নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি কেন সোনা কিনছে?

২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৩৬



বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি বর্তমানে তাদের রিজার্ভে ৩৫,৭১৫ মেট্রিক টন সোনা মজুদ করেছে।
২০১০ সাল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি ব্যাপক হরে সোনা কিনতে থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর বর্তমান রিজার্ভের অধিকাংশই এসেছে ২০১০ সালের পর থেকে।

আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি সোনা বিক্রি করতো।
২০০০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি ৪,৪২৬মেট্রিক টন সোনা বিক্রি করেছিল৷
এখন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি স্বর্ণের নিট ক্রেতা ৷
২০২২ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সোনার রিজার্ভ ১৯৫০ সালের পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।
এই তথ্য জানিয়েছে ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল (WGC)।



২০১৮ সালে স্বর্ণ কেনার পরিমাণ ৬৫৬ মেট্রিক টন। এটা ছিল একটা রেকর্ড।
২০১৯ সালে স্বর্ণ কেনার পরিমাণ কিছুটা কমেছিল অর্থাৎ ৬০৫মেট্রিক টন।
২০২০ সালে স্বর্ণ কেনার পরিমাণ আরো কমে ২৫৫ মেট্রিক টন হয়।
এর কারণ হচ্ছে ঐ বছর স্বর্ণের দাম আকস্মিক ভাবে অনেক বেড়ে যায়।
২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২,০৬৩ ডলারে পৌঁছেছিল।

বর্তমানে সোনার চাহিদা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২১ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি তাদের রিজার্ভে ৪৫৫ মেট্রিক টন সোনা যোগ করেছে এবং ২০২২ সালে তারা আরো ১,১৩৫.৭ মেট্রিক টন সোনা যোগ করেছে, যা সর্বকালের সর্বোচ্চ।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি এই বছর সোনা কেনা অব্যাহত রাখবে বলে জানা গেছে।



কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেন সোনা ক্রয় করে?

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি সুদের হার নির্ধারণ, মুদ্রানীতি নিয়ন্ত্রণ এবং মুদ্রা ও বিলের মুদ্রণ ও প্রচলন নিয়ন্ত্রণ সহ কয়েকটি প্রাথমিক কাজ করে।

প্রতিটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল তাদের জাতীয় মুদ্রার মূল্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং জাতীয় মুদ্রার পতন রোধ করা। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এটি অর্জন করা হয়। তবে কোন কোন সময় এই কাজটি অনেক কঠিন হয়ে পরে।

জাতীয় মুদ্রার মূল্যের পতন যাতে না ঘটে সেই কারণেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি সোনা কেনা বাড়িয়ে দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির পছন্দের রিজার্ভ পণ্য হিসাবে সোনার তিনটি প্রাথমিক ব্যবহার রয়েছে৷



১. ঝুঁকি কমাতে:
অনিশ্চয়তা এবং বাজারের অস্থিরতার সময়ে স্বর্ণ একটি সুপরিচিত নিরাপদ বিনিয়োগ।
স্বর্ণকে এমন একটি সম্পদ হিসেবে দেখা হয় যার কোনো দায় নেই বরং ঝুঁকি কমানোর ক্ষমতা আছে।

স্বর্ণ সম্পর্কে আমেরিকান ব্যাংকার এবং ফিনান্সার জেপি মরগানের একটা বিখ্যাত উক্তি,
"শুধু মাত্র স্বর্ণই অর্থ। বাকি সবকিছুই ক্রেডিট”;
স্বর্ণের আরেকটি অন্তর্নিহিত সুবিধা হচ্ছে এর টেকসই ক্রয় ক্ষমতা।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি ফিয়াট মুদ্রার (অর্থাৎ ডলার বা ইউরো বা অন্য কোন রিজার্ভ মুদ্রা) বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসাবে স্বর্ণ ক্রয় করে মজুদ করছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি ঐতিহ্যগতভাবেই তাদের আর্থিক ব্যবস্থার সুরক্ষার জন্য স্বর্ণের বড় মজুদ রাখে।
কোন কারণে জাতীয় মুদ্রার মূল্যে ধস নামলে তখন মজুদ কৃত স্বর্ণ রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করবে।
এইভাবে সোনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শক্তি এবং জাতির আর্থিক নিরাপত্তার উপর আস্থা জাগিয়ে তোলে।

২. স্বর্ণ মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে একটি রক্ষাকবচ:

মুদ্রাস্ফীতি রোধ করার জন্য সুরক্ষা হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি স্বর্ণ কিনে মজুদ করে রাখে।

মুদ্রাস্ফীতি যাতে নাটকীয়ভাবে কোনো দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব না ফেলতে পারে তার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলি ডলারের রিজার্ভের পাশাপাশি স্বর্ণ এবং অন্যান্য মূল্যবান ধাতু কিনে মজুদ করে রাখেন।

অনেকেই স্বর্ণকে বৈদেশিক মুদ্রার মানের ব্যারোমিটার হিসেবে দেখেন। সোনার দাম বাড়ছে মানে মুদ্রার মান কমছে।



৩. মুদ্রার স্থিতিশীলতা এবং মান বৃদ্ধির সুবিধার্থে:

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাথমিক কাজ হল মুদ্রার স্থিতিশীলতা ঠিক রাখা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো। মুদ্রার ক্রমাগত অবমূল্যায়নের হতে থাকলে ব্যাঙ্কগুলিকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের নিজ নিজ অর্থনীতি যেন ধস না নামে। এই সময় ব্যাংকগুলি বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সোনা ব্যবহার করে।

কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সবচেয়ে বেশি সোনা রয়েছে?

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা ক্রেতাদের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ।
আমেরিকার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৮,১৩৩.৪৬ মেট্রিক টন।
দ্বিতীয় স্থানে থাকা জার্মানির স্বর্ণের পরিমাণ ৩,৩৫৫.১৪ মেট্রিক টন ৷

ইতালি, ফ্রান্স এবং রাশিয়া যথাক্রমে ২,৪৫১.৮৪, ২,৪৩৬.৭৫ এবং ২,৩০১.৬৪ মেট্রিক টন স্বর্ণ মজুদ করে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে। চীন এবং সুইজারল্যান্ড ২,০১০.৫১ মেট্রিক টন এবং ১,০৪০ মেট্রিক টন নিয়ে ষষ্ঠ এবং সপ্তম অবস্থানে রয়েছে।
জাপান ৮৪৫.৯৭, ইন্ডিয়া ৭৪৭.৪ এবং নেদারল্যান্ডস ৬১২.৪৫ মেট্রিক টন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোথায় সোনা মজুদ করে?

বেশিরভাগ ব্যাংক তাদের ভূগর্ভস্থ ভল্টে স্বর্ণ সংরক্ষণ করে।
তবে কোন কোন ব্যাঙ্ক তাদের স্বর্ণ বৈদেশিক রিজার্ভে রাখে।

উদাহরণস্বরূপ, ডাচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের ৬১২.৪৫ মেট্রিক টন স্বর্ণের ৩১% নিজেদের হাতে রেখেছে। বাকি ৩১% নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্কে এবং ৩৮ শতাংশ কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রেখেছে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৪৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: চাহিদা বৃদ্ধি হলে স্বর্ণের দাম বাড়তে থাকবে।

ব্যক্তি পর্যায়ে স্বর্ণের দাম বাড়লে গরীব মানুষের কষ্ট বাড়বে আর ধনীরা লাভবান হবে।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১:৪৬

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: চাহিদা বৃদ্ধি হলে স্বর্ণের দাম বাড়বে এই কথা অন্য সব পণ্যের মতোই সত্য।
স্বর্ণের চাহিদা দিন দিন বাড়বে।
ডলারের আধিপত্য খর্ব করার জন্য চীন তার স্বর্ণ মজুদ বাড়াচ্ছে।

চীনের টার্গেট আমেরিকার সমান সে মজুদ করবে।
যেটা বর্তমান পরিস্থিতিতে মোটেও সম্ভব না।

বর্তমানে আমেরিকার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৮,১৩৩.৪৬ মেট্রিক টন।
আমেরিকা প্রথম স্থানে আছে।

চীনের মজুদের পরিমাণ ২,০১০.৫১ মেট্রিক টন নিয়ে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে।

আমেরিকাকে ধরতে হলে চীনের প্রয়োজন আরো কম পক্ষে ৬ হাজার মেট্রিক টন।

চীন যদি প্রতি বছর ১০০ মেট্রিক টন করে কিনে আমেরিকা কিনবে ২০০ মেট্রিক টন করে।

এতে চীনের মজুদ বাড়ার সাথে আমেরিকার মজুদ দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকবে।

এতে আমেরিকাকে তো ধরতেই পারবে না বরং বাজারে স্বর্ণের দাম আরো বাড়বে।

ব্যক্তি পর্যায়ে সমস্যা হওয়ার কথা না। স্বর্ণ গরিবের পণ্য না। এটা বড়লোকের বিলাস পণ্য। আর রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পদ।

২| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ২:০৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: গরীবের বিয়েতেও স্বর্ণ লাগে। আমার বিয়ের সময় স্বর্ণের দাম ছিল ৬০০০ টাকা এখন প্রায় ১৩/১৪ গুন হয়েছে। আমাদের দেশে বিয়ে ব্যয়বহুল হবে স্বর্ণের দাম বাড়লে। ফলে গরীব এবং মধ্যবিত্ত লোকও ভুগবে।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ২:৪০

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: স্বর্ণ সংস্কৃতি থেকে গরিবকে বের হয়ে আসতে হবে।
শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ইতোমধ্যে বের হয়ে আসতে শুরু করেছে।
যাদের টাকা আছে তারা স্বর্ণ কিনুক।

কষ্ট করে স্বর্ণ কেনার কোন প্রয়োজন নাই।
স্বর্ণ কোন নিত্য প্রয়োজনীয় এবং নিত্য ব্যবহার্য পণ্য নয়।

৩| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ সকাল ১১:১৫

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: চীন খুব জোড়েসোড়ে চেষ্টা করছে স্বর্ণের মজুদ বাড়ানোর এবং গোপনে অনেকটাই সেরে নিচ্ছে।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৪৭

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: চীনের টার্গেট আমেরিকার সমান সে মজুদ করবে।
যেটা বর্তমান পরিস্থিতিতে মোটেও সম্ভব না।

বর্তমানে আমেরিকার স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ ৮,১৩৩.৪৬ মেট্রিক টন।
আমেরিকা প্রথম স্থানে আছে।

চীনের মজুদের পরিমাণ ২,০১০.৫১ মেট্রিক টন নিয়ে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে।

আমেরিকাকে ধরতে হলে চীনের প্রয়োজন আরো কম পক্ষে ৬ হাজার মেট্রিক টন।

চীন যদি প্রতি বছর ১০০ মেট্রিক টন করে কিনে আমেরিকা কিনবে ২০০ মেট্রিক টন করে।

এতে চীনের মজুদ বাড়ার সাথে আমেরিকার মজুদ দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকবে।

এতে আমেরিকাকে তো ধরতেই পারবে না বরং বাজারে স্বর্ণের দাম আরো বাড়বে।

৪| ২০ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ঘরে বেশ কিছু গহনা টহনা আছে।
সুব গুলোই উপহার পাওয়া।

২০ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৮:৫১

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: আপনার উপহার পাওয়া স্বর্ণগুলি চীনকে দান করুন।
বেচারা স্বর্ণ মজুদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের চীন প্রেমিক জনগণ নিজেদের উপহার পাওয়া স্বর্ণগুলি চীনকে দিলে চীন দেখিয়ে দিতে পারতো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.