নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের মন, ভাবনা, অনুভূতি ও ভালবাসা বৈচিত্র্যময় বলেই পৃথিবীটা এত সুন্দর!https://www.facebook.com/akterbanu.alpona

আলপনা তালুকদার

ড.আকতার বানু আলপনা,সহযোগী অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী

আলপনা তালুকদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

এ জগতে হায় সেই বেশী চায়....

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:৩২



এ জগতে হায় সেই বেশী চায়....

"প্রধানমন্ত্রী সচিবদের উপরে বিরক্ত" - এই খবরটি পড়ার পর থেকে ভাবছিলাম, সচিবরা এত সুবিধা পাবার পরেও কেন এত দাবী তুলছেন যে কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিরক্ত হচ্ছেন? সচিবরা নিশ্চয় মনে করছেন যে, তাঁরা যেসব সুবিধা পান, তা মোটেই যথেষ্ট নয়। মনে করতেই পারেন। সবার বিবেচনা তো সমান নয়। আগে দেখি সচিবরা নতুন কি কি সুবিধা পাচ্ছেন।

সচিবদেরকে নতুন যে সুবিধা দেয়া হচ্ছে তা হল, সচিব ও সচিব পদমর্যাদার চাকুরীজীবিরা বাবুর্চি ও প্রহরীদের বেতন বাবদ মাসিক বত্রিশ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। সেটা এই দুই পদের লোক রাখলেও পাবেন, না রাখলেও পাবেন। শোনা যাচ্ছে, এমন আইনও নাকি হতে যাচ্ছে যেখানে সরকারী চাকুরীজীবিদের বিরুদ্ধে কারো অভিযোগ যদি প্রমাণিত না হয় তাহলে অভিযোগকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অভিযুক্তকে।

এবার দেখি সচিবরা কি কি দাবী তুলেছেন।

১। সচিবরা চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরও নিজেদের প্রাধিকার সুবিধা চেয়েছেন। অর্থাৎ অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) থাকার সময় গাড়ি, বাড়ি, গৃহকর্মীসহ যেসব সুবিধা তাঁরা পান, পেনশন ভোগের সময়ও সেসব সুবিধা তাঁরা চাচ্ছেন।

২। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার বয়সসীমা বাড়ানো। (বাড়িয়ে ৬২ বছর করা)।

৩। নিজেদের স্বতন্ত্র অবস্থান প্রকাশের জন্য প্রতীক বরাদ্দ। এবং

৪। সিনিয়র সচিবের পদ বাড়াতেও প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন সচিবরা।

গত ২ জুলাই রবিবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত সচিবসভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সিনিয়র সচিবরা এসব অনুরোধ জানান।

আমি মনে করি, সচিবদের তোলা প্রতিটা দাবিই খুব যৌক্তিক। কারণ রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, আর আমলারা সেই জনগণেরর সেবক। সেবকরা নিজেরা সেবা না পেলে জনগণের সেবা তাঁরা করবেন কিভাবে? সৈন্যকে খালি হাতে যুদ্ধ করতে বললে কি সে পারবে? পারবেনা। তাকে বন্দুক দিতে হবে। তাছাড়া সারাজীবন ওনারা যেসব সুবিধা ভোগ করে এসেছেন, সেগুলো ছাড়া থাকা কি কষ্টকর নয়? মানুষ তো অভ্যাসের দাস। আর জিনিসপত্রের যা দাম! ছেলেমেয়েকে বিদেশে পড়ানো, গিন্নীর শপিং, বাজারখরচ.. এসবের খরচ তো কম নয়। বেতনের অল্প ক'টা টাকায় এতকিছু করা যায়না বলেই তাঁরা বাধ্য হয়ে ঘুষ খান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সারাবছর না পড়িয়ে বসে বসে বেতন খান। তাঁদেরকে ৬৫ বছর পর্যন্ত চাকরী করতে দিলে সচিবরা নয় কেন?

শুধু কি সচিবরা বাড়তি টাকা চান? স্কুল কলেজের শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা কামান, প্রশ্ন ফাঁস করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কনসাল্টেন্সি করেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান, ইভিনিং প্রোগ্রাম চালান, প্রশ্ন ফাঁস করেন। ডাক্তাররা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন, পেটে বাচ্চা রেখেই পেট সেলাই করেন, গরীব রোগী টাকা দিতে পারবেনা বলে তার ডেলিভারী করান না, রোগীর অপারেশন ফেলে সেল্ফি তোলেন। ইন্জিনিয়াররা ঘুষ খান, রডের বদলে বাঁশ দেন, উদ্বোধনের আগেই তাদের বানানো সেতু, স্কুল, রাস্তা ভেঙ্গে পড়ে। রাজনীতিবিদরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হন। পুলিশরা খুন, অপহরণ করেন, ঘুষ খান। ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে জিনিসপত্রের দাম বাড়ান, মজুত করেন, সিন্ডিকেট চালান। বাড়ীওয়ালারা, মেসমালিকরা চাঁদাবাজি করেন, অযথা ভাড়া বাড়ান,....। কে বাড়তি টাকা চাননা?

আমলারা জনগনের সেবক বলেই তাঁদেরকে প্রভুর মত সেবা করতে হবে। নাহলেই ঝামেলা! যেমন পাবনার জেলা প্রসাশককে তার বাংলোতে গিয়ে চিকিৎসা না দেওয়ায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মঞ্জুরা রহমানকে ওএসডি করা হয়েছে।

যারা সচিবদের এই বাড়তি আবদারকে ন্যায্য মনে করেননা বা দিতে চাননা, তারা মনে করেন, সচিবদেরকে বেশী সুবিধা দিলে তাঁরা আস্কারা পেয়ে যাবেন। আস্কারা জিনিসটা মোটেই ভাল কিছু না। নিন্দুকেরা বলে, আস্কারা দিলে লোকে মাথায় উঠবে। ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি মহোদয়ের অফিসকক্ষে ভিসি মহোদয়ের উপস্থিতিতে একজন জুনিয়র শিক্ষিকা ভিসি মহোদয়ের চেয়ারের হাতলে বসে থাকবেন।

এ প্রসঙ্গে একটি গল্প প্রচলিত আছে। এক রাজার খুব প্রিয় একটি পোষা বানর ছিল। রাজা রোজ বানরটিকে রাজসভায় এনে একটি বেতের বারি মেরে বানরটিকে রাজার সিংহাসনের একপাশে বসিয়ে রাখতেন। বিচার শেষে রাজা অন্দরমহলে যাবার সময় বানরটাকে নিয়ে যেতেন। একদিন মন্ত্রী রাজাকে প্রশ্ন করলেন, "বানরটাকে আপনি এত ভালবাসেন। তবু রোজ তাকে মারেন কেন?" রাজা বললেন, "বেশ। আজ থেকে মারবনা। তাহলেই তুমি বুঝতে পারবে কেন মারি?" এরপর রাজা রোজ বানরটাকে রাজসভায় এনে না মেরে বসিয়ে রাখেন। প্রথমদিন বানর তার জায়গা ছেড়ে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ালো। রাজা কিছুই বললেন না। পরের দিন এক মন্ত্রীর গলার হার ছিঁড়ে দিল। রাজা কিছুই বললেন না। এভাবে সপ্তম দিনে বানর যখন রাজার মাথায় চড়ে বসলো, তখন মন্ত্রী বলল, "বুঝেছি মহারাজ। আপনি বানরকে মারুন।"

আমি কিন্তু সচিবদেরকে মোটেই মারতে বলছিনা। কারণ সবার মত আমার ঘাড়েও একটাই মাথা!!!! বড়ি নাইনসাফি!!!!!!!

ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:৫৩

কাটপিস বলেছেন: আমি কিন্তু সচিবদেরকে মোটেই মারতে বলছিনা। কারণ সবার মত আমার ঘাড়েও একটাই মাথা!

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:১৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: হা হা হা!! ধন্যবাদ।

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:৪২

দপ্তরবিহীন মন্ত্রী বলেছেন: এতদিন লুট করতো রাজনীতিবিদরা, এখন সচিবরাও করা শুরু করেছে।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:০৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: জোর যার....। ধন্যবাদ।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:৪৬

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: প্রসঙ্গিত গল্পটির কথা ভাবছি।।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:০৮

আলপনা তালুকদার বলেছেন: হা হা হা! কেন, গল্পটা আগে শোনেননি? ধন্যবাদ।

৪| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:২৭

মলাসইলমুইনা বলেছেন: একটা জাতির প্রশাসন পুরোপুরি করাপ্ট হয়ে পড়লে এমন অনৈতিক দাবি তোলা খুব সহজ হয়ে যায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে | আমার কেন জানি একটা আশংকা হয় যে সরকার এর অনেক কিছু মেনেও নেবে !!

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৭:১১

আলপনা তালুকদার বলেছেন: নিশ্চয়। ধন্যবাদ।

৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৩:৪৭

আশরাফুল এষ বলেছেন: উদাহরন গুলো যৌক্তিক .।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৭:২৬

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৪:১০

অ্যালেন সাইফুল বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৭:২৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:০৪

ভাললাগে না বলেছেন: Sarcasm. সেই রকম লিখেছেন

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:১৯

আলপনা তালুকদার বলেছেন: হা হা হা! অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

৮| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:১২

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ‘এ জগতে হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভুরি ভুরি রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।’ এখন এই কাঙালেরা সবই চুরি করবে!!





ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:২০

আলপনা তালুকদার বলেছেন: আগে কি করতো না? যাইহোক, ধন্যবাদ।

৯| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১১:১৫

আল ইফরান বলেছেন: আপা, দেশ তো চালাচ্ছে পুলিশ আর প্রশাসনের লোকজনেরা।
এই দেশের উপর সকল অধিকার তো তাদেরই থাকা উচিত, তাই নয় কি?
আপনি, আমি, আমরা- আমাদের অধিকার কেবল পাচ বছরে একবার, সেইটাও মাঝে মধ্যে পাওয়া যায় না।
ভাগ্য ভালো যে তারা সেনাবাহিনীর মত দুই-চারটা বিশ্ববিদ্যালয় চেয়ে বসে নাই (পুলিশ অবশ্য এরমধ্যেই দাবি পাশ করানোর ব্যবস্থায় আছে)।
ভালো থাকবেন।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ঠিক। অতি সত্য কথা। ধন্যবাদ। আপনিও ভাল থাকুন।

১০| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:০৮

প্রামানিক বলেছেন: বোনরে বেশি বলার দরকার নাই, শেষে আপনার ঘাড়ের রগ নিয়ে টানাটানি শুরু হবে।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:১২

আলপনা তালুকদার বলেছেন: সম্ভাবনা সমুজ্জ্বল। ধন্যবাদ। আপনি ভাল আছেন তো?

১১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:২৫

রাখালছেলে বলেছেন: তাদের মরার পর বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে ভিআইপি মর্যাদায় কবরসস্থ করার দাবি যানাচ্ছি । কারন সারাজীবন জনগনের সেবাই করে গেলেন । নিজের জন্য কিছুই করলেন না ।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:৫৭

আলপনা তালুকদার বলেছেন: Not a bad idea at all. Thanks. Take care.

১২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:১৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আমি কিন্তু সচিবদেরকে মোটেই মারতে বলছিনা। কারণ সবার মত আমার ঘাড়েও একটাই মাথা!!!! বড়ি নাইনসাফি!!!!!!!


সচিবদের মারার কথা আসছে কেনো??? রাষ্ট্রযন্ত্রের তারা হলেন চালিকা শক্তি।

আমালতান্ত্রিক মারপ্যাচে শহীদ হওয়ার শখ হয়েছে নাকি? ;)
আপনার উপলব্ধির সাহসিক প্রকাশ! সাহসটা ভালো লেগেছে। বাকীটাতে কবি নিরব!!!!

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৩৮

আলপনা তালুকদার বলেছেন: হা হা হা! ভাল বলেছেন। আপনার মাথা খারাপ? তাই কি বলতে পারি? দোষত্রুটি কার নেই বলুন? নিজে শিক্ষক হয়েও কি আমি শিক্ষকদের দোষ ধরার দুঃসাহস দেখাইনি? কথায় বলে,অতি সাহস ভাল না!!! আমার কপালে প্রচুর দুঃখ আছে!!!! ধন্যবাদ।

১৩| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৬

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন: আমাদের দেশের সচিবরা তথা আমলারা একটা স্বাধীন দেশের কর্মচারী হিসাবে সম্পূর্ণভাবে অযোগ্য।
কারণ ১। এই আমলারা ব্রিটিশদের তৈরি আমলাতন্ত্রের ধারাবাহিক অংশ।
কারণ ২। দখলদার ব্রিটিশরা ইন্ডিয়াতে এই আমলাতন্ত্র সৃষ্টি করেছিল, পরাধীন ইন্ডিয়াকে শাসন করার জন্য।
কারণ ৩। এই আমলারা একটা স্বাধীন দেশকে পরাধীন দেশের মত শাসন করছে।
কারণ ৪। এই আমলারা যে প্রশিক্ষণ লোভ করে, তাতে তাদের শিখানো হয়, তারা সাধারণ মানুষের চাইতে বুদ্ধিতে, শিক্ষায়, সব দিক থেকে শ্রেষ্ঠ।
কারণ ৫। এই প্রশিক্ষণের কারণে একজন আমলা নিজেকে জনগণের কর্মচারী মনে না করে, নিজেকে জনগণের মালিক মনে করে।

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৮:১৫

আলপনা তালুকদার বলেছেন: ঠিক। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.