নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ যুদ্ধের পর

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৫৯

দু’হাত ভর্তি গাঁদা ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি মায়ের সামনে। মায়ের হাতে রুটি বেলার কাঠের বেলনা। সেটা দিয়ে তিনি দুটো বাড়ি দিলেন আমার পিঠে।

‘এই ফুল কোত্থেকে চুরি করেছিস, বল।’

‘চুরি করিনি। স্বপ্নাদি দিয়েছে।’

এটা স্বপ্নাদিদির গল্প। আজ থেকে প্রায় পঁয়তাল্লিশ বছর আগের কথা। আমার বয়স তখন দশ এগারোর বেশি নয়। ক্লাস ফাইভ বা সিক্সে পড়ি। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পরের সময় সেটা। মফস্বল শহরের আর পাঁচটা মহল্লার মতো আমাদের মহল্লাটাও ছিল হিন্দুপ্রধান। চারপাশে প্রায় সবই হিন্দু বাড়ি। মাঝখানে আমরাই একঘর মুসলমান। তবে যুদ্ধের পর থেকে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়তে লাগলো। আর হিন্দুদের সংখ্যা কমতে শুরু করলো। যেন তেন দামে বাড়িঘর, জমিজমা বেঁচে বা বিনিময় করে হিন্দুরা পাড়ি জমাতে শুরু করলো ভারতে। তাদের স্থান দখল করতে শুরু করলো ভারত থেকে আসা মোহাজিররা।

আব্বা ছিলেন এক হিন্দু উকিলের জুনিয়র। তাঁর পাঁচ কন্যার বড়টির নাম ছিল স্বপ্না। আমার চেয়ে চার পাঁচ বছরের বড় ছিলেন তিনি। পড়তেন আমার বড় বোনের সঙ্গে ক্লাস টেনে। কিন্তু বয়সের ব্যবধান স্বত্বেও তার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা ছিল বেশি। তাকে আমি স্বপ্নাদি বলে ডাকতাম আর তিনি আমাকে ডাকতেন পটলা বলে। তার দৃষ্টিতে আমি ছিলাম পটলের মতো পেট মোটা। তাই আসল নাম ছাপিয়ে আমাকে ওই নামে ডাকা। যদিও নামটা আমার একদম পছন্দ ছিলনা, কিন্তু স্বপ্নাদির মুখের ওপর কিছু বলা? ওরে বাবা! অসম্ভব। স্বপ্নাদি ছিলেন ভীষণ মেজাজী। তার ইচ্ছার বাইরে কিছু বলা বা করা অন্তত আমার সাহসে কুলাতো না।

মহল্লায় আমার খেলাধুলা ছিল মেয়েদের সঙ্গে। আর সেসব খেলার মধ্যমণি ছিলেন স্বপ্নাদি। লুকোচুরি, গোল্লাছুট, এক্কাদোক্কা আর বাঘ-বকরি। স্বপ্নাদি একাই একশো। সব খেলাতেই আমি স্বপ্নাদির দলে। তিনি নিজে কখনো হারতেন না, আমাকেও হারতে দিতেন না। বাঘ-বকরি খেলায় অন্যদের শত প্রতিবাদের মধ্যেও আমাকে চাল দিতে সাহায্য করতেন। অন্যরা স্বপ্নাদির মেজাজের ভয়ে মুখ বুজে সহ্য করতো। আবার মাঝে মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি করে খেলা ভেঙে দিয়ে চলে যেতো। তখন স্বপ্নাদি বলতেন, ‘চল্ পটলা, তুই আর আমি খেলবো। ওদের সাথে কে খেলে রে?’

তারপর আমরা দু’জন লুকোচুরি আর কানামাছি খেলতাম। মজার ব্যাপার হল স্বপ্নাদি তখন ইচ্ছে করেই আমার কাছে হেরে যেতেন। ছোট হলেও সেটা আমি বেশ বুঝতে পারতাম।

স্বপ্নাদির কিছু কিছু ব্যাপার আমার একদম ভাল লাগতো না। যেমন, তার সাথে ফলসা গাছে চড়ে পাশাপাশি ডালে পা ঝুলিয়ে বসে ফলসা খেতে হবে। তাদের বাড়ির ছাদে বসে নুন মরিচের গুঁড়ো মাখিয়ে কাঁচা তেঁতুল বা কুল খেতে হবে। অথবা স্বপ্নাদির হাতে তার মতো করে চোখে কাজল পরতে হবে। এসবে আপত্তি করলে স্বপ্নাদি ভীষণ ক্ষেপে যেতেন। বলতেন, ‘যা ভাগ ছোঁড়া, আর কখনো আসবি না আমার কাছে।’

আমি মন খারাপ করে চলে যেতাম। একটু পরেই স্বপ্নাদি আমাকে খুঁজে বের করে হাত টেনে ধরে বলতেন, ‘পটলা,আয়।’ আমি কাঁদো কাঁদো স্বরে বলতাম, ‘তাড়িয়ে দিয়ে আবার ডাকতে আসো কেন?’

স্বপ্নাদি মুচকি হেসে বলতেন, ‘তুই যে আমার বর। তোকে কি আমি তাড়িয়ে দিতে পারি?’

‘আমি তোমার বর হবো না।’

‘এ ছোঁড়া বলে কি? আমার চেয়ে সুন্দর বউ কোথায় পাবি তুই?’

আমি মাথা নিচু করে বলতাম, ‘বীণা দিদি তোমার চেয়ে বেশি সুন্দর।’

‘কি বললি!’ আঁতকে ওঠেন স্বপ্নাদি। আমার গাল টিপে ধরে বলেন, ‘তুই বীণার সাথে মিশিস নাকি? আর সে আমার চেয়ে সুন্দর? থাম্,দেখাচ্ছি মজা।’

গালমন্দ করে আমাকে আবার তাড়িয়ে দেন স্বপ্নাদি। বীণাদিদির সাথে আমাকে দেখতে পেলে দু’জনেরই ঠ্যাং ভেঙে দেবেন বলে শাসিয়ে দেন। কিন্তু এসব শাসন গর্জন বড়জোর একদিন। পরদিনই দুপুর বেলা আমার প্রিয় আতা ফল নিয়ে হাজির হন স্বপ্নাদি। বলেন, ‘পটলা, চল্ আমাদের বাগানে বসে খাই।’ আর আমিও সুড় সুড় করে তার পিছে পিছে চলে যাই।

দিদিদের বাগানটি ছিল তাদের বাড়ির পেছনে। আম, কাঁঠাল, নারকেল, বাতাবি লেবু এসব ফলের গাছ ছাড়াও বাগানের এক অংশে ছিল বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া আর দোপাটি ফুলের গাছ। হলদে রঙের তরতাজা গাঁদা ফুলগুলো দেখলে ছেঁড়ার লোভ হতো। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে মনের ভাব বুঝে ফেলতেন স্বপ্নাদি। বলতেন, ‘শোন পটলা, বাগানের একটা ফুল যদি তুই ছিঁড়েছিস তো বাবা তোর হাত কেটে ফেলবে। খবরদার, এই কাজ করিস না।’

‘তোমার বাবা জানবে কিভাবে? এত ফুলের মধ্যে একটা নিলে কি হয়? একটা গাঁদা ফুল দাও না দিদি। ওই যে ওইটা।’

স্বপ্নাদি ভয়ে ভয়ে এদিক ওদিক দেখে নিয়ে চট্ করে একটা গাঁদা ফুল ছিঁড়ে আমার হাফপ্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে দেন। বলেন, ‘যা পালা, পালা। এই শেষ। আর কোনদিন চাইবি না।’

আমি আনন্দে তিড়িং বিড়িং করে লাফাতে লাফাতে বেরিয়ে আসি বাগান থেকে। স্বপ্নাদি যে মিটি মিটি হাসছেন তা দেখার মতো আমার তখন সময় নাই।

পূজোর সময় স্বপ্নাদি আমার হাত ধরে মণ্ডপ দেখতে বেরতেন। তখন তিনি শাড়ি পরে সাজগোজ করে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াতেন। তাকে তখন অনেক বড় দেখাতো। আমার তখন খুব লজ্জা লজ্জা করতো। তারপরও দশভুজা দুর্গা প্রতিমা আর বর্শাবিদ্ধ ভয়ংকর অসুরের মূর্তি দেখার লোভ সামলাতে পারতাম না। উপরি পাওনা ছিল পূজা মণ্ডপের প্রসাদ আর স্বপ্নাদির কিনে দেয়া হাতি-ঘোড়া বিস্কুট, বাঁশি আর রঙ্গিন বেলুন। এত ছোট বয়সে ঠিক বুঝে উঠতে পারতাম না যে স্বপ্নাদি তার ছোট বোনদের বা স্বজাতির কাউকে না নিয়ে আমাকে নিয়ে কেন পূজোয় আনন্দ করে বেড়াতেন?

দু’একজন কুলীন হিন্দু, যারা আমাদের দুজনকেই চিনতেন, তারা স্বপ্নাদিকে ধমকের সুরে বলতেন, ‘স্বপ্না, তুই যে কি করিস না!’ স্বপ্নাদি আমাকে বলতেন, ‘পটলা, আমার মতো তুই যেন আবার ঠাকুরকে প্রণাম করে বসিস না। তোর মা জানতে পারলে আমায় ছেঁচে দেবে।’

সে কথা ঠিক। স্বপ্নাদির সঙ্গে ঘুরে বেড়ানোতে মায়ের কোন আপত্তি ছিলনা। কিন্তু হিন্দুয়ানি কোন কিছুর মধ্যে গেলে মায়ের হাতে মার অনিবার্য। তাই এতটুকু বয়সে দু’দিক সামলে চলতে হতো আমাকে। এ রকম এক দুর্গা পূজার মধ্যে ঘটলো এক ঘটনা। মায়ের নির্দেশ ছিল যেখানেই যাই না কেন সন্ধ্যার আগে বাসায় ফিরতে হবে। স্বপ্নাদিও সেটা জানতেন। তবুও মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বাড়ি ফিরতে ফিরতে সেদিন সন্ধ্যা পার হয়ে গেল। স্বপ্নাদির বাড়ি পার হয়ে একটা পুকুরের অপর পাড়ে আমাদের বাড়ি। মায়ের হাতে মার খাওয়ার ভয়ে স্বপ্নাদির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পুকুরের পাড় ঘেঁষে আমি হন হন করে হাঁটছিলাম। হঠাৎ মনে হল স্বপ্নাদি একটা চিৎকার দিয়ে থেমে গেলেন। আমি পেছন ফিরে দৌড় দিলাম স্বপ্নাদির বাড়ির দিকে। আবছায়া আলো আঁধারের মধ্যে একটা লোককে দেখলাম এক হাতে স্বপ্নাদির মুখ চেপে ধরে আরেক হাতে তাকে জাপটে ধরে বাগানের পেছন দিকে নিয়ে আসার জন্য ধ্বস্তাধস্তি করছে। আশেপাশে কেউ নেই। আমার মাথায় খুন চেপে গেল।

আমি প্রচণ্ড বেগে ছুটে গিয়ে এক লাফে লোকটার পিঠে উঠে সর্বশক্তি দিয়ে তার ঘাড়ে কামড় বসালাম। স্বপ্নাদিকে ছেড়ে দিয়ে লোকটা চিৎকার করে উঠলো। চন্দন কাকার গলার আওয়াজ। স্বপ্নাদির দূর সম্পর্কীয় কাকা। একই পাড়ায় থাকে। হাচড়ে পাচড়ে কোনো মতে আমাকে তার পিঠ থেকে ছিটকে ফেলে পালিয়ে গেল চন্দন কাকা। ওই দিন দেরি করে বাড়ি ফেরার জন্য মায়ের হাতে মার খেলাম খুব। কিন্তু কেন দেরি হল তা’ কিছুতেই বললাম না।

পরদিন শুনলাম স্বপ্নাদির জ্বর হয়েছে। দু’দিন তিনি বাড়ি থেকে বেরুলেন না। তৃতীয় দিন একখানা চাদর মুড়ি দিয়ে আমার স্কুলের পথে দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে পাকড়াও করলেন। বললেন, ‘তুই তো সাংঘাতিক স্বার্থপর,পটলা। আমার এত জ্বর। আর তুই একবার দেখতে পর্যন্ত গেলি না!’

আমাকে প্রায় বগলদাবা করে নিয়ে যাওয়ার মতো করে নিয়ে গেলেন তাদের বাড়ির পেছন দিকে একটা প্রায় পরিত্যক্ত মাটির ঘরের খড় বিছানো বারান্দায়। সেখানে পাশাপাশি বসে আমার একটা হাত তুলে তার নিজের কপালে ঠেকিয়ে বললেন, ‘দেখ্ আমার কতো জ্বর। আমি কি মিথ্যা বলছি?’

হাঁ, সত্যিই খুব জ্বর। স্বপ্নাদি মিথ্যা বলেন নি। আমি মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে রইলাম। কিন্তু বেশি জ্বরের জন্যই হোক বা অন্য যে কারণেই হোক স্বপ্নাদিকে কথায় পেয়ে বসেছে।

‘এই দেখ্ পটলা, আমার চিবুকের এ তিলটা জ্বরের জন্য কত বড় হয়ে গেছে। হাত দে। হাত দিয়ে দেখ্।’

দেখলাম, কিন্তু বিশেষ কিছু বুঝলাম না।

‘তিলটা খুব সুন্দর, তাই না? এই ছোঁড়া বল্ না, তিলটা সুন্দর না?’

‘হুঁ।’ ফর্সা মুখে কালো রঙের একটা তিল সুন্দর হয় কিভাবে বুঝলাম না। তবু স্বপ্নাদিকে খুশি করার জন্য মাথা নেড়ে সায় দিলাম। স্বপ্নাদি আনন্দে গদ গদ হয়ে বললেন, ‘আমাকে সুচিত্রা সেনের মতো দেখাচ্ছে, তাই না পটলা?’

‘হুঁ।’

এই সুচিত্রা সেনটা যে কে, তা’ কে জানে? কিন্তু স্বপ্নাদিকে খুশি করতে হবে। তাই আবার মাথা নেড়ে সায় দিলাম। স্বপ্নাদি খড়ের গাদার ভেতর থেকে অনেক গাঁদা, গোলাপ আর ডালিয়া ফুল বের করে আমার সামনে রাখলেন। বললেন, ‘নে, এগুলো সব তোর।’

আমি ঘাড় ফিরিয়ে বাগানের দিকে তাকিয়ে দেখি সেখানে দোপাটি ছাড়া অন্য কোন ফুল নেই। স্বপ্নাদি সব তুলে এনেছেন। সর্বনাশ!

বললাম, ‘তোমার বাবা যদি জানতে পারে, তখন?’

তিনি হাসলেন। বললেন, ‘বাবা জানে।’

তবু আমার ভয় দূর হল না। শুধু গোটা কয়েক গাঁদা ফুল তুলে নিয়ে পালিয়ে এলাম স্বপ্নাদির বাড়ি থেকে।



মা বললেন, ‘তুই মিথ্যা কথা বলছিস। এই ফুল তুই নিশ্চয় চুরি করেছিস। স্বপ্না তোকে এত ফুল দেবে কেন?’

‘না মা, বিশ্বাস করো, স্বপ্নাদি দিয়েছে।’

‘ঠিক আছে, এই ফুল তুই চুরি করেছিস, না স্বপ্না তোকে দিয়েছে সেই ফয়সালা হবে বিয়ে থেকে আসার পর। এখন সময় নাই বলে তুই বেঁচে গেলি।’

ছোট খালার বিয়ে ঠিক হয়েছে গ্রামের নানাবাড়িতে। বাড়িসুদ্ধ আমরা সবাই যাবো বিয়েতে। বাবা দুটো ঘোড়ার গাড়ি ঠিক করেছেন। মালপত্র ওঠানো হচ্ছে তাতে। আমরা ভাইবোনরা সবাই খাওয়া দাওয়া সেরে উঠে বসলাম গাড়িতে। বহুদিন পর নানাবাড়ি যাচ্ছি। সবাই খুব আনন্দে, কিন্তু কেন জানি আমার কোন আনন্দ হচ্ছে না।

এক সপ্তাহ পর গ্রাম থেকে ফিরে জানা গেল, সুরেশ চন্দ্র এ্যাডভোকেট একজন মোহাজিরের সঙ্গে বাড়ি বিনিময় করে সপরিবারে পাড়ি জমিয়েছেন ভারতে। স্বপ্নাদিদিদের বাড়িতে এখন সব অচেনা লোকজন। বাড়ির কাছে গেলে কেমন যেন কটমট করে তাকায়। আমি সারাদিন স্বপ্নাদিদির বাড়ির চার পাশে ঘুর ঘুর করে সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে এলাম। ঘরে খাটের নিচে পানি ভর্তি মাটির সরায় গাঁদা ফুলগুলো রেখে গিয়েছিলাম। সরা থেকে আধ মরা বিবর্ণ ফুলগুলো তুলে হাতে নিতেই শুকনো পাপড়ি গুলো ঝুর ঝুর করে ঝরে পড়লো আমার হাত থেকে। সেই সাথে হাতের আঙ্গুল গলে ক’ফোঁটা পানি ঝরে পড়লো অশ্রুর মতো।

******************************

এই লেখাটি মাসিক মৌচাকে ঢিল পত্রিকার অক্টোবর ২০১০ ফুল সংখ্যায় প্রকাশিত। ব্লগার বন্ধুরা যারা এটি পড়েন নি, তাদের জন্য ব্লগে প্রকাশ করলাম।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:২৪

অিময়ধারা বলেছেন: খুব ভাল ।এমন লেখা আরও চাই

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: প্রিয় অিময়ধারা, আপনাকে ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইল।

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:১৩

আহলান বলেছেন: মুগ্ধ হয়ে পড়লুম .. .. ..

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: প্রিয় আহলান, আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

৩| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৪:৩১

বিদ্রোহী বাঙালি বলেছেন: আপনার এই গল্পটা আগেই পড়েছি। আজও পড়লাম। আগে যখন পড়ি তখন দুজনের মধ্যে কিছু মন্তব্যের আদান প্রদান হয়েছিল। সেটা এখানে তুলে ধরলাম হেনা ভাই।
***********
আমিঃ চোখে পানি এসে গেল। কেউ পড়ে হয়তো বলতে পারে, এই গল্প পড়ে চোখে পানি আসার কি আছে? কিন্তু আমার মতো ক্ষুদ্র পাঠকের চোখে ঠিকই পানি এসে গেোছে। গল্প যখন পড়ছিলাম নিজেকে পটলার জায়গায় কখন বসিয়ে রেখেছি জানি না। তাই হয়তো সপ্নাদির জন্য চোখে পানি এসে গেল। কি সুন্দর সম্প্রীতির সম্পর্ক। ধর্মের সম্পর্ক যেখানে গৌণ ছিল। একদিকে যেমন গল্পটা অসাম্প্রদায়িকতার সুফল তুলে ধরেছে ঠিক অন্য দিকে সাম্প্রদায়িকতার কুফলও তুলে ধরেছে। পটল আর সপ্নাদির মেলামেশায় অসাম্প্রদায়িকতার সুফল আর হিন্দুরা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়াটা ছিল সাম্প্রদায়িকতার কুফল। ধন্যবাদ হেনা ভাই।

আপনিঃ প্রিয় ঘাস ফুল, গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। স্বপ্নাদির কথা আমার আজও মনে হয়। জানিনা তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন। আদৌ বেঁচে আছেন কী না। আপনি শুনলে হয়তো হাসবেন। তাঁকে আমি আজও স্বপ্নের মধ্যে মাঝে মাঝে দেখি। সেই হাসি খুশি দরদি মুখ। সেই রেগে গিয়ে আমাকে বকা দিয়ে আবার আদর করে কাছে টেনে নেয়া। সব যেন ছায়াছবির মতো স্বপ্নের মধ্যে আমার চোখে ভেসে ওঠে। ভুলতে পারিনা, ভাই। সত্যিই ভোলা যায় না।

আমিঃ তারমানে এটা একটা সত্য কাহিনী নির্ভর গল্প। বলেন কি হেনা ভাই? কোনভাবে আপনি তাদের খোঁজ বের করতে পারেন নাই? চেষ্টা করেছিলেন? না বিয়ে থা করে সব চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছেন? আমি হলে কি করতাম জানি না, তবে গল্পের অনুভূতির কথা মনে হলে, আমি মনে হয় সারাজীবন তাকে খুঁজে বেড়াতাম।

আপনিঃ একশো ভাগ সত্য ঘটনা। প্রথম পুরুষে( মানে যেসব লেখা আমি নিজে বলছি ) লেখা, মনে রাখবেন সেগুলি সবই সত্য ঘটনা অবলম্বনে। স্বপ্নাদির খোঁজ খবর আর নেওয়া হয়নি। আমার খুব ছোটবেলায় তিনি চলে গেছেন। তারপর আমার জীবনে নানারকম ঝড় ঝাপটা বয়ে গেছে (স্বপ্ন বাসর উপন্যস পড়লে সব বুঝতে পারবেন) । ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও দিদির খোঁজ নিতে পারিনি ভাই। এদেশে হলে হয়তো তাকে খুঁজে পেতাম। ভারতের কোন জায়গায় তিনি আছেন বা আদৌ আছেন না মারা গেছেন, হদিশ করা আমার জন্য প্রায় অসম্ভব। তার ওপর গত সাত বছর ধরে আমি অসুস্থ। বুঝতেই পারছেন, তাঁর মতো দরদি মানুষকে আমি ইচ্ছা করে হারিয়ে ফেলিনি, ভাই। সবই পরিস্থিতির পরিণতি।

৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:৫১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: প্রিয় বিদ্রোহী বাঙালী, তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। তোমার এই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়া, বার বার একটি লেখা পড়েও বিরক্ত না হওয়া, এত মনোযোগ দিয়ে এত আগের মন্তব্য ও প্রতিমন্তব্যগুলো আবার যত্ন সহকারে পোস্ট দেওয়া-এ সবই একজন খাঁটি সাহিত্য বোদ্ধার পরিচয় বহন করে। তুমি নিজেও ইদানিং খুব ভালো গল্প লিখছ, তার পরেও অন্যের লেখার প্রশংসা করতে তোমার কোন কার্পণ্য নেই। সত্যিই তুমি একজন ব্যাতিক্রমী ব্লগার এবং অন্ততঃ আমার একজন নির্ভেজাল শুভাকাঙ্খী।
ভালো থেক ভাই। শুভকামনা রইল। বাংলা নববর্ষে পরিবারসহ তোমার জীবন আনন্দময় হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.