নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাদিম একজন অনলাইন মার্কেটিং এস্কপার্ট । এসইও,সোসিয়াল মিডিয়া,ইমেল মার্কেটিং এস্কপার্ট । নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করতে ভাল লাগে । ভাল লাগে গুগল মামাকে খুচাতে ।নিজেকে একজন দক্ষ অনলাইন মার্কেটিং এস্কপার্ট করার জন্য সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছি ।

ঘৃতকুমারী

সাদিম একজন অনলাইন মার্কেটিং এস্কপার্ট । এসইও,সোসিয়াল মিডিয়া,ইমেল মার্কেটিং এস্কপার্ট । নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করতে ভাল লাগে । ভাল লাগে গুগল মামাকে খুচাতে ।নিজেকে একজন দক্ষ অনলাইন মার্কেটিং এস্কপার্ট করার জন্য সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছি ।

ঘৃতকুমারী › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ কারাগার - অনিয়ম (পর্ব - ছয়) : বহিঃগমন নামের দূর্ণীতির আখড়া

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৪৩

কারাগারে যেমন আমদানী রয়েছে; তেমন রয়েছে বহিঃগমন। আমদানীতে যেমন নবাগত থাকেন তেমনি যে সমস্ত বন্দি পরের দিন মুক্তি পাবে তাদেরকে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নিয়ে এসে বহিঃগমনে রাখা হয়, যাতে খুব সকালে এদের মুক্তি দিয়ে দেয়া যায়। এটাই নিয়ম হওয়া দরকার কিন্তু বর্তমানে এর ব্যতিক্রম ঘটেছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সহ অন্যান্য কারাগার গুলোতে। এই সমস্ত কারাগারে এখন বহিঃগমন হলো জেলার, ডেপুটি জেলার, সুবেদার, চীফ রাইটার, বহিঃগমন রাইটার পাহারাদের টাকা আয়ের অন্যতম মাধ্যম। বর্তমান কালে বহিঃগমন হলো যে সমস্ত বন্দি পরের দিন আদালতে হাজিরা দিবেন তাদেরকে আগের দিন বিকেলে বহিঃগমনে জড়ো করে রাখার স্থান। দেশের ধনাঢ্য বন্দিদের জন্য বিশেষ লক-আপ হলো বহিঃগমন। কেইস টেবিল রাইটারদের মক্কেলদের থাকা খাওয়ার অভয়াশ্রম।

কোন এক সময় বহিঃগমন থাকতো খালি। এনিয়ে ব্যবসা করা যায় তা ছিল চিন্তার অতীত। ৯০ দশকের শেষভাগ হতে শুরু হয় বহিঃগমন ব্যবসা। ২০০০ সালের শুরু হতে বর্তমান কালে বহিঃগমন ব্যবসা হচ্ছে অন্যতম রমরমা ব্যবসা। বহিঃগমন রাইটার বহিঃগমন মাসিক ডাক নেন। কোন কোন মাসে ৫০-৬০হাজার টাকা ডাক উঠে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বহিঃগমন। অন্যান্য কেন্দ্রীয় কারাগারে অবশ্য ১/৪ অংশের কম। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রতিদিন গড়ে ৪০০/৫০০ বন্দি আদালতে হাজিরা দিতে যান। বহিঃগমনের সর্বমোট ধারণ ক্ষমতা দেড়শ এর বেশী হবে না। তার ১/৪ অংশ দখল করে থাকেন বহিঃগমন রাইটার ও তার দল; ১/৪ অংশ চীফ রাইটার ও কেইস টেবিল রাইটারদের দলবল, কিছু অংশে আছেন প্রভাবশালী যারা টাকার বিনিময়ে বহিঃগমনে লক-আপ থাকেন; কারো না কারো মক্কেল হয়ে। সেক্ষেত্রে ৪/৫ শত জন বন্দির রাতে লক-আপ হয়ে সকালে মুখ হাত-পা না ধুয়ে, প্রসাব পায়খানা না করে, রাতে না খেয়ে সকালে নাস্তা না করেই কোর্টে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই সকলেই চায় নিজেদের ওয়ার্ড বা সেল হতে কোর্টে যেতে। সেই সুযোগ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। বহিঃগমন রাইটারকে টার্গেট ধরে দেন কোর্ট ডেপুটি জেলার, সুবেদার, সি.আই.ডি জমাদারকে কত দিতে হবে। সেই টাকা তুলতে হয় যে সমস্ত বন্দি বহিঃগমন হতে চায়না তাদের নিকট হতে। রেট হলো জেলা জজ আদালতের হাজিরা প্রতিজন বন্দি ২প্যাকেট বেনসন সিগারেট ও মেজিষ্ট্রেট কোর্টের বন্দি হলে ২প্যাকেট গোল্ডলীফ করে দিতে হবে। বহিঃগমন হওয়ার পর আরো একটি বাণিজ্যের সম্মুখীন হতে হয়। যদি কোন বন্দি এক প্যাকেট গোল্ডলীফ সিগারেট দেয় তবে সেই বন্দিকে সুন্দরভাবে থাকা ভাল তরকারী দিয়ে খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিবে। যারা টাকা দিতে পারবেনা তাদের জন্য রয়েছে দোযখের আগুন। রাতে থাকার ব্যবস্থা নেই, নেই খাওয়ার কোন সু-বন্দোবস্ত। বহিঃগমন রাইটার প্রকাশ্যেই বলে বহু টাকায় ডাক নিয়েছি, তাই টাকা দিলে ভাল আয়োজন করা যাবে। বহিঃগমন হতে অর্জিত টাকার ভাগ পান ডেপুটি জেলর (কোর্ট), সুবেদার, সি.আই.ডি জমাদার, দায়িত্ব প্রাপ্ত জামাদার ও রক্ষী। সব কিছু বাদ দিয়ে কয়েদী রাইটার ৩০ হাজার টাকা আয় করে থাকে মাসে।

বহিঃগমনে মক্কেল রাখার মাধ্যমে বিশাল ধরণের এক ব্যবসা হয়ে আসছে। আমদানী রাইটার, চীফ রাইটার, বহিঃগমন রাইটার ও কেইস টেবিল রাইটারগণ ভাল করেই জানে কোন কোন ধনী ব্যক্তি বন্দি হয়ে আমদানী হয়েছে। তাদেরকে মাসিক ১৫ হাজার টাকার মক্কেল করে আনা হয় ভাল থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করার অঙ্গীকার করে। বিনিময়ে সুবেদার পেয়ে যান মাসিক একটা অঙ্ক।

বহিঃগমনে পাওয়া যায়না এমন কিছুই নেই। চৌকা কন্ট্রাক্ট থাকে চীফ রাইটারের। মাসিক ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়; চৌকার কয়েদী ওস্তাদগার ও সুবেদারকে। সেই টাকার বিনিময়ে সাধারণ বন্দিদের ভাগ্য হতে চুরি করে মাছ মাংস সরিয়ে রেখে প্রতিদিন তরকারী সবজী তৈরী করে সরবরাহ করা হয় কেইস টেবিল ও বহিঃগমন রাইটারদের খাওয়ার জন্য। সেই রান্নার খাওয়া খান তাদের মক্কেলগণ। বহিঃগমনে যে ইনচার্জ পাহারা রয়েছে তারও মক্কেল আছে। পাহারাগণ প্রতি রাতে সিট ভাড়া দেন। ফালতুগণ চাদর বিছিয়ে রাতে কম-মূল্যে সিট ভাড়া দিয়ে বেশ ভালই আয় করে বন্দিদের নিকট হতে।

বহিঃগমন হলো সমগ্র জেল খানার কয়েদী রাইটার সহ অনেক ধনাঢ্য হাজতী বন্দির অবৈধ টাকা লুকিয়ে রাখার সর্বত্তোম জায়গা। কেইস টেবিল রাইটার যেহেতু সেখানে অবস্থান করেন তাই সেখানে সাধারণত তল্লাশী হয় না। সেখানে টাকা রাখা নিরাপদ তাই যারা বেশী অবৈধ আয় করে তাদের প্রায় সকলেই বহিঃগমনে টাকা লুকিয়ে রাখে বিভিন্ন রাইটারের কাছে। ২০০৫ সালে সুবেদার শাহাবুদ্দিন হঠাৎ একদিন বহিঃগমনে তল্লাশী চালায়। কয়েকজন রাইটারের ডেস্ক তল্লাশী চালিয়ে প্রায় ৩লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ থেকে প্রতিমান হয় যে, বহিঃগমনে বিশাল অঙ্কের টাকা লেন-দেন হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ কারাগার-অনিয়ম (পর্ব -পাঁচ) পড়তে সামহয়ারইন এখানে অথবা bd news এর এখানে ক্লিক করুন ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০৭

সোহানী বলেছেন: চলুক সিরিজটি..... সাথে আছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.