নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মন, ভাবনা, অনুভূতি ও ভালবাসা বৈচিত্র্যময় বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!https://www.facebook.com/akterbanu.alpona

আলপনা তালুকদার

ড.আকতার বানু আলপনা,সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী

আলপনা তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেয়েদের কাঁদাতে নেই

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:১৪



মেয়েদের কাঁদাতে নেই

কেউ প্রেমের ফাঁদে ফেলে, কখনও ক্ষমতা বা জোর খাটিয়ে, ভয় দেখিয়ে, কখনও শিক্ষিতরা ভদ্রতার মুখোশে মেয়েদের নির্যাতন করে। মেয়েদেরকে অপমান করতে পারলে পুরুষরা খুশী হয়, অপদস্থ বা ব্যবহার করতে পারাকে কৃতিত্ব মনে করে, গর্ব করে বন্ধুদের কাছে বলেও। অসম্ভব বন্য তৃপ্তি পায়, যখন দেখে তাদের অপমানে, নির্যাতনে কোন মেয়ে কষ্ট পাচ্ছে।

অধিকাংশ পুরুষরা মেয়েদের নির্যাতন করে মূলত দুটি কারণে। যথা -

১। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা তথা মেয়েদের প্রতি হীন মানসিকতা, তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের অভাব ও নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ ভাবা। এবং

২। পুরুষরা মনে করে, মেয়েদেরকে পুরুষের আজ্ঞাবহ রাখতে হলে মেয়েদেরকে নির্যাতন করা জরুরী।

প্রতি পদে পদে মেয়েরা নানা নির্যাতনের শিকার। কোন দোষ না করেও মেয়েরা শাস্তি পায়। এমন দোষ যার উপরে মেয়েদের কোন হাত নেই। বাবা যৌতুক দিতে না পারলে, সন্তান না হলে, ছেলে সন্তান না হলে, গায়ের রং কালো হলে, দেখতে সুন্দর হলে, বিধবা হলে, স্বামীর চেয়ে বেশী যোগ্য হলে.....ইত্যাদি। কখনও কখনও অন্যের ইচ্ছা মেনে নিতে না পারলেও তারা নির্যাতিত হয়। যেমন- বখাটেকে প্রেমিক হিসেবে পছন্দ করতে না পারলে, কাউকে বিয়ে করতে রাজী না হলে, স্বামীর অত্যাচারে ডিভোর্স নিতে চাইলে, স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দিলে, স্বামীকে ২য়, ৩য়.. বিয়ের অনুমতি না দিলে, নিজের কষ্টার্জিত টাকা স্বামীর হাতে তুলে দিতে রাজী না হলে....ইত্যাদি।

এর কারণ সমাজে ছেলেদের গুরুত্ব বেশী, মেয়েদের কম। কেননা ছেলে সন্তান আমাদের সব পরিবারে খুব বেশী কাংখিত। কারণ বৃদ্ধ বয়সে বাবামাকে আশ্রয় দেয়া, দেখাশোনা, খাওয়া- পরা - এসব দায়িত্ব ধর্মমতে ছেলে মেয়ে উভয়ের হলেও সমাজ মনে করে এসব দায়িত্ব মূলতঃ ছেলেদের। তাই সব পরিবারে ছেলে সন্তান এত বেশী প্রয়োজনীয়, কাঙ্খিত, গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েরা নয়।

মেয়ে সন্তানের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু হয় তখন থেকেই যখন জানা যায় গর্ভস্থ শিশুটি মেয়ে। ছোটবেলা থেকে আমাদের ছেলেমেয়েরা পরিবার, প্রতিবেশী, স্কুল, খেলার সাথী, শিক্ষক, সমাজ - এদের কাছ থেকে দিনে দিনে একটু একটু করে শেখে যে মেয়েরা নীচু শ্রেণীর জীব, পুরুষের আজ্ঞাবহ, চাকর সমতুল্য এবং কোনমতেই সে পূর্ণাঙ্গ মানুষ নয়।

নাটক, সিনেমা, খবরে প্রতিনিয়ত শিশুরা দেখে যে, মেয়েরা আক্রান্ত হয়, যার কোন প্রতিকার হয়না। অর্থাৎ মেয়েদের প্রতি অন্যায় করে পার পাওয়া যায়। পুরুষ দোষ করলেও সমাজ মেয়েদেরকেই দায়ী করে। যেমন - ডিভোর্স হয়েছে শুনেই বলা হয় নিশ্চয় মেয়ের দোষ, রেপ হয়েছে শুনেই বলা হয়, নিশ্চয় খোলামেলা পোষাক পরেছিল, স্বামী মেরেছে শুনেই বলে, মারতেই পারে, সে তো স্বামী, দোষ না করলে এমনি মারে? ফলে দিনে দিনে বড় হতে হতে ছেলেরা মনে করে মেয়েদের সংগে তারা যেকোন আচরণ, যেকোন নির্যাতন করতে পারে। ছেলে শিশুরা ওদের সামনে মেয়েদের সাথে করা বড়দের নানা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনমূলক আচরণ থেকে এমন ধারণা পায়। তাই পরবর্তীতে সেও বড়দের মতই আচরণ করে।
মেয়েরা দেখে যে, তাদের মা, বোন, চাচী, খালা,ফুফু... এরা নানা সময় নির্যাতিত হয় এবং সেসব নির্যাতন মেনে নেয়। তাই মেয়েরাও মেনে নেয় যে, মেয়েদের প্রতি নির্যাতন হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেটাই ন্যায্য।

শিশুরা ছোটবেলা থেকে দেখে যে বাবা মাকে গালি দেয়, দিতে পারে ( কখনও কখনও মারেও)। এটা তার অধিকার। কিন্তু কোন মা সেটা পারেনা। মা গালি বা মার খেয়েও হাসিমুখে আবার সংসার করে, অন্যায় করলেও বাবার শাস্তি হয়না, তাকে কেউ কিছু বলেনা। বাবার কোন আচরণকেই অন্যায় মনে করা হয়না। তাই বাবার মর্যাদা বেশী, মায়ের কম।

শিশুরা দেখে যে, পরিবারে ও সমাজে ছেলেদের গুরুত্ব বেশী, মেয়েদের কম।
পুরুষ দোষ করলেও মেয়েদেরকে প্রতি পদে পদে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যেমন - বখাটের উৎপাত প্রতিহত করতে না পেরে আমরা মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বা পড়া বন্ধ করে দেই। যৌন নির্যাতন করলে গোপন করি, কারণ সমাজ মেয়েটিকেই ভ্রষ্টা বলে। অর্থাৎ দোষ করে পুরুষ, শাস্তি পায় নারী। ইতিহাস বলে, এভাবেই মেয়েদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা, এমন কি মসজিদে নামাজ পড়া পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে।

পুরুষরা ধর্ষণ করে যেকোন বয়সের, বিবাহিতা - অবিবাহিতা নারীকে, এমনকি ছোট শিশুরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায়না। কোন কোন পুরুষ একইসাথে একাধিক প্রেম করাকে 'যোগ্যতা' মনে করে, ধর্ষণে সেঞ্চুরীর পর মিষ্টি বিলায়।

পুরুষরা একাধিক বিয়ে করে, তুচ্ছ কারণে তালাক দিয়ে বা না দিয়ে বৌ-বাচ্চা ফেলে আবার বিয়ে করে। মেয়েরা পড়ে অথৈ সাগরে। যৌতুকের জন্য নির্যাতন, এমনকি খুন করে, মতের পার্থক্য হলে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করে, মতপ্রকাশে স্বাধীনতা দেয়না, পারিবারিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবার সময় তার সাথে আলোচনা করেনা, ইচ্ছার বিরুদ্ধে বোরখা পরায় বা কোনকিছু করতে বাধ্য করে, লেখাপড়া বন্ধ করে দেয়, চাকরী ছাড়ায়, এমন কি চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করে স্বামী ও তার পরিবার। কোন বিবাহিত মেয়ের ছেলেবন্ধু থাকা যাবেনা, ফোন করা, দেখা করা যাবেনা- এমন হাজার বাধা। বৌ সুন্দরী হলে সারাজীবন তাকে সন্দেহের চোখে দেখা হয়। এই বুঝি কারো সাথে তার ভাব হয়ে গেল! বিয়ে করেছে মানে তাকে গোলাম হিসেবে কিনে নিয়েছে। তাই তার বিনা অনুমতিতে বউ নিঃশ্বাস ও নিতে পারবেনা।

সব ধর্মে নারীদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। সব ধর্মে পুরুষের বহুবিবাহ জায়েজ। মেয়েদের বিশেষ কারণ বশতঃ জায়েজ। বিধবা বিয়ে চালু ও সতীদাহ রদ করতে ধর্মগুরু ও সমাজের বিরুদ্ধে কম যুদ্ধ করতে হয়নি।

আমার মনে হয় পৃথিবীতে মেয়েদের প্রতি যত বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, তারমধ্যে মানসিক দিক থেকে সবচেয়ে নির্মম হল স্বামীর বহুস্ত্রীর একসাথে বসবাস। একটা মেয়ের জন্য চোখের সামনে তার স্বামীর অন্য স্ত্রীর ঘরে শুতে যেতে দেখাটা যে কতটা অমানবিক, একটু কল্পনা করলেই বোঝা যায়। মেয়েরা এমন করলে পুরুষদের কেমন লাগবে? মাঝরাতে স্ত্রীর মোবাইল ফোন বেজে উঠলে যেখানে পুরুষদের গায়ের সব লোম খাড়া হয়ে যায়, সেখানে...। পুরুষরা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য বহুবিবাহের মত অনেক আইন বানিয়ে নিয়েছে, এখনও নিচ্ছে। ইরানের পার্লামেন্ট আইন পাস করেছে যে বয়স ১৩ বছর হলেই পিতা তার পালক কন্যাকে বিয়ে করতে পারবে। ভাবা যায়? সম্প্রতি তুরস্কের পার্লামেন্টে পাশ করতে যাচ্ছে একটি আইন। তা হল, ধর্ষক ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে রাজী হলেই তার ধর্ষণের শাস্তি মাফ করে দেয়া হবে। এ আইনের প্রকৃত অর্থ হল, কোন মেয়ে স্বেচ্ছায় কাউকে বিয়ে করতে রাজী না হলে তাকে রেপ করলেই বিয়ে করা যাবে। এই হল আমাদের আধুনিক বিশ্বের পুরুষদের মানসিকতা।

মেয়েরা সারাজীবন পরনির্ভশীল। বাবা, স্বামী বা ছেলের উপর। তারা জানে স্বামীর অবর্তমানে ওদের অবস্থা কতটা নাজুক হয়। তাদেরকে সবসময় আর্থিক দিক থেকে বঞ্চিত করা হয়। বাবার সম্পত্তি, বিধবা হলে স্বামীর সম্পত্তি ঠিকমত দেয়া হয়না। নিজে উপার্জন করলেও নিজের ইচ্ছামত স্বামী তা খরচ করতে দেয়না। এমন কি দেনমোহরটাও দেয়না। নারীকে বেশীরভাগ পুরুষ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে দেয়না। স্ত্রীধন, তালকের পর খোরপোষ - বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এসব দেয়া হ্য়না। এমনকি বাবার দেয়া যৌতুক বা সম্পদের উপরেও স্ত্রীর কোন নিয়ণ্ত্রণ থাকেনা। কেউ কেউ মোহরানা দেন। কিন্তু সেটা কোন না কোন বিনিয়োগে খাটানো হয় যা স্বামী নিয়ন্ত্রণ করেন।

শিশু জানে, টাকা থাকে বাবার হাতে, মা ভিখারী। যেকোন প্রয়োজনে বাবার কাছ থেকে টাকা চেয়ে নিতে হয়। বাবার মর্জি হলে দেয়, না হলে দেয়না। না দিলে মায়ের কিছু করার থাকেনা। ভিখারীর আবার মর্জি কি?
চাকুরীজীবী মায়েরাও টাকা ইচ্ছামত খরচ করতে পারেনা। স্বামী করতে দেয় না। মা ও বাড়ীর মেয়েরা অনুৎপাদনশীল কাজ করে। অর্থাৎ তারা যত কাজই করুক, তারা সে কাজের কোন পারিশ্রমিক পায়না। মা টাকা আয় করেনা। তাই শিশুরা মায়ের কাজ বা পরিশ্রমকে 'ফালতু' ভাবতে শেখে। মায়ের ভূমিকাকে গুরুত্বহীন মনে করে।

সব খারাপ বা নেতিবাচক ঘটনার জন্য মেয়েদেরকে দায়ী করা হয়। যেমন- সন্তান ফেল করলে, বখে গেলে, দোষ করলে, ভুল করলে, প্রেম করলে, চুরি করলে... তার দায় মায়ের। কারণ বাবা আয় করেন, তাই বাকী আর কিছু সে করবেনা। তার কাছে কেউ কিছু আশাও করেনা। সন্তান লালন-পালন, পড়াশোনা, সব দায় একা মায়ের। শিশুরা এসব দেখে দেখে মেয়েদের অশ্রদ্ধা করতে শেখে। ছেলে শিশুরা নিজেদেরকে বাবার মত ক্ষমতাধর ভাবতে শেখে আর মেয়েরা নিজেদেরকে দূর্বল, পরনির্ভরশীল ও হেয় ভাবতে শেখে।

ছোটবেলা থেকেই সব ভাল জিনিসটা বরাদ্দ থাকে ছেলেদের জন্য। সবসময় ছেলের সুবিধার কথা আগে ভাবা হয়, পরে মেয়েদের। যত্ন ও ভালবাসাও ছেলের জন্যই বেশী। ফলে মেয়েরা নিজেদেরকে ছেলেদের তুলনায় কম কাঙ্খিত ও কম গুরুত্বপূর্ণ ভাবতে বাধ্য হয়।

স্ত্রী নিজেকে স্বামীর অধীনস্ত মনে করে, ভয় পায়, স্বামী অসন্তুষ্ট হতে পারে, এমন কোন কাজ নিজে করেনা, সন্তান বা অন্য কাউকে করতে দেয়না। মা বাচ্চাকে বলে, "এটা কর বা ওটা করোনা, বাবা রাগ করবে।" ফলে শিশু বোঝে, পরিবারে পুরুষরাই শ্রেষ্ঠ, তার কথাই শেষ কথা। বাবা, ভাই, স্বামী বা ছেলে, অর্থাৎ কোন না কোন পুরুষ মেয়েদের পরিচালিত করে। মেয়েরা নিজের ইচ্ছামত কিছু করতে পারেনা। সে কি করবে, কি করবেনা, সেটা সে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা, নিতে দেওয়া হয়না। তার জীবনের সব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় পুরুষ। ফলে শিশুরা মেয়েদেরকে পরনির্ভরশীল বা পুরুষের পরগাছা ভাবে, কখনোই স্বাধীন সত্ত্বা ভাবতে পারেনা।

মেয়েদেরকে ছেলেদের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয় সবসময়। যেমন - একা কোথাও যেতে দেওয়া হয়না, সন্ধ্যার পর বাইরে যেতে বা থাকতে দেয়া হয়না, ভীড়ে একা ছাড়া হয়না, ছেলেদের সাথে মিশতে দেয়া হয়না, সব পরিবেশে যেতে দেওয়া হয়না, সব কাজ করতে দেয়া হয়না,.... ইত্যাদি। অর্থাৎ মেয়েরা আক্রমণযোগ্য প্রাণী। যেকোন সময় যেকোন পুরুষ তাকে আক্রমণ করতে পারে, এই ভয় তার মনে বদ্ধমূল করে দেয়া হয় বলে সে নিজেকে দূর্বল ভাবে, ভয়ে ভয়ে সাবধানে চলে এবং নিজেকে গুটিয়ে রাখে।

স্বামীর হুকুম ছাড়া স্ত্রী কিছু করতে পারেনা। ধর্মও তাই বলেছে। স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ছাড়া দানও করতে পারবেনা। ধর্ম স্বামীকেও স্ত্রীর প্রতি সদয় আচরণ করতে বলেছে। তবে স্বামী সেটা না করলে সমাজ তেমন আপত্তি করেনা। তাই পুরুষ তা করার প্রয়োজন অনুভব করেনা। বাবা মালিক, মা চাকর। বাবাকে না খাইয়ে মা খায়না, খেতে পারেনা। সব ভাল খাবার বাবা, ছেলে, বাড়ীর গুরুজনদের দিয়ে তারপর মেয়েদের দেয়। সবার খাওয়া হয়ে গেলে মা নিজে হাসিমুখে যা থাকে তাই খায় বা কখনও কখনও বাসি বা উচ্ছিষ্ট খাবার খায়।

আমাদের সমাজের নিয়ম অনুসারে কিছু কাজ ছেলেদের, কিছু কাজ মেয়েদের। তুলনামূলকভাবে মেয়েদের কাজগুলো কম গুরুত্বপূর্ণ ও বোরিং। রান্না, কাচা, বাচ্চা সামলানো, পরিবারের সবার দেখাশোনা.. ইত্যাদি সব কাজ করতে গিয়ে সে অবসর পায়না। দিনরাত ব্যস্ত। পুরুষরা কাজ বা চাকরী শেষে বাড়ী ফিরে আরাম করে, বৌ-মেয়ে-বোন-মা তার সেবা করে, কারণ সে সংসার চালানোর জন্য টাকা আনে।

মেয়েরা সংসার, বাচ্চা সামলিয়ে সময় পায়না। ফলে তার সৃজনশীলতা থাকলেও প্রকাশ পায়না। ধীরে ধীরে সে পুরুষের তুলনায় পিছিয়ে পড়ে। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেনা, সারাজীবন পরনির্ভরশীল থেকে যায়। পুরুষ ইচ্ছে করে মেয়েদের অর্থ-সম্পদ করায়ত্ব করে যাতে মেয়েরা তাকে ছাড়া একা বাঁচতে না পারে।

হিন্দু মেয়ে বিধবা হলে গহনা-শাঁখা-সিঁদুর খুলে নেয়া হয়। আগে চুল কেটে দিয়ে কুশ্রী করা হত যাতে কেউ তাকে পছন্দ না করে, বিয়ে করতে না চায়। যৌন চাহিদা অবদমনের জন্য ধর্মের দোহায় দিয়ে বিধবাদের নিরামিশ খাওয়ানো হয়। রংগীন পোষাক, রূপচর্চা সব নিষিদ্ধ। মুসলিমদের মধ্যেও বিধবাদের গহনা পরা, রঙীন পোষাক পরা ভাল চোখে দেখা হয়না। অর্থাৎ স্বামী ছাড়া সমাজে মেয়েদের অবস্থান দূর্বল ও নীচু হয়, তার সব চাওয়া-পাওয়া, ভাললাগা-মন্দলাগা গুরুত্বহীন হয়ে যায়। ফলে মেয়েরা বাধ্য হয় যেকোন মূল্যে পুরুষের সাথে, তার ছত্রছায়ায় থাকতে।

ছোটবেলা থেকে মেয়েদেরকে বিয়ে করে সংসার করার জন্য তৈরী করা হয়। তারা পড়াশুনা, চাকরী, রূপচর্চা, শরীর ঠিক রাখা- এসবই পুরুষের জন্য করে যাতে তার ভাল বিয়ে হয়। অর্থাৎ মেয়েদের জীবনের সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হল ভাল বিয়ে হওয়া। অন্য কথায় ভাল আশ্রয় পাওয়া। নিজেকে স্বাধীন সত্ত্বা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কোন চেষ্টাই সে করেনা। কারণ সে জানে, একা সে টিকতে পারবেনা, তাকে টিকতে দেয়া হবেনা।

বাংলাদেশে আগে শতকরা ৬৪ ভাগ, বর্তমানে শতকরা ৮০ ভাগ নারী নিজ গৃহে অতি আপনজন দ্বারা নির্যাতিত। এমনিতেই আমাদের দেশের মেয়েরা প্রতিনিয়ত নানা অমানবিক ও দৈহিক-মানসিক নির্যাতনমূলক আচরণের শিকার। তার উপর মাথার উপরে বাবা, স্বামী বা ছেলে, মানে কোন পুরুষের ছায়া না থাকলে মেয়েরা আরো বেশী আক্রমণযোগ্য হয়ে যায়। তাই যত সমস্যাই হোক, যত অত্যাচারই করুক, তবু মেয়ে ও তার পরিবার চায়না স্বামীকে তালাক দিতে।

ছেলেদেরকে ছোটবেলা থেকেই বেশী প্রাধান্য না দিয়ে সমান প্রাধান্য দিতে হবে। মেয়েদের কে মানুষ ভাবতে শেখাতে হবে যাতে সে বড় হয়ে মেয়েদেরকে অপমান, নির্যাতন বা ছোট মনে না করে। মেয়েদের প্রতি মানবিক হয়। এটা খুব জরুরী।

ছোটবেলা থেকে ছেলেদের বলা হয়, ছেলেরা কাঁদবেনা। কাঁদবে মেয়েরা। নারীর জীবন মানেই কান্না। ছেলেরা কাঁদাবে। তাই মেয়েদের প্রতি এত অত্যাচার। তাই এখন সময় এসেছে আমাদের শিশুদের শেখানোর, "মেয়েদের কাঁদাতে নেই।"

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1888822408038250&id=100007315272396

মন্তব্য ৩৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:২২

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:



পুরুষের প্রতি বিদ্বেষ লেখায় আবারো ফুটে উঠেছে। প্রগতিশীল সমাজের পুরুষ এখন আর সেই আগের পুরুষটি নেই। অনেক ঘরেই পুরুষ এখন বাবুর্চি, কামলা।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:২৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: রেপিস্ট ও। এমন কি নিজের মেয়েকেও!!!!

আপনি ভুল করছেন। পুরুষদের প্রতি আমার কোন বিদ্বেষ নেই, ভালবাসা আছে, শ্রদ্ধা আছে। আর বিদ্বেষ আছে কাপুরুষদের প্রতি।

ধন্যবাদ।

২| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৩

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:

পুরুষ কথাটির আগে কা লাগিয়ে দিলে ভাল হয়। অবশ্য আমি তাদের কাপুরুষ নই জানোয়ার অমানুষ কিংবা দানবের সাথেই তুলনা করি।এসব কুত্তার বাচ্চাদের জন্য রাষ্ট্রের উচিত আরো ভয়ংকর শাস্তি তৈরি করে সাজা দেওয়া।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ঠিক। ধন্যবাদ।

৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৫

এ.টি. নূর শেখ লিটা বলেছেন: কুডেন্ট এগ্রি মোর। মেয়েদের চিন্তা ভাবনা আরো উন্নত করতে হবে। কেননা এই দাসত্ব থেকে নারী কেবল নিজেই পারে নিজেকে মুক্ত করতে।

খুব ভালো লিখেছেন। শুভেচ্ছা রেখে গেলাম :)

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ঠিক। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা আপনাকেও।

৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৬

কবীর হুমায়ূন বলেছেন: লিখেছেন আজ থেকে ৫০ বছর আগের সামাজিক অবস্থার কথা। এখন তেমনটি আর হয় না। তবে, লেখাটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়ে দেবার মতো। শুভকামনা।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৪১

আলপনা তালুকদার বলেছেন: এখনও হয়। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ঘরে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবস্থা যেমন ভাল হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে আবার আগের চেয়েও অনেক বেশী খারাপ হয়েছে।

যাইহোক। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৫| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


"অধিকাংশ পুরুষরা মেয়েদের নির্যাতন করে মূলত দুটি কারণে। যথা -

১। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা তথা মেয়েদের প্রতি হীন মানসিকতা, তাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের অভাব ও নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ ভাবা। এবং
২। পুরুষরা মনে করে, মেয়েদেরকে পুরুষের আজ্ঞাবহ রাখতে হলে মেয়েদেরকে নির্যাতন করা জরুরী। "

-একটু ম্যাও প্যাঁও ধরণের কনক্লুশন।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৪৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: "বাবা যৌতুক দিতে না পারলে, সন্তান না হলে, ছেলে সন্তান না হলে, গায়ের রং কালো হলে, দেখতে সুন্দর হলে, বিধবা হলে, স্বামীর চেয়ে বেশী যোগ্য হলে.....ইত্যাদি। কখনও কখনও অন্যের ইচ্ছা মেনে নিতে না পারলেও তারা নির্যাতিত হয়। যেমন- বখাটেকে প্রেমিক হিসেবে পছন্দ করতে না পারলে, কাউকে বিয়ে করতে রাজী না হলে, স্বামীর অত্যাচারে ডিভোর্স নিতে চাইলে, স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দিলে, স্বামীকে ২য়, ৩য়.. বিয়ের অনুমতি না দিলে, নিজের কষ্টার্জিত টাকা স্বামীর হাতে তুলে দিতে রাজী না হলে....ইত্যাদি।"

আরও আছে।

৬| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৫৭

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: অবস্থার পরিবর্তন হবেই। তবে সবারই দৃষ্টি ভঙ্গি বদলাতে হবে।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৩২

আলপনা তালুকদার বলেছেন: আশা করি। ধন্যবাদ।

৭| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৩২

ফকির জসীম উদ্দীন বলেছেন: দারুণ লিখেছেন আপা।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১:৩৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৮| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:৫৩

রক বেনন বলেছেন: তাই এখন সময় এসেছে আমাদের শিশুদের শেখানোর, "মেয়েদের কাঁদাতে নেই।"

কেউ কি আছে যে শিশুদের শেখায় - মেয়েদের কাঁদাও??

মনে করুন, একটি স্কুলে শাস্তিস্বরূপ একই ক্লাসের একটি ছেলে আর একটি মেয়েকে কান ধরিয়ে দাড় করিয়ে রাখা হলো। দেখা যাবে, শাস্তি শেষে ছেলেটা চুপচাপ বসে আছে আর মেয়েটি অঝোরে কাঁদছে। এক্ষেত্রে শাস্তি একই হলেও দুজনের আবেগ প্রকাশ ভিন্ন। দুজনের কারো পরিবারেই কিন্তু শেখানো হয়না যে, শাস্তি পেলে কাঁদবে।

কিংবা মনে করুন, কেউ একজন মারা গিয়েছেন। দেখা গেল, যিনি মারা গিয়েছেন তার পুত্রটি চুপচাপ আর কন্যাটি মাথা কুটে বিলাম করছেন। এক্ষেত্রে কি বলা যায় যে মৃত ব্যাক্তি মারা যাওয়াতে ছেলেটির কিছুই হয়নি আর মেয়েটি দুঃখে ভারাক্রান্ত??

মা বাচ্চাকে বলে, "এটা কর বা ওটা করোনা, বাবা রাগ করবে।"

ঠিক বলেছেন! মা এটা বলেন যে বাবা রাগ করবেন। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, বাবার কাছে ছেলে উত্তম মধ্যম খেয়ে কাহিল আর মেয়েকে সামান্য কিছু কটু কথাই শোনানো হয় কারণ মেয়েই বাবার জীবন।

কোন ছেলেকেই তার পরিবার থেকে শিখানো হয় না যে, তুমি মেয়েদের কাঁদাবে, তাদের সস্তা মনে করবে, তাদের ব্যবহার করে ছুঁড়ে ফেলে দিবে। কোন ছেলেকেই শিখানো হয় না যে, তুমি রাস্তায় মেয়েদের উত্যক্ত করবে, তাদের রেপ করবে, তাদের এটা করবে ওটা করবে। কিন্তু তারপরও এসব ঘটে! কিন্তু কেন??

অস্বীকার করবেন যে মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু?? একজন মহিলা তার নিজের মেয়ের দোষ কখনও খুঁজে পাক না পাক, সর্বদা যে পুত্র বধূর দোষ খুঁজে পায় সেটা জানেন? এবং এই ব্যাপার যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘটে তা কি অস্বীকার করতে পারবেন?

একটা পরিবারে সবথেকে বড় অশান্তির মূল কোথায় থাকে জানেন? শাশুড়ি আর পুত্র বধূর মাঝখানে! খুব কম ক্ষেত্রেই দেখবেন শ্বশুরের সাথে পুত্রবধূর সমস্যা হয়েছে। একজন ভাবেন আমার ছেলে বিয়ের পর আমার কাছ থেকে পর হয়ে গেল। বউয়ের আঁচল ছাড়া কিছুই বোঝে না। আর একজন বলবেন, বিয়ে করেছি একটা মেনি বিড়াল কে। সারাক্ষন থাকেন মায়ের আঁচলে! অথচ দুজনেই 'মেয়ে' আর দুজনেই অপরের তা বুঝে না শুধু নিজের তা ছাড়া! মাঝখানে ছেলেটির অবস্থা কি হয়??

ছোটবেলা থেকে মেয়েদেরকে বিয়ে করে সংসার করার জন্য তৈরী করা হয়। তারা পড়াশুনা, চাকরী, রূপচর্চা, শরীর ঠিক রাখা- এসবই পুরুষের জন্য করে যাতে তার ভাল বিয়ে হয়। - আর পুরুষদের তৈরি করা হয় যাতে তারা যে কোন মূল্যে একটি ভাল চাকরি জোগাড় করতে পারে এই SURVIVAL FOR THE FITTEST এর যুগে যাতে তার পরিবারকে আর্থিক সঙ্কটে কখনও পরতে না হয়। যাতে তার মা, বাবা, স্ত্রী, পুত্র বা কন্যাকে একটি বেলাও না খেয়ে কাটাতে না হয়। যাতে রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, বন্যা, তুফান উপেক্ষা করেও চাকুরির দরজায় হাজির হতে পারে আর মাস শেষে বেতনটা পেয়ে নির্ভার হতে পারেন যে, আগামী মাসের বাড়ি ভাড়া, গ্যাস পানি বিদ্যুৎ বিল, মাসিক বাজার, কাঁচা বাঁজার, পুত্রকন্যাদের স্কুলের বেতন, টিচারের বেতন ইত্যাদি পরিশোধ করে আরও একটি মাস বেঁচে থাক যায়। এইজন্যই যাতে তিল তিল করে জমানো চাকরির প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা অথবা জীবন বীমার টাকা নিজের মৃত্যুর পর স্ত্রী পায় আর বাকি জীবন সামান্য হলেও সুন্দর ভাবে কাটাতে পারে। সর্বোপরি, একজন পুরুষকে তৈরি করা হয় যাতে আপনি আপনার বাবার মতন একজন পুরুষ পান।

ভালো থাকবেন।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: খুব ভাল বলেছেন। জ্বি শেখানো হয়না। ছেলেদের বলা হয় বা শেখানো হয়, ছেলেদের কাঁদতে হয়না। আমি বলেছি এর পরিবর্তে শেখানো উচিত - "মেয়েদের কাঁদাতে নেই।"

সরাসরি ছেলেদের বলা হয়না, মেয়েদের নির্যাতন কর। কিন্তু মেয়েদের প্রতি নারী ও পুরুষের ও সমাজের নানা আচরণ থেকে শিশুরা শেখে মেয়েরা ছেলেদের অধীনস্ত, সমকক্ষ নয়। তাই তার প্রতি যেকোন আচরণ করা যায় করে।

জ্বি, "আমাদের দেশে সবচেয়ে বৈরী সম্পর্ক হয় শ্বাশুড়ী-বৌয়ের। তার কারণও আছে। মা সীমাহীন কষ্ট করে তিল তিল করে ছেলেকে মানুষ করেন। ছেলেকে অসম্ভব ভাল বাসেন। ছেলের কাছে প্রত্যাশাও বেশী। কারণ ধর্মমতে বাবা-মার দেখাশোনার দায়িত্ব ছেলে-মেয়ে উভয়ের হলেও ছেলেদের দায় বেশী বলে সমাজ মনে করে। বউ চায়না ছেলে সে দ্বায়িত্ব পালন করুক। শ্বশুরবাড়ীর লোকেদের পিছনে টাকা খরচ করা বৌরা অপচয় মনে করে। সংসারের কর্তৃত্ব বউ ও শ্বাশুড়ী দুজনেই চায়। ফলে সম্পর্ক খারাপ হয়। সারাজীবন মা ছেলের কাছে সবচেয়ে প্রিয় মানুষ। বিপত্তি ঘটে তখন, যখন বিয়ের পরে ছেলের কাছে স্ত্রী মায়ের চেয়ে বেশী প্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে শারীরিক ও মানসিক প্রয়োজনে। তাছাড়া বেশীরভাগ স্ত্রী বিয়ের পর স্বামীকে নিজের হাতের মুঠোয় রাখতে চায়, তার আত্মীয়দের কাছ থেকে আলাদা করার চেষ্টা করে প্রাইভেসীর কারণে। ফলে শ্বাশুড়ী ও অন্য আত্মীয়দের সাথে স্ত্রীর সম্পর্ক খারাপ হয়।"

মেয়েরা বউ থাকাকালীন শ্বাশুড়ী তাকে নির্যাতন করে। তাই বউ শ্বাশুড়ী হলে সেও তার ছেলের বউকে নির্যাতন করে। এ এক আজব প্যারাডক্স। এ বিষয়ে আমার ব্লগে আমার একাধিক লেখা আছে।

জ্বি, অনেক পুরুষ রাতদিন পরিশ্রম করেন তাঁর পরিবারের জন্য। তাঁদের জন্য শ্রদ্ধা। কিন্তু শতকরা ৮০ ভাগ নারী তার নিজ গৃহে তার অতি আপনজন দ্বারা ( স্বামী, শ্বাশুড়ী, ননদ, ইত্যাদি) নির্যাতিত। আমার লেখার উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের যেকোন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছোটবেলা থেকে সচেতন করা। ধন্যবাদ।



৯| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০২

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: তাই এখন সময় এসেছে আমাদের শিশুদের শেখানোর, "মেয়েদের কাঁদাতে নেই।"

আপনি সময়ের চাইতে অনেক পিছিয়ে আছে। আমার সময়ই কলেজে মেয়েদের শেখানো হতো পরিবারের জন্য রান্নাবান্না করা, বাচ্চাকাচ্চা মানুষ করা এগুলি বুয়াদের কাজ। এখন মনে হয় প্রাইমারিতেই এগুলি শেখানো হয়।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন:
আগে শতকরা ৬৪ ভাগ, এখন শতকরা ৮০ ভাগ নারী তার নিজ গৃহে তার অতি আপনজন দ্বারা ( স্বামী, শ্বাশুড়ী, ননদ, ইত্যাদি) নির্যাতিত। আমার লেখার উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের যেকোন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছোটবেলা থেকে সচেতন করা। ধন্যবাদ।

১০| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০৫

লর্ড অফ দ্য ফ্লাইস বলেছেন: ছোটবেলা থেকে মেয়েদেরকে বিয়ে করে সংসার করার জন্য তৈরী করা হয়।

আপনি সময়ের চাইতে অনেক পিছিয়ে আছে। আমার সময়ই কলেজে মেয়েদের শেখানো হতো পরিবারের জন্য রান্নাবান্না করা, বাচ্চাকাচ্চা মানুষ করা এগুলি বুয়াদের কাজ। এখন মনে হয় প্রাইমারিতেই এগুলি শেখানো হয়।

(আগের কমেন্ট মুছে দেন। ভুল লাইন কপি করে ফেলেছি।)

২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: .

১১| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৪২

শাহজালাল হাওলাদার বলেছেন: "পড়ে মেয়ের ফাঁদে
পুরুষেরাও কাদে।"
আমরা কেউ কাউকে কাঁদাবোনা, তাই না।

২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, ধন্যবাদ।

১২| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:০০

টারজান০০০০৭ বলেছেন:

আপনিতো ৮০ দশকের চিত্র আঁকিলেন মনে হয় , যখন বাংলা ছবিতে দেখা যাইতো , শাবানা বাসর ঘরে কাঁদিয়া কাঁদিয়া গভীর আবেগে সোয়ামীরে কদম বুছি করিয়া কহিত 'স্বামীর পদতলে স্ত্রীর বেহেস্ত !' (ইহা হাদিস বা কোরানে কোথাও নাই ! ছাগুদের আবিষ্কার হইতে পারে !) ইহা দেখিয়া ফেমিনিস্টরা কহিত 'কাভি নেহি' ! তাহার পর ঘর-সংসার কাজের বুয়ার উপর ফেলিয়া , নারী জাগরণ ও নারী স্বাধীনতা কল্পে মিটিং , মিছিল , সেমিনার , ওয়ার্কশপে ধর্ম ও পুরুষ জাতির গোষ্ঠী উদ্ধার করিত !

প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হইতে কহিতেছি , কি গ্রামে , কি শহরে এই চিত্র এখন আর দেখি না ! তবে নারী নির্যাতন আছে , যেমন আছে পুরুষ নির্যাতন !

ফেমিনিজম মানবতার শত্রু , ইসলামের শত্রু , ধর্মের শত্রু ! মানুষকে বিভক্ত করা , নারী পুরুষ একে অপরকে সহযোগী না বানিয়ে প্রতিপক্ষ বানানো , মানুষ নির্যাতনের কথা না বলে শুধু নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলা, কান্নাকাটি কইরা সবাইরে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসার চেষ্টা করা , নিজেরা মেয়েদের শত্রু হইয়াও বিরাট শুভাকাঙ্খী সাজা এগুলো হইলো ফেমিনিস্টদের দ্বৈত্ব চরিত্র !
হে আল্লাহ ! এদেরকে পুরুষ বানাইয়া দিন ! :D =p~

(আপনাকে না।আপনি ফেমিনিস্ট না বলিয়াই জানি ! তবে আপনার পোস্ট ফেমিনিষ্টদের পক্ষেই যায় !)

২০ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: "পুরুষ নির্যাতন" শিরোনামে আমার ব্লগে একটি লেখা আছে। চাইলে দেখে নিতে পারেন। আমি নারী পুরুষ যেকারো প্রতি নির্যাতনের বিরুদ্ধেই লিখি। ধন্যবাদ।

১৩| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ৯:৪৫

হয়ত তোমারই জন্য বলেছেন: খুব, ভাল লাগলো লেখাটা তবে, একটু যোগ করতে পারি ৷ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের দেশ হলেও ,আমদের দেশে নারি নেতৃত্বায়ন চলছে এবং আগামী কত বছর চলবে জানা নেই ৷আমরা পুরুষ রা ভোট দিয়ে আপনাদের মনোনিত করছি ৷১৯৯১ থেকে ২০১৭ নারী শিশু নির্যাতন এর বিরুধ্বে একটা কঠীন আইন প্রনয়ন হল না, নারীরা এতবছর ক্ষমতায় থেকেও ৷এটা আমাদের দেশের নারীদের দুর্ভাগ্য, ধর্ষণ নারী নির্যাতন নিয়ে লেখা, লেখি অনেক হয় কিন্তু সরকার বরা বরের মত চুপ থাকে ৷একটা কঠিন আইন প্রনয়ন করাহলে অনেকাংশে কমে যেত ধর্ষণ এবং নারী নির্যাতন ৷
দেশ আছে ,সরকার আছে ,আইন আছে, শুধু বচার নেই ৷

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: কঠোর আইন হলেও প্রয়োগ না থাকলে কোন লাভ নেই। আর মানসিকতা পরিবর্তন হলে কিছুই লাগেনা। ধন্যবাদ।

১৪| ২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১২

প্রোলার্ড বলেছেন: পুরুষেরা নারীদের উপর কর্তৃত্বকারী - এটা পবিত্র ক্বুরআনে বলা আছে। এখানে কর্তৃত্ব সে তার অধীনে থাকা নারীদের উপরে দেখাবে সময় সাপেক্ষে (শরিয়ত মোতাবেক)।
আর নারীদেরকে বলা আছে পুরুষের অনুগত হয়ে চলতে (শরিয়ত মোতাবেক) কারণ পুরুষেরা তাদের জন্য ব্যয় করে -এটাও পবিত্র ক্বুরআনে বলা আছে।

এসবের ব্যাত্যায় ঘটলে সাফারিংস উভয় পক্ষের হবে।

নারী নির্যাতনের পাশাপাশি এখন পুরুষ নির্যাতনও চলছে (মানসিকভাবে)। নারীদের সুবিধা হল তারা একটুতেই কান্না করে সবার সিমপ্যাথী পেয়ে যায়, পুরুষ মানুষদের সেই সুবিধাটা নেই । আমাদের সমাজ পুরুষকে কাঁদতে না করে । প্রেমে চিটিংবাজী হলে একটা মেয়ে তার পুরুষ সঙ্গীর উপর কেস ফেলতে পারে । একটা পুরুষের বেলায় সেটা উড়িয়েই দেওয়া হয়।

নারীরা যুক্তিতে না যেয়ে কেঁদে জিততে চায় । নারীদের কাঁদাতে হয় না ,তারা এমনি এমনই কাঁদতে পারদর্শী । কারণ এই কান্না দিয়ে সে অনেক গেইনার হয় ।

এই ট্যাকটিক্স সে কেন ছাড়বে?

২০ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৩৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: কর্তত্ব করলে বা অনুগত থাকলে সমস্যা নেই। কারণ নারী পুরুষ উভয়ে উভয়ের পরিপূরক। সমস্যা নির্যাতন করলে। সেটা নারী বা পুরুষ যাকেই করা হোক। আমাদের উচিত উভয় নির্যাতনের বিরুদ্ধেই ছেলেমেয়েদের মনে ঘৃণা তৈরী করা। আর হাসির মত কান্নাও মানুষের মৌলিক আবেগ। তাই ছেলেরা কাঁদলে ক্ষতি কি? অনেক ছেলেই কাঁদে। হয়তো মেয়েদের মত করে নয়। বরং কাঁদা ভাল। তাতে মনের কষ্ট লাঘব হয়। ধন্যবাদ।

১৫| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩০

কানিজ রিনা বলেছেন: পেপার খুললেই দেখা যায় কয়টা ধর্ষিত হল
কয়টা যৌতুকের বলি স্বামীর দ্বারা অত্যাচারে
আত্বহত্যা অসংখ্য অসংখ্য মেয়েরা পুরুষের
দ্বারা নির্যাতিত হয়।
মেয়েরা রাস্তায় হরিণ ছেলেরা বাঘ এটাই
পরিলক্ষিত।
কোনও ক্ষেত্রে নারীর দ্বারা পুরুষ নির্যাতিত
হয় তবে খুবই কম পুরুষরা আইনে দাড়ালেই
পারে। পরোকীয়ার সাথে নারী পুরুষ উভয়
দায়ী কোনও নারী পুরুষের স্ত্রী সন্তান আছে
জেনেও লোভের বসবতী হয়ে আর এক নারীর
ঘর ভাঙে। এসব নারী পুরুষ নরকের পোকা।
পুরুষ একটা গুনি বউ ঘরে রেখে একটা
ডিস্কো মেয়ের পরকীয়ায় সন্তান সংশার ফেলে
বিয়ে করে অন্যত্র সংসার পাতে। দায়ভার
বহনকরে নারী। এই সমস্ত নারী পুরুষ আলাদা
তারাই নরকের পোকা।
সংশারে কর্তা বাবার দ্বারা মা নির্যাতিত ছোট
থেকে ছেলেরা দেখে অভ্যস্ত। বড় হয়ে সংশার
জীবনে সেটাই করে। মেয়েরাও বড় হয়ে
বিবাহীত জীবনে স্বামীর অন্যায় মেনে নিতে
শিখে মাকে দেখে।
ইসলামীক নিয়ম বাসর ঘরে নারীরা মহরানা
পায়। কিন্তু মেয়েরাই যৌতুক দিয়ে বাসর ঘরে
ঢুকে। সংশারে ধোপাগীরি সুইপারগীরি রাধুনি
সন্তানদের টিচারগীরি সব দায়ীত্ব্য বহন করেও
স্বামীর কাছে খাওয়া পড়ার খোটা শুনতে
হয় বেশীর ভাগ মেয়ের।
পুরুষরা তখনই বুঝে নিজের মেয়ে যখন
নির্যাতিত হয়।
আলপনার সত্য কথনে স্বাগত জানাই।
তারপরেও বলব কিছু ক্ষেত্রে নারীরাও নারীর
দ্বারা নির্যাতিত শাশুরী বউ সতীন সতীনকে
গৃহকর্মী বেশীর ভাগ নির্যাতিত হয় নারীর
দ্বারা। একটা পুরুষ যখন পরোকীয়া করে
ধরে নেই কুকুর তার সাথে যে নারী যোগ
দেয় সেও কুকুরী। অবনতীতে এখন পুরুষের
পাশা পাশী নারীরাও কমতি নেই। ধন্যবাদ
আলপনা বাস্তব সত্য তুলে ধরার জন্য।

২১ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১২:৩৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ আপা। ভাল থাকুন।

১৬| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:১২

কানিজ রিনা বলেছেন: প্রোলার্ডের মন্তব্যে বলছি। কোরআনে নারীর
যে সম্মান দেওয়া আছে সে কথা বললেনা
কেন? কোরআনে পুরুষের কতৃত্ব্য দেওয়া
আছে পুরুষ সেচ্ছাচারীতায় ব্যবহার করে।
কোরআনে পুরুষের জন্য নারীর প্রতি যে
সম্মান দেওয়া আছে তার থেকে বেশী সম্মান
নারীর জন্য দেওয়া আছে।

যেমন বেশীর ভাগ লম্মট চরিত্রহীন লোক
বহু বিবাহ করার সময় হাদীস একটা আছে
তা ব্যবহার করে হাদীসটাকে কলংকীত করেছে
যারা হাদীসের নিয়ম জানেনা। ঠিক একই
ভাবে কতৃত্ব্য বেলায় নিয়ম কানুন না জেনে
কতৃত্ব্য ফলাও করে পুরুষরা।
আর পুরুষরা জম্ম থেকেই নিষ্ঠুর তাই নিষ্ঠরতায় পারদর্শী কাঁদতে জানেনা।
নারীরা জম্ম থেকেই মন নরম তাই পুরুষের
নিষ্ঠুরতায় কাঁদে মেয়েরা।

২১ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: "ইসলাম ধর্মে  মেয়েদেরকে সবচেয়ে বেশী সম্মান ও অধিকার দেয়া হয়েছে। নানা অজুহাতে তা লংঘণ করা হয়। একটা উদাহরণ দেই। দ্বিতীয় বিয়ে করতে ইসলাম প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে বলেছে। কোন মেয়ে কি সেটা দেয়? কোন পুরুষ কি তা নেয়? তাহলে দ্বিতীয়, তৃতীয়..... বিয়ে কি বৈধ? যদি না হয়, তাহলে বিয়ের পরে শারীরিক সম্পর্ক, বাচ্চা..... এসব কি বৈধ?"

ধন্যবাদ আপা। আপনার কথার প্রেক্ষিতে আমার আরেকটা লেখা থেকে উপরের অংশটুকু তুলে দিলাম।

১৭| ২২ শে জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৪০

প্রোলার্ড বলেছেন: দ্বিতীয় বিয়ে করতে ইসলাম প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে বলেছে

@ আলপনা ম্যাম : এটা ক্বুরআনের কোন সূরায় কত আয়াতে বলা আছে? মহান আল্লাহ বলে দিয়েছেন যদি সামর্থ্য থাকে এবং সমান ব্যবহার করতে পারবে বলে মনে করে তাহলে ৪ টি পর্যন্ত বিয়ে করতে পারে , না হলে একটি (সূরা নিসা ৩)।
এখানে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে কি বলা হয়েছে ? যে ব্যাপারে আল্লাহই বলে দিয়েছেন সে ব্যাপারে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার বিধান কে আনালো?

@ কানিজ ম্যাম : নারীরা যদি ক্বুরআনের আইনকেই ফলো করতো তাহলে তাদের জন্য ভাল বৈ মন্দ হত না । যেখানে একটা বিশেষ পর্যায়ে গিয়ে স্ত্রীকে প্রহারের অনুমতি আল্লাহই দিয়ে দিয়েছেন যেটার বিপরীতে নারী নির্যাতনের আইন আনা হয়েছে স্বামী ও শশুড়বাড়ির লোকদেরকে সাইজ করতে সেটার অপব্যবহার মেয়েরা হরহামেশা করে থাকে এবং এর ফল সমাজে ভাল কিছু বয়ে আনে নি।

আর পুরুষরা জম্ম থেকেই নিষ্ঠুর তাই নিষ্ঠরতায় পারদর্শী কাঁদতে জানেনা। নারীরা জম্ম থেকেই মন নরম তাই পুরুষের নিষ্ঠুরতায় কাঁদে মেয়েরা।


০ কথাটা ঠিক না । পুরুষদের কঠিন পরিশ্রম করে , প্রতিযোগিতা করে , যুদ্ধ করে পরিবারকে চালাতে হয় । তাই তাকে কাঁদলে চলবে না । এটা যারা কাঁদতে পারদর্শী তাদের কাছে নিষ্ঠুর বলে মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.