নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিংশ শতাব্দীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র -- অষ্টাদশ পর্ব

১১ ই মে, ২০১৭ রাত ৮:৪৯

নাগরিক অধিকার আন্দোলন -৪

মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র -২

৯। রক্তাক্ত রবিবার
১৯৬৫ সালের ৭ মার্চ নাগরিক অধিকার আদায়ের দাবিতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এলাবামা রাজ্যের সেলমা থেকে রাজধানী মোন্টগোমেরি পর্যন্ত এক পদযাত্রার আয়োজন করে। মার্টিন লুথার কিং সহ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ পদযাত্রার জন্য সমবেত হন। কিন্তু বোমা নিক্ষেপ ও পুলিশের মারমুখী আচরণের কারণে কর্মসূচি বাতিল করতে হয়। এই দিনটিকে রক্তাক্ত রবিবার বা Bloody Sunday হিসাবে ইতিহাসে উল্লেখ করা হয়। পুলিশ ঐদিন রক্তাক্ত ভাবে আন্দোলন দমন করতে পারলেও, এই ঘটনাটা ছিল আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট। এই ঘটনার মধ্যদিয়ে আন্দোলনটি ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করে।

এরপর মার্টিন লুথার কিং ৯ মার্চ আবারো পদযাত্রার আয়োজন করেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে পদযাত্রাটি কিছুদূর যাওয়ার পর বাতিল করতে হয়। এতে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অসন্তুষ দেখা দেয়। অবশেষে ১৯৬৫ সালের ২৫ মার্চ পদযাত্রাটি এলাবামা রাজ্যের সেলমা থেকে শুরু হয়ে রাজধানী মোন্টগোমেরিতে যেয়ে সফল ভাবে শেষ হয়। পদযাত্রা শেষে মার্টিন লুথার কিং "How Long, Not Long" শিরোনামে ভাষণ দেন। ওই ভাষণে তিনি বলেন, আফ্রিকান আমেরিকানদের সমান অধিকার বেশী দূরে নয় কারণ নৈতিকতার পরিধি দীর্ঘ হলেও তা ন্যায় বিচারের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য।

১০। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা
মার্টিন লুথার কিং ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু প্রথমদিকে নাগরিক আন্দোলনের ক্ষতি হতে পারে এই ভেবে প্রকাশ্যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য রাখতেন না। পরে যখন আমেরিকানদের মধ্যে ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধিতা বাড়তে থাকে তখন তিনি প্রকাশ্যে যুদ্ধ বিরোধী বক্তব্য প্রদান করতে থাকেন। তার মৃত্যুর ঠিক এক বছর আগে ১৯৬৭ সালের ৪ এপ্রিল নিউ ইয়র্ক সিটির রিভারসাইড চার্চে এক বক্তিতায় ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি ওই বক্তিতায় বলেন, "আমেরিকার ভিয়েতনামকে তার উপনিবেশ হিসাবে দখল করতে চায়।" তিনি আমেরিকার পররাষ্ট্র নীতির সমালোচনা করেন।

মার্টিন লুথার কিং মনে করতেন ভিয়েতনাম যুদ্ধে যে খরচ হচ্ছে, তা না করে এই অর্থ দিয়ে আমেরিকানদের জন্য অনেক সমাজকল্যাণমূলক কাজ করা যেত। ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে যুদ্ধ বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা ১৯৬৮ সালের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিবাচনে মার্টিন লুথার কিংকে প্রার্থী করতে চেয়ে ছিল। কিন্তু মার্টিন লুথার কিং নির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজী হননি। তিনি বলে ছিলেন, রাজনীতির চাইতে অধিকার আন্দোলনের কর্মী হিসাবে তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।

মার্টিন লুথার কিং ১৯৬৭ সালের ১৫ এপ্রিল নিউ ইয়র্কে অনষ্ঠিত যুদ্ধ বিরোধী সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত এক মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্ক থেকে শুরু হয়ে জাতিসংঘ ভবন পর্যন্ত যায়। জাতিসংঘে তিনি নাগরিক অধিকারের বিষয়টা উত্থাপন করেন।

১১। গরীবদের প্রচারণা "Poor People's Campaign"
মার্টিন লুথার কিং ১৯৬৮ সালে অর্থনৈতিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য গরীবদের প্রচারণা বা Poor People's Campaign নামে আন্দোলন শুরু করেন। সব বর্ণের গরীবদেরকে নিয়ে তিনি এই আন্দোলন শুরু করেন। তিনি অহিংস ভাবে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু করেন। তার দাবি মেনে নিয়ে কংগ্রেস ইকোনমিক বিল অফ রাইটস পাস করে।

মার্টিন লুথার কিং হত্যাকান্ড
১৯৬৮ সালের ২৯ মার্চ মার্টিন লুথার কিং আন্দোলনরত কালো পরিচ্ছন্ন কর্মীদের আন্দোলনকে সমর্থন করার জন্য টেনেসি রাজ্যের মেমফিসে যান। পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বর্ধিত বেতন ও ভাল সুযোগ-সুবিধার জন্য ১২ মার্চ থেকে আন্দোলন করে আসছিলো। একদিন খারাপ আবহাওয়ার জন্য কাজ বন্ধ হয়ে গেলে কালো শ্রমিকদেরকে দুই ঘন্টার বেতন দিয়ে বিদায় করা হয়, অথচ সাদা শ্রমিকদেরকে পুরাদিনের বেতন দেয়া হয়।

মার্টিন লুথার কিং মেমফিসে আসলে লড়াইন মোটেলে ৩০৬ নাম্বার রুমে উঠতেন। ১৯৬৮ সালের ৪ এপ্রিল বিকাল ৬:০১ মিনিটে মার্টিন লুথার কিং যখন মোটেলের দ্বিতীয় তলার বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন জেমস আর্ল রে তার মুখে গুলি করে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সেইন্ট জোসেফ'স হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তার জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়, ৭:০৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.