নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

রসরচনাঃ ক্যামেরা ফেস

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৫৭

খুব ছোট বেলায় আমাদের শহরে স্টার স্টুডিও নামে ছবি তোলার একটা দোকান ছিল। সেটা পঞ্চাশের দশকের কথা। সে সময় সম্ভবত সেটিই ছিল এই শহরের একমাত্র ছবি তোলার দোকান। আধা ডজন ভাই বোনের মধ্যে আমাদের পিঠেপিঠি দুই ভাইকে সেই স্টুডিওর একটা অন্ধকার ঘরে বসিয়ে ছবি তোলা হল। একটা টুলে দুই ভাই পাশাপাশি বসে আছি। আমার বয়স চার পাঁচ বছর, ছোট ভাইটির বয়স তিন চার। দুজনের পরনে হাফ প্যান্ট আর রঙিন জামা। আমাদের সামনে লম্বা লম্বা লোহার স্ট্যান্ডের ওপর বসানো বিকট আকৃতির কয়েকটা ইলেকট্রিক বাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হল। আমাদের দুই ভাইয়ের চোখ ধাঁধিয়ে গেল। আমি ভয় পেয়ে কেঁদে ফেললাম। আমার ছোট ভাইটি আমার চেয়ে শক্ত। সে কিছুক্ষণ চোখ পিট্ পিট্ করে সামলে নিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল বাতি গুলোর দিকে। ক্যামেরাম্যান আমাদের সামনে একটা কাঠের স্ট্যান্ডের ওপর রাখা কালো কাপড়ে ঢাকা বাক্সের মতো বিশাল ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে আমার কান্না থামানোর জন্য ‘চু, চু, বাবু কাঁদেনা, সোনা কাঁদেনা’ এই জাতীয় কথাবার্তা বলছে আর কালো কাপড়ের ভেতর ঘন ঘন মাথা ঢুকিয়ে ও বের করে আমাদের ছবি তোলার কসরত করছে। ক্যামেরাম্যানের দুপাশে দাঁড়িয়ে আমাদের বাবা-মাও চুক চুক করছেন আর বলছেন, ‘ছি, ছি, কাঁদেনা বাবা, কাঁদেনা। ভয় কিসের? তোমাদের ছবি তোলা হচ্ছে তো! সামনে তাকাও বাবা, সামনে তাকাও।’

এভাবে অনেক কায়দা কসরত করার পর ছবি তোলার কাজ শেষ হল। সেই সাদা কালো ছবি এক সপ্তাহ পর বাসায় এনে দেখা গেল, আমার ছোট ভাইটি চোখ বড় বড় করে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে আর আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে কাঁদো কাঁদো মুখে তাকিয়ে আছি। আমার চোখের কাজল ধুয়ে মুখের ওপর ছোপ্ ছোপ্ কালো দাগ। বাবা-মা ও অন্য ভাই বোনরা ছবি দেখে খুব খুশি হল। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়ে সরকারি চাকরিতে ঢোকার পরেও আমাদের পারিবারিক এ্যালবামে ছবিটি দেখেছি। এমনকি বিয়ের পরে আমার স্ত্রীও ছবিটি দেখেছেন এবং আমার কাঁদো কাঁদো মুখ দেখে খুশি হয়ে তিনি আমাকে নানারকম টীকা-টিপ্পনী উপহার দিয়েছেন। ছবিটি এখন আর আছে কি না জানিনা। প্রায় পঞ্চাশ বাহান্ন বছর পর সেটি আর না থাকারই কথা।

একটু বড় হবার পর আমি যখন ক্লাস এইটের ছাত্র তখন স্কুল ম্যাগাজিনে ছাপানোর জন্য একটা গ্রুপ ছবি তোলা হল। ততদিনে অবশ্য বাক্সের মত বড় সড় ক্যামেরার বদলে হাতে বহনযোগ্য ক্যামেরার যুগ এসে গেছে। এই ছবিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা সামনের সারিতে চেয়ারে বসে আছেন আর ছাত্ররা তাঁদের পেছনে তিন চার সারিতে সামান্য বিশৃঙ্খল ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আমিও তাদের মধ্যে একজন। ম্যাগাজিন হাতে পাওয়ার পর দেখা গেল, ছবিতে একটি তাল ঢ্যাংগা লম্বা ছেলের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা আমার মুখটা দেখা যাচ্ছেনা। শুধু আমার ডানহাত দিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরা বই খাতার অংশবিশেষ দেখা যাচ্ছে।

এর ঠিক এক বছর পর উনসত্তরের গন আন্দোলনের সময় আমার একটা ছবি রীতিমতো হৈ চৈ ফেলে দিল। আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। রাজশাহীতে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পিকেটিং করছে। পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। অন্যান্য ছাত্রদের সাথে সাথে আমিও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়ছি। কোন এক ফটো সাংবাদিক সেই ছবি তুলে ঢাকার ইত্তেফাক পত্রিকায় ছাপিয়ে দিল। ছবি দেখে আমার বাবা এমন বেয়াদব সন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধে আমার মাকে যথেচ্ছ গালাগাল করলেন এবং তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মা রান্নাঘর থেকে লাকড়ি এনে আমার পা থেকে গর্দান পর্যন্ত (মাথা বাদে) নিপুন ভাবে দুরমুশ করে দিলেন। আমি রাগে রাতের খানা বয়কট করলাম। কিন্তু এতে ফল হল উল্টো। গায়ের ব্যথা আর ক্ষিধের জ্বালায় সারারাত ঘুম হল না। সকালে মা ধমক দিয়ে নাস্তা খেতে বললেন। আমি ‘খাবোনা’ বলে মুখ ভারি করে বসে রইলাম। আর একবার বললেই খাবো- এমন একটা চিন্তা ভাবনার মধ্যে আছি। কিন্তু মা আর কিছু না বলে অন্য কাজে চলে গেলেন। সকালের নাস্তাটাও খাওয়া হলনা। আমার সেই ছোট ভাইটি তখন ক্লাস এইটের ছাত্র। সে বারান্দায় অন্যান্য ভাইবোনদের সাথে মাদুরের ওপর বসে জোরে জোরে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা মুখস্ত করছিল, ‘বল বীর, বল উন্নত মম শির......।’ আমি ঠাশ্ করে ওর গালে একটা চড় কষিয়ে দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলাম।

দিনে দিনে ক্যামেরার মান আরও উন্নত হল। কিন্তু আমার ছবির মান খারাপ হতে লাগলো। অল্প বয়সে বন্ধু বান্ধবের পাল্লায় পড়ে সিগারেট খাওয়া রপ্ত করে দাঁত কালচে করে ফেলেছিলাম। তাছাড়া আমার দাঁতগুলোর মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব থাকায় হাসলে ছবি ভালো আসতো না। এদিকে ক্যামেরাম্যানরা আমার মনের দুঃখ বোঝে না। তারা ছবি তোলার সময় বলে, ‘হাসুন’। কেউ কেউ বলে, ‘না, না, মুচকি হাসি নয়। প্রাণ খুলে হাসুন।’

১৯৭৭ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সাথে তোলা আমার প্রাণখোলা হাসির এমন একটা গ্রুপ ছবিতে আমি ছিলাম সবার ডানে। বন্ধুরা কাঁচি দিয়ে নিখুঁতভাবে আমার ছবিটি কেটে বাদ দিয়ে দোকান থেকে ফ্রেমে বাঁধিয়ে এনে শেরে বাংলা হলের ডাইনিংয়ে ঝুলিয়ে দিল। পাশে অন্যান্য ব্যাচেরও ছবি ছিল। সবাই হাসছে। অথচ হাসার অপরাধে আমার ছবি কাটা গেল। বন্ধুরা যে এমন শত্রুর মত আচরণ করতে পারে ভাবা যায়না।

সবচেয়ে বেশি ঝামেলা হল ১৯৮৩ সালে আমার বিয়ের সময়। এ্যারেঞ্জড ম্যারেজ। মেয়ে দেখে আমার মায়ের পছন্দ হয়েছে। মেয়েপক্ষেরও তিন চারজন এসেছেন ছেলেপক্ষের ঘর বর দেখতে। তাদের সামনে আমি চুপচাপ বসে আছি। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি, সরকারি চাকরি করি সবই তারা জানেন, তবু প্রশ্ন করতে হয় তাই করা। আমি মাথা নিচু করে লিপ সেপারেশন যথাসম্ভব এড়িয়ে সংক্ষেপে উত্তর দিচ্ছি। মেয়েপক্ষ ভাবলো, ছেলে খুব ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, কথা কম বলে। যাবার সময় তারা আমার গম্ভীর মুখের একখানা সাদাকালো ছবি নিয়ে গেল অন্যান্য আত্মীয়স্বজনকে দেখাবে বলে (সম্ভবত মেয়ের নিজেরও দেখার ইচ্ছা ছিল)। বিয়ের অনেক পরে জানতে পারলাম, ছবি দেখে আমার স্ত্রী ও তার আত্মীয়স্বজনের ধারনা হয়েছিল যে ছেলে খুব গম্ভীর ও রাগী।

এরপর তো রঙিন ছবির যুগ। বিয়ের পরে আমরা স্বামী স্ত্রী একসাথে অনেক রঙ বেরঙের ছবি তুললাম। বেশিরভাগ ছবিতেই আমার স্ত্রী দাঁত বের করে হাসছেন, কিন্তু আমার মুখে দাঁত লুকানো মুচকি হাসি। পরে অবশ্য এ দৃশ্য বদলে যায়। আমার স্ত্রীর ওপর পাটির দাঁতগুলো সামান্য উঁচু থাকায় তাঁর হাসিতে মুক্তোঝরা ভাবটা তেমন আসছিলনা। ফলে তিনি স্বামীর অনুকরণে মুচকি হাসির আশ্রয় নিলেন। শ্যালক শ্যালিকাদের সাথেও অনেক ছবি তোলা হল। সবাই হাসিখুশি, কিন্তু আমার মুখে হাসি নাই। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ক্যামেরাম্যানের ওপর নাখোশ। একবার শ্বশুরবাড়ির শাক সব্জির বাগানে এরকম একটা গ্রুপ ছবি তোলার সময় ক্যামেরাম্যান ছিলেন আমার চাচাশশুর। তিনি বললেন, ‘মুখে একটু হাসি আনো তো বাবা।’

আমি হাসলাম, তবে দাঁত আড়ালে রেখে।

‘না, না, আর একটু। হাঁ, হাঁ, ঠিক আছে। না, না, অত না।’

হাসি বেশি হয়ে গেলে উঁচু নিচু ফাঁক ফাঁক দাঁতের কারণে চেহারা খারাপ আসছে, আবার একেবারে না হাসলে বা মুচকি হাসলে চাচাশশুরের পছন্দ হচ্ছেনা। শেষ পর্যন্ত নানা রকম কসরত করে মাঝামাঝি অবস্থার একটা ছবি তোলা হল। ছবি দেখে শশুর বাড়ির লোকজন বলল, ‘জামাইয়ের ক্যামেরা ফেস ভালো না।’

বিভিন্ন কাজের জন্য স্টুডিওতে পাসপোর্ট বা স্ট্যাম্প সাইজের ছবি তুলতে গেলে আমার সবচেয়ে বেশি অসুবিধা যেটা হয়, সেটা হল ভাস্কর্যের মতো স্থির হয়ে বসে থাকা। ক্যামেরাম্যান হয়তো বলছে, ‘মুখটা সোজা রাখেন।’

রাখলাম।

‘মাথাটা একটু নিচু করেন।’

করলাম।

‘আহা! বেশি নিচু হয়ে গেল। একটু তোলেন।’

তুললাম।

‘আর একটু, আর একটু .........।’ বলতে বলতে ক্যামেরাম্যান নিজে এসে আমার মাথাটা সাইজ করে দিয়ে একলাফে চলে গেল ক্যামেরার পিছনে।

‘আহা, নড়বেন না। একদম নড়বেন না।’

আমি পাথরের মূর্তির মতো স্থির হয়ে বসে আছি।

‘ক্যামেরার দিকে তাকান।’

তাকালাম। তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যাচ্ছে।

‘রেডি!’

আরে বাবা, আমি তো স্টুডিওতে ঢোকার পর থেকেই রেডি।

‘ক্লিক্!’ শাটার টেপার সাথে সাথে আমার মাথাটা কেঁপে গেল। পরে ছবি হাতে পেয়ে দেখলাম, বাংলা ছায়াছবির ভিলেনদের মতো আমি ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। এই ছবিসহ পাসপোর্টের আবেদন করলে পুলিশ ভেরিফিকেশন নির্ঘাত খুব কড়া হবে।

এরপর তো এল ডিজিটাল ক্যামেরার যুগ। একদিন স্ত্রীর ছোট বোনের সাথে শখ করে ডিজিটাল ক্যামেরায় একটা ছবি তুললাম। আমার এই শ্যালিকাটি সুন্দরী। চোখ দুটো ভারি সুন্দর। রান্নাঘরের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘পটল চেরা’। শ্যালিকা অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে। সাথে নিয়ে ছবি তোলার জন্য একেবারে আদর্শ মেয়ে। কিন্তু ছবি পাওয়ার পর দেখা গেল চশমা পরে থাকায় আমার চোখ দুটো ঠিকই আছে, কিন্তু শ্যালিকার পটল চেরা চোখ দুটোর কালো মনি ভয়াবহ রকমের লাল হয়ে গেছে। তাকে অনেকটা হরর ছবির রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ারের মতো দেখাচ্ছে। ছবি দেখে শ্যালিকা কেঁদে ফেলল।

ক্যামেরায় ছবি তোলা বিষয়ে আমার জীবনের এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা লিখে এবার শেষ করবো। বুড়ো বয়সে আমি আর আমার মিসেস কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেছি। সাথে আমার ‘পটল চেরা’ চোখের শ্যালিকা ও তার স্বামী এবং আমাদের ছেলেমেয়ে। সমুদ্রে সবাই মিলে হৈ চৈ করতে করতে গোসল করা হচ্ছে। পেশাদার ক্যামেরাম্যানরা ছবি তুলে দেওয়ার জন্য ক্যামেরা হাতে সৈকতে ঘোরাফেরা করছে। তখনও মোবাইল ফোনে ক্যামেরার যুগ আসেনি। কিছু পেশাদার সহিস তাদের ঘোড়ায় চড়ার জন্য পর্যটকদের অনুরোধ করছে। কুড়ি টাকা দিলে তারা তাদের ঘোড়ায় চড়িয়ে সৈকতের বালিয়াড়িতে কিছুক্ষণ পর্যটককে ঘুড়িয়ে আনবে। এতে যারা জীবনে কখনো অশ্বারোহণ করেনি, তাদের সে অভিজ্ঞতা হবে।

বুড়ো বয়সে আমার ঘোড়ায় চড়ার শখ হল। স্ত্রীকে সে কথা বলতেই, মহা আশ্চর্য, তিনি রাজি হয়ে গেলেন। সমুদ্রের নোনা জলে ভিজে সম্ভবত তাঁর মন নরম হয়ে গেছে। আমার দুই ছেলে এবং শ্যালিকার মেয়েটিও ঘোড়ায় চড়তে চায়। কিন্তু সহিস তার ঘোড়ার পিঠে একজনের বেশি লোক তুলতে রাজি নয়। তাই সিদ্ধান্ত হল পর্যায়ক্রমে একজন একজন করে চড়বে। এদিকে আমি বুড়ো মানুষ। তাগড়া ঘোড়ায় চড়ে ছোটার সময় ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে গেলে হাড় গোড় ভেঙে অনাসৃষ্টি হতে পারে। আমার জন্য একটা ছোটখাটো দুর্বল ঘোড়া বাছাই করা হল। ঘোড়ায় চড়ে ছুটন্ত অবস্থায় আমার ছবি তোলা হবে। এ জন্য একজন পেশাদার ক্যামেরাম্যানও ঠিক করা হল।

আমি হাঁচরে পাঁচরে কোন রকমে ঘোড়ার পিঠে চড়ে বসলাম। হাড় জিরজিরে দুর্বল ঘোড়াটা আমার ভারে সামান্য নুয়ে পড়লো। সহিসের চাবুক খেয়ে সে এক পা এক পা করে এগোচ্ছে বটে, তবে দৌড়াতে পারছে না। সহিস তার লাগাম ধরে পাশাপাশি হাঁটছে। সহিসের আপ্রাণ চেষ্টা স্বত্বেও তাকে দৌড়ানো সম্ভব হলনা। আমার অবস্থা হল অনেকটা ‘ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাঁটিয়া চলিল’র মতো।

এদিকে ক্যামেরাম্যান সিনেমার শুটিং করার মতো অত্যাধুনিক কায়দায় ক্যামেরাকে একাত ওকাত করে অশ্বারোহিত অবস্থায় তার ক্লায়েন্টের ছবি তুলে নিয়েছে। ঘোড়ার সামনে ও দুপাশ থেকে তোলা ছবি গুলো পতেঙ্গার এক স্টুডিও থেকে প্রিন্ট হয়ে আসার পর আমরা সবাই হতবাক। আমি যে প্রাণীটির পিঠে বসে আছি, সেটি ঘোড়া না গাধা তা নিয়ে রেস্ট হাউসে আমাদের মধ্যে তুমুল তর্ক বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। এই দু’নম্বরি দুনিয়ায় গাধাকে ঘোড়া বলে চালিয়ে দেওয়া মোটেই অসম্ভব নয়। চিড়িয়াখানায় এক নজর দেখা ছাড়া গাধাকে কে কবে ভালো করে দেখেছে, বলুন! অনেকে তো গাধা নামের প্রাণীটি চোখেই দেখেনি।

আর আশ্চর্য কি জানেন? আমাদের পারিবারিক এ্যালবামে রাখা সেই ছবিগুলো দেখে প্রাণীটি গাধা ছিল না ঘোড়া ছিল তা’ নিয়ে আমাদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে আজও তর্ক বিতর্ক হয়।



*************************************************

{এই লেখাটি মাসিক উত্তর বার্তা পত্রিকার ঈদুল ফিতর/২০১১ সংখ্যায় প্রকাশিত। ব্লগার বন্ধুরা যারা পড়েননি, তাদের জন্য ব্লগে প্রকাশ করলাম।]

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:২৯

সেভেন বলেছেন: ভলো লাগল।=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=
_-_-_-_-_-_-_-_-_

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, সেভেন।

২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩

জহিরুল লাইভ বলেছেন: হাঁ, ভাল লাগল।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, জহিরুল লাইভ।

৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫

রহস্৪২০ বলেছেন: ভাল লাগছে .।.।.।.।.।.।.।।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, রহস্ ৪২০।

৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ছবি তোলা নিয়ে অনেক মজার অভিজ্ঞতা দেখি ;) ভালো লাগলো।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:০৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই।

৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভারী ভাল লাগল, আপনার উপস্হাপনা সুন্দর।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:২৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ঢাকাবাসী। নিয়মিত আমার লেখা পড়ে আমাকে ঋণী করে ফেলেছেন।

৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


+++

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:২৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই কাণ্ডারি অথর্ব।

৭| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫১

ডি মুন বলেছেন: অল্প বয়সে বন্ধু বান্ধবের পাল্লায় পড়ে সিগারেট খাওয়া রপ্ত করে দাঁত কালচে করে ফেলেছিলাম। তাছাড়া আমার দাঁতগুলোর মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব থাকায় হাসলে ছবি ভালো আসতো না। এদিকে ক্যামেরাম্যানরা আমার মনের দুঃখ বোঝে না। তারা ছবি তোলার সময় বলে, ‘হাসুন’। কেউ কেউ বলে, ‘না, না, মুচকি হাসি নয়। প্রাণ খুলে হাসুন।’

হা হা হা :D :D :D


অনেক মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন। ধন্যবাদ। আর আপনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন জেনেও ভালো লাগল।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৩০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমি হাসতে না পারলেও আপনি প্রাণ খোলা হাসি দিয়ে সেটা পূরণ করে দিয়েছেন। হাঃ হাঃ হাঃ। আপনিও কী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন?

ধন্যবাদ, ভাই ডি মুন।

৮| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৭

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: আপনার পূর্বে প্রকাশিত সব গল্প আমাদের জন্য শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

আমি ‘খাবোনা’ বলে মুখ ভারি করে বসে রইলাম। আর একবার বললেই খাবো- এমন একটা চিন্তা ভাবনার মধ্যে আছি। ছোট বেলায় আমি যদি একবার খবোনা বলে রাগ করতাম তবে আমার বাবা "আর একবার বলিলেই খাই' গল্পটি বলতেন আর আমাকে আগে থেকেই ইজি করার চেষ্টা করতো।

আপনার গল্পটি পড়তে পড়তে অনেক কিছু মনে পড়ে গেল।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আসলে আমাদের সকলের শৈশব কৈশোরের অভিজ্ঞতা তো প্রায় একই। তাই মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

ধন্যবাদ, ভাই মৃদুল শ্রাবন।

৯| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৫৭

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

আপনার ছবিটা বাদদিয়ে আপনার বন্ধু বান্ধব বড়ই খারাপ কাজ করেছে !!!

সুন্দর

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ। দুষ্টামি করার জন্যই তো বন্ধু বান্ধব!

ধন্যবাদ, ভাই মুদদাকির।

১০| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:০৬

নীলসাধু বলেছেন: বরাবরে মতন চমৎকার লেখনী এবং অসাধারণ উপস্থাপন।

ভালো লাগা রইল। শুভেচ্ছা সুপ্রিয় আবু হেনা ভাই!

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রিয় কবি নীলসাধু ভাই। আশা করি, ভালো আছেন।

শুভেচ্ছা রইল। ভালো থাকুন।

১১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৪০

খাটাস বলেছেন: মজা পেলাম। :) +++
সাথে ক্যামেরার বিবর্তনে অনুভুতির মিশ্রণ টা ও ভাল হয়েছে।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ, ভাই। এটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার পটভূমিতে লেখা রসরচনা হলেও পঞ্চাশের দশক থেকে এ পর্যন্ত ক্যামেরার বিবর্তনের একটা সংক্ষিপ্ত চিত্র আমি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। বিষয়টি আপনার নজরে আসায় শ্রম সার্থক মনে করছি।

অসংখ্য ধন্যবাদ, প্রিয় খাটাস।

১২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৭

অনুমনু বলেছেন: নিজের দুঃখের কথা মনে করিয়ে দিলেন। হাসলে আমার মাড়ি দেখা যায়। তাই মুচকি হেসেই ছবি তুলি :(

১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: যাক, আমার দলের একজনকে অন্তত পাওয়া গেল। হাঃ হাঃ হাঃ।

ধন্যবাদ, ভাই অনুমনু।

১৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৫৪

পার্থ তালুকদার বলেছেন: আসলেই আপনার নিজের কাহিনী ? ভাল লেগেছে।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:৩২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ ভাই। এটি ১০০% আমার নিজের কাহিনী।

লেখাটি আপনার কাছে ভালো লাগায় খুশি হলাম।
ধন্যবাদ, ভাই পার্থ তালুকদার।

১৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮

সুমন কর বলেছেন: অনেক মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন। ধন্যবাদ।

১৮ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই সুমন কর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.