নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতিচারণঃ ঘুষ

১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:৫৪

ধরুন, চাকরি করতে করতে কোন কারণে আপনার চাকরি চলে গেল (আল্লাহ না করুন), তখন আপনি কী করবেন? আর একটা চাকরি জোগাড়ের চেষ্টা করবেন অথবা ব্যবসা বানিজ্য করার চেষ্টা করবেন। এই তো? নিশ্চয় কোন খারাপ কাজ করে রোজগারের চেষ্টা করবেন না। কেউ কেউ যে এমন খারাপ কাজ করেন না, তা’ নয়। অভাব অনটনে পড়ে ফেরেশতার মতো মানুষকেও আমি শয়তান হয়ে যেতে দেখেছি। কিন্তু আমার বন্ধু আব্দুর রউফ এই তিনটি কাজের একটিও না করে তিরিশ বছর বহাল তবিয়তে ছিল। কীভাবে, শুনবেন?

শুনুন তাহলে! আব্দুর রউফ রোড এ্যান্ড হাইওয়েজের সাব এ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ছিল। ঘুষ কেলেঙ্কারিতে তার চাকরি চলে যায়। সেটা খুব সম্ভবতঃ ১৯৮৩ সালে এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনামলের ঘটনা। আব্দুর রউফ তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসে ওঠে। ব্যস্, চাকরি চলে যাওয়ার পর তাকে এই কষ্টটুকুই শুধু করতে হয়েছিল। বাঁকি জীবনে সে আর কিছুই করেনি।

শ্বশুর একই ডিপার্টমেন্টের রিটায়ার্ড এক্স এন। চাকরি জীবনে প্রচুর ঘুষ খেয়েছেন। শহরে পাঁচ তলা বাড়ি, ফ্ল্যাট, মার্কেট এসব করার পরেও তার টাকা শেষ হয় না। তিনি জামাইকে আশ্বাস দিয়ে বললেন, মিলিটারি গভর্নমেন্ট চলে গেলে তিনি চীফ ইঞ্জিনিয়ারকে ঘুষ দিয়ে আবার চাকরি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবেন। এমন সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসের মতো চাকরি এভাবে চলে যেতে দেওয়া যায় না। কিন্তু মিলিটারি গভর্নমেন্ট চলে যাওয়ার আগে তিনি নিজেই পরপারে চলে গেলেন। ফলে আব্দুর রউফের চাকরি আর হলো না। সে তখন শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকে আর খায়।

তার একটি মাত্র শ্যালক। সে আবার যাচ্ছে তাই প্রতিবন্ধী। সারাদিন তার মুখ থেকে লালা ঝরে। বাথরুমের দরজা খোলা রেখে সে বড় কাজ করে। বয়স বারো তের বছর হলেও সে ছোট কাজ আটকে রাখতে পারে না। যখন তখন কাপড় চোপড় ভিজিয়ে ফেলে। শাশুড়ি প্যারালাইসিসের রোগী। আব্দুর রউফের পোয়াবারো। সে শ্বশুরের মার্কেট ও বাড়িভাড়া এবং ব্যাংকে জমানো টাকা পয়সা তুলে রাজকীয় হালে খরচ করতে থাকে। শ্বশুর শাশুড়ির কিছু উড়ো আত্মীয়স্বজন মাঝে মাঝে এসে ঝামেলা করে। আব্দুর রউফ স্ত্রীর সহযোগিতায় সেসব ঝামেলা পোশাক থেকে ধুলো ঝাড়ার মতো করে ঝেড়ে ফেলে দেয়। পোশাকের কিছু কিছু দাগ সহজে উঠতে চায় না। সেসব ক্ষেত্রে আব্দুর রউফ সনাতন ব্লিচিং পাউডার (অর্থাৎ, ঘুষ)–এর আশ্রয় নেয়। সে পুলিশকে ঘুষ দেয়। পুলিশ থানায় নিয়ে মার ধোর ও মামলার ভয় দেখানো থেরাপি প্রয়োগ করে। ফলে কঠিন দাগও পরিষ্কার হয়ে যায়।

আব্দুর রউফের শ্বশুর শাশুড়িকূলের আত্মীয়স্বজন গ্রামের লোক। তারা মামলা মোকদ্দমাকে যমের মতো ভয় করে। তারা আর শহরমুখো হওয়ার চেষ্টা করে না। তবে আব্দুর রউফের এক চাচাশ্বশুর ভীষণ টাউট। তার আবার বিদেশ যাওয়ার বাতিক। দীর্ঘ আট দশ বছর সে কাঁঠালের আঠার মতো আব্দুর রউফের পিছে লেগে রইল। আব্দুর রউফ নিজেও কম টাউট নয়। সে দুই লাখ টাকা খরচ করে ১৯৯৬ সালে চাচাশ্বশুরকে অবৈধ পথে সাইপ্রাসে পাঠিয়ে দিল। সেখান থেকে ফিরে আসা এত সহজ নয়। ধরা পড়ে ব্যাটা সাইপ্রাসের জেলে পচে মরুক!

তিরাশি সাল থেকে দু’হাজার সাল পর্যন্ত মোটামুটি এভাবেই চললো। শ্বশুরের জমানো টাকা শেষ হয়ে গেল। বাড়ি ও মার্কেটের ভাড়া দিয়ে আব্দুর রউফের রাজকীয় খাই-খরচায় কিছু টানাটানি হয়। এক বোতল ভদকা বা স্কচের দামই তো তিন হাজার (নাকি পাঁচ হাজার?) টাকা। তার ওপর তার জুয়া খেলার নেশা। টানাটানি হবে না কেন,বলুন? সে একে একে মার্কেটের দোকান গুলো বিক্রি করে দিতে লাগলো। ২০০৫ সালের দিকে পুরো মার্কেট সাফা হয়ে গেল। আব্দুর রউফ দেনার দায়ে শ্বশুরের পাঁচ তলা বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে ফ্ল্যাটে গিয়ে উঠলো।

এ বছর জানুয়ারি মাসে আব্দুর রউফের সাথে আমার দেখা হলো। সে সময় তার সাথে আমার যেসব কথাবার্তা হয়েছিল, তা’ এরকমঃ
‘এখনো তো তোমার শ্বশুরের ফ্ল্যাটেই আছো, নাকি?’
‘আরে না! ওটা কবে বেঁচে দিয়েছি!’
‘তাহলে কী নওগাঁ চলে গেছ?’ (আব্দুর রউফের দেশের বাড়ি নওগাঁ)
‘আরে না! সেখানে কী বাড়িঘর কিছু আছে নাকি? দু’কাঠা জমি নিয়ে আমার চার ভাইবোন রোজ মারামারি করে। সেখানে কী যাওয়ার উপায় আছে?’
‘তাহলে?’
‘তাহলে আবার কী? ভাড়া বাসায় আছি।’
‘বলো কী? তোমার এত টাকা পয়সা বিষয় সম্পত্তি উচ্ছন্নে গেল কীভাবে? তাস আর বোতল এখনো চলে নাকি?’
‘ছিঃ ছিঃ, কী যে বলো না! এই বুড়ো বয়সে ওসব পাপের কথা আর বলো না তো!’
‘তোমার ছেলেমেয়ে যেন কয়টা?’
‘দুই ছেলে, এক মেয়ে। আরে, ওই মেয়েটার জন্যেই তো আমি শেষ হয়ে গেলাম। মেয়ের বিয়ে দিয়ে এমন একটা জামাই পেয়েছি যে কী আর বলবো! কোন্ হাভাতে ঘরের পোলা, কে জানে? তাকে টাকা পয়সা দিতে দিতে আমি ফতুর হয়ে গেলাম।’
‘তা’ তোমার ছেলে দুটো এখন কী করে?’
‘বড়টা চাকরি করে, আর ছোটটা তো হেরোইন খেয়ে শেষ। এই হারামজাদা আমার আগেই ইন্নালিল্লাহ হবে।’
‘বলো কী? আহা! ছেলেটার এই দশা! তা’ তোমার বড় ছেলেটি কী চাকরি করে?’
‘ও চাকরির কথা আর বলো না। এত লেখাপড়া শিখে চাকরি করছে বীমা কোম্পানিতে।’
‘ভালো তো।’
‘কীসের ভালো? নিজের বউ ছেলের মুখে ভাত দিতে পারে না। চাকরিতে এক পয়সা ঘুষ নাই। ফকিরের ভিক্ষার মতো শুধু বেতন দিয়ে কী সংসার চলে?’
ভেবে দেখুন, আব্দুর রউফের ছেলের ঘুষ নাই। কী মর্মান্তিক! ১৯৮৩ থেকে ২০১৩-মাত্র ত্রিশ বছরে গনেশ উল্টে গেছে।
*****************************************************************************************************************
রচনাকালঃ ১৮-১-২০১৪
রি-পোস্ট

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:০৩

বিজন রয় বলেছেন: জটিল ও কঠিন বাস্তব।
সামাজিক অবক্ষয়।
+++++

১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:০৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ ভাই বিজন রয়। ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

২| ১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:০৮

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

"ধরুন" বলে যেভাবে ধরিয়ে দিলেন... আর ছাড়তে পারলাম না। পড়তে থাকলাম।

প্রথমে ভেবেছিলাম আব্দুল রউফ যেভাবে ব্লিচিং পাউডারের ব্যবহার করছে, তাতে তার আর কোন চিন্তা নেই।

কিন্তু স্বভাব যায় না ম'লে!

বড় একটি শিক্ষা আছে এবারের গল্পে। মনে হচ্ছে... আগে এটি পড়ি নি :)

১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:১২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: তাহলে রি-পোস্ট করে ভালোই করেছি, তাই না মইনুল ভাই?

অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

৩| ১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ৯:৪৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:

এটা তো রিপোস্ট না... আপনি তো এ গল্প সামুতে পোস্ট দেন নি ;)

১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৫১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ২০১৪ সালের জুন মাসে সামুতেই পোস্ট দিয়েছিলাম মইনুল ভাই। হয়তো আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে। সব লেখা কী আর পড়া সম্ভব?

৪| ১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:২১

ঢাকাবাসী বলেছেন: সচরাচর এরকম ঘটেনা কারণ আজকাল এরা ঐ টাকাকে বহুগুন করতে পারে। অবশ্য ত্রিশ বছর ম্যালা লম্বা সময় আর মদ জুয়ার নেশার কথাটি পরে বুঝলুম। । ভাল লাগল গল্পটি।

১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৫৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ওই যে কথায় বলে না, 'বসে বসে খেলে রাজার ভাণ্ডও ফুরিয়ে যায়'। আব্দুর রউফের ক্ষেত্রে এরকমই ঘটেছে। তা' ছাড়া তার মদ ও জুয়ার নেশা তাকে ধংস করেছে। অন্যান্য নেশার লিমিট থাকলেও জুয়ার নেশার কোন লিমিট নেই। রাতারাতি একজন মানুষ আমীর থেকে ফকির হয়ে যেতে পারে। আমার বন্ধুর ক্ষেত্রে ত্রিশ বছর লেগেছে ফকির হতে- এটাই তো অনেক।

ধন্যবাদ ঢাকাবাসী। ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইল।

৫| ১৮ ই জুন, ২০১৬ রাত ১১:২০

কালনী নদী বলেছেন: প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া এই দেশে অপরাধ ঘুষ খাওয়া কখনও নয়!! -নচি দা।


সংগ্রহে রাখলাম ভাই।

১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:০৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া এই দেশে অপরাধ ঘুষ খাওয়া কখনও নয়!! -নচি দা।


নচিকেতার গান রূঢ় বাস্তবকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

ধন্যবাদ কালনী নদী। ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

৬| ১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:০১

নীলপরি বলেছেন: খুব সুন্দর করে বাস্তবটাকে তুলে ধরেছেন । ভালো লাগলো ।

১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:০৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ নীলপরি। ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

৭| ১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৯:৪৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: এ দেশে আবার ঘুষ খাওয়ার অপরাধে চাকুরিও যায়! :-/ বাহ বাহ!

১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:০৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আজকাল যায় না। এক সময় যেত। এই স্মৃতিচারণ সেই এক সময়ের।

ধন্যবাদ হাসান মাহবুব ভাই। ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

৮| ১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৬

কামরুন নাহার বীথি বলেছেন: কঠিন বাস্তবতা তুলে এনেছেন আপনার গল্পে!!!
ঘুষের টাকা মদ, আর জুয়াতে উড়ে গেল,--- যেভাবে আয়, সেভাবেই ব্যয়!

ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইল!

১৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভালো বলেছেন বোন। ব্যবসা করে কোটিপতি হলে সেই সম্পদ টিকে থাকে, কিন্তু চাকরিতে ঘুষ খেয়ে কোটিপতি হলে সেই সম্পদ ফুরাতে সময় লাগে না। উভয় ক্ষেত্রেই সামান্য দু'চারটি ব্যাতিক্রম থাকতে পারে।

ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

৯| ১৯ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৩১

বাশার বিশ্বাস বলেছেন: ভাই আজ বাংলাদেসের যে অবস্থা তাতে ঘুস সারা কজন চাকরি মেলেনা তায় ঘুস খায় টার টাকাটা ওঠানর জন্য

১৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া দুটোই নৈতিকতাবিরোধী।

১০| ১৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২২

আরাফআহনাফ বলেছেন: কঠিন বাস্তবতা।
অনেক ভালো লাগা জানবেন।

১৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আরাফাআহনাফ।
ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

১১| ২০ শে জুন, ২০১৬ রাত ৩:১৫

শান্তির দেবদূত বলেছেন: গল্পের থিমটা ভালো লেগেছে। এমনটিই হয়, পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়।
ভালো থাকুন প্রিয় গল্পকার, শুভকামনা রইল অনেক।

২০ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ শান্তির দেবদূত।
ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা রইল।

১২| ২০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: মজার হলেও শিক্ষণীয় গল্প। +++

২০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ বোকা মানুষ বলতে চায়।

ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

১৩| ২০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বিধ্বংসী চরিত্রের বিধ্বংসী পতন!

২০ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: সঠিক মুল্যায়ন। ধন্যবাদ প্রোফেসর শঙ্কু।

ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.