নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানার অদম্য ইচ্ছেসহ আগামীর পথে

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান

আমি প্রতিসাম্য তৈরি করতে ভালবাসি

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

থ্রিলার বড় গল্পঃ হ্যালুসিনেক্সিন (৩)

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০৮

প্রথম পোষ্টের লিংকঃ Click This Link

দ্বিতীয় পোষ্টের লিংকঃ Click This Link


হাটতে শুরু করা মাত্র একটা ঘটনা ঘটল। শৈবালের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা এক লোকের মৃদু ধাক্কা লাগলো। লোকটা অন্যমনস্কভাবে দ্রুত হাটছিল। একবার sorry বলে অয়নদের বিপরীতদিকের বিল্ডিংটার গেট দিয়ে ঢুকে পড়ল। চেহারা আর চামড়ার রংই বলে দিচ্ছে লোকটা বিদেশি। পাশ্চাত্য কোন দেশের। শৈবাল আর সীমান্তকে ওদিকে তাকাতে দেখে গেটের দারোয়ানটা উতসাহী হয়ে বলল যে, বিদেশি লোকটা ওই বিল্ডিংয়েই থাকে। দুজনে আবার হাটতে শুরু করল।

বাসায় ফিরে সারাদিন শৈবালের মৌনব্রত অক্ষুণ্ণ থাকল। লাইব্রেরী আর ল্যাবটাতেই কাটালো বেশিরভাগ সময়। সীমান্ত বই নিয়ে কাটালো সারাদিন। সন্ধ্যায় হঠাতই একটা ট্রাভেল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে সীমান্তের সামনে দাঁড়াল শৈবাল। তাকে এই অবস্থায় দেখে ভুত দেখার মতই চমকে উঠল সীমান্ত।
"আরে!" , বলল সে অবাক হয়ে, "ব্যাগ নিয়ে কোথায় চললে আবার?"
"এরই নাম গোয়েন্দাগিরি।", হাসল শৈবাল। "দোয়া কোরো, চট্টগ্রাম যাচ্ছি। একবার না গেলেই নয়।"
"সবই জানবে বন্ধু।একটু ধৈর্য ধরো। টিকিট বুকিং করা আছে। এখনই রওয়ানা দিতে হবে।", বলে আর দাঁড়ালো না শৈবাল।

দরজা এটে আবার রুমে ফিরে আসল সীমান্ত। এই হল শৈবাল!! বলা নেই, কওয়া নেই, হুট করে একেবারে সোজা চট্টগ্রাম। পরের তিনটা দিন খুব অস্থিরতার সাথেই কাটল সীমান্তের। ক্লাশে খুব একটা মন বসল না তার। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কোন কেসের সময় ফোন দেওয়া বারন। তাই ফোনও দেয়া যাচ্ছে না। আবার শৈবালও বেশি একটা ফোন করছে না। তিনদিনে মাত্র চারবার ফোন করল। শুধু বলল সবকিছু ঠিকঠাক মতই এগুচ্ছে। সীমান্ত ধারনা করল, অয়নের আব্বু কিসের সাথে নিজেকে জড়িয়েছিলেন সেই রহস্যের পিছেই দৌড়াচ্ছে শৈবাল। ওটা বের করা গেলেই পরেরটা আপনাআপনিই বেরিয়ে আসবে।

চতুর্থদিন ফোনে শৈবাল জানাল ফিরে আসছে সে। ক্লাশ শেষ করে সোজা শৈবালের ফ্ল্যাটের দিকে চলল সীমান্ত। নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখল শৈবাল ঘুমাচ্ছে। কোন শব্দ না করে কাপড়চোপড় ছেড়ে বাথরুমে ঢুকল সীমান্ত। গোসল সেরে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখল শৈবাল উঠে পড়েছে। বেসিনে মুখ ধুচ্ছে।
"এই কয়দিনে বোধহয় ঘুমের খুব ব্যাঘাত ঘটেছে বন্ধুবরের", হালকা গলায় বলল সীমান্ত।
শৈবাল তার উত্তরে কিছু না বলে অনেকটা আনমনেই বলল , "একটা বিশাল গাছের শিকড়তো মাটির অনেক গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত, তাই না সীমান্ত?"
"হ্যা", বন্ধুর খাপছাড়া প্রশ্ন শুনে অবাক। "তা না হলে গাছটা দাড়িয়ে থাকতে পারবে না।"
"তা হলে গাছটাকে উপড়ানোর উপায় কি?"
"শাখা শিকড়গুলো কেটেছেটে তারপর মুল শিকড়টা কেটে ফেলা।"
"ঠিক তাই", তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বললো শৈবাল। তাকে অনেক উতফুল্ল লাগছে।

লাইব্রেরীতে ঢুকে খুব আয়েশ করে বসল শৈবাল। সীমান্তও বসল তার সামনাসামনি। বন্ধুর হাবভাবে বেশ অবাক লাগছে। যেন মাথায় কোন চিন্তাই নেই। ওদিকে তার মাথায় হাজারটা প্রশ্ন সুপারসনিক গতিতে এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করছে। অয়নের আব্বুর মৃত্যুরহস্যের কতটুকু কি কিনারা হল কে জানে। শেষে আর থাকতে না পেরে বলল, "ওরকম বোবার মত বসে আছ কেন? কিছু বল কি করে এলে?"
"ধীরে, বন্ধু, ধীরে। আমি অপেক্ষা করছি আর মাত্র একটা কারনের জন্য। তুমিও আমার সঙ্গী হও।"
"এহ !! দিলে তো মাথাটা গুলিয়ে। কিসের অপেক্ষা?"
"আচ্ছা, ছাড়বেই না যখন, বলি শোন। আমি অয়নকে একটা ক্লু দিয়েছি কয়েক ঘন্টা আগে। ও এখন সেটার পিছনে ছুটছে। ওর ছোটা শেষ হবার জন্য অপেক্ষা করছি। উত্তর পেয়েছো। সুতরাং আর প্রশ্ন নয়।" চোখ বুজল শৈবাল।

সীমান্ত বুঝল শৈবাল হাসি চেপে রেখেছে। আসলে তাকে চিন্তায় রেখে খুব মজা পায় সে। কিছু না বলে মুখটাকে প্যাঁচার মত করে বসে রইল সীমান্ত। আড়চোখে দেখল মিটিমিটি হাসছে গোয়েন্দাপ্রবর চোখ বন্ধ করে। অন্যদিকে মুখ ফেরাল সে। টেবিল থেকে একটা বই টেনে নিয়ে চোখ রাখল বইয়ের পাতায়।

অবশেষে ত্রিশ মিনিট পর একটা কল এল শৈবালের সেলফোনে। রিসিভ করে ওপ্রান্তের কথা শুনল কিছুসময়। তারপর সোল্লাসে মৃদু চিতকার করে উঠল। "এক্ষুনি আসছি", বলে ফোন রেখে দিল। প্রায় সাথেসাথেই আরেকটা কল এল। মনে হল কলার আইডি দেখে শৈবাল খানিকটা অবাক হয়েছে। এটাও রিসিভ করে অপর প্রান্তের কথা শুনল মন দিয়ে। তারপর বলল, "ভাল করে নজর রেখো। প্রয়োজনে ৩ নম্বর এর সাহায্য চাইতে পারো। তোমার আশেপাশেই আছে। আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমি আসছি।"

সীমান্তও দাঁড়িয়ে পড়েছে। তারদিকে ফিরে শৈবাল বলল, "একশন শুরু হল। দেখি শেষটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।"
একটা শেলফের কাছে চলে গেল শৈবাল। হাটু গেড়ে বসে পড়ল। তারপর নিচের তাকের বইগুলো নামিয়ে রেখে জোরে একটা ধাক্কা দিল কাঠের দেয়ালে। আস্তে করে একটা কাঠের প্যানেল সরে গেল। বেরিয়ে পড়ল একটা গহ্বর। তার ভিতর থেকে মিলিটারি ড্রেসের মত ছোপ ছোপ রংয়ের একটা ধাতব বাক্স বের করলো। তারপর সবকিছু আগের মত করে রেখে বাক্সের আংটা ধরে উঠে দাঁড়াল।

"এটা আবার কি?", সীমান্ত অবাক হয়ে গেছে। গোপন কুঠুরিটার কথা জানলেও বাক্সটার কথা জানত না।
"সবই দেখতে পাবে সময়মত।", বলল শৈবাল। "শুধু জেনে রাখো, খুব সেনসিটিভ একটা যন্ত্র আছে এটার ভিতরে।"

নিচে নেমে শৈবালের ঝা চকচকে নেভি ব্লু রংয়ের বিএমডব্লিউ তে চেপে বসল দুজনে। চলল অয়নদের বাসার উদ্দেশ্যে। স্টিয়ারিং এ সীমান্ত। পথে শৈবাল একটার পর একটা ফোন করল। কথা হল কোড ল্যাংগুয়েজে। সীমান্ত বুঝতে পারল কয়েকটা দলকে গ্রীন সিগন্যাল দিয়ে রাখল শৈবাল। এসব ঘটনার মধ্যে হঠাত করে নিজেকে খুব ক্ষুদ্র মনে হতে লাগল সীমান্তের। তারপর মাথা ঝাঁকিয়ে চিন্তাটাকে ঝেড়ে ফেলে গাড়ি চালনায় মন দিল সে। উত্তরায় পৌঁছে গাড়িটাকে অয়নদের বাসা থেকে দুরে একটা রেস্টুরেন্ট এর পার্কিংলটে রাখল সীমান্ত। বাকিটা পথ দুজনে হেটে চলল। সীমান্তের হাতে বাক্সটা। শৈবাল একটা ক্যাপ পরে মুখটাকে একটু আড়াল করে নিয়ে নিচের দিকে চেয়ে হাটছে।

অয়নদের বাসায় ঢোকার গলির মুখে বসা এক মুচির সামনে পৌছে জুতাটা এগিয়ে দিল শৈবাল। মুচিও কোন প্রশ্ন না করে জুতা মুছতে শুরু করল। তার মুখও চলছে, "পাখি ঢুকেছে। দল প্রস্তুত তীর-ধনুক নিয়ে।

শৈবাল তার দিকে না তাকিয়ে বলল, "ভাল।" তারপর হাতে কিছু টাকা দিয়ে আবার অয়নদের বাসার দিকে হাটতে লাগল। সীমান্ত বুঝল লোকটা শৈবালের ইনফর্মার। আশেপাশে আরো কয়েকজন আছে তাও বুঝতে পেরেছে।
অয়ন ওদের অপেক্ষায়ই ছিল। ভিতরে নিয়ে বসালো।
"আপনার কথামত আম্মুকে আমার ফুফুর বাসায় রেখে এসেছি।", শৈবালকে বলল সে। "আর আপনি যে ক্লু দিয়েছিলেন, তা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছি। আব্বুর নামে একটা বেসরকারি ব্যাংকে সত্যি একটা লকার রাখা আছে। খোঁজ নিতে ওরা আমাকে কনফার্ম করেছে। আব্বুর অবর্তমানে ওটার ভিতরের জিনিসগুলো এখন আমার। এরকম ব্যাবস্থা করা ছিল। জিজ্ঞাসা করতে ওদের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলল যে, শেষবার আব্বু নাকি একটা কালো ব্রিফকেস নিয়ে গিয়েছিল ওখানে।"

এটুকু বলে উত্তেজিতভাবে নিঃশ্বাস নিতে লাগল অয়ন। তারপর আবার বলল, "আমি আম্মুকে লকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে বলল যে, আব্বু নাকি তাকে সেটার চাবি দিয়েছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করার আগ পর্যন্ত বেমালুম ভুলে ছিল আম্মু।"

পকেট থেকে একটা চাবি বের করলো অয়ন। "আম্মু দিল এটা।"
"অসাধারন", বলল শৈবাল। "শেষ সুত্রটাও বোধহয় হাতে এসে গেল। আপাতত ওটা থাক। ও ব্যাপারে কাল দেখা যাবে।"
"এখন কি করবেন ভাইয়া?", প্রশ্ন করল অয়ন।

শৈবাল উঠে দাঁড়াল। "কাজ শুরু করব", বলে বাক্সটা হাতে করে ড্রয়িংরুম থেকে বের হয়ে অয়নের আব্বুর সেই রুমের দিকে চলল। অন্য দুজন তাকে অনুসরণ করল। ভিতরে ঢুকে মেঝেতে বসে পড়ল শৈবাল। একটা কম্বিনেশন লক দিয়ে বাক্সটা আটকানো। শৈবাল বাক্সটা খুলে ফেলল। সীমান্ত দেখল বিদঘুটে আকৃতির কিছু বস্তু দেখা যাচ্ছে ভিতরে। একটা কন্ট্রোল প্যানেল, তার উপর অনেক নব দেখা যাচ্ছে। ছোটখাটো একটা ডিশ এন্টেনার মত জিনিস সেটার পাশে, তাতে প্রচুর তার জড়ানো। একটা লেড মনিটর, তার সাথে একটা ক্যামেরা আর দেখতে অনেকটা মাথায় এন্টেনাওয়ালা তেলাপোকা আকৃতির চারটা ধাতব বস্তু। শৈবাল প্রথমে ধাতব তেলাপোকাগুলো তুলে নিয়ে বেশ খানিকটা হিসেব করে রুমের চার জায়গায় বসালো। তারপর ডিশ এন্টেনার মত জিনিসটা বাক্স থেকে সাবধানে বের করে মেঝেতে রাখল। কিছু কাগজপত্র তারপাশে রাখল, যেন আড়াল করতে চাইছে সেটা। সেটার সাথে জড়ানো তার ছাড়িয়ে নিল। তারের মাথার প্লাগটা কন্ট্রোল প্যানেলে ঢুকালো। দরজার পাশে ক্যামেরাটা ফিট করে তার সাথে সংযোগ দিল মনিটরের। সেটা চালু করতে একটা সবুজাভ আভা ফুটে উঠল মনিটরে। প্যানেলের জয়স্টিকটা এদিক ওদিক ঘোরাতে ডিশ এন্টেনাটাও এদিক ওদিক ঘুরতে লাগল। সন্তুষ্ট হয়ে উঠে দাঁড়াল শৈবাল। তারপর অভিভূত সীমান্ত আর অয়নকে বেরুতে বলে নিজেও সাবধানে বাক্সটা নিয়ে বেরিয়ে আসল। এন্টেনার সাথে লাগানো তারটা টানটান হয়ে উঠল। তাই দরজার সামনেই বাক্সটা নামিয়ে রাখল শৈবাল। তারপর আবার ভিতরে ঢুকে সেক্রেটারিয়েট টেবিলের ড্রয়ারগুলো খুলে রাখল, শোকেসের কাচটা টেনে একপাশে সরালো, আরও কিছু টুকিটাকি কাজ সেরে দরজা আটকে দিল সাবধানে, যাতে দরজার নিচ দিয়ে যাওয়া তারে চাপ না লাগে। দরজার ওপাশে রুমের ভিতর রইল এন্টেনার মত জিনিসটা সহ চারটা ধাতব তেলাপোকা আর ক্যামেরা। বাইরে থাকল মনিটর সহ কন্ট্রোল প্যানেলটা।

"এসব কি শৈবাল?", এতক্ষনে মুখ খুলল সীমান্ত। শৈবালের মনযোগ বিচ্যুতি ঘটবে বলে এতক্ষন কোন প্রশ্ন করেনি।
"একটা ফাদ পাতলাম", হাসল শৈবাল। "হাইটেক ফাদ।"
তারপর অয়নের দিকে তাকিয়ে বলল, "তোমরা থাক। আমি একটু বাইরে থেকে আসি।"

নব ঘুরিয়ে যন্ত্রটা বন্ধ করে বাক্সটা আটকে বেরিয়ে গেল শৈবাল। অয়নের রুমে গিয়ে বসল দুজনে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে বেশ আগে। বলার মত কোন কথা না পেয়ে আপনমনে বসে রইল দুজনে। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ফিরে আসল শৈবাল। হাতে একটা ওয়ারলেস শোভা পাচ্ছে তার। অন্য হাতে নামীদামী একটা হোটেলের নামাঙ্কিত প্যাকেট।

খাওয়া শেষে সে বলল, "ঘরের সব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দাও। টিভি, রেফ্রিজারেটর, এসি, কম্পিউটার, ওভেন সবকিছুর প্লাগ খুলে রাখো।"

কোন দ্বিরুক্তি না করে তার কথামত কাজ করল সীমান্ত আর অয়ন। সবকিছু বন্ধ করে ঘর অন্ধকার বানিয়ে ফিরে আসল শৈবালের কাছে। সে ততক্ষনে বাক্স খুলে মনিটর সামনে নিয়ে আয়েশ করে বসেছে অয়নের আব্বুর সেই রহস্যময় রুমের বদ্ধ দরজার সামনে। সবুজ আভায় জায়গাটা আলোকিত। শৈবালের দুইপাশে বসে পড়ল দুইজন। একটা তোশক এনে বসার ব্যবস্থা করেছে শৈবাল। মনিটরে তাকিয়ে সীমান্ত দেখল ঘরের ভিতরকার বেশিরভাগ অংশই কাভার করছে ক্যামেরাটা। টেবিল, শোকেস, ম্যাট্রেস, বইয়ের শেলফ, ওপ্রান্তের থাইগ্লাসের দরজা সব দেখা যাচ্ছে সবুজ আভার ভিতর দিয়ে। রংটাই বলে দিচ্ছে ওটা একটা নাইট ভিশন ক্যামেরা। একটানা মনিটরে চেয়ে থাকলে সবুজ আলোয় চোখে ধাধা লেগে যায়।

"এবার শুরু হল ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার পালা", বলল শৈবাল। ''দেখা যাক কি ঘটে।"

অপেক্ষার সময়টা ধীরে চলে বোধহয়। তিনজন বসে রয়েছে দেড় ঘন্টাও হয়নি আথচ মনে হচ্ছে দেড় যুগ পার হয়ে গেছে। অয়ন ইতোমধ্যে পা লম্বা করে শুয়ে পড়েছে। সীমান্তেরও একই অবস্থা। শুধু শৈবাল ধৈর্যের প্রতিমুর্তি হয়ে বসে আছে। অবশেষে ঘড়ির কাটা যখন এক সংখ্যাটা ছুঁই ছুঁই করছে তখন শৈবালের ধাক্কায় ধড়মড় করে উঠে বসল সীমান্ত। মনিটরে ছোট একটা নড়াচড়ার আভাস দেখা যাচ্ছে। শৈবাল কন্ট্রোল প্যানেলে আঙ্গুল চালালে ছবিটা আরেকটু পরিষ্কার হল। কিন্তু কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। ওয়ারলেসটা হঠাত জীবন্ত হয়ে উঠল। শৈবাল কোডে কিছু বলল ওপ্রান্তের লোকটাকে, চোখ মনিটরে। সবুজ মুখটাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে উত্তেজনা চেপে রেখেছে। সীমান্ত আর অয়ন বুঝতে পারল খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু একটা ঘটছে তাদের আশেপাশে। স্নায়ুর উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। রক্তে এড্রেনালিন এর প্রবাহ বেড়ে গেছে হঠাত করে।

অবশেষে কয়েকটা স্নায়ুবিধ্বংসী সেকেন্ড পার হবার পর কন্ট্রোল প্যানেল থেকে তীক্ষ্ণ বিপ বিপ শব্দ ভেসে আসল। একটা লাল আলো জ্বলছে নিভছে। শৈবাল ততক্ষনাত একটা লাল রংয়ের বাটন টিপে দিল।

প্রথম পরিবর্তটা এল মনিটরে। কয়েকবার কেঁপে উঠে কালো হয়ে গেল সেটা। তারপরে খুব ক্ষীন একটা শব্দ ভেসে এল পাশের ঘর থেকে। সঙ্গে সঙ্গে শৈবাল ওয়ারলেস মুখের কাছে এনে বলল, "মুভ। কুইক। লোকটা কিন্তু সেয়ানা। সাবধানে।"


চলবে..................

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.