নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসরায়েলে প্রস্তাবিত বিচার বিভাগীয় সংস্কার

২৫ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৩৩



প্রস্তাবিত বিচার বিভাগীয় সংস্কারের প্রতিবাদে গত পাঁচ মাস ধরে ইসরাইলে ব্যাপক প্রতিবাদ আন্দোলন হচ্ছে।

ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থায় প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলি কী কী?
বিচার মন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন ইসরায়েলের বিচার বিভাগকে সংস্কার করার জন্য কতিপয় প্রস্তাব করেন।

১. বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া:

বর্তমানে বিচারকদের নিয়োগের সুপারিশ করার জন্য একটা কমিটি আছে। এই কমিটিতে কর্মরত বিচারক, ইসরায়েল বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, নেসেট (কেনেসেট) সদস্য এবং সরকারী মন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত। কমিটির সদস্যদের সংখ্যায় গরিষ্ঠ মতামতে বিচারক নিয়োগ এবং বরখাস্ত করা যায়। সংস্কার প্রস্তাবে কমিটিতে সরকারি সদস্যের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে সরকার ইচ্ছা মত বিচারক নিয়োগ এবং বরখাস্ত করতে পারবে। ফলে সরকারের পক্ষে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
এই প্রস্তাবটি কার্যকর হলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাব অধিক ক্ষমতা ভোগ করবে।

২. বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা ক্ষমতা:

ইসরায়েলের বর্তমান অলিখিত সাংবিধানিক কাঠামোর অধীনে সমস্ত আইন, সরকারী আদেশ, এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলির প্রশাসনিক ক্রিয়াকলাপ ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা সাপেক্ষে। নেসেট কর্তৃক পাশ করা আইন এবং ইসরায়েলের মৌলিক আইন লঙ্ঘনকারী নির্বাহী সিদ্ধান্তগুলিকে বাতিল করার ক্ষমতা ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত।

প্রস্তাবিত সংস্কারের উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনসভা কর্তৃক প্রণীত আইন এবং নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত সমূহ যাতে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করতে না পারে। অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাকে সীমিত করা।

ইসরাইলে কোন লিখিত সংবিধান নাই। ১৩টি মৌলিক আইন প্রায় সংবিধানের মর্যাদা ভোগ করে। সংস্কার প্রস্তাবে বলা হয়েছে ইসরায়েলের মৌলিক আইনগুলির বৈধতা পর্যালোচনা করার কর্তৃত্ব এবং ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের থাকবে না।

গত ৩০ বছরে ধরে সুপ্রিম কোর্ট এই ক্ষমতা ভোগ করছে। সুপ্রিম কোর্ট এই পর্যন্ত কেনেসেটে পাস হওয়া ২২টি আইন বাতিল করে দিয়েছে।



৩. নেসেট সুপ্রিম কোর্টের রায় বাতিল করতে পারবে:

সংস্কার প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছে যে সুপ্রিম কোর্টের যেকোনো সিদ্ধান্ত কেনেসেটের ১২০ জন সদস্যের মধ্যে ৬১ জন অর্থাৎ সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটেই বাতিল করতে পারবে। অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট যদি নেসেটের পাশ করা কোন আইনকে বাতিল ঘোষণা করে তাহলে নেসেটের সাধারণ সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোট এই রায়কে বাতিল ঘোষণা করতে পারবে। এতে নেসেটের পাশ করা আইন বলবত থাকবে।

কেন সমর্থকরা প্রস্তাবিত বিচার বিভাগীয় সংস্কার এত প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন?

তারা মনে করেন ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট প্রচুর ক্ষমতার অধিকারী। তারা কেনেসেটের প্রণীত আইন এবং নির্বাহী বিভাগের যেকোনো সিদ্ধান্ত বাতিল করে দিতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা ব্যক্তিগত এবং স্বেচ্ছাচারী ভাবে এই ক্ষমতা প্রয়োগ করছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা নির্বাচিত না হয়েও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা প্রণীত আইন এবং আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা রাখে। এতে ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।



কেন বিরোধীরা প্রস্তাবিত বিচার বিভাগীয় সংস্কারের বিরোধিতা করছেন?

ইসরাইলে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। ইসরাইলের সংসদ কেনেসেটের সদস্যদের মধ্যে থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী হন। অর্থাৎ আইন বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে এক। আইনবিভাগ কোন আইন পাশ করলে নির্বাহী বিভাগ তা কখনই চ্যালেঞ্জ করে না। তাই একমাত্র সুপ্রিম কোর্ট আইন বিভাগের কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

যেহেতু কোন লিখিত সংবিধান নাই তাই সরকার কাঠামো, সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কার্যাবলী, ক্ষমতার ভারসাম্য, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ইত্যাদির ব্যাপারে কোন সর্বোচ্চ আইন নাই। ইসরায়েলের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে বর্ণিত নীতিগুলির মধ্যে নাগরিকদের অধিকারগুলি বর্ণিত আছে।



যারা সংস্কারের বিরোধিতা করছেন তাদের যুক্তি হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের এই ক্ষমতায় ইসরাইলের শাসনব্যবস্থার চেক এন্ড ব্যাল্যান্স। যেহেতু ইসরাইলের পার্লামেন্ট এক কক্ষ বিশিষ্ট, যেহেতু প্রেসিডেন্টের হাতে কোন নির্বাহী ক্ষমতা নাই তাই সুপ্রিম কোর্টের এই ক্ষমতা এটা ভারসাম্য ঠিক রাখবে। কেউ কেউ এটিকে সংসদের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আদালতকে দুর্বল করা হিসাবে দেখেন।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১:০২

ঢাকার লোক বলেছেন: কিছুক্ষন আগে পোস্টকৃত আমার লেখাটিতে প্রস্তাবিত আইনি সংস্কারের প্রবল বিরোধিতার ফলে সৃষ্ট অস্থিরতার কথা বেশি এসেছে। আপনার লেখায় প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো পরিষ্কার করে দেয়াতে বিষয়টি সবার কাছে নিঃসন্দেহে আরো স্পষ্ট হবে । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২৫ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১:২২

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: আমি আপনার লেখাটা এই মাত্র পড়লাম।
পরিস্থিতি কোন দিকে যায় এবং কি ভাবে মীমাংসা হয় দেখার বিষয়।
আমেরিকা তাড়াহুড়া করে আইনটি পাশ না করতে বলেছিল।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০২৩ ভোর ৪:৪৪

এমজেডএফ বলেছেন: আইনসভা ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকা উচিত। বর্তমানে ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতার পাল্লা একটু ভারী। নেতানিয়াহুদের সংস্কারের পরে আইনসভার ক্ষমতার পাল্লা ভাড়ী হয়ে যাবে।

২৫ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২৫

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: ক্ষমতা কেন্দ্রের বিভাজন এবং ভারসাম্য প্রয়োজন।
শাসন, বিচার এবং আইন বিভাগের মধ্যে বিভাজন এবং ভারসাম্য না থাকলে নির্বাচিত সরকারও ধীরে ধীরে স্বৈরশাসক বা একনায়কে পরিণত হয়।

ইসরাইলের বিচার বিভাগ অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট আগে ভারসাম্যহীন অধিক ক্ষমতা ভোগ করতো।

আবার এখন যে আইন করা হয়েছে এতেও ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে।
এখন ক্ষমতা কেন্দ্র শাসন বিভাগের দিতে ঝুঁকে পড়েছে।

বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ ভাবে পার্লামেন্টের উপর থাকা উচিত।
তবে সংবিধানে স্পষ্ট ভাবে বিচারক হওয়ার যোগ্যতা বলা থাকতে হবে।
যেমন বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত অভিজ্ঞতার বয়স, চারিত্রিক রেকর্ড অর্থাৎ কোন দুর্নীতি বা ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড ইত্যাদি।

সংবিধানে বর্ণিত যোগ্যতা অনুসরণ করে বিচারক নিয়োগ দিলে সেই বিচারকের ক্ষমতা বেশি হলেও অপব্যবহার হওয়ার ঝুঁকি কম থাকবে।
যেমন চিফ জাস্টিস জন মার্শাল দীর্ঘদিন আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন।
তাঁর অনেকগুলি যুগান্তকারী রায়ের ফলে আমেরিকার সংবিধান ব্যাখ্যা করা অনেক সহজ হয়ে গেছে।
তাঁর রায়ের মাধ্যমেই "ক্ষমতার বিভাজন নীতি" "ক্ষমতার ভারসাম্য" ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:২০

রাজীব নুর বলেছেন: এসব বিষয় আমি বুঝি না।

২৫ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২৬

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: এসব বিষয় না বুঝলেও জীবন সুন্দর ভাবে কেটে যাবে।

৪| ২৬ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: তা ঠিকই বলেছেন।

২৬ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২২

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: তা ঠিক ।

৫| ২৬ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ৩:৪৬

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: শুনেছিলাম ওখানে মানুষজন রাস্তায় নেমে এসেছিলো। এখনও কি তারা রাস্তায় আছে?

২৬ শে জুলাই, ২০২৩ রাত ১১:২১

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: নতুন আইন প্রস্তাবের পর থেকেই গত ৫ মাস ধরেই রাজপথে আন্দোলন চলছে।
গতকালকে আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে আন্দোলন আরো জোরদার হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.