নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানার অদম্য ইচ্ছেসহ আগামীর পথে

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান

আমি প্রতিসাম্য তৈরি করতে ভালবাসি

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর সহিত আমার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকঃ

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২২


- কি অবস্থা? চলছে কেমন দিনকাল??
-- চলছি কেমন বোঝনা? আমার আহ্নিক আর বার্ষিক গতি কত তা জান?? অবশ্য ক্ষুদ্রাকৃতি মানবসম্প্রদায় এর পুঁচকে এক সদস্য তুমি। এসব বড় ঘটনা কিভাবে জানবে!!!
আমি বললাম না যে, আমি জানি। ভাবলাম বিসমিল্লায় গলদ করাটা ঠিক হবে না। কথার পিঠে সব সময় কথা না বলা সাহসী না হলেও জ্ঞানীর লক্ষন।
তাই নিজের দোষ স্বীকার করে বললাম,
- আমরা মানুষেরা কথা বলার সময় এভাবেই কুশল জিজ্ঞাসা করি অন্যের।
-- আমাকে কি তোমার মানুষ বলে মনে হচ্ছে??
- না, ইয়ে মানে.............
আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল এইসব মহাজাগতিক সৃস্টিদের সাথে কথা বলার সময় ভেবে চিন্তে কথা বলা শ্রেয়। পুর্বের অভিজ্ঞতা (সুর্য এবং চন্দ্র সাক্ষাতকার দ্রস্টব্য) থেকে শিক্ষা নেওয়া দরকার ছিল।
- আমি দুঃখিত জনাব।
-- (গম্ভীর চালে) হুমম, apology accepted। তা, তোমার আগমনের অভিপ্রায় কি??
- কিছু কথা ছিল আপনার সাথে (বিনয় বিগলিত সুরে)।
-- You may proceed.
- জনাব, বাল্যকাল থেকেই একটা প্রশ্ন আমার মাথার মধ্যে সুপারসনিক গতিতে ঘোরাফেরা করে। তা হল আপনার আকৃতিটা কিরকম। অবশ্য পৃথিবির বিজ্ঞানীরা বলেন, আপনি নাকি কমলা আকৃতির।
-- কি বললে (যারপরনাই অবাক হয়ে)? কমলা!!!!! সাধেই কি আর মানবসম্প্রদায় কে অজ্ঞ বলি আমি? আমি মোটেই কমলার মত না।
- তাহলে কি রকম?
-- তা বলতে আমি বাধ্য নই। এটা আমার সিক্রেট। বিখ্যাতদের কিছু সিক্রেট থাকে। next.......
- আপনি কি অন্যকোন গ্রহকে আপনার সমকক্ষ মনে করেন??
-- অবশ্যই না। আমিই সর্বসেরা। গ্রহের রাজা।
- বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এই কথা শুনলে মাইন্ড করতে পারে। আকারে কি বিশাল তারা!!!
-- চকচক করলে যেমন সোনা হয় না, তেমনি বড় হলেই রাজা হওয়া যায় না। তোমাদের ভিতর একটা কথা আছে না, লম্বা লোকদের বুদ্ধি থাকে হাটুতে তেমনি আমাদের কথা হল "বড় গ্রহদের বুদ্ধি থাকে বায়ুমণ্ডলে"। পুরাই বায়বীয় বুদ্ধি। আর আমার বুদ্ধি আছে আমার কোরে। লিকুইড আকারে লাভা হয়ে। কিন্তু যখনই বুদ্ধিটা বের হয় অমনি শক্ত হয়ে পাথর হয়ে যায়। কঠিন বুদ্ধি।
- তা, আপনার নিজেকে রাজা ভাবার পিছনের কারনটা কি একটু খুলে বলবেন??
-- অনেক ফ্যাক্টর আছে। আমি সৌরজগৎ এর গোল্ডিলকস অঞ্চলে অবস্থান করছি, প্রানধারনের উপযোগী পরিবেশ আছে আমার। একমাত্র আমারই নিজস্ব চৌম্বকক্ষেত্র আছে। বায়ুমণ্ডল অনেক সুগঠিত আমার। তুমি যে আমার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছ, আমার এইসব গুন না থাকলে তুমি কোথা হতে আসতে, বালক? একটু আগে যে সব ধেড়ে নক্ষত্রের কথা বললে তাদের আছে এসব গুন? খুঁজে দেখ। আশেপাশের গ্যালাক্সি গুলোর মাঝে খুঁজলেও পাবে না।
একদম খাটি কথা। আমি his highness এর সাথে এ ব্যাপারে আর কথা বাড়ালাম না। মেরুপ্রভা (অরোরা) র কথা মনে পড়ল। এমন স্বর্গীয় সৌন্দর্য তো পৃথিবির একারই গুন।
- চাঁদের সাথে আপনার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কেমন?
-- ভালই। একটা আস্থার সম্পর্ক গড়ে তুলেছি আমরা। ও বেশ সুন্দর আলো দেয় আমাকে। আমি ওকে ধরে রাখি আমার মহাকর্ষের আওতায়। অবশ্য আমার নদী আর সাগরের উপর ওর একপ্রকার টান আছে। আমি সেটা মেনে নিয়েছি সম্পর্কের খাতিরে।
- শশী সাহেব তার জোস্না নিয়ে বেশ গর্ব করছিলেন আমার কাছে কিছুদিন আগে।
-- হ্যা, সেটা বটে। তবে তোমাকে একটা কথা বলে রাখি, পৃথিবিতে চাঁদের জোস্নার তুলনায় চাঁদে পৃথিবির জোস্না বেশি সুন্দর। আমার নীল দেহের জন্য। প্রমানিত। তোমাদের এপোলো অভিযাত্রীরাই বলেছে। আমি অবশ্য চাঁদকে এব্যাপারে কিছু বলিনা। ছোট উপগ্রহ। কষ্ট পেতে পারে শুনে। তুমি কিছু বল না আবার। অবশ্য মানবসম্প্রদায়কে দিয়ে আমার বিশ্বাস নেই।
- আচ্ছা জনাব, প্রথম থেকেই একটা জিনিস লক্ষ্য করছি। আপনি মানবসম্প্রদায় এর উপর খুব একটা সন্তুষ্ট না। এর পিছনে কি সুনির্দিষ্ট কোন কারন আছে? আমরা আপনাকে নিয়ে কত গর্ব করি, আর আপনি আমাদের ভাল চোখে দেখেন না (অভিমানী স্বরে)।
-- মানবসম্প্রদায় অত খারাপ না। অধিকাংশই ভাল। যদিও বিভিন্ন কাজ করে আমার পরিবেশ আর বায়ুমণ্ডল এর বারোটা বাজিয়েছে তারপরেও কিছু বলিনি। কিন্তু কতিপয় কিছু উম্মাদ লোক আমার সম্মান নিয়ে টানাটানি শুরু করেছে। প্রথমে রাশিয়া কি এক স্পুটনিক না ফটফটনিক,
কি এক গোলাকার বস্তু নিক্ষেপ করল বাইরে, তারপরই পাল্লা লেগে গেল। আমেরিকা সহ আরো অনেকে শুরু করে দিল। ইউরি গ্যাগারিন আসল, আলান শেপার্ড আসল, এমিনকি মেয়ে ভ্যালেন্টিনা তেরেসকোভা এসে ঘুরে গেল। সে সল্প সময়ের জন্য, মেনে নেয়া যায়। আর এখন??? শত শত স্যাটেলাইট আমার দিকে ২৪ ঘন্টাই ঢ্যাবঢ্যাব করে তাকিয়ে থাকে। এমনকি মানুষরাও স্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করে দিয়েছে মহাকাশ স্টেশনে। প্রাইভেসি বলে কিছু থাকল!!!! চাঁদও এদের দেখতে পারে না। তার একমাত্র উপগ্রহের মর্যাদা ছিনিয়ে নিয়েছে এরা।
- খুব বেশি কি সমস্যা (আমি বোকার মত প্রশ্ন করি)??
-- বেশি না মানে!!!!! ভাব তো, তোমার বেডরুমে কিংবা বাথরুমে কেউ একজন সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে রাখল। ব্যাপারটা কেমন লাগবে তোমার??
একটু ভাবতেই লজ্জা পেলাম। ফুলশয্যা আর প্রকৃতির ডাকের কথা মনে পড়ল। আমাকে মাথা নিচু করে থাকতে দেখে তিনি বলতে লাগলেন,
-- তোমাদের বেশি ভালবাসি বলেই আমার মাঝে বাস করতে দিচ্ছি। তোমরা আছ বলেই আমি অনন্য। তবে তোমরা প্রতিদানে যা দাও, তাতে তোমাদের মুক্তিবেগে আমার ভিতর থেকে ছুড়ে ফেলা উচিত।
আমার লজ্জায় নত মাথা আর সোজা হল না। পৃথিবির বলা কঠিন বাস্তব কথা আমার মাথা আরো নিচু করে দিল। মিনমিন করে বিদায় নিয়ে চলে এলাম।

- জুলিয়ান কতৃক গৃহীত পৃথিবীর সাক্ষাতকার

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৬

♥কবি♥ বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৯

নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন: বাবা
কি অপূর্ব
বিশাল
ব্যপার স্যাপার
অনেক ভাল লাগল
শুভ কামনা
রইল

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৪

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩১

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: +++++++++++++

চমৎকার লেখা ।

শুভেচ্ছা রইল :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.