নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মন, ভাবনা, অনুভূতি ও ভালবাসা বৈচিত্র্যময় বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!https://www.facebook.com/akterbanu.alpona

আলপনা তালুকদার

ড.আকতার বানু আলপনা,সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী

আলপনা তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

দীর্ঘদিন ধরে চললেই পাপ পূণ্য হয়ে যায়না

২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪২




ভারতের সুপ্রীম কোর্ট মুসলিমদের মধ্যে ডিভোর্সের "তিন তালাক" প্রথাকে 'বেআইনি', 'অসাংবিধানিক' ও 'ইসলামের অংশ নয়' বলে তা বাতিল করেছে। এর আগে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানেও বিধানটি আইন করে বাতিল করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে 'ধর্মের বিধান' আখ্যা দিয়ে এ অমানবিক ও পাপ কাজটি লোকে দিনের পর দিন করে এসেছে।

এরকমই আরেকটি কুপ্রথার নাম সতীদাহ। সতীদাহ প্রথা চালু হয়েছিল ধর্মের দোহায় দিয়ে নারীর সম্পদ হরণের কূটকৌশল থেকে। মোহরানা মাফের বিষয়টিও তাই। ইসলামে স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করা পুরুষের জন্য ফরজ। অথচ অধিকাংশ পুরুষরা বিয়ের রাতে স্ত্রীর কাছে মোহরানা মাফ চেয়ে নেন, স্ত্রীর ন্যায্য পাওনা দেননা যা ইসলামের খেলাফ।

ইসলামে মাজার পূজা নিষিদ্ধ। অথচ বাংলাদেশের আনাচে কানাচে থাকা অসংখ্য মাজারগুলোতে দানবাক্স বসিয়ে অগনিত মানুষের কষ্টার্জিত কোটি কোটি টাকা ধর্মের নামে কিছু অপরাধী লুটে নিলেও সেগুলো বন্ধ করার বিষয়ে কারো কোন তৎপরতা নেই।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়ায় শিক্ষকদের বাসভবনের পিছনে একটি মাজার আছে। প্রায়ই সেখানে সারারাত ধরে অতি উচ্চশব্দে গান বাজতে থাকে। এই শব্দে পড়ালেখা, ঘুমানো দায়। একজন মৃত মানুষের কবরের উপরে গানবাজনা করা কি উচিত? আমি কয়েকজন শিক্ষককে প্রশ্ন করেছিলাম, কেন এই মাইক বাজানো বন্ধ করা যায়না? তারা বলেছে, মাজারে নাকি গাঁজার আসরও বসে। এই মাজারের আয়ের বখরা নাকি নেতা - পুলিশ সবাই পায়। তাই এসব বন্ধ হবেনা।

এসব ধর্ম পাপীরা চালাকী করে মাজারের আশপাশে মসজিদ বানায়, যাতে লোকেদের বোঝানো যায় যে তারা মসজিদে দান করছে। এতিমখানার নামেও টাকা তোলা হয়। অথচ এসবের অধিকাংশই ভুয়া। অনেক মানুষ মাজারে মানত করে, শিরনী দেয়, রান্না করে মাজারে খাইদাই করে। এ সবই বেদাআত। শুধু কবর জিয়ারতের বা নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রেখে দানবাক্সগুলো সরানো, রান্না ও গান বন্ধ করা দরকার।

আমাদের দেশে শুনি ভিক্ষুকরা কোটিপতি। তারা মসজিদের নামে, মেয়ের বিয়ে, চিকিৎসা, কাফনের কাপড়, ইত্যাদির কথা বলে (মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধকে ব্যবহার করে) মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করে, মানুষকে ঠকায়।

ধর্মের নামে লোক ঠকানো বন্ধ করা যায়। আমাদের দান বা যাকাতের অর্থ নিজের দরিদ্র আত্মীয় বা পরিচিতদেরকে দেয়া উচিত, ভণ্ড ভিখারীদের বা মাজারে নয়। পরিচিত মসজিদ বা এতিমখানায়, পরিচিত অসুস্থ মানুষকেও টাকা দেয়া যায়। পরিচিত গরীব ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য টাকা দেয়া বেশী ভাল। এরা ভিক্ষা করতে পারেনা।

আমাদের এ উপমহাদেশে পারিবারিক, সামাজিক, আর্থিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, ইত্যাদি সবক্ষেত্রে নারীর প্রতি নানারকম বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। তালাকের পর খোরপোষ, মৃত স্বামীর সম্পত্তিতে বিধবা স্ত্রীর হক, বাবার সম্পত্তিতে মেয়েদের হক, স্ত্রীর সম্পত্তি বা অর্থ স্ত্রীকে তার ইচ্ছামত খরচ করতে দেয়া, এমনকি বাবার বাড়ী থেকে দেয়া স্ত্রীর সম্পদ ও (স্বামীরা নিজেদের দখলে নেয়, স্ত্রীদের দেয়না) বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেয়া হয়না যা ধর্মের খেলাফ। বাংলাদেশের শতকরা আশিভাগ নারী স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত ( অশ্রাব্য গালি, নির্মম প্রহার, জখম, এমনকি খুন) হলেও এতে ধর্মের খেলাফ হয়, একথা কেউ বলেনা।

আমার মনে হয় পৃথিবীতে মেয়েদের প্রতি যত বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, তারমধ্যে মানসিক দিক থেকে সবচেয়ে নির্মম হল স্বামীর বহুস্ত্রীর একসাথে বসবাস, মানে বহুবিবাহ। একটা মেয়ের জন্য চোখের সামনে তার স্বামীর অন্য স্ত্রীর ঘরে শুতে যেতে দেখাটা যে কতটা অমানবিক, একটু কল্পনা করলেই বোঝা যায়। মেয়েরা এমন করলে পুরুষদের কেমন লাগবে? মাঝরাতে স্ত্রীর মোবাইল ফোন বেজে উঠলে যেখানে পুরুষদের গায়ের সব লোম খাড়া হয়ে যায়, সেখানে...।

ইসলাম ধর্মে মেয়েদেরকে সবচেয়ে বেশী সম্মান ও অধিকার দেয়া হয়েছে। নানা অজুহাতে তা লংঘণ করা হয়। একটা উদাহরণ দেই। সব পুরুষরা ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা করে বলে, ইসলামে চারটা পর্যন্ত বিয়ে হালাল। অথচ পবিত্র কোরআনে কোথাও সাধারণ নারীদের ব্যাপারে এই কথা বলা হয়নি, শুধু এতিম মেয়েদের ক্ষেত্রে তা বলা হয়েছে এবং তার সাথে পবিত্র কোরআনে 'যদি' শব্দটি জুড়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ যদি এরুপ আশঙ্কা দেখা দেয় যে এতিম মেয়েদেরকে নিরাপদে রাখা কোনভাবেই সম্ভব হচ্ছে না, তাহলেই শুধু তাদের বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ চারটি পর্যন্ত। কিন্তু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে বিয়ের অনুমতি নেই। সাধারণ মেয়েদের ক্ষেত্রে তো আরোই নেই।

পবিত্র কোরআনে শর্ত-সাপেক্ষে একাধিক বিয়ের অনুমতি দিয়েছে মাত্র একটা জায়গায়, সুরা নিসা’র ৩ নম্বর আয়াতে − “এতিমদের তাদের সম্পদ বুঝাইয়া দাও। খারাপ মালামালের সাথে ভালো মালামালের অদল-বদল করিও না। আর তাহাদের ধনসম্পদ নিজেদের ধনসম্পদের সাথে সংমিশ্রিত করিয়া তাহা গ্রাস করিও না। নিশ্চয় ইহা বড়ই মন্দ কর্ম।

আর যদি তোমরা ভয় কর যে এতিম মেয়েদের হক যথাযথভাবে পূরণ করিতে পারিবে না, তাহা হইলে সেই সব মেয়েদের মধ্য হইতে যাহাদিগকে ভাল লাগে তাহাদিগকে বিবাহ করিয়া নাও দুই, তিন বা চারিটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে তাহাদের মধ্যে ন্যায়সঙ্গত আচরণ বজায় রাখিতে পারিবে না তবে একটিই”।

সুরা নিসার আয়াত ১২৯ − “তোমরা কখনও নারীদিগকে সমান রাখিতে পারিবে না যদিও ইহা চাও” - এর ভিত্তিতে কিছু মওলানা চিরকাল দৃঢ়ভাবে দাবি করেছেন যে, পবিত্র কোরআন বহুবিবাহ বাতিল করে এক স্ত্রী রাখার বিধান বহাল রেখেছে। কারণ “ন্যায়সঙ্গত” অর্থাৎ “আদ্ল”-এর মধ্যে প্রেম-ভালবাসাও অন্তর্ভুক্ত যা সমান ভাগে ভাগ করা যায় না। তাঁরা বলেন বিত্তশালী স্বামীরা তাদের চার বৌকে সমান সমান বাড়ি-গাড়ি দিয়ে রাখলেই কি তাদেরকে সমান সমান ভালবাসা দেয়া সম্ভব? ভালবাসা কি সমান সমান অংশে ভাগাভাগি করার জিনিস? যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে মুসলিমদের বহুবিবাহ কি ধর্মের খেলাফ বা পাপ নয়?

ইসলামে বহুবিবাহ জায়েজ না হলে (এতিম বা অরক্ষিত মেয়েদের বিষয়টি ও প্রথম স্ত্রীর কোন ন্যায্য সমস্যা থাকা ছাড়া) পুরুষদের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ..... বিয়ে কি বৈধ? যদি না হয়, তাহলে বিয়ের পরে শারীরিক সম্পর্ক, বাচ্চা..... এসব কি বৈধ???

ধর্ম ও আইন মানুষের জন্য। মানুষের প্রয়োজনে যেকোন আইন (ধর্মীয় আইনও) পরিবর্তিত হয়। যেমন - সৌদি আরবে নামাজ না পড়লে জেল হয়, যদিও ধর্মে ধর্ম পালনের জন্য কাউকে শাস্তি দেয়া বা বাধ্য করতে বলা হয়নি। হিন্দুধর্মমতে মেয়েরা বাবামার সম্পত্তি পেতনা। এখন তারা এ ধর্মীয় আইন পরিবর্তন করে নিয়েছে। আগে হিন্দুদের ডিভোর্সের বিধানও ছিলনা। এখন আছে। বাংলাদেশে আইন হয়েছে, বাবামাকে না দেখলে ছেলের জেল হবে, শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে না দেখলে ছেলে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে, দ্বিতীয় বিয়ে করতে হলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগবে - এগুলোর কোনটাই ধর্মে নেই।

পুরুষরা নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য বহুবিবাহের মত অনেক আইন বানিয়ে নিয়েছে, এখনও নিচ্ছে। ইরানের পার্লামেন্ট আইন পাস করেছে যে বয়স ১৩ বছর হলেই পিতা তার পালক কন্যাকে বিয়ে করতে পারবে।
সম্প্রতি তুরস্কের পার্লামেন্ট একটি আইন পাশ করতে যাচ্ছে। তা হল, ধর্ষক ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে রাজী হলেই তার ধর্ষণের শাস্তি মাফ করে দেয়া হবে। ধর্মে কি এমন নির্দেশনা আছে? মেয়েদেরকে পুরুষের আজ্ঞাবহ করে রাখার জন্য মিথ্যে বলা হয়, "স্বামীর পায়ের নীচে স্ত্রীর বেহেশত" যা ধর্মের কোথাও বলা নেই।

ভারতের দিল্লী হাইকোর্ট সম্প্রতি আরেকটি রায় দিয়েছে বয়স্কদের জন্য যা ধর্ম বিরোধী। দিল্লী হাইকোর্ট রায় দিয়েছে, বাবামার বাড়ীর উপরে ছেলেদের কোন আইনগত অধিকার থাকবেনা। তারা বাড়ীতে থাকতে পারবে কি পারবেনা, তা বাবামার বিবেচনার উপর নির্ভর করবে। এর ফলে ছেলেরা বাবামাকে বাড়ী থেকে বের করে দিতে বা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিতে পারবেনা। ভারতে বর্তমানে সন্তানেরা বাবামাকে বাড়ী থেকে বের করে দিচ্ছে, বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছে, এমনকি কোন কোন এলাকায় বিষের ইন্জেকশন দিয়ে বৃদ্ধ বাবামাকে সন্তানেরা খুন পর্যন্ত করছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেয়া হয়েছে।

ধর্মের দোহায় দিয়ে ভারতের হিন্দুরা মুসলিম খুন, মায়ানমারে মুসলিম খুন করছে। তালেবান বা আইসিসরা জোরপূর্বক ইসলামী রাষ্ট্র বা ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে গিয়ে ধর্মের খেলাফ করছে। কেননা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান-নাস্তিক একই স্রষ্টার সৃষ্টি এবং কুরআন ও হাদিসে জোর করে কাউকে ধর্ম পালনে বাধ্য বা খুনের অনুমতি নেই। যেমন -

"সাবধান! ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না, তোমাদের পূর্বে যারাই ধর্ম নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করেছে তারাই ধ্বংস হয়েছে।" [মুহাম্মদ (সঃ)]

“ধর্মের ব্যাপারে কোন জোরজবরদস্তি নেই।" [সূরা বাকারাহঃ২৫]

"যারা অন্য দেবতাদের পূজা করে, সেসব দেবতাদেরকে তোমরা গালি দিও না।" [সূরা আনয়ামঃ১০৮]

"তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার।" [সূরা কাফিরূনঃ০৬]

মাজার পূজা, নারী নির্যাতন, ঘুষ, খুন, মজুতদারী, অন্যায়, রডের বদলে বাঁশ দেয়া, শিয়া-সুন্নি বিরোধে শত শত মুসলিম হত্যা, নানা জঙ্গী গোষ্ঠী দ্বারা নিরপরাধ মানুষ হত্যা,.. এগুলো বন্ধ হওয়া বেশী জরুরী। ধনী মুসলিম দেশগুলোর লোকেদের বিলাসিতা ও নানা পাপকাজ ও বিধর্মীদের সাথে হাত না মিলিয়ে গরীব মুসলিম দেশগুলোর সাহায্যে এগিয়ে আসা বেশী জরুরী।

ইসরাইলকে গালি দেয়ার চেয়ে বেশী জরুরী ধনী, ক্ষমতাবান মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। কারণ তারা "মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই" নীতি অমান্য করছে। মুসলিম দেশগুলো মুসলিম দেশগুলোকে সাহায্য না করে সার্থের জন্য হাত মেলায় ইহুদীদের সাথে। তাহলে দোষ কার? এক্ষেত্রে মুসলমানই কি মুসলমানের শত্রু নয়?

হিন্দুরা ধর্মকে ব্যবহার করে মুসলমানদের খুন করছে, তাদের ঘরবাড়ি সম্পদ লুট করছে। মায়ানমারের বৌদ্ধরাও তাই। ইহুদীরা মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষের কারণে তাদেরকে হত্যা করতে দ্বিধা করেনা। মুসলিম শিয়া ও সুন্নীরা একে অন্যকে খুন করে, মুসলমানরা কাদিয়ানীদের, নাস্তিকদের, সমকামীদের দেখতে পারেনা ধর্মের কারণে। কেউ সমকামী, নাস্তিক বা কাদিয়ানী হলে একজন মুসলিমের কি সমস্যা? যার পাপ তার। অন্য কারো নয়।

ইসলাম বলছে, একজন মানুষকে ( মুসলিম বা বিধর্মী বা নাস্তিক হলেও) খুন করার অর্থ গোটা মানবজাতিকে খুন করা। তাহলে গোটা মানবজাতিকে খুন করে বেহেশ্তে যাওয়া কিভাবে সম্ভব? হলি আর্টিজানের জঙ্গীরা নাকি মানুষ খুন করে বেহেশ্তে চলে গেছে!!! এতই সহজ???

হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর অভ্যাস ছিলো কোনো না কোনো মেহমানকে সাথে নিয়ে খাওয়া। একদিন তিনি অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও কোন মেহমান না পেয়ে একজন বৃদ্ধ ভিক্ষুককে নিয়ে খেতে বসলেন। ইব্রাহীম (আঃ) বিসমিল্লাহ্‌ তথা আল্লাহর নামে খাবার মুখে তুললেন; কিন্তু ভিক্ষুক বিসমিল্লাহ্‌ না বলেই খাওয়া শুরু করল। ইব্রাহীম (আঃ) ভিক্ষুককে প্রশ্ন করলেন, "আপনি আল্লাহর নাম না নিয়েই খাওয়া আরম্ভ কেন করলেন?"
ভিক্ষুক বলল, "আমি বাপু আল্লাহ্‌-তে বিশ্বাসী নই। পেলে খাই, আর না পেলে না খেয়েই থাকি। কারো নাম নেওয়ার দরকার মনে করি না।"

ইব্রাহীম (আঃ) খুব রাগান্বিত হয়ে বললেন, "হে অকৃতজ্ঞ বান্দা! তুমি এখান থেকে চলে যাও। আমার এই খাবার তোমার মত নাফরমান ব্যক্তির জন্য নয়।" বৃদ্ধ ভিক্ষুকটি তখন মন খারাপ করে না খেয়েই সেখান হতে চলে গেলেন। সাথে সাথে আল্লাহর পক্ষ হতে ওহী আসলো যে, "হে ইব্রাহীম! আমি এই ভিক্ষুককে দীর্ঘ ৮০ বছর যাবৎ আহার করিয়ে আসছি। আমি কখনোই অভিযোগ করি নাই, কারণ সে আমারই বান্দা। আর তুমি তাকে এক বেলা খাওয়াইতে রাজি হলে না!!!"

ইব্রাহীম (আঃ) তখন তাঁর ভুল বুঝতে পারলেন, এবং ভিক্ষুককে খুঁজতে লাগলেন, কিন্তু তাকে আর পেলেন না। অতঃপর অনুতপ্ত হলেন এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেন।

তার মানে কেউ চাইলে ধর্ম পালন নাও করতে পারে। কাউকে ধর্ম মানতে ইসলাম বাধ্য করতে বলেনি।

আফগানিস্তানে তালেবানরা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে গিয়ে ইসলামী আইন লংঘন করে। ইসলাম দ্বীনের দাওয়াত দিতে বলেছে। কাউকে ধর্ম মানাতে বাধ্য করতে বলেনি। কারণ প্রতিটা মানুষের পাপ, পূণ্যের হিসাব রাখার জন্য দু'জন ফেরেশ্তাকে আল্লাহ নিয়োজিত করেছেন এবং মানুষ তার প্রতিটা ভাল ও মন্দ কাজের হিসাব কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে দিতে বাধ্য হবে। সুতরাং কেউ কোন পাপ করলে তার শাস্তি সেই ব্যক্তিই পাবে, অন্য কেউ পাবেনা। যেমন - যে নামাজ পড়ল না, রোযা রাখলোনা, আল্লাহকে বিশ্বাস করলোনা, তার শাস্তি আল্লাহই তাকে দেবেন। সুতরাং আমাদের তাতে বিচলিত হবার কিছু নেই। কেউ লালনের মূর্তি বা সুপ্রিম কোর্টের সামনের মূর্তিকে পূজা করেনা। যদি কেউ করেও, তাহলে সে পাপ তার। সুতরাং ওটা সরালেই গোটা বাংলাদেশের মানুষ ধার্মিক হয়ে যাবেনা বা ওটা থাকলেই সবাই হিন্দু হয়ে যাবেনা। রোযা না রাখার অপরাধে আইসিসের মানুষ খুন করে রাস্তার পাশের থাম্বায় ঝুলিয়ে রাখা অন্যায়।

সৌদি আরবে নামাজ না পড়লে জেল হয়। এটিও অনুচিত। চুরি করা অপরাধ। ধর্ম না মানা অপরাধ হওয়া উচিত নয়। কারণ কারো ধর্ম মানার যেমন অধিকার আছে, তেমনি কারো ধর্ম না মানার অধিকারও থাকা উচিত। কেউ স্বেচ্ছায় দোজখে গেলে কারো আপত্তি থাকা উচিত নয়। কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত হেদায়েত হয়না, যতক্ষণ আল্লাহ তাকে হেদায়েত না করেন।

আফগানিস্তানে জোর করে আল্লাহর আইন মানতে বাধ্য করতে গিয়ে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেয়া হলো। অথচ ইসলাম বলছে, "বিদ্যা শিক্ষা করা প্রতিটি নরনারীর জন্য ফরজ, বিদ্যা শিক্ষার জন্য প্রয়োজনে সুদূর চীনে যেতে বলা হয়েছে। কোরআনের প্রথম শব্দ পড়, বিদ্যানের কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে পবিত্র। এই কথা বলতে গিয়েই গুলি খেল মালালা। কিছু মানুষের জোর করে ধর্মের নামে জুলুম করার ফলে আফগানিস্তান তছনছ হয়ে গেল।

ক্ষমতাবানরা ক্ষমতার দাপটে ধর্মের নামে বা অন্য কোন অজুহাতে মানুষের উপর নির্যাতন করে, করছে, করবে। যত দীর্ঘ সময় ধরেই মানুষের উপরে অন্যায় জুলুম, নির্যাতন চলুক না কেন, অন্যায় অন্যায়ই। অন্যায় কখনোই ন্যায় হয়ে যায়না। ভারতীয় এ রায়কে সাধুবাদ জানাই। সেইসাথে প্রত্যাশা করি, সারা পৃথিবীতে যত অন্যায় আইন বা নিয়ম (ধর্মীয় বা অন্য যেকোন) প্রচলিত আছে, সেগুলো বাতিল হোক, বন্ধ হোক। বোমা মেরে, গুলি করে বা অন্য যেকোন ভাবে নিরপরাধ মানুষ হত্যা বন্ধ হোক। মানুষ ভাল থাকুক। মানবতার জয় হোক।

মন্তব্য ৪৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন:

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন:
সীমান্তে মানুষ হত্যা আরেকটি মানবাধিকার লংঘন ও পাপ। সীমান্তে কেউ অপরাধ করলে তার বিচার হোক, খুন নয়।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫২

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: বোমা মেরে, গুলি করে বা অন্য যেকোন ভাবে নিরপরাধ মানুষ হত্যা বন্ধ হোক। মানুষ ভাল থাকুক। মানবতার জয় হোক।

বেশির ভাগের সঙ্গে একমত। তবে কিছুটা দ্বিমত ও আছে । #:-S

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:০১

আলপনা তালুকদার বলেছেন: থাকতেই পারে। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:০৩

প্রামানিক বলেছেন: ভাল

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:২৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:৩৮

আখেনাটেন বলেছেন: ভালো লিখেছেন। তবে লেখাটা অারো গোছালো হলে ভালো লাগত।

'এই নিয়েই অামাদের মুসলিম সমাজ'।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:০৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। লেখাটা অনেক বড়। তাই হয়তো এমন হয়েছে।

৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:১৭

মানিজার বলেছেন: বুঝলাম ইসলামে কুনু জুরদবস্তি নাই । ইসলাম মহান ধর্ম ।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৫৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


"ভারতের সুপ্রীম কোর্ট মুসলিমদের মধ্যে ডিভোর্সের "তিন তালাক" প্রথাকে 'বেআইনি', 'অসাংবিধানিক' ও 'ইসলামের অংশ নয়' বলে তা বাতিল করেছে। "

-বিচারকেরা সবাই মুসলমান ছিলো তো? ভগবান আমার ব্লাসফেমী মাফ করুক, যেসব বিচারক গরু ও গাছকে ভগবান মানেন, তারা কি করে "এক আল্লাহ'র" ধর্মের কোন কিছুর উপর আইনী মতামত দিচ্ছেন?

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১০:৫৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: পাঠকই উত্তর দিয়ে দিয়েছেন আমার হয়ে। ধন্যবাদ।

৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩৬

সেয়ানা পাগল বলেছেন: কি করে ভারতীয় উপমহাদেশের বেশীর বাগ মুসলিম রা হাজার বছরের নরমপন্থী সুফিবাদ ছেড়ে দিয়ে গত কয়েক দশকের মধ্যে কট্টরপন্থী ওয়াহাবি মতবাদ এ আকৃষ্ট হয়ে পড়ল, তার উপর আপনার একটা লেখা চাই। যেহেতু আপনি অধ্যাপনা পেশাতে রয়েছেন তাই আপনাকেই অনুরোধ করলাম ।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:০০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। অধ্যাপনা করলেও ওটা আমার পড়াশোনার বিষয় নয়। তবু ভেবে দেখব। ভাল থাকুন।

৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৩৯

সেয়ানা পাগল বলেছেন: @চাঁদগাজী ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্যানেলে ৫ জন বিচারপতি ছিলেন এবং ৫জনই ৫টি আলাদা ধর্মের অনুসারী।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:০১

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ঠিক। ধন্যবাদ।

৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৪৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



@সেয়ানা পাগল ,

অন্য ধর্মের লোকেরা ইসলাম ধর্মীয় বিষয়ে আইনী মতামত ও রায় দিলে, সেই রায়ের অবস্হা কি হবে?

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:০৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: বিচারকরা সংশ্লিষ্ট ধর্মগ্রন্থ পড়ে এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যান্য মুসলিম দেশের রায়ের বিশ্লেষণ গুলোও আমলে নিয়ে তারপর মতামত দেন। আর নিজ দেশের মুসলিম জনগণের ব্যাখ্যা ও দাবী তো আছেই। ধন্যবাদ।

১০| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ ভোর ৬:২২

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: @চাদগাজী, এই রায় প্রকাশ করার আগে পুরো ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামিক স্কলারদের মতামত গুরুত্বসহকারে নেয়া হয়েছে।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:০৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি, ঠিক। অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

১১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ ভোর ৬:২৬

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: ইসলামী শরিয়াতে কিছু নিয়ম আছে, যেগুলো যুগের সাথে বা প্রয়োজনের তাগিদে পরিবর্তনশীল। এযুগে মানুষের মূল্যবোধ অনেক কম। তাই এধরনের আইন করতে বাধ্য হয়েছে। এ আইন হয়ত অনেকের সমস্যার কারণ হতে পারে, তবে বৃহদাংশের কথা মাথায় রেখেই প্রণয়ন করা হয়েছে।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:০৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জ্বি ঠিক। খুব ভাল বলেছেন। ধন্যবাদ।

১২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৮:৩৮

আবু মুছা আল আজাদ বলেছেন: আদল অর্থ ইকুয়ালিটি বা সবার জন্য সমান ১০০-১০০ নয় বরং আদল অর্থ যার জন্য যেমন প্রয়োজন একজনের জন্য ১২০ একজনরে জন্য ৯০ অপরজনের জন্য ১০০ হলে সবাইকে এই অনুসারে প্রদানই আদল আদলের অপর সমার্থক অর্থ হল এনসাফ।

আর তিন তালাক এর সাথে সতীদাহ প্রথার সম্পর্ক কোথায় দেখলেন? সতীদাহ তো আমনাদের বৈদিক ধর্মে নাই এটি বিকৃতি করে পরে তৈরী করা হয়েছে। বা ধর্ম না থাকার জন্য হয়েছে।

১ তালাক নয় বরং তিন তালাক অর্থাৎ মে জনসমক্ষে ৩ বার করে বলবে যে আমি তাকে তালাক/ছেড়ে দিলাম কোন প্রমান বা জনসমক্ষে না বললে ্বেং তা যদি সে অস্বীকার করে তবে সাধারণ আইনে কোন কিছূ/তালাক হবে না।


মাজারের বিষয়টি ধর্মের সাথে কেউ কখনো মনে করে না বাট বিকৃতি/ ক্রাইম হিসেবেই টিকে আছে

আমাদের এ উপমহাদেশে পারিবারিক, সামাজিক, আর্থিক, ধর্মীয় ................. হলেও এতে ধর্মের খেলাফ হয়, একথা কেউ বলেনা।-- এটি ধর্ম পালনের অভাবের কারনে হচ্ছে ধর্মের কারনে নয়।


--আফগানিস্তানে তালেবানরা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে গিয়ে ইসলামী আইন লংঘন করে-- আফগানে ইসলামী রাষ্ট্র হল নাকি অন্য কিছূ হল তাতে যুদ্ধ করে আমেরিকার কি লাভ? ------ আমেরিকা যুদ্ধ করেছে তেল পাইপলাইনে তালেবান সরকারের সম্মত না হওয়া এবং আফিমের ঝুড়ি আফগানের আফিম/হিরোইন উৎপাদন তালেবান কর্তক বন্ধ করে দেয়।

-------------- আশা করি সকল বিষয়ই আরো ভাল অধ্যয়ন করার চেষ।টা করবেন।

যাই হোক আপনার বর্ণনা এবং লেখার ভঙ্গিটা ভাল।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ইনসাফ কিসের উপরে নির্ভর করবে? স্বামীর বিবেচনা? তাহলে স্বামী যে স্ত্রীকে বেশী ভালবাসেন, তার প্রতি বেশী ইনসাফ করবেন। আর কাকে কতটা ভালবাসবেন, মানে ভালবাসার ইনসাফ কি হয়? ভালবাসাতো আল্লাহ প্রদত্ত। মানুষ ইচ্ছে করে কাউকে ভালবাসে না। আল্লাহ মানুষের মনে প্রেম-ভালবাসা দেন বলেই লোকে ভালবাসে।

ঠিক। সতীদাহ ধর্মের দোহায় দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল। এটাই বলেছি।

জনসম্মুখে তিনবার বললেও তালাক হবেনা। ইসলামে তালাকের সুনির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়া আছে। পর পর সেগুলো মেনে তালাক দিতে হবে।

আপনার ধারণা ঠিক নয়। মাজার পূজা পূণ্য হিসেবেই কিছু ধর্মান্ধ মানুষের মাঝে টিকে আছে এবং এই ধর্মান্ধতার সুযোগ নেয় কিছু অপরাধী।

জ্বি, আমিও তাই বলেছি। ইসলাম মেয়েদেরকে সবচেয়ে বেশী সম্মান ও অধিকার দিয়েছে যা মানুষ লংঘণ করে বার বার। ভাল করে আরেকবার পড়ে দেখুন।

সুযোগসন্ধানীরা অন্তর্কলহের সুযোগ নেবে, এটাই স্বাভাবিক। সবগুোলো যুদ্ধবিধ্বস্ত মুসলিম দেশ নিজেদের ভুলে, বোকামী ও ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরে হবে।

আপনার মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

১৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:১৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: মডুদের বলছি। সম্ভব হলে এরজম অনৈতিক কাজ করার সুযোগ বন্ধ করে দিন। আর তা সম্ভব না হলে কোন পাঠক একাধিক মন্তব্য করলে সেটাকে একটি মন্তব্য হিসেবে ধরা হোক, যাতে কোন পাঠক একাই দশটি মন্তব্য করে কোন লেখাকে আলোচিত ব্লগে নিতে সাহায্য করতে না পারেন। ধন্যবাদ।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:০৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: মডুদের বলছি।

ব্লগের সেটআপ অনুযায়ী কোন লেখা আলোচিত ব্লগে আসতে হলে একটি উপায় হলো সর্বাধিক মন্তব্য পাওয়া ( একই লেখক বা পাঠক একাই অনেক মন্তব্য করে হলেও)। আমি এই ব্যবস্থার সংস্কার চেয়েছিলাম। হয়তো সঙ্গত কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি। সম্ভব হলে এরকম অনৈতিক কাজ করার সুযোগ বন্ধ করে দিন। আর তা সম্ভব না হলে কোন পাঠক একাধিক মন্তব্য করলে সেটাকে একটি মন্তব্য হিসেবে ধরা হোক, যাতে কোন পাঠক একাই দশটি মন্তব্য করে কোন লেখাকে আলোচিত ব্লগে নিতে কোন লেখাকে সাহায্য করতে না পারেন। ধন্যবাদ।

১৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০

আল ইফরান বলেছেন: ভালো লিখেছেন, যুক্তিযুক্ত কথা।

তবে পোস্টের কয়েকটা জায়গাটা নিয়ে আইনের ছাত্র হিসেবে আমার একটু আপত্তি রয়েছে,
লেখক বলেছেন "... শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে না দেখলে ছেলে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে"।
আমি যতদুর জানি এই কারনে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয় না, এটলিস্ট বাংলাদেশে না।
"আগে হিন্দুদের ডিভোর্সের বিধানও ছিলনা"- এখনও বাংলাদেশে নাই।
কাইন্ডলি রেফারেন্স দিয়ে এই অংশটুকুর সত্যতা যাচাই করার সুযোগ দেন অথবা এডিট করে দিন।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: বাংলাদেশে এটি নতুন। আগে ছিলনা। আর হিন্দুদের ডিভোর্সের বিধান বলতে আমি ভারতের কথাই বলেছি। উচিত ছিল ভারত নামটা উল্লেখ করা। ধন্যবাদ ভুলটি ধরিয়ে দেবার জন্য। ভাল থাকুন।

১৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:১৫

নতুন বলেছেন: ভাল ++

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২১

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

১৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২৫

নতুন বলেছেন: অনেক বিষয়ে আমাদের দেশের মানুষ চুপ থাকে... কারন সেখানে স্বাথ` থাকে...

যৌতুকের মতন একটা বিষয় আমাদের দেশে থাকার কথা না.... বরং দেনমহর আদায় করা উচিত...

এটা আন্দোলন আকারে শুরু হয় না।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:৩৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: মাজারের বিষয়টিও তাই। ধন্যবাদ। খুব ভাল বলেছেন। ভাল থাকুন।

১৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:০২

এ আর ১৫ বলেছেন: এটা অবাক হবার মত ব্যপার বিশ্বের প্রায় সব মুসলিম দেশে তাৎখনিক ৩ তালাক আইণ বাতিল হয়েছে বহু আগে অতচ এই আইণ হিন্দু প্রধান দেশ ভারতে বাতিল হলো গত কাল ২২/০৮/২০১৭ । ১৯৬১ সালে আইয়ুব খান এই আইণ বাতিল করে এবং এই এখন আমাদের দেশে বহাল তবুও গ্রাম বাংলায় কওমী মাদ্রাসার মাওলানাদের কারনে এই প্রথা এখনো চালু আছে ।
সুরা আল বাকারাতে তালাক বাস্তবায়নের জন্য ইদ্দত কাল গুনার শর্তের কথা বলা হয়েছে -- কোরানের সেই নির্দেশকে তাচ্ছিল্ল করে তাৎখনিক ৩ তালাকের আইণ চালু ছিল এবং আছে গত ১৪০০ বৎসর ধরে। বিশেষ করে কওমী সালাফী ওহাবী ফেতনার কারনে একে রদ করা যায় নি ।
কি দু:খের বিষয়ে ভারতের ওল ইন্ডিয়া মুসলিম ল বোর্ড এই আইণ রক্ষা করার জন্য আদালতে লড়াই করেছে এবং পরাজিত হয়েছে । দেখুন কি ভাবে এরা কোরান লংঘন করেছে , তারা জানে এই আইণ কোরান বিরুধী এবং বিশ্বের প্রায় সকল দেশে সরকারি ভাবে এই আইণ বাতিল করা হয়েছে ।
যাদের এই ৩ তালাক আইণের বিস্তারিত ব্যাখা দলিল সহ বুঝতে চান তাহোলে তাদের অনুরোধ করছি নীচের লিংকে গিয়ে ২৫মিনিটের এই নাটকটি দেখুন । নাটকটির নাম হিল্লা .
হিল্লা movie

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:১৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এত মূল্যবান কিছু তথ্য তুলে ধরার জন্য। আল্লাহ আপনাকে ভাল রাখুন।

১৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:১৯

প্রামানিক বলেছেন: বর্তমানে দেশে ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী তালাক খুব একটা হয় না বা হয়ই না। ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী যদি কেউ তালাক দিতে চায় তাহলে দেখা যাবে বিবাহ বিচ্ছেদের পরিবর্তে পুণরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সংসার জীবন স্বামী-স্ত্রী ছোট খাটো কারণে তালাকের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক এটা ইসলাম চায় না।

যেমন ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী প্রথম তালাক দেয়ার জন্য প্রথমেই তাদেরকে উভয় পক্ষের লোকজনের সমন্বয়ে মীমাংসার ব্যবস্থা করতে হবে, যদি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মীমাংসা না হয় তখন এক তালাকের ব্যাবস্থা হবে। প্রথম তালাক হওয়ার পর এক মাস অপেক্ষা করতে হয়। যদি এই একমাসের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয় তখন তারা পুণরায় বিবাহ করে সংসার করতে পারবে। দ্বিতীয় তালাক দেয়ার পর আবার এক মাস অপেক্ষা করবে। এই এক মাসে যদি স্বামী স্ত্রীর মাঝে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয় তাহলে তারা পুণরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার করতে পারবে। কিন্তু তৃতীয় মাসেও যদি স্বামী স্ত্রীর মাঝে সমঝোতা না হয় তখন তিন তালাক চূড়ান্ত হবে।

তিন তালাক হওয়ার পরে কেউ যদি তার স্ত্রীকে পুণরায় নিতে চায় তখন কিছু ইসলামের কঠিন নিয়ম পালন করতে হবে। তিন তালাকের পরে ইসলামে কঠিন নিয়ম করার কারণ হলো যাতে কেউ সহজেই স্ত্রীকে তিন তালাক না দেয়। কিছু কিছু লোক আছে যারা কথায় কথায় স্ত্রীকে সকাল বিকাল তিন তালাক দেয় আবার কিছুক্ষণ পরেই স্ত্রীকে ডেকে এনে ভাত রেঁধে খায়। তারা মহিলাদেরকে অবজ্ঞা অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে। এই সব বেয়াদেবরা যেন মহিলাদেরকে অবজ্ঞা অবহেলা করে কথায় কথায় তিন তালাক দিতে না পারে সেই কারণে তিন তালাকের পরে পুণরায় স্ত্রী গ্রহণ করতে কঠিন নিয়ম করা হয়েছে।

মোট কথা হলো তিন তালাকের পরে স্ত্রী গ্রহণে কঠিন নিয়ম করার কারণ হলো তালাককে অনুৎসাহিত করা।

(বিস্তরিত লিখতে গেলে অনেক লিখতে হবে, সময়ের অভাবে লেখা সম্ভব হলো না। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে পোষ্ট দেয়ার ইচ্ছা আছে।)

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ২:২৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। যতটুকু লিখেছেন, পাঠকের জন্য সেটুকুই মহামূল্যবান। অশেষ ধন্যবাদ। এটিই আসলে তালাকের ইসলামসম্মত বিধি। জ্বি, নিশ্চয় লিখবেন। পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম। ভাল থাকুন।

১৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩০

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:



দীর্ঘদিন ধরে চললেই পাপ পূণ্য হয়ে যায়না
কথাটি যেমন ঠিক তেমনি আলোচিত হতে হলেও যা খুশি তাই করাও জায়েজ....


সেলুকাস...

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩২

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জায়েজ নয়। সেই দাবী বার বার তুলছি। কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না।

২০| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন:

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন: কে কি খাবে বা খাবেনা, সেটি যার যার রুচির উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত।

২১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন:

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৩

আলপনা তালুকদার বলেছেন: মৃত মানুষকে এভাবে বহন করা অমানবিক।

২২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

আলপনা তালুকদার বলেছেন:

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২

আলপনা তালুকদার বলেছেন: যেকোন ধর্মের নিরপরাধ মানুষ হত্যাই পাপ।

২৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:১২

আলপনা তালুকদার বলেছেন:

আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালবাসেন না।

২৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:১৪

আলপনা তালুকদার বলেছেন:

সৌদি আরবে কঠোর শাস্তির বিধান আছে - এমনটা দাবী করা হয়। এই শেখের কি কোন শাস্তি হবে???

২৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: আলপনা তালুকদার ,




সত্য ভাষন ।

আসলে আমরা এক উন্মাদ প্রজাতি । ঠিক-বেঠিক, আইন- বে আইনের হিসেব কষিনে কখনও ।
এ্যায়সে চলো, য্যায়সে চলো , চলো...চলো... হে............ করেই চলছি !!!!!

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৪৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: খুবই সত্যি কথা। আমরা ধর্ম পালনে অনেকেই আগ্রহী। কিন্তু পাপ ঠেকাতে কেউই উদ্যোগী নই। কারণ কোন না কোন পাপের সাথে আমরা নিজেরাও জড়িত। আপনাকে ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.