নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা আর তারা

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪৩


২০০৮ সালে কোরিয়ান সরকারের আমন্ত্রণে আমরা সেদেশ সফরে যাই। সফরের প্রথম দিন ছিল ওরিয়েন্টেশন, ঐদিন কোরিয়ান ভাষা এবং কালচার সম্পর্কে আমাদেরকে একটা সাধারণ ধারণা দেয়া হয়। সেই সাথে আগামী দিনগুলির বিস্তারিত কর্মসূচি আমাদেরকে জানিয়ে দেয়া হয়।

দ্বিতীয় দিন উদ্বোধনী অনুস্ঠানের মাধ্যমে আমাদের কর্মসূচি শুরু হয়। দেড় ঘণ্টা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলার পর চা বিরতি হয়। চা বিরতির সময় আমার দুভাষী এবং প্রোটোকল অফিসার জিয়ং মিন সিও (Jeong-Min Seo) আমাকে জানায় আমাদের সম্মানে আজ সরকারিভাবে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। সে আমার কাছে জানতে চায়, সেখানে তারা মদ পরিবেশন করতে পারবে কি না। আমি বলি, আমাদের মধ্যে অনেকেই আমরা মদ খাই না। মদ এবং শুকরের মাংস ছাড়া তোমাদের পছন্দ মত যে কোন কিছু পরিবেশন করতে পার। কিছুক্ষণ পরে জিয়ং ফিরে এসে জানাল, তারা মদের পরিবর্তে ফলের জুস পরিবেশন করবে। তারপর জানতে চাইল, তারা কি ভোজের শুরুতে টোস্ট (চিয়ার্স বলে, পানপাত্র ঠুকে পান শুরু করা) করতে পারবে? আমি বললাম, এতে আমাদের কোন অসুবিধা নাই।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আমরা যখন মধ্যাহ্নভোজ ছাড়াও অন্যান্য প্রোগ্রামে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন জিয়ং আমাকে জানাল, পাশের রুমে আমাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম দশ জনের জন্য দশটা জায়নামাজ বিছানো। আমি তো নামাজের কথা কখনও ওদেরকে বলি নাই বা কোরিয়াতে আসার পর প্রকাশ্যে নামাজও পড়ি নাই। আমি আমার হোটেল রুমেই নামাজ পড়েছি। তাহলে তারা আমাদের জন্য কেন নামাজের এত সুন্দর ব্যবস্থা করলো? এই প্রশ্ন এখনও আমার মনে উঁকি দেয়।

সারাদিন নানা অনুষ্ঠান শেষে আমরা নৈশভোজে অংশ নিলাম। এলআরটিএ প্রেসিডেন্ট কিম তাই হায়ুন (Kim Tae Hyun) (তিনি মন্ত্রীর পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা) এবং বিচার মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আমাদেরকে স্বাগত জানালেন। দুই পক্ষের আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের পর ফলের জুস দিয়ে টোস্ট করে ভোজ শুরু হল। এটা ছিল একটা ফুল কোর্স ডিনার বা টুয়েলভ কোর্স ডিনার। তবে কেন জানিনা তারা কোন মাংস পরিবেশন করল না। আমাদের খেতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিলো। যাই হউক আড়াই ঘণ্টা ধরে ডিনার চলো। ডিনার শেষে এলআরটিএ প্রেসিডেন্ট কিম এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লিফট পর্যন্ত এগিয়ে এসে আমাদেরকে বিদায় জানালেন।

আমরা সবাই লিফটে উঠলাম, আমাদের সাথে তিন জন কোরিয়ান ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও উঠলেন। তারা আমাদেরকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিবেন। লিফটের দরজা বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে আমাদের একজন সফরসঙ্গী, ছোট মিয়া, চিৎকার করে ধমকের সুরে আমার কাছে জানতে চাইলেন, আমি ডিনারে মদ পরিবেশন করতে নিষেধ করেছি কেন? তার চিৎকারে আমি যেমন হতভম্ব হয়ে গেলাম, কোরিয়ান অফিসাররাও একবার আমার দিকে আরেকবার ছোট মিয়ার মুখের দিকে তাকাচ্ছিল। আমি পরিস্থিতি আঁচ করার চেষ্টা করছিলাম। এমন সময় বড় মিয়া আরেকটুকু নিচু গলায় কিন্তু খুবই রূঢ় ভাবে ইংরেজি এবং বাংলা ভাষা মিশিয়ে জানতে চাইলেন, "who are you? আপনি মদ নিষেধ করার কে? কে আপনাকে ক্ষমতা দিয়েছে মদ নিষেধ করতে?" আমি চিন্তা করলাম, আমার মানসম্মান যায় যাক, কোরিয়ানদের সামনে বাংলাদেশের সম্মান ধুলায় লুটিয়ে পড়তে দেয়া যায় না। তাই আমি স্বাভাবিক থাকার ভান করে, নিচু গলায় একটা কৈফিয়ত দিলাম, "আমি ইচ্ছা করে মদ নিষেধ করি নাই। তারা আমার কাছে জানতে চেয়ে ছিল। তাই আমি না করেছি। তারা যদি আমাকে না জানিয়ে দিতো, আমি খেতাম না, কিন্তু আমি তো কিছু বলতাম না।" আমাদের ভাগ্য ভাল, এর মধ্যেই লিফটের দরজা খুলে গেলো। আমরা লিফট থেকে বের হয়ে আসলাম। কোরিয়ান অফিসাররা আমাদের আমাদেরকে গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে বিদায় জানিয়ে চলে গেলেন।

রাতে হোটেলে ফিরে চিন্তা করতে থাকলাম কি ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যায়। সফরে তৃতীয় এবং চতুর্থ দিন আমার হাতে কিছু সুযোগ এনে দিল। তৃতীয় দিন ছিল শনিবার এবং চতুর্থ দিন রবিবার। শনিবার কোন আনুষ্ঠানিক কর্ম অধিবেশন ছিল না। শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণ। আমাদের সাথে থাকবে সাং সুক হাওয়াঙ (Sung-Suk Hwang), একজন সমন্বয়কারী, এবং একজন পেশাদার টুরিস্ট গাইড। আমি চিন্তা করলাম, মদ খেতে না পেরে তারা মনে যে কষ্ট পেয়েছে, তা ভ্রমণের আনন্দময় সময়ে আমি প্রশমন করার চেষ্টা করবো। কিন্তু উভয় মিয়া খুব শক্ত হয়ে থাকলেন। পারতপক্ষে আমার সাথে কথা না বলে থাকার চেষ্টা করলেন। আমি গায়ে পরে এটা ওটা বলছি, যাতে কিছুটা নরম করা যায়। শনিবার দিনটা কোন বিপর্যয় ছাড়াই ভাল ভাবেই কেটে গেল।

পরের দিন রবিবার অপ্রত্যাশিত ভাবে বেশ কিছু সুযোগ আমার হাতে এসে গেলো। কোন প্রটোকল নাই। স্বাধীন ভাবে আমরা আমাদের দিন অতিবাহিত করতে পারবো। যেখানে ইচ্ছা সেখানে ঘুরতে যেতে পারবো, ইচ্ছা করলে হোটেলে শুয়ে বসেও দিন কাটিয়ে দিতে পারব। ঘুরাঘুরি সুবিধার জন্য আমাদের প্রত্যেককে মেট্রো ট্রেন এবং বাসের পাস দেয়া হয়েছিল। ট্যাক্সি ভাড়া এবং কেনাকাটার জন্য নগদ ডলারও তারা দিয়েছিল। সুতরাং সারাদিন ঘোরাঘুরি করতে কোন অসুবিধা নাই। আমরা আগেই ঠিক করেছিলাম, হোটেলে ব্রেকফাস্ট করেই যত দ্রুত সম্ভব আমরা ঘুরতে বেরিয়ে যাব। ব্রেকফাস্ট করতে যেয়ে দেখলাম, “কোথায় যাব?” -- এই নিয়ে পুরা দল দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। ছোট মিয়ার ইচ্ছা ইলেক্ট্রনিক মার্কেটে যাবে। তার কিছু জিনিস কিনতে হবে। কেউ যাক বা না যাক সে একা হলেও যাবে। তাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে বড় মিয়া। অপর গ্ৰুপের ইচ্ছা, তারা যাবে শপিং মলে। তাদেরও কিছু কেনা কাটা করতে হবে। আমি চিন্তা করলাম আগামী দিনগুলিতে আমাদেরকে অনেক আনুষ্ঠানিক প্রোগ্রামে অংশ নিতে হবে, তাই যে ভাবেই হউক আমাদেরকে ঐক্য ধরে রাখতে হবে, যাতে আমাদের সফরের উপর কোন খারাপ প্রভাব না পরে। আমি ছোট মিয়ার প্রস্তাব সমর্থন করে, সবাইকে ঐক্যের কথা বললাম। তাছাড়া আমরা কিছু কিনি বা না কিনি, এই সুযোগে কোরিয়ার সবচেয় বড় ইলেক্ট্রনিক মার্কেট আমাদের দেখা হবে। সবই আমার যুক্তি এবং প্রস্তাব মেনে নিলো।

ইলেক্ট্রনিক মার্কেটে আমরা দুই আড়াই ঘণ্টা কাটালাম। এরমধ্যে ছোট মিয়ার কেনা কাটাও শেষ হল। তারপরও আমাদের হাতে অনেক সময়। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, অন্যরা যে শপিং মলে যেতে চেয়ে ছিল এবার সেখানে যাব। বিশাল শপিং মল। যে যার মত আমরা জিনিস দেখছি, কেউ কেউ তার পছন্দের জিনিস কিনছে। হঠাৎ দেখি, বিশাল এক মদের বোতল নিয়ে ছোট মিয়া, "আলী ভাই, আলী ভাই" বলতে বলতে আমার দিকে আসছে। সে হাসতে হাসতে বলল, এটা কোরিয়ার মধ্যে সবচেয়ে দামি মদ। যা বুঝার আমি তা বুঝে গেলাম। আমি তার সাথে মদের বোতল নিয়ে কিছু হাস্যরস করলাম। ডিনারের কিছু আগে আমরা হোটেলে ফিরে আসলাম।

হোটেলে ফিরে গোসল করে, আমি কাগজ পত্র নিয়ে বসেছি আগামীকালের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিতে। এমন সময় রুমের টেলিফোনটা বেজে উঠল। টেলিফোন ধরতেই অপর প্রান্ত থেকে খুব নিচু গলায় আমাদের এক সফর সঙ্গী, যে ছোট মিয়ার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ, বলল, ছোট মিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী কাল থেকে কোন অনুষ্ঠানেই সে আমাকে সামনে যেতে দিবে না। সে এবং বড় মিয়া সামনে থাকবে। আমি সামনে যেতে চাইলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিবে। এই খবরটা শুনার পর দেশের মানসম্মনা নিয়ে আমি চিন্তিত হয়ে পড়লাম। সিদ্ধান্ত নিলাম ডিনারের পর পরই জরুরি মিটিং করব। এছাড়া হাতে সময় নেই। ডিনারের সময় সবাইকে মুখে মুখে মিটিংয়ের কথা জানিয়ে দিলাম। হোটেল লবিতে আমরা সমবেত হলাম। বাংলাদেশের মানসম্মানের কথা বলে আবেগময় কিছু কথা বললাম। আমার বক্তব্যের সময় অনেকের চোখ ছলছল করতে দেখলাম। কিন্তু বড় মিয়া এবং ছোট মিয়া পাথরের মত শক্ত হয়ে থাকলেন।

আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি, চরম উস্কানিতেও আমি শান্ত এবং ধৈর্যশীল থাকব। আরেকটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যারা যারা সামনে থাকতে চায় থাকবে, আমি সবার পিছনে পিছনে থাকবো। পরেরদিন সকালে আমরা একটা কর্ম অধিবেশনে গেলাম। দুই মিয়া সবার আগে গাড়ি থেকে নামলেন। আমি কাগজপত্র গোছানো ছলে সবার শেষে নামলাম। কর্ম অধিবেশনে কোন অসুবিধা হলো না, কারণ এখানে প্রত্যেকের আসন পদবি সহ নাম-ফলক দিয়ে চিহ্নিত করা। সবই যার যার আসনে বসলেন। মধ্যাহ্ন ভোজনের পর আমাদেরকে কোরিয়ান সুপ্রিম কোর্ট পরিদর্শনে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানেও উভয় মিয়া আগে আগে নামলেন। আমি আমার পরিকল্পনা মত সবার শেষে নামলাম। প্রথমেই আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হল কনফারেন্স হলে, সেখানে আমরা সুপ্রিমকোর্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করলাম। সেখানেও কোন অসুবিধা হলো না, কারণ এখানেও আসনগুলি নাম-ফলক দ্বারা নির্ধারিত। মতবিনিময়ের পর আমাদেরকে সুপ্রিম কোর্ট ভবন এবং অন্যান্য স্থাপনাগুলি দেখানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হল। সুপ্রিম কোর্টের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বর্ণনা করছিলেন। যথারীতি দুই মিয়া সবার সামনে, আমি এটা ওটা দেখার ছলে সবার পিছন পিছন যাচ্ছি। একটা বিশাল ভাস্কর্যের সামনে আমাদের গাইড থামলেন। তিনি বিস্তারিত ভাবে এই ভাস্কর্য সম্পর্কে বলবেন। প্রোটোকল অফিসার জিয়ং মিন সিও এবং সমন্বয়কারী সাং সুক হাওয়াঙ এই প্রথম বার লক্ষ্য করলেন আমি সবার পিছনে। তারা বিনয়ের সাথে আমাকে সামনে আসতে বললেন। সবাই সরে আমাকে সামনে আসার সুযোগ করে দিল। কিন্তু বড় মিয়া এবং ছোট মিয়া শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। তখন সমন্বয়কারী সাং সুক হাওয়াঙ দুই মিয়াকে লক্ষ্য করে সবাইকে বললেন, তিনি যেহেতু প্রতিনিধি দলের প্রধান, তাই তিনি সবসময় সবার সামনে থাকবেন। এটাই প্রটোকল।

আল্লাহ সেই দিন বাংলাদেশের সম্মান রক্ষা করেছিলেন। বাকি দিনগুলিতে আর অসুবিধা হয় নি।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৩৬

রাকু হাসান বলেছেন: স্যার বাংলাদেশের মান রক্ষা হয়েছে এবং সবকিছু ঠিক ভাবে সামলিয়ে নিতে পেরেছেন ,জেনে খুব ভাল লাগলো । এভাবে আমরা যেন অনন্ত বিদেশের মাটিতে দেশ টা কে লজ্জা না দেই ।

ভাল থাকবেন অনেক সেই কামনা ।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:০৮

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


লেখা সংক্ষেপ করতে যেয়ে এই গল্পে শুধু আমার কথাই বলেছি।

বড় মিয়া আর ছোট মিয়া ছাড়া অন্যরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছিলেন।

তাদের কথা বলতে গেলে লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে।

যিনি আমাকে ষড়যন্ত্রে খবরটা জানিয়ে ছিলেন, তিনি ছোট মিয়ার অনেক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি। কিন্তু দেশের স্বার্থেই তিনি আমাকে সতর্ক করেন।

তিনি আমাকে সতর্ক না করলে, আমার অজান্তেই ঘটনা ঘটে যেত।

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৪৪

সনেট কবি বলেছেন: অবুঝ লোক নিয়ে অনেক মুশকিল হয়।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:১২

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


মিয়ার অবুঝ লোক না।

তারা অনেক স্বার্থ হাসিল করে চলেছেন।

অবুঝ হলে স্বার্থ হাসিল করতে পারতেন না।

তাদের কাছে নিজের স্বার্থই বড়।

এমন কি দেশর সম্মান তাদের স্বার্থের কাছে কিছু না।

৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:০০

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: আমাদের কারো কারো ফ্রিতে মদ খাওয়ার আকুলতা দেখা যায় প্লেনে উঠলে।
ঐ দুই মিয়া এরকম করার কারণ কী? আপনাকে 'বস' মানতে কষ্ট হচ্ছিল কেন তাদের?

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:২৭

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


দুই মিয়া ঢাকা থেকেই মদের ব্যাপারে কানাঘুষা করতে থাকে। যা প্রথমে আমি বুঝতে পারি নাই। আমরা ছিলাম মোট ১০ জন। তারা দুইজন আলাদা বোর্ডিং পাস নিয়ে আলাদা বসে। পরে বুঝতে পেরেছি তারা প্লেন ফ্রি মদ খাবার জন্য আলাদা বসেছে।

তারা তাদের আদর্শিক কারণে আমাকে শত্রু ভাবতে থাকে। তারা মনে করতে থাকে আমার জন্য তারা ঠিক মত মদ খেতে পারছে না। তাদের আরেকটা ভুল ধারণা ছিল, আমি কোরিয়ানদের মদ পরিবেশন করতে বাঁধা দিচ্ছি।

দলে দশ জনের মধ্যে পাঁচ জনই ছিলেন বয়সে আমার থেকে প্রবীণ। পদমর্দায় জ্যেষ্ঠ হওয়াতে আমাকেই নেতৃত্ব দিতে হচ্ছিল। আসলে আমার কাছে এখনও মনে হয়, এইগুলি ছোট ছোট কারণ। আসল কারণ হয়তো, তারা ভেবেছে মদ খাওয়া তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা, আমি বাধা দেয়ার কে? এটা তাদের মনে তীব্র আঘাত করেছে। যদিও আমি তাদের কাছে ব্যাখ্যা করেছি, কি পরিস্থিতিতে আমি মদ পরিবেশন করতে না করেছি।

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:২৯

রিফাত হোসেন বলেছেন: মদ আমাকে আকর্ষন করে না। মদে মানুষ কি পায় কে জানে। #:-S না মিষ্টি না টক নাইবা ঝাল। :)

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১২

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


মদ আপনাকে আকর্ষণ করে না। কিন্তু অনেককেই করে। কিভাবে করে এই লেখাতেই দেখেছেন। মদের আকর্ষণে মিয়ার কিভাবে সহকর্মীর সম্মান এমনকি দেশের সম্মান নষ্ট করতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না।

কোরিয়ানরা প্রচুর মদ খায়। মদ খাওয়াটা কোরিয়াতে ধর্মীয়, সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় ভাবে কোন অপরাধ না। কিন্তু আমি আশ্চর্য হয়ে গেছি তাদের মূল্যবোধ ও সম্মান করার ধরণ দেখে। আমার দুভাষী এবং প্রটোকল অফিসার জিয়াং মিন সিও একজন তরুণ অফিসার, একেবারেই নবীন। সে যখন জানতে পেরেছে আমি মদ খাই না, এরপর থেকে সে কখনও আমার সামনে মদ খায় নাই। আমরা যেখানেই যেতাম, সে সবসময় আমাদের সাথে থাকতো। আমাদেরকে লাঞ্চ করতে একেক দিন একেক রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়া হতো। আমরা যতগুলি রেস্টুরেন্টে গেয়েছি এর সব কয়টিতেই মদের বার ছিল। অর্থাৎ বার এবং রেস্টুরেন্ট। আমাদের মিয়ারা প্রথমেই এক পেগ খেয়ে নিতো এবং জিয়াংকেও উদ্বুদ্ধ করতো খাওয়ার জন্য। একদিন দেখি মিয়াদের সাথে আমার আড়ালে জিয়াংও খাচ্ছে। এটা স্বাভাবিক সে কোরিয়ান খেতেই পারে। আমার দেখারও কিছু নাই, বলারও কিছু নাই। কিন্তু আমি দেখে ফেলাতে, সে বিনয়ে গদগদ হয় কৈফিয়ত দিচ্ছিল সে কখনও দিনের বেলায় মদ খায় না। এই আজকেই মিয়াদের সঙ্গ দিতে যেয়ে একটু খেয়েছে, ইত্যাদি।

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১০:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৪

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


ধন্যবাদ।

৬| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৫০

মোঃ আল মামুন শাহ্ বলেছেন: পড়ে ভালো লাগলো। নতুন ব্লগার হিসেবে আমার ব্লগে আমন্ত্রণ রইল।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৫৮

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


পড়ার জন্য এবং ভালো লাগার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার ব্লগ ইতোমধ্যে দেখেছি।
ভালোই হচ্ছে। বিষয়বস্তুও ভাল। আমি মন্তব্য করেছি।

৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:৪৫

শাহিন-৯৯ বলেছেন:




আজকের সন্ধ্যা ৭.৩০ টার একটা ঘঠনা বলি, আমি যে এলাকায় থাকি (নাম বলতে পারছি না অন্য কারণে) সেখানে এম পির আর্শিবাদ প্রাপ্ত একজন ইয়াবা ও বেয়ার ডিলার, আজ সন্ধ্যায় একজন তাকে বলছে এভাবে অপেন এসব বিক্রি করলে দেশের অবস্থাতো খারাপ হয়ে যাবে, সে উত্তর দিল- প্রয়োজনে দেশ বেচে খাব। দেশ দিয়ে কি হবে নিজে বাঁচলে বাপের নাম।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১:১০

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


বাস্তব কারণে আপনি ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ না দিতে পারলেও আমি বিনা দ্বিধায় আপনার কথা বিশ্বাস করছি।
এই লোক মুখে এই কথা বলেছে।
কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের অনেক লোকই মুখে না বলেও এই নীতিতে বিশ্বাসী, "দেশ দিয়ে কি হবে নিজে বাঁচলে বাপের নাম।"
তারা মুখে না বলেও তাদের কাজে কর্মে এই কথাই প্রমাণিত হচ্ছে।
এই যে দুই মিয়ার গল্প বললাম, তারা কথায় কথায় চেতনার কথা বলে, দেশপ্রেমের কথা বলে। কিন্তু সামান্য মদ খেতে না পেরে বাংলাদেশের সম্মানকে ধুলায় লুটিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে নি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.