নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায়সমূহ - ১

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:২৪

মারবুরি বনাম ম্যাডিসন [৫ ইউ এস ১৩৭ (১৮০৩)]
উইলিয়াম মারবুরি এবং অন্যান্য -- আবেদনকারীগণ
জেমস ম্যাডিসন, সেক্রেটারি অফ স্টেট -- রেসপন্ডেন্ট
রায় ঘোষণার তারিখ: ফেব্রুয়ারি ২৪, ১৮০৩
প্রধান বিচারপতি জন মার্শাল সর্বসম্মত রায় প্রদান করেন।

মামলার বিবরণ
প্রেসিডেন্ট জন এডামস তার মেয়াদের শেষের দিকে ডিস্ট্রিক্ট অফ কলম্বিয়াতে জাস্টিস অফ পিস হিসাবে কয়েক জনকে মনোনীত করেন। সিনেট এই মনোনয়ন সমূহকে অনুমোদন করে কাজের অনুজ্ঞা (commission) প্রস্তুত করেন। পরবর্তী প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসন দায়িত্ব নেয়ার পর, আগের প্রেসিডেন্ট জন এডামসের সেক্রেটারি অফ স্টেট কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সবগুলি কাজের অনুজ্ঞা (commission) নতুন প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠান নাই। প্রেসিডেন্ট জেফারসন তার সেক্রেটারি অফ স্টেট জেমস ম্যাডিসনকে নির্দেশ দেন কাজের অনুজ্ঞা (commission) গুলি যাতে মনোনীতদের কাছে হস্তান্তর করা না হয়। কাজের অনুজ্ঞা (commission) তাদের কাছে হস্তান্তর না করায়, উইলিয়াম মারবুরি সহ আরো কয়েকজন সেক্রেটারি অফ স্টেট জেমস ম্যাডিসনের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা দায়ের করেন।

বিচার্য বিষয়
(১) কাজের অনুজ্ঞা (commission) পাওয়ার অধিকার কি বাদীর আছে?
(২) কাজের অনুজ্ঞা (commission) পাওয়ার জন্য তারা কি কোর্টে মামলা করতে পারে?
(৩) কাজের অনুজ্ঞা (commission) হস্তান্তর করার আদেশ দেয়ার কর্তৃত্ব কি সুপ্রিম কোর্টের আছে?

রায়
প্রধান বিচারপতি জন মার্শাল সর্বসম্মত রায় প্রদান করেন।
(১) প্রথম বিচার্য বিষয়ের উত্তর--হাঁ। কাজের অনুজ্ঞা বা commission পাওয়ার অধিকার বাদীর আছে। সুপ্রিম কোর্টের অভিমত হল, সংবিধান প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা নিয়োগ এবং কাজের অনুজ্ঞা (commission) প্রদান করার। কারণ কর্মকর্তা নিয়োগের একমাত্র প্রমাণ হচ্ছে তাকে কাজের অনুজ্ঞা (commission) প্রদান করা; কাজের অনুজ্ঞা (commission) প্রদান আর নিয়োগ এই দুইটা কাজ অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। কমিশন ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় না এবং এই কারণেই কমিশনে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর হচ্ছেই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সব শেষ ধাপ।

(২) দ্বিতীয় বিচার্য বিষয়ের উত্তর--হাঁ। কাজের অনুজ্ঞা বা commission পাওয়ার জন্য বাদী কোর্টে মামলা করতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের আরো অভিমত হল, চূড়ান্ত নিয়োগ পাওয়ার পরই একজন কর্মকর্তা আইনের অধীনে ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়। যদি তার এই আইনগত ক্ষমতা অস্বীকার করা হয়, তা হলে সে তখন আইনের আশ্রয় নিতে পারে।

(৩) তৃতীয় বিচার্য বিষয়ের উত্তর--না। কাজের অনুজ্ঞা বা commission হস্তান্তর করার আদেশ দেয়ার কর্তৃত্ব সুপ্রিম কোর্টের নাই। জুডিশিয়ারি এক্ট, ১৭৮৯ এর ১৩ ধারা অনুসারে মারবুরি সহ অন্যান্য বাদীরা সুপ্রিম কোর্টের আছে কাজের অনুজ্ঞা বা commission পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে। কিন্তু এই আইন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩ এর ধারা ২ এর পরিপন্থী। যুক্তরাষ্ট্র সংবিধানে বিচার বিভাগের ক্ষমতা বলা আছে এবং কোন সাধারণ আইন এবং সংবিধানের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধান অনুসারে পরিচালিত হবে। অতএব যদি দেখা যায় কোন আইন সংবিধানের পরিপন্থী তা হলে সেই আইন বাতিল বলে গণ্য হবে। জুডিশিয়ারি এক্ট, ১৭৮৯ এর ১৩ ধারা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩ এর ধারা ২ এর পরিপন্থী, ফলে জুডিশিয়ারি এক্ট, ১৭৮৯ এর ১৩ ধারা বাতিল বলে গণ্য হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩ এর ধারা ২ এর বিধান মতে এই ধরণের মামলা বিচার করার ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের নাই বিধায় মারবুরির সহ অন্যদের আবেদন না মঞ্জুর করা হলো।

বিশ্লেষণ
ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে বলা হয়, সার্বভৌম। অর্থাৎ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কোন আইন পাস হলে, এর বৈধতা নিয়ে কোন আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায় না। এই প্রসঙ্গে একটা প্রবাদ আছে, "ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ছেলেকে মেয়ে আর মেয়েকে ছেলে বানান ছাড়া আর সব পারে।" অর্থাৎ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট যেকোনো ধরণের আইন পাস করতে পারে। এর যৌক্তিকতা বা বৈধতা নিয়ে কোন আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না।

এই ধারণার বিপরীতে, মারবুরি বনাম ম্যাডিসন মামলার রায়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের আধিপত্য (supremacy) ঘোষণা করছে। অর্থাৎ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মত যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস যেকোনো আইন পাস করতে পারবে না। কংগ্রেস যে আইন পাস করবে, তা অবশ্যই সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। কোন আইন যদি সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, সেই ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট ঐ আইন বাতিল করে দিবে।

এই রায়ের মাধ্যমে --
১. সংবিধানের আধিপত্য (supremacy) প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
২. কংগ্রেসের ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৮

সাহেদ সারোয়ার ভুঁইয়া বলেছেন: ধন্যবাদ জনাব।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৪০

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: আমাকে যেমন লেখার জন্য ধন্যবাদ দিলেন। আপনাকেও পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.