেখেছিলেন। সেই সুবাদে প্রটোকল অনুসারে বঙ্গবন্ধু ভুট্টোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ভুট্টো কি আর এই সুযোগ হাতছাড়া করার বান্দা নাকি। সদল বলে বাংলাদেশ সফরে এলেন। যেন লারকানায় পাখি শিকার করতে এসেছেন। এসেই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। উগ্র, গলাকাটা বামপন্থীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা শেষ করে বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছেন। এজন্যই বেগম মুজিব বঙ্গবন্ধুকে লাহোরে যেতে বারণ করেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে ভুট্টো বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। আনন্দে আত্মহারা হয়ে মোশতাক সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। নানা সাহায্য বোঝাই করে জাহাজ পাঠিয়েছিলেন। এরপর দীর্ঘ ২১ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ একটা আধা পাকিস্তানের আচকান জড়িয়েছিল, সংবিধান ভেঙে পড়েছিল, জাতীয়তাবাদ বিকৃত রূপ ধারণ করেছিল, জাতীয় ¯েøাগান বিপর্যস্ত হয়েছিল, জাতীয় সেনাবাহিনীকে ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল, সা¤প্রদায়িকতাই জাতীয় চেতনা রূপে খাড়া হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথের ছবি দেয়াল থেকে খসে পড়েছিল। ১৯২৯ সালে নজরুলকে কলকাতা এলাবার্ট হলে বাঙালির জাতীয় কবি হিসেবে সম্মান দেয়া হয়েছিল, তা ভুলিয়ে, ছাপিয়ে নজরুলকে জাতীয়তাবাদী, মডারেট মুসলমান বানাবার চেষ্টা করা হয়েছিল, ঢাকার দেয়াল দেখেছি নজরুলের ছবির সঙ্গে জিয়াউর রহমানের ছবি সম্বলিত পোস্টার। অথচ নজরুল ‘মানুষ’ কবিতায় লিখেছেন:

‘তব মসজিদ, মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী।

মোল্লা পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী।’ জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি শাসকদের মত মোল্লা পুরুতের রাজনীতি কায়েম করেছিলেন।

বাঙালি আর বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তান কোনোদিন পেরে উঠেনি। পাকিস্তান চেয়েছিল বাঙালির ভাষা কেড়ে নিতে, বাঙালির হৃদয় থেকে রবীন্দ্রনাথকে কেড়ে নিতে, বাঙালির শিক্ষার অধিকার কেড়ে নিতে, বাঙালির মেরুদণ্ড চুরমার করে দিতে চেয়েছিল, তার অর্থনৈতিক উৎসমূল কেড়ে নিয়ে, বাঙালিকে ফোকলা করে দিতে চেয়েছিল তার চিরায়ত মানবিক-সংস্কৃতি কেড়ে নিয়ে। বাঙালিকে বোবা বানাতে চেয়েছিল, নিরক্ষর জাতি বানাতে চেয়েছিল। ড. মুহম্মদ এনামুল হক বলেছেন যে পাঞ্জাবিরা পূর্ব পাকিস্তানিদের গোর দেবার ষড়যন্ত্র করছিলো। ষাটের দশকের প্রারম্ভেই পাকিস্তানিদের এইসব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়। তারা পরাজিত হয়।

১৯৬৯ সালেই ইসলামাবাদের প্রাসাদ বঙ্গোপসাগরের উত্তাল তরঙ্গে খড়কুটোর মত ভেসে যায়। বাংলাদেশের সিভিল সমাজ ’৬৯ -এ ¯েøাগান দিয়েছে, ‘আইয়ুব মোনায়েম দুই ভাই, এক রশিতে ফাসি চাই।’ ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা কুখ্যাত মোনায়েম খানের লাশ শিয়াল-কুকুর দিয়ে খাইয়েছে। মোনায়েম খানের এই পরিণতি পাকিস্তানেরই পরিণতি। আইয়ুব মোনায়েমের পতন আর পাকিস্তানের পতন একই জিনিস। এরপর ছিল ভুট্টো, তার পতন হলো, এরপরও ছিল বেনজির ভুট্টো তাকেও মৌলবাদিরা হত্যা করেছে। আর আছে কি পাকিস্তানের? বাঙালিদের ভাষা, বাঙালিদের শহীদ মিনার, বাঙালির রবীন্দ্র-নজরুল চিরকাল পাকিস্তানি অপরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাবধানতার প্রতীক হিসেবে দাঁিড়য়ে থাকবে। কেউ এই স্তম্ভগুলোকে গুড়িয়ে দিতে পারবে না। জামায়াত-বিএনপি অনেক চেষ্টা করেছে শহীদ মিনার অপবিত্র আর অবরুদ্ধ করতে, বেগম জিয়া একবার স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে শহিদ মিনারে উঠেছিলেন আর সেই অপদম্ভ আজ দেয়ালের পলেস্তারার মত খসে পড়েছে। এটাও পাকিস্তানের পরোক্ষ পরাজয়। বিএনপি-জামায়াত চূড়ান্ত চেষ্টা করেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে পারেনি, বাংলাদেশে আই এস-এর ঘাঁটি বানাতে পারেনি, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করতে পারেনি, অর্থনৈতিক উন্নতির অগ্রগতি ব্যাহত করতে পারেনি। এ সবই পাকিস্তানের পরাজয় হিসাবে চিহ্নিত।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানের পরাজয় ঘটেছে ১৯৭১ সালে আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে অর্থনীতির সব সূচকে এগিয়ে গেছে। পেছনে পড়ে আছে পাকিস্তান। এই ঈর্ষার যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়ে ফারিনা আরশাদকে পাঠিয়েছিল পাকিস্তান বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে। বাংলাদেশের বাঙালিদের এবং শেখ হাসিনার অপ্রতিরোধ্য গতি দেখে ফারিনা বাংলাদেশ থেকে রণে ভঙ্গ দিয়েছে। ফারিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের কোনো অ্যাকশনে যাওয়ার প্রয়োজন হয়নি। বাঙালিদের জাগরণের মুখেই ফারিনা ভুট্টো ইয়াহিয়ার মত কালো রাতের আঁধারে পালিয়েছে। প্রমাণিত হলো, পাকিস্তানের মত একটি মধ্যযুগীয়, বর্বর রাষ্ট্র বাংলাদেশের মত আধুনিক, প্রগতিশীল রাষ্ট্রকে কিছুই করতে পারবে না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১৯

আমি ব্লগার হইছি! বলেছেন: ঠিক কথা বলছেন। পাকিস্তান কে আল্লাহ ও পছন্দ করেন না। শালারা একটা মোনাফেক জাতি।

২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৪

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ঐ শালাদের সাথে সম্পর্ক তো ত্যাগ করতেই হবে| সাথে সাথে একটা বিমান ভর্তি থু থু সওগাত পাঠাতে হবে

৩| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২

রানার ব্লগ বলেছেন: নওয়াজ খালেদা বোন ভাই। এল লাঠিতে পিটানি চাই।

৪| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২

রানার ব্লগ বলেছেন: নওয়াজ খালেদা বোন ভাই। এক লাঠিতে পিটানি চাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.