নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শরিকদের নিয়ে বিএনপিতে অস্বস্তি

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪৭

শরিকদের নিয়ে ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে বিএনপি। একদিকে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কৌশলের পাল্টা জবাব দিতে ছোট দলগুলোকে ছাড়তে পারছে না তারা অন্যদিকে নাম ও ব্যানার সর্বস্ব দলগুলোকে নিয়ে বিএনপির টানাহেঁচড়ায় দলে অসন্তোষ বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী ঐক্যজোটের দেখানো পথে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল ছাড়তে পারে খেলাফত মজলিশ। আরেক ধর্মভিত্তিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একটি অংশও জোট ছাড়ার পথে। তবে ইসলামী ঐক্যজোটের মতোই এদের একাংশ জোটে থেকে যেতে পারে বা রাখা হতে পারে।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানান, নাম সর্বস্ব দলগুলোকে নিয়ে জোট বড় করাটা বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেসব দল কেউ কখনো চিনতই না সেই সব দল চলে যাওয়ার হুমকি দিয়ে বিএনপির উপর ছড়ি ঘোরানোর সাহস দেখাচ্ছে। ফলে বিএনপি পড়েছে উভয় সংকটে। এসব দল চলে গেলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি_ এ কারণে তাদের বেরও করে দেওয়া যাচ্ছে না আবার সহাবস্থান করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে দলের এক নেতা মনে করেন, জোট থেকে বের হওয়ার পর ২০ দলের নাম সর্বস্ব এসব দল ক্ষমতাসীনদের প্ররোচনায় আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরা আন্তর্জাতিক মহলে জানান দিতে পারবে বিএনপির সঙ্গে যারা ছিল এখন তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। শুধু বিএনপিই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষ প্রাধান্য পাবে না। সঙ্গতকারণেই ছোট ছোট দলগুলো যাতে জোট ছাড়তে না পারে সেজন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
সূত্র মতে, তারপরও যারা বেরিয়ে যাবে তাদের ভগ্নাংশকে জোটে রাখার কৌশল নেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ছোট দলগুলোর মাজারি পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছে বিএনপি। যাতে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জোট ছাড়ার ঘোষণা দিলে মধ্যসারির নেতাদের দিয়ে একটি কমিটি করে বিএনপির জোটে রাখা যায়। এছাড়া যারা মামলা-হামলাসহ যেসব কারণে জোট ছাড়ার পরিকল্পনা করছে সেসব বিষয় কীভাবে সমাধান করা যায় সেই চেষ্টাও করা হচ্ছে। পাশাপাশি জোটের বাইরে কয়েকটি দলকে জোটভুক্ত করার পরিকল্পনা আছে বিএনপির। ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারা, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ কয়েকটি দলের সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা করছেন বিএনপি নেতারা। যদি তারা জোটভুক্ত নাও হয় যুগপৎ আন্দোলনে তাদের শরিক করা যায় কিনা তেমন পরিকল্পনাও আছে বিএনপির।
এদিকে ছোট ছোট দলগুলোকে নিয়ে বিএনপির টানাহেঁচড়ার বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছে না দলের নেতাকর্মীরা। এ কারণে দলে অসন্তোষও দেখা দিয়েছে।
বিএনপি সূত্র জানায়, ছোট ছোট দলগুলোকে জোটে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রথম থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে অসন্তোষ ছিল। এখন টানাহেঁচড়া করে নাম ও ব্যানার সর্বস্ব দলগুলোকে জোটে রাখার প্রতিযোগিতা করায় দলের অনেকেই ক্ষুব্ধ। নেতাকর্মীদের মতে, যাদের কোনো ভোট নেই, জনসমর্থন নেই, নেতাকর্মী নেই তাদের নিয়ে বিএনপির মতো দলের টানাহেঁচড়া শোভা পায় না। এর চেয়ে দল পুনর্গঠন এবং আগামীর সময়ের আন্দোনের বিষয়ে মাথা ঘামালে ভালো হবে।
বিএনপির মধ্যসারির এক নেতা জানান, জামায়াতের কারণে বিএনপির যে ক্ষতি হয়েছে তা আর অন্য কারণে হয়নি। যুদ্ধাপরাধী ইস্যুর কারণে দলের ইমেজ নষ্ট হয়েছে। তাদের গাড়িতে পতাকা দিয়ে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে মাঠে থাকবে এমন ধারণার কারণে বিএনপি আন্দোলনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেনি। আর শুরুর দিকে জামায়াতের সহিংসতার কারণে বিএনপিকে একটি জঙ্গি সংগঠনের তকমা লাগানোর চেষ্টা হয়েছে। এরপরও জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি ও ভোটব্যাংক কাজে আসতে পারে এমন ধারণা থেকে দলের নেতাকর্মীরা শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। কিন্তু এখন ছোট দলগুলো যাদের ভোট নেই, নেতাকর্মী নেই তাদের নিয়ে টানাহেঁচড়া মানতে তারা রাজি নন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৃণমূল নেতাকর্মী ছাড়াও দলের অনেক শীর্ষ নেতাও চান না ২০ দলীয় জোটের ব্যানার সর্বস্ব দলগুলোকে জোটে রাখতে।
বিএনপির সিনিয়র এক নেতার মতে, প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ চাচ্ছে বিএনপিকে একঘরে করতে। এজন্য জোটের নাম সর্বস্ব শরিক দলগুলোকেও পৃথক করার ষড়যন্ত্র করছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্য দলগুলোকে যদি পৃথক করা যায় তাহলে বহির্বিশ্বে প্রমাণ করানো যাবে বিএনপি ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় না। এজন্য ছোট দলগুলোকে জোট থেকে বের করতে নানা চাপ দেয়া হচ্ছে। বিএনপি অনেক চাপ সহ্য করতে পারলেও ছোট দলগুলোর পক্ষে তা সহজ হচ্ছে না। ফলে এক এক করে ২০ দলীয় জোট থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছে ছোট শরিক দলগুলো। এর অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার জোটরে অন্যতম শরিক দল ইসলামী ঐক্যজোট জোট ছেড়েছে। এরপর ওই দলের মধ্যসারির এক নেতাকে দিয়ে দল ভাঙ্গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়া হয়। কিন্তু এসব দল নিয়ে বিএনপির এমন ভূমিকায় নামতে হবে তা কখনো ভাবেনি কেউ। তাই জোটের রাজনীতিতে কিছু পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হচ্ছে।
জোটের ভাঙ্গন প্রসঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে আওয়ামী লীগ এখন ২০ দল ভাঙ্গার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
একই বিষয়ে খেলাফত মজলিশের চেয়ারম্যান মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক বলেন, 'তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ঢাকার বাইরে আছেন। তিনি দেশের বর্তমান রাজনীতির কোনো খবর রাখেন না। তার দলের সব কাজকর্ম মহাসচিব দেখেন। তবে দেশ ও জাতির স্বার্থে খেলাফত মজলিশ ২০ দলীয় জোটে আছে; থাকবে।
আর জমিয়তে উলামা ইসলামের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাস জানান, আপাতত জোট ছাড়ার ইচ্ছা নেই। আগামী দিনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখে দলীয় ফেরামে আলোচনা করে যদি এমন সিদ্ধান্ত আসে তখন তা করা হবে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:

ইসলামী 'ঐক্য' জোট? নাকি 'অনৈক্য' জোট?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.