নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানার অদম্য ইচ্ছেসহ আগামীর পথে

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান

আমি প্রতিসাম্য তৈরি করতে ভালবাসি

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

থ্রিলার বড় গল্পঃ হ্যালুসিনেক্সিন (শেষ)

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০০

প্রথম পোষ্টের লিংকঃ Click This Link

দ্বিতীয় পোষ্টের লিংকঃ Click This Link

তৃতীয় পোষ্টের লিংকঃ Click This Link

তারপর পকেট থেকে ছোট একটা টর্চ বের করে দরজা খুলে ফেলল রুমটার। সীমান্ত ঢুকে দেখল শৈবাল মেঝেতে লাইটের আলো ফেলে কিছু খুঁজছে উবু হয়ে। শেষে কিছু একটা কুড়িয়ে পেয়ে পকেট থেকে ম্যাচবাক্সের মত ছোট একটা প্লাস্টিকের বাক্স বের করে তার মধ্যে ঢুকিয়ে রাখল। প্রায় সাথে সাথে হাতের ওয়ারলেস খড়মড় করে উঠল।

শৈবাল ওদের দুজনকে বলল, "এসো আমার সাথে।"

সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এল তিনজনে। শুনশান চারপাশ। শুধুমাত্র হাইওয়ে দিয়ে চলচলরত গাড়ির শব্দ ভেসে আসছে। গেট পার হয়ে রাস্তায় পা দেয়া মাত্র আধার ফুঁড়ে কালো পোশাক পরা এক লোক ভুতের মত নিঃশব্দে ওদের সামনে উদয় হল। বুক কেঁপে উঠল সীমান্তের।

"কি ব্যাপার, মেজর", লোকটাকে বলল শৈবাল। "সব ঠিক তো?"
"ব্যাটা একটা আস্ত নচ্ছার", মেজর বলে সম্মোধনকারী লোকটার কন্ঠ। "ধরা পড়ার আগে আমার এক সোলজারের নাক ফাটিয়ে দিয়েছে। গোলাগুলি হয়নি এই যা বাচা!!"

লোকটার পিছুপিছু অয়নদের বিপরীত দিকের বিল্ডিংয়ের গেট পার হয়ে সিড়ি ভাংগতে শুরু করল চারজনে। আরো কয়েকজন কালো পোশাকের বন্দুকধারী লোক দেখা গেল সিড়িতে। তীর-ধনুক হাতে শিকারি দল, মুচকি হাসল সীমান্ত। তিনতলায় একটা ফ্ল্যাটের দরজার সামনে দুজন কঠিনমুখো বন্দুকধারী দাঁড়ানো ছিল। মেজরকে দেখে স্যালুট ঠুকল। মেজর ভিতরে ঢুকলে তার পিছুপিছু ভিতরে ঢুকল তিনজন।

ভিতরে এক রুমের সোফায় দুই বন্দুকধারীর প্রহরায় হ্যান্ডকাফ পরানো এক লোককে দেখতে পেল সীমান্ত। লোকটা বিদেশি। চিনল তাকে। এই সেই লোক যার সাথে ধাক্কা খেয়েছিল শৈবাল। এটা তাহলে তার ভাড়া করা ফ্ল্যাট!

"কি হল?", হাসল শৈবাল, "ভয় পেয়ে বেহুশ হয়ে গেছে নাকি ব্যাটা?"
"ওরা কি আর সে চীজ!", হাসল মেজরও। "ধরা পড়ার পর ইংরেজিতে খুব খিস্তি খেঁউড় করছিল। আমার এক রগচটা সোলজার বন্দুকের কুদো দিয়ে কিছুক্ষনের জন্য ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে। নাক ফাটানোর প্রতিশোধও বলা যায়! ও থাক, তুমি বরং ওর রুমটা দেখে যাও।"

ওদের তিনজনকে নিয়ে আরেকটা রুমে প্রবেশ করল মেজর। সীমান্ত দেখল ব্যালকনি সংযুক্ত রুম এটা। এখান থেকে অয়নদের ফ্ল্যাটটা দেখা যাচ্ছে। রুমের ভিতর তাকিয়ে ওদের তিনজনের চক্ষু চড়কগাছ। শৈবালের বাক্সটাকে এখানকার যন্ত্রপাতির তুলনায় ছেলেমানুষী খেলনা বলে মনে হতে পারে। ঘরটাকে দেখতে হলিউডি কোন সায়েন্স ফিকশন সিনেমার সেট বলে মনে হচ্ছে। ভিন্ন ধরনের চারটা কম্পিউটারসহ আরো নানান বিদঘুটে, অপরিচিত যন্ত্রপাতিতে ভরা রুমটা। একেবারে নরক গুলজার করা অবস্থা!!

"এখান থেকেই ভিকটিম কে মনিটর করা হয়েছে অনেকদিন ধরে।", বলল মেজর। "তারপর চালানো হয় কিলিং মিশন। কিন্তু ক্লিনিং মিশন চালাবার সময়ই ধরা পড়ে গেল বেচারা।"

মেজরের কথাগুলো ল্যাটিন বলে ভ্রম হলো সীমান্তের। কিছুই বুঝতে পারল না। বেচারা অয়নেরও একই অবস্থা। ওদেরকে উদ্ধার করল শৈবাল। সামান্য সময় রুমটাকে পর্যবেক্ষন করে ফিরে এল আগের রুমে। সোফায় বসল সবাই। লোকটা সামান্য নড়াচড়া করছে।

"এই লোকটাই তোমার আব্বুর হত্যাকারী", অয়নকে বলল শৈবাল। তারপর পকেট থেকে প্লাস্টিক এর বাক্সটা বের করে খুলে মেলে ধরল। তারপর হাতের তালুতে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে ধরল, "আর এই হল হত্যার অস্ত্র। প্রানঘাতী অস্ত্রসজ্জিত ক্ষুদে ফ্লাইং রোবট।"

সীমান্ত ঝুকে শৈবালের হাতের দিকে তাকাল। বাক্সের ভিতর মশকাকৃতির একটা ক্ষুদে যান দেখা যাচ্ছে। স্বচ্ছ দুইটা পাখা দেখা যাচ্ছে। ছয়টা পা, মাথার সম্মুখে সুচের মত অংশ। এই তাহলে হত্যাকারী!!!

"আমেরিকান গোয়েন্দাসংস্থা CIA ব্যবহার করে এইগুলো", বলে চলেছে শৈবাল। "আড়ি পাতার কাজেই মুলত ব্যবহার করা হয়। মাফিয়া ডন, সন্ত্রাসবাদী নেতা, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অগোচরে এই ক্ষুদে রোবট মশা দিয়ে নজরদারী করা হয়। তবে কিছুকিছু ক্ষেত্রে এদেরকে হত্যার জন্যও ব্যবহার করা হয়। শরীরের মোক্ষম জায়গায় সামান্য একটা খোঁচা। হার্ট এটাক, ব্যাস। সব শেষ। কেউ চিন্তায়ই আনবেনা এর পিছে অন্য কোন কারন আছে।"
"কিন্তু আমার আব্বুর পিছনে CIA লাগবে কেন?", অয়নের প্রশ্ন।
"সবই জানবে। একটু ধৈর্য ধর।", বলল শৈবাল। তারপর মেজরের দিকে তাকিয়ে বলল, "ব্যাটাকে তো বুদ্ধি দিয়ে আটকানো গেল। কোন প্রমান হাতে এসেছে?"

"প্রমান মানে, একেবারে অকাট্য প্রমান", বলল মেজর। "হত্যার ভিডিও চিত্র। রোবট দ্বারা ধারন করা। লোকটার কনফিডেন্স অবাক করার মত। সবকিছু সেভ করে রেখে দিয়েছে, যেন জানত কেউ তাকে ধরতে পারবেনা। আমার একজন কম্পিউটার এক্সপার্ট বের করেছে একটু আগে।"
"সবকিছু ভালমতো বিশ্লেষণ করে দেখলে আরো অনেক কিছু পেতে পারো", বলল শৈবাল। "তবে ব্যাটাকে চৌদ্দশিকের আড়ালে ঢোকানোর জন্য যথেষ্ট প্রমান এসে গেছে হাতে।"
"হ্যা, তাই", মেজর বলল। "আমেরিকান সরকার খবর পেলে ব্যস্ত হয়ে উঠবে তা তো বুঝতেই পারছ। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে ভালই দর কষাকষি করা যাবে। মনে হচ্ছে এর মাধ্যমে কয়েকজন কুলাংগারকে দেশে আনতে পারব।"
"ভাল কথা", বলল শৈবাল। "অন্য দলগুলোর খবর কি?"
"আমার মিশন সাকসেসফুল হওয়ামাত্র খবর পাঠিয়ে দিয়েছি। ওখানকার স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে একশন শুরু হয়ে গেছে। কাল সকালের মধ্যেই ব্রেকিংনিউজ হয়ে যাবে ব্যাপারটা।"

সীমান্ত বোকার মত ওদের কথোপকথন শুনছিল। আমেরিকার CIA আবার এর মধ্যে আসল কিভাবে!! অয়ন মাথা নিচু করে বসে আছে। শৈবাল তার কাঁধে হাত রেখে স্বান্তনার সুরে বলল, "যা হবার তা তো হয়েই গেছে অয়ন। তোমার আব্বুর হত্যাকারী এখন আইনের মুঠোয়। তার বিচার হবে। তোমার আব্বুর মৃত্যুও বৃথা যাবেনা। তার অসম্পূর্ণ কাজ আমরা সম্পুর্ন করেছি। আর এসব সম্ভব হয়েছে তোমার কারনে। তুমি আমাকে ব্যাপারটা না জানালে এত দ্রুত কাজটা সম্পুর্ন হত না। তোমার আব্বুর আত্মা এখন শান্তি পাচ্ছে। So, no more tears."

চোখ মুছে মুখ তুলল অয়ন। আশ্চর্যরকম শান্ত দেখাচ্ছে তাকে। লোকটার জ্ঞান ফিরেছে ইতোমধ্যে। চোখ পিটপিট করে তাকাচ্ছে চারপাশে। শৈবাল উঠে দাঁড়িয়েছে। ওরা দুইজনও দাঁড়াল। শৈবাল পকেট থেকে ওয়ারলেসটা বের করে মেজরের হাতে দিল। তারপর লোকটার দিকে তাকিয়ে দুটো শব্দ উচ্চারণ করল, "Game over."

এরপর একপাশে গিয়ে মেজরের সাথে টুকটাক কিছু কথা বলে সীমান্ত আর অয়নকে সাথে নিয়ে বিল্ডিংটা থেকে বেরিয়ে আসল শৈবাল। সীমান্তের প্রশ্নের জবাবে সে জানালো যে, মেজরটা তার বন্ধু। আর তাদের সব প্রশ্নের জবাব সে আগামীকাল দেবে।

পরদিন সকালে শৈবাল ফোন করেই কাটাল বেশিরভাগ সময়। সীমান্ত আর অয়ন কিচেনে। খাবার পর তিনজনে টেলিভিশনের সামনে বসল। একটা নিউজ চ্যানেলে ব্রেকিংনিউজ দেখাচ্ছে।

"গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমানে "হ্যালুসিনেক্সিন" নামে পরিচিত মাদক উদ্ধার করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পুলিশ এবং RAB এর বেশ কয়েকটা ইউনিট। আর এ মাদকের উৎস হিসেবে চট্টগ্রামের BANGEN Pharmaceuticals Company নামের ঔষধ ফ্যাক্টরিতে অভিযান চালিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদফতর, পুলিশ, RAB, গোয়েন্দাসংস্থা এবং সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স। হাইটেক ফ্যাক্টরিটার ভূ-অভ্যন্তরস্থ এক গোপন ইউনিট থেকে এ মাদক এবং হ্যালুসিনেক্সিন তৈরির কাঁচামাল আটক করা হয়েছে। এ অপরাধে ফ্যাক্টরিটার পাঁচজন কর্তাব্যক্তিসহ কয়েকজন বিদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবরে জানা গেছে, গত কয়েকবছর ধরে কোম্পানিটার অন্যান্য ঔষধের পাশাপাশি গোপনে সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে এ ভয়ংকর মাদকটি। আরো তথ্যের সন্ধানে টাস্কফোর্সের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মালিক বিদেশে থাকায় গ্রেফতার করা যায় নি।"

সংবাদ শেষে মুখ খুলল শৈবাল। অয়নকে বলল, "তোমার আব্বু এদেরই মুখোশ খুলে দিতে চেয়েছিলেন। আজকে তার সে ইচ্ছা পুরন হয়েছে।"
"ধন্যবাদ, ভাইয়া", বলল অয়ন।

সীমান্ত অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছে ইতোমধ্যে। সে বুঝল গোপন সংবাদটা কে সরবরাহ করেছিল। আর তার তো আগেই জানা আছে শৈবাল একটা টাস্কফোর্সে কাজ করছে। সে বলল, "তোমাদের টাস্কফোর্স তাহলে আগে থেকেই এই নতুন ধরনের মাদকের উৎস খুজছিল?"
"ঠিক তাই", শৈবাল হাসল। "তোমার প্রশ্নের সম্পুর্ন উত্তর দিতে কয়েকবছর পিছিয়ে যেতে হবে। একেবারে প্রথম থেকেই শুরু করি।
শোন------"

সীমান্ত আর অয়ন আয়েশ করে বসল। শৈবাল বলে চলেছে, "বছর পাঁচেক আগে একটা খবর এদেশের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর মাথাব্যাথার কারন হয়ে দাঁড়াল। ভয়ংকর এক ধরনের মাদকের বিস্তার ঘটছে দেশের যুব সমাজের মাঝে। প্রথমে বিশেষ করে প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোর বড়লোকের ছেলেমেয়েদের মধ্যেই এ মাদক ছড়িয়ে পড়ল। ক্রমে তা অন্য স্থানেও ছড়িয়ে গেল। পুলিশ বিচ্ছিন্নভাবে কিছু মাদক উদ্ধার করল। ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেল এটা একধরনের হ্যালুসিনেটিং ড্রাগস। এ ড্রাগস গ্রহনের পর স্নায়ুগুলো ভীষনভাবে উদ্দীপিত হয়ে গ্রহনকারীকে দীর্ঘসময় সুখানুভূতি দেয়। তাদের নাকি মনে হয় তারা পালকের মত হালকা হয়ে গেছে, চারপাশ রংগিন হয়ে গেছে তাদের। যেন যা ইচ্ছা তা করতে পারে। ইল্যুশন, ডিলুশন, হ্যালুসিনেশন সব। হতাশাগ্রস্ত যুবকেরা দ্রুতই এ মাদকের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। কিন্তু এগুলোর দামও প্রচুর। তাই যা হবার তা হয়। অপরাধপ্রবনতা বেড়ে যায় বহুগুনে।"

সীমান্তের মনে পড়ে। সংবাদপত্রগুলোর কলামে কলামে অপরাধগুলোর বর্ননা তার মনে আছে। খুন, ছিনতাই, অপহরণ এমনকি যৌতুকও। একটা সংবাদের কথা মনে পড়ে তার। নতুন এক মাদক কেনার টাকা চেয়ে না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছেলে তার মা, বাবা আর বোনকে ঘরে আটকে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। মাদকের এমনই নেশা!!

শৈবাল বলে চলেছে, "খবর নিয়ে জানা গেল এ মাদক শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিন এশিয়ার অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তর ও দক্ষিন আমেরিকার কয়েকটা দেশ এর উৎপত্তিস্থল। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল আর মেক্সিকো থেকে আসছে এ মাদক। গোল্ডেন ওয়েজ দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে এশিয়ায়। গোল্ডেন ক্রিসেন্ট, গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলে পৌছে গেছে এ ভয়ংকর তরল। বাংলাদেশ সরকার এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করে কঠোর পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়, তল্লাশি চৌকি বাড়ানো হয়। বন্দর পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়। আর দেশের ভিতরে অভিযান চলতে থাকে। এবার বেশ কাজ হয়। অনেকগুলো বড় চালান ধরা পড়ে। গ্রেফতার করা হয় অনেককে। শান্ত হয়ে আসতে থাকে সব। মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলো ভরে ওঠে। সবার মনে ধারনা পোক্ত হতে থাকে যে, একটা দুঃসপ্নের সমাপ্তি হলো। কিন্তু বাস্তবে দুঃসপ্নের আরো বাকি ছিল। দুই বছর শান্ত থাকার পরে হঠাত পুরোনো দুঃসপ্নটা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এবার আগের থেকে আরও প্রবলভাবে। মাদকের গোপন বাজার ছেয়ে গেছে হ্যালুসিনেক্সিনে। পুর্বের চেয়ে আরো বেশি পরিমানে, আরো সুলভ মুল্যে। সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাপার হলো, বস্তির লোকদের হাতে পর্যন্ত পৌছে গেছে এককালীন "বড়লোকের মাদক" বলে পরিচিত হ্যালুসিনেক্সিন। পুলিশ এবার অকুল পাথারে পড়ল। কোনভাবেই মাদকটার প্রবাহ ঠেকানো যাচ্ছে না, অথচ সীমান্তে বা বন্দরে তল্লাশির কোন ত্রুটি হচ্ছে না। তল্লাশি আর উদ্ধার অভিযানে আরো বেধি লোকবল নিয়োগ করা হল। কিন্তু এ যেন রূপকথার দানব হাইড্রা। একটা মাথা কাটলে দশটা মাথা বেরিয়ে আসছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্ত আর বন্দরে বেশ কিছু চালান ধরা পড়লেও আমাদের একটাও ধরা পড়ল না। আসলে তখনও কেউ টের পায়নি বাংলাদেশ এবার আমদানিকারক নয়, রপ্তানিকারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।"

থামল শৈবাল। অন্য দুজনের মুখের দিকে তাকাল পালা করে। "তারপর কি হলো?", প্রশ্ন করল সীমান্ত। "তোমার নিজের কথা বল।"

"মাদকটার সাথে কুলিয়ে উঠতে নতুন এক সিদ্ধান্ত নিল সরকার", বলল শৈবাল। "একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হল। প্রাইভেট গোয়েন্দাদেরও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সামরিক, আধাসামরিক, বেসামরিক মেলবন্ধন। টাস্কফোর্সকে বেশ ক্ষমতা দেয়া হয়। সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ফোনে আড়িপাতা, যে কোন মুহুর্তে সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই তল্লাশির ক্ষমতা, সন্দেহভাজনদের গোপনে ধরে নিয়ে ইন্টারোগেশন। বেআইনি হলেও এর যথেষ্ট প্রয়োজন ছিল। আর এ ফোর্স সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জবাবদিহি করবে, এরকম ব্যাবস্থা ছিল। সরষের ভিতর থাকা ভুতদের কবল থেকে রেহাই পেতে। পরের দুমাসে বিভিন্ন গোয়েন্দাতথ্য পর্যালোচনা, যাচাই-বাছাই করে বোঝা গেল মাদকটা দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে এবং তা অসম্ভব গোপনে। আমি কাজ শুরু করি উদ্ধার অভিযান দিয়ে। আমার ইনফর্মারদের দেওয়া তথ্যানুসারে অভিযান চালিয়ে প্রচুর মাদক আটক করি। কিন্তু এটা আসলে কোন কাজের কাজ না।"

সীমান্ত এবং অয়ন দুজনের দিকে তাকিয়ে শৈবাল বলতে লাগল, "আরো ইনফর্মার নিযুক্ত করি। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বিশেষ করে। আশার কথা শোনাতে পারল না কেউ আমাকে। শেষে বেশ কয়েকদিন পরে চট্টগ্রাম থেকে খবর আসে। বন্দর থেকে। সম্ভাব্য উতস সন্ধানের কাজে লেগে গেলাম। টাস্কফোর্সে নিয়মিত খবর পাঠিয়ে যাচ্ছিলাম। ঠিক এসময়ে আমার ফ্ল্যাটে অয়নের আগমন।"

অয়নের দিকে তাকিয়ে হাসল শৈবাল, "তুমি আমার তথ্যের মরুভূমিতে একফোঁটা বৃষ্টির মতই নেমে এসেছিলে। তুমি কথা শুরু করার কিছুক্ষনের মধ্যেই বুঝতে পারি এইগুলোর সাথে আমার নিজের তদন্তের সম্পর্ক আছে। তোমার দেয়া কাগজপত্রগুলো বিশ্লেষণ শুরু করামাত্র বুঝে যাই, আমি এতদিনে যা খুঁজে পাইনি তা আজ নিজে আমার দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে। উপরওয়ালার শুকরিয়া আদায় করে আরো গভীর বিশ্লেষণ শুরু করি। একটা টেবিল ক্যালেন্ডারে কিছুকিছু তারিখের পাশে লালকালিতে বৃত্ত আকা ছিল। তোমার আব্বু কিছু সন্দেহ নিয়ে যে এইকাজ করেছিলেন, ধারনা করলাম। পেপারকাটিং থেকে নিঃসন্দেহ হলাম। আমার চট্টগ্রামের ইনফর্মাররাও আমাকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিল। ডায়েরী পড়ে বুঝতে পারলাম তোমাদের বাসায় আসতে হবে এবং চট্টগ্রামেও যেতে হবে। মূল শিকড়টা ওখানেই কিনা! এই বাসা থেকে যে স্যাম্পলগুলো নিয়ে গিয়েছিলাম তা ল্যাবে পাঠিয়ে দিই। যা সন্দেহ করেছিলাম তাই। হ্যালুসিনেক্সিন না হলেও এর সাথে প্রচুর মিল আছে রাসায়নিকভাবে। তরলটা ছিল আসলে কাঁচামাল।"

কিছুক্ষন থেমে আবার শৈবাল বলল, "এবার স্বশরীরে চট্টগ্রামে চলে গেলাম। টার্গেট ততদিনে নিশ্চিত। টাস্কফোর্সের মেজর বন্ধু আর তার বাহিনী সাথে থাকল। BANGEN এর ভিতরে যে সোর্স ছিল তার কাছে অয়নের আব্বুর কাদের সাথে ভাল সম্পর্ক ছিল তার একটা তালিকা পেলাম। আমার মনে হয়েছিল নিশ্চয়ই তিনি তার সন্দেহ নিয়ে কোন বিশ্বস্ত লোকের সাথে কথা বলেছিলেন। আমার ধারনা সত্য প্রমানিত হল। তার এক ফার্মাসিস্ট বন্ধুর সাথে আলাপ করেছিলেন। ভদ্রলোক প্রথমে স্বীকার করতে চাইছিলেন না। শেষে তার নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে তিনি সব খুলে বললেন। অয়নের আব্বু কোম্পানিতে কাজ শুরু করার দুই বছরের মাথায় তার কিছু সন্দেহ হয়। কিছু অস্বাভাবিকতা আছে তিনি বুঝতে পারেন। কোম্পানির নিরাপত্তা নিয়ে বাড়াবাড়ির ব্যাপারটাতে খটকা লাগে। এত কড়াকড়ি কেন? এমনকি ভিতরেও। স্পেশাল প্রজেক্টে বিদেশিদের আধিপত্য, কঠোর নিরাপত্তা এসব দেখে নিজের চোখ-কান খোলা রাখবেন সিদ্ধান্ত নেন। আসলে মেধাবী লোকেরা কাজপাগল হয় বলে কাজের দিকেই তাদের পুরো ধ্যানজ্ঞান থাকে, অন্য অনেক কিছুই তাদের চোখ এড়িয়ে যায়। তিনি চোখ-কান খোলা রাখতে শুরু করলে অনেক কিছু বুঝতে শুরু করেন। কিছু তথ্য হাতে আসার পর বুঝতে পারেন এর সাথে দেশের মাদকসমস্যার একটা যোগসুত্র আছে। এবং একই সাথে এটাও বুঝতে পারেন তার উপর নজর রাখা হচ্ছে। চট্টগ্রামে তো বটেই, এমনকি ঢাকাতেও। তিনি ব্যাপারটার শেষ দেখবেন বলে লেগে থাকেন তথ্য সংগ্রহে। অনেক কষ্টে স্পেশাল প্রজেক্টের কিছু স্যাম্পল জোগাড় করেন এবং সাথে কিছু গবেষনার কাগজপত্র। নিজের ল্যাবে স্যাম্পলগুলো পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন, দেশের তরুন সমাজের সর্বনাশ করছে যারা, তাদের অধীনেই তিনি কাজ করেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন সব ফাস করে দেবেন। তার বন্ধু তাকে নিষেধ করেছিলেন। বলেছিলেন যে, এতে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। কিন্তু তিনি দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। তিনি তার জোগাড় করা তথ্যের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ কপি করে তার বন্ধুর কাছে রেখে দেন। আর পুরো প্রমান একটা কালো ব্রিফকেসে করে ঢাকা ফিরে আসেন। ওটাই ছিল তাদের মধ্যকার শেষ দেখা।"

"আমি ভদ্রলোকের কাছ থেকে সেগুলো নিয়ে নেই। BANGEN এ তল্লাশি চালানোর জন্য যা দরকার তা হাতে চলে এসেছিল। এরমধ্যে এক বিদেশি লোককে কয়েকবার ফ্যাক্টরিতে আসা যাওয়া করতে দেখা যায়। এরিয়াল ফটো দেখে মনে হল, আমি আগে কোথায় যেন একে দেখেছি। তারপর ব্যাপারটা ধরতে পারি।"

"অয়নদের সামনের ফ্ল্যাটের সেই লোকটা", সীমান্ত এতক্ষনে প্রথম কথা বলল।
"হ্যা", বলল শৈবাল। "আমরা ফটোগুলো ঢাকা পাঠিয়ে দেই ডাটাবেইজে কোন তথ্য আছে কিনা লোকটা সম্পর্কে তা দেখার জন্য। কম্পিউটার এক লোকের সাথে ৫৫ পারসেন্ট ম্যাচ দেখায় তার চেহারার, যে কিনা মৃত। লোকটা CIA এর এক উঁচু পর্যায়ের এজেন্ট ছিল। আফগানিস্তান থেকে নিখোঁজ হয় সে। ধারনা করা হয়েছিল তালেবানরা তাকে হত্যা করেছে। কিন্তু আসলে সে লুকিয়ে ছিল। অনেক উচ্চপ্রযুক্তির যন্ত্রপাতি সহ। ভাড়াটে খুনী হিসেবে কাজ শুরু করে সে বিপুল টাকার বিনিময়ে। এমন খুনী, যে কোন তথ্যপ্রমাণ রেখে যায় না। এমনকি ভিকটিম যে খুন হয়েছে তা বোঝা যায় না। এশিয়ায় বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদের মৃত্যুর ঘটনা আর ধরন বিশ্লেষণ করে CIA এনালিস্টরা বুঝে যায়, মিসিং CIA এজেন্ট মারা যায়নি। তাকে ধরার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সবসময়ই সে থেকে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। CIA তে তাকে জ্যাক দ্য স্কিনচেঞ্জার, বলে ডাকা হয়। ছদ্মবেশ নিতে মারাত্মক পারদর্শী। তার উপর চেহারা বদলে ফেলেছে। এখবর শোনার পর আমার মেজর বন্ধুকে সব খুলে বলি। অয়নদের বাসায় গোপনে এই লোকই হানা দিয়েছিল। ঢাকায় খবর পাঠাই, ছবি তো ছিলই। খবর আসে তাকে দেখা গেছে। ঢাকায় চলে আসি। হাতেনাতে ধরতে হবে CIA- এর কুলাংগারটাকে। বুঝেছিলাম অয়নের আব্বুর রুমে লোকটার আসল জিনিসটাই রয়ে গেছে। কিলিং মেশিন। একটা আর্টিকেল পড়েছিলাম CIA এর কিছু যন্ত্রপাতির ব্যাপারে, তাই হালকা একটু ধারনা ছিল। মেজর বন্ধুর সাথে আলোচনা করলাম। সে আমাকে একটা যন্ত্র দিল, ব্যবহারের নিয়মও বলে দিল। তারপরের ঘটনাতো তোমরা জানো।"

"কিলিং মেশিনটা অয়নের আব্বুর রুমে কিভাবে আসলো?", সীমান্তের প্রশ্ন।
"সত্যি কথা বলতে কি, তিনি নিজেই এটা নিয়ে এসেছিলেন", বলল শৈবাল।
"মানে?", অয়ন হতভম্ভ।

তারদিকে তাকিয়ে শৈবাল বলল, "তোমার আব্বুকে কোম্পানিরর পক্ষ থেকে যে পুরষ্কারটা দেয়া হয় তার ভিতরে কায়দা করে রোবটটা ঢুকিয়ে দেয়া হয়। কাচের বেদীটার মধ্যে। আর সেটা নিয়ন্ত্রণ করা হত তোমাদের সামনের ফ্ল্যাটটা থেকে। খুব গোপনে তোমার আব্বুকে মনিটর করা হত। যখন তারা বুঝতে পারল তিনি অনেক কিছু জেনে ফেলেছেন তখন তাকে সরানোর প্রয়োজন পড়ল। এরপর তাদের আরো কিছু কাজ ছিল। তাই হানা দেয় তোমাদের বাসায়। গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজপত্র সরিয়ে ফেলে। রোবটটাও নিয়ে যেত। কিন্তু তুমি এসে পড়ায় তা সম্ভব হয়নি। এরপরের কয়েকরাত তুমি রুমটায় ছিলে, তাই লোকটা আর ঢোকেনি। তার উপর বোধহয় কড়া নির্দেশ ছিল কারও কোন সন্দেহ না জাগিয়ে কাজটা করার। তা না হলে সে যে পর্যায়ের ট্রেনিং প্রাপ্ত লোক, ইচ্ছা করলে সদর দিরজা দিয়ে ঢুকে জিনিসটা নিয়ে যেতে পারত।"

শৈবাল বলে চলল, "যাই হোক, চট্টগ্রামে থাকা অবস্থায় যখন খবর পেলাম তাকে ফ্ল্যাটে দেখা গেছে, তখন বুঝলাম তার কাজ এখনো শেষ হয়নি। ঢাকায় ফিরে তাকে ধরার প্ল্যান করলাম এবং শেষপর্যন্ত তাকে ধরতে পারলাম। আর খবরে তো দেখতেই পেলে BANGEN এর হ্যালুসিনেক্সিন প্রজেক্টের জারিজুরি খতম। একটা দুঃসপ্নের সমাপ্তি।"
"সবই বুঝলাম", বলল সীমান্ত। "কিন্তু একটা প্রশ্ন এখনো বাকি।"
"কি?", শৈবাল জিজ্ঞাসা করল।
"তোমার মেজর বন্ধুর দেয়া যন্ত্রটার কার্যপদ্ধতি।"
"ওহ!! ওটা", হাসল শৈবাল। "এক কথায় অসাধারন। তোমরা যে চারটা পোকার মত জিনিস দেখেছিলে, ওগুলো হল একপ্রকার ডিটেক্টর। যে কোন সুক্ষ্ম যান্ত্রিক কম্পন ডিটেক্ট করতে পারে। আর সেই কম্পনটার কোঅর্ডিনেটস পাঠিয়ে দেয় যন্ত্রটার কন্ট্রোল এ। ডিশ এন্টেনার মত দেখতে যেটা, সেটা সেই কোঅর্ডিনেটসে একটা শক্তিশালী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালস ছুড়ে দেয়। অনেক বড় এলাকার সাপেক্ষে পালসটা কিছুই না কিন্তু একটা রুমের সাপেক্ষে ফলাফলটা ভয়াবহ। দেখতেই পেয়েছ, রোবটটার ক্ষুদে সার্কিট পুরো জ্বালিয়ে দিয়েছে পালসটা। নিরাপত্তার জন্য একারনেই বৈদ্যুতিক সব যন্ত্র বন্ধ করে রাখতে বলেছিলাম। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল, বেচারা নাইট ভিশন ক্যামেরাটা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালসের আওতায় পড়ে গিয়েছিল। ওটা শেষ। আহা! বড় ভাল ক্যামেরা ছিল ওটা।"

হেসে ফেলল সীমান্ত আর অয়ন। শেষে অয়ন বলল, "ধন্যবাদ ভাইয়া। সবকিছুর জন্য।"
"ধন্যবাদ একটা বাহুল্য", হাসল শৈবাল। "সবচেয়ে বড় কথা হল অপরাধীরা ধরা পড়েছে এবং একটা দুঃসপ্ন হতে সমাজ মুক্ত হতে যাচ্ছে।"

আরো কিছুক্ষন টুকটাক কথা চলল। কালো ব্রিফকেস এর ব্যাপারে কি করতে হবে তা অয়নকে বুঝিয়ে দিল শৈবাল। শেষে বিদায় নিয়ে ধানমন্ডির ফ্ল্যাটের দিকে বিএমডব্লিউ ছোটাল সীমান্ত, পাশে মৌন শৈবাল।

তিনদিন পরে এক সন্ধ্যায় শৈবাল-সীমান্ত বসে আছে শৈবালের লাইব্রেরীতে। গত তিনদিনে সংবাদপত্রগুলো একেবারে ধুয়ে দিয়েছে BANGEN এবং এর মালিকপক্ষকে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকেরা অনেক গোপন তথ্য সংগ্রহ করে একয়দিনে ছেপেছে বেশ বড় পরিসরে। কোম্পানির ভবিষ্যত কি হবে এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার আলোচনায় বসেছে সরকারী কর্তাব্যক্তিরা। আশা করা যায় একটা না একটা সিদ্ধান্ত তারা দিবে অদুর ভবিষ্যতে। আর এসব ঘটনার মধ্যে থেকে শৈবাল নিজেকে এড়িয়ে নিয়েছে বেশ সতর্কতার সাথে। যেন এ ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা কোনকালেই ছিলনা।
"তাহলে সীমান্ত", অনেকসময় মৌন থাকার পর মুখ খোলে শৈবাল। "তোমার থিওরি অনুযায়ী বেশ কয়েকজন RATRIOT এর সন্ধান আমরা পেলাম, তাই না?"
"মানে?", সীমান্ত বিভ্রান্ত।
"Come on, সীমান্ত", হাসল শৈবাল। "তোমার থিওরি অনুযায়ী, যারা মাঠে-ময়দানে, সভা-সেমিনারে, টেলিভিশনের পর্দায় দেশপ্রেমের কথা বলে, দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা বলে আর তলে তলে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করে,দেশের ক্ষতি করে, তারা RATRIOT। BANGEN এর কর্তাব্যক্তিরা দেশপ্রেমের কথা বলেছিল, তরুন সমাজের উন্নয়নের কথা বলেছিল, অথচ তারা কি করেছে দেখো। এদের তুমি RATRIOT বলবে না?"
সীমান্ত চিবিয়ে চিবিয়ে বলল, "Bloody RATRIOT.




মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৪

মুদ্রা সংগ্রাহক বলেছেন: এত চমৎকার একটা গল্প কিন্তু কোন মন্তব্য নেই ! ! ! ! ১৮+ জোকস আর ইন্টারনেট থেকে নেওয়া কনটেন্ট নিয়ে পোস্টের ভিড়ে আপনার মত লেখকদের পোস্ট হারিয়ে যাচ্ছে।

ভাল থাকুন। লিখতে থাকুন।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: কি আর করা!!! মনের আনন্দে লিখি। শেয়ার করি।

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য।

আমার লেখা একটা হরর গল্পের লিংক দিলামঃ Click This Link

পড়ে দেখতে পারেন।

২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
সিরিজটা চমৎকার হৈসে।এ ধরনের পোস্টে এত কম মন্তব্য মেনে নেয়া যায়না কোনভাবেই।আপনি লিখে যেতে থাকেন।আমি আপনাকে অনুসারিত লিস্টে রাখলাম। মাঝে মাঝে ব্লগে আসা হলে ঢু মেরে যাবো।শুভ কামনা ||

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪০

হাসান মাহবুব বলেছেন: দারুণ একটা হাইটেক থ্রিলার। খুব ভালো লাগলো।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৬

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। এটা লেখক জীবনে আমার লেখা দ্বিতীয় থ্রিলার। প্রথমটা একটা প্রকাশনী তে পাঠাচ্ছি বিধায় দিতে পারছিনা।

প্রে ফর মি----------

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.