নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঝিয়ের কাজ করে অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯

মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। ভিক্ষুক মা আর বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন তার। তারপরও জীবনযুদ্ধে হার না মানা একজন যোদ্ধার নাম মরিয়ম খাতুন। জন্মের পর থেকে শয্যাশায়ী বৃদ্ধ বাবা আর স্মৃতিভ্রষ্ট ভিক্ষুক মায়ের জীবনযন্ত্রণাকে সঙ্গী করে খেয়ে-না-খেয়ে বেড়ে উঠেছে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ার পাঁচকবর এলাকার সবার প্রিয় মরিয়ম খাতুন।
জানা গেছে, অন্যের জমিতে কোনোরকম একটি কুঁড়েঘরে ভিক্ষুক মায়ের অন্যের বাড়ি থেকে চেয়ে আনা উচ্ছিষ্ট খাবার আর ছেঁড়া ও বাদ দেয়া কাপড় পরে জীবনসংগ্রামে এগিয়ে চলা। সেই মরিয়মই এবার বিএল কলেজ থেকে অনার্সে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ফার্স্ট কাস পেয়ে তার কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীসহ গোটা নওয়াপাড়াবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
গত রোববার দুপুরে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা ঘরের এক কোণে জোহরের নামাজ আদায় করছে মরিয়ম। বসতে দেয়ার জায়গা নেই ওদের। লাঠি ভর দিয়ে বেরিয়ে এলেন মরিয়মের বৃদ্ধ বাবা শামছুর শেখ। মেয়ের খোঁজ নিতে আসার খবরে কেঁদে ফেললেন তিনি। বললেন, আমি যেকোনো সময় মরে যাব। আমার মেয়েকে কোথায় রেখে যাবো বাবা? কাঁপতে কাঁপতে মাটিতেই বসে পড়লেন বৃদ্ধ বাবা।
নামাজ শেষ করে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন মরিয়ম। চোখে পানি টলমল করছে। সালাম বিনিময় করে বসতে দিতে না পারার লজ্জায় স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারছিল না সে। ভালো রেজাল্টের উচ্ছ্বাস এক মিনিটেই মিলিয়ে গেল মরিয়মের। পাশে দাঁড়ানো মা-বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মরিয়ম। ‘আমার মা-বাবা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারে না। তিনবেলা ঠিকমতো খাবার জুটাতে পারি না। রোগের যন্ত্রণায় সারা রাত নির্ঘুম কেটে যায় তাদের। আর সেই যন্ত্রণা আমার সব সাফল্যকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। আমি কী করব তা ভাবতেও পারি না। স্থানীয়দের সহায়তায় এ পর্যন্ত এসেছি।’
কাঁদতে কাঁদতে বলে চলেন মরিয়ম, ‘প্রায়ই পত্রিকার খবরে পড়ি অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান অনেক উচ্চবিত্ত ব্যক্তিরা। তাদের লেখাপড়ার খরচের ভার বহন করেন। তেমনি কেউ যদি আমার জন্য একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতেন। সামান্য একখণ্ড জমি আর একটি কুঁড়েঘরের ব্যবস্থা করতেন তাহলে জীবনযুদ্ধে আর একটু এগিয়ে যেতে পারতাম- যে ঘরে আমার মা-বাবা নিরাপদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারতেন। মৃত্যুর আগে তারা অন্তত এটুকু সান্ত্বনা নিয়ে যেতেন যে তাদের একমাত্র মেয়ের জন্য একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। এ ছাড়া আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওই এলাকার কাইয়ুম আলীর জমিতে ছোট্ট একটি কুঁড়েঘরে মা-বাবাকে নিয়ে বসবাস করেন মরিয়াম। নওয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু। স্থানীয়দের সহায়তায় ও মায়ের ভিক্ষার টাকায় ২০০৭ সালে বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ ৪ পায় এসএসসিতে। ২০০৯ সালে নওয়াপাড়া মডেল কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৪.১০ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন মরিয়ম।
এসএসসি পাস করার পর এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সামান্য পারিশ্রমিকে পড়াতে শুরু করেন, পাশাপাশি চলে ঝিয়ের কাজ। এখনো ঝিয়ের কাজ করতে হয় তাকে।
স্মৃতিভ্রষ্ট মাকে আর ভিক্ষা করতে যেতে দিতে চান না মরিয়ম। না জানি কবে রাস্তা ভুলে হারিয়ে যান তার জনম দুঃখিনী মা- এই আশঙ্কায় দিন কাটে মরিয়মের।
এই সমাজের কাছে, দেশের সরকারপ্রধানের কাছে এবং বিশেষ করে যশোরের জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের কাছে তার ছোট্ট একটি চাওয়া। কোনো রকম একটি চাকরি আর একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই। তাহলেই পরম তৃপ্তিতে মা-বাবার কোলে মাথা রেখে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন মরিয়ম।

তথ্য সুত্রঃবিডি কথা

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪

লেখোয়াড়. বলেছেন:
করুণ!!
কেউ না কেউ সাহায্যের হাত বাড়ানো দরকার।
তবে করুণা দেখাতে নয়।

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৫

আহমেদ রশীদ বলেছেন: Tik brother

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭

ওনাসিস বলেছেন: My salute to her and thanks for sharing.

৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৭

আব্দুল্লাহ রিফাত বলেছেন: এদের সাফল্যই সত্যিকারের সাফল্য।

৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:৩৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: মানুষের জীবনটা কত বিচিত্র| এরাই আসল যোদ্ধা

৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:১৪

আহমেদ রশীদ বলেছেন: I have no comment, mind blowing, the government should take a good hand to help her family by any way.

৭| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৪

মিলন হোসেন১৫৮ বলেছেন: অামরা কি কেউ পারিনা এই মেয়েটার জন্য কিছু করতে

৮| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৪

আহমেদ রশীদ বলেছেন: Of course

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.