নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা যানি তা জানাতে চাই

আল-আমীন হোসেন

জানার ইচ্ছা নিয়ে পথ চলছি

আল-আমীন হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আর্জেন্টিনার সেই ছেলেটি

৩০ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০০

সময়টা ১৯৮৭ সাল।

হোর্হে হোরাসিও নামের এক ব্যক্তি কাজ করেন ছোট্ট একটা ইস্পাতের কারখানায়। তার স্ত্রী সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি একজন খন্ডকালীন পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করেন। ২৪শে জুন, তাদের ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে একটা শিশু। শিশুটির বয়স যখন মাত্র পাঁচ বছর তখন তাকে একটা স্থানীয় ফুটবল ক্লাবে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। শিশুটির জন্মই হয়েছিল বোধহয় ফুটবল খেলার জন্য। তার নৈপুণ্য ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারপাশে। ১৯৯৫ সালের দিকে এলাকার একটা যুব সংঘে যোগ দেয় শিশুটি। তার যোগ দেওয়ার পর পরবর্তী চার বছরে তারা একটি মাত্র খেলায় পরাজিত হয়েছিল। এই সংঘটি ধীরে ধীরে The machine of '87 নামে পরিচিত হয়ে ওঠে কারণ তাদের প্রত্যেকের জন্মই হয়েছিল ১৯৮৭ সালে।

সবকিছুই ঠিকমত চলছিল কিন্তু সেটা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র ১১ বছর বয়সে গ্রোথ হরমোনের সমস্যা ধরা পড়ে। প্রতিমাসে ৯০০ ডলার টাকা দরকার ছিল চিকিৎসার জন্য। বাবা-মায়ের সাধ্য ছিলনা এই জটিল রোগের চিকিৎসা করানোর। স্থানীয় অনেক ক্লাব তার ফুটবল নৈপুণ্যের জন্য তাকে নিতে আগ্রহী হয়েছিল কিন্তু কেউই তার চিকিৎসার ভার বহনে রাজী ছিলনা। সকল স্বপ্ন বুঝি নিমিষেই থেমে গিয়েছিল। বার্সেলোনার তৎকালীন ক্রীড়া পরিচালক কার্লেস রেক্সাচ শিশুটির প্রতিভা সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি তার খেলা দেখে মুগ্ধ হন। হাতের কাছে কোন কাগজ না পেয়ে একটি ন্যাপকিন পেপারে তিনি তার বাবার সাথে চুক্তি সাক্ষর করেন। বার্সেলোনা তার চিকিত্‍সার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করতে রাজী হয়। এরপর শিশুটি এবং তার বাবা বার্সেলোনায় পাড়ি জমান।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। একের পর এক চমক দেখাতে শুরু করেন। আর্জেন্টিনার রজারিওতে জন্ম নেওয়া সেই শিশুটির শৈশবেই চলে যেতে হয়েছিল নিজ দেশ ছেড়ে। বেড়ে ওঠা, বড় হওয়া বার্সেলোনাতেই। স্পেন তাকে নাগরিকত্ব দেয়। স্পেনের জাতীয় দলে খেলাতে শুরু হয় তাদের প্রাণপণ প্রচেষ্টা। এমনকি স্পেনের অনূর্ধ্ ২০ দলের হয়ে তাকে খেলানোর আয়োজন প্রায় করেই ফেলেছিল দেশটির ফুটবল সংস্থা। তিনি যদি সেদিন রাজী হয়ে যেতেন তাহলে আজ তার নামের পাশে একটা বিশ্বকাপ আর দুটি ইউরো থাকত!

কিন্তু তিনি তা করেননি। স্পেনের দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ২০০৪ সালের জুনে, আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব ২০ দলের হয়ে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি খেলায় মাঠে নামেন। তখন থেকেই তিনি সবার কাছে পরিচিত লিওনেল মেসি নামে।

এতকিছুর পরেও চারপাশ থেকে সবাই যখন বলে মেসি নিজ দেশের হয়ে খেলে না তখন আর কিছুই বলার থাকে না। এর উত্তর মেসির চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়া জল। যারা মেসিকে নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা করে থাকেন তারা দয়া করে ইতিহাস টুকু ঘেটে দেখবেন। মেসির তুলনা সে নিজেই। এরকম খেলোয়ার শতবর্ষেও একটা জন্মায় না। মনেপ্রাণে আশা করি মেসি আবারও আর্জেন্টাইন জার্সি পড়ে মাঠে নামবে, রচনা করবে নতুন কোন ইতিহাসের।

- একজন আর্জেন্টাইন মেসির ভক্ত

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭

প্রািন্ত বলেছেন: দারুন লিখেছেন। খুব ভাল লাগলো। আসলে মানব জাতীর মজ্জাগত স্বভাব হলো- তারা বিজয়ীকে গ্রহণ করে এবং পরাজিতকে পরিত্যাগ করে। তবে ব্যক্তি মেসি যে একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক খোলোয়ার সেটা স্বার্থপর মানুষেরা মানতেই চায় না। আমিও আশায় রয়েছি- মেসি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আবারও নতুন ভাবে শুরু করবেন। আর সাফল্য তার হাতে ধরা দিবেই। এটা ইতিহাসের শিক্ষা। অনেক অনেক শুভ কামনা রইল মেসির জন্য।

১৩ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৪৫

আল-আমীন হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:২৫

ইমরান আশফাক বলেছেন: মেসি আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ কিছু নৈপুন্যেধারি খেলোয়াড়। সে ক্ষ নজন্মা খেলোয়াড়, সময়ের সেরা ফুটবলার। শতাব্দীর সেরা কিনা সেটা পরে জানা যাবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.