নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানার অদম্য ইচ্ছেসহ আগামীর পথে

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান

আমি প্রতিসাম্য তৈরি করতে ভালবাসি

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

----বুক রিভিউ------

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩১



বই- ড্রাগোমির
লেখক- আশরাফুল সুমন
জনরা- মেটাফিকশন
প্রকাশনী- আদি প্রকাশন

কাহিনী সংক্ষেপঃ শান্ত, নিস্তব্ধ এবং কোলাহলহীন একটি অঞ্চল, ওটিয়োসাস। যার সৃষ্টি হয়েছে কোন একজন লেখকের লেখনী শক্তির মাধ্যমে। চরিত্রগুলোর শান্ত নদীর ঢেউয়ের মত বয়ে চলা জীবন পুরোপুরি এলোমেলো হয়ে যায় যখন তারা জানতে পারে যে তাদের লেখকের মাথায় নতুন বুদ্ধির উদয় হয়েছে; লোকটা তার গল্পে একটা দানব সৃষ্টি করতে চায়, এবং সেটা কোন যেন তেন দানব নয়- একটি ভয়ঙ্কর, হিংস্র এবং অত্যাচারী ড্রাগন।
অজানা আশংকায় কেঁপে উঠল পুরো ওটিয়োসাস। চরিত্রগুলো বুঝতে পারল যে বইয়ের কাহিনীকে আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য লেখক অবশ্যই ড্রাগনটার মাধ্যমে অর্ধেক ওটিয়োসাসকেই অগ্নিস্রোতের নিচে ডুবিয়ে ছাড়বেন। লেখকের এ হঠকারী সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেয়না স্বাভাবিকভাবেই। তারা খুব ভয়ংকর এক সিদ্ধান্ত নিল—লেখককে হত্যা করবে তারা...............

আমার পাঠ্যাভিজ্ঞতাঃ বইটা ১৪ টা অধ্যায়ে সমাপ্ত। শুরু হয় এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। গল্পের প্রোটাগোনিস্ট বেনজামিন উইলোবির কাজিন এলিসিয়া উইলোবির জন্মদিন। এই দুইজন সম্পর্কে আর কি বলব। পাঁজির পা ঝাড়া। সারাক্ষণ খুনসুটি লেগেই আছে। দুইজনেরই সর্বদা একটাই চিন্তা, কিভাবে অন্যকে একহাত দেখে নেওয়া যায়। জন্মদিনেও তার ব্যতিক্রম হয় না। বেনজামিনের একটা দুষ্টামির শিকার হয়ে সবার সামনে নাকাল হয় এলিসিয়া। এতক্ষন বইটা বেশ হালকাভাবেই চলছিল।
এরপর হঠাৎ করেই নতুন গতি লাভ করে কাহিনী। বেনজামিন একটা, কি বলা যায় একে, ভিশন দেখতে পায়। অনেকটা এক্সট্রা সেনসরি পারসেপশন (ESP) এর মত। লেখকের প্রাঞ্জল বর্ননায় এই ভিশন অংশটুকু পড়তে গিয়ে পুরো মুভি দেখার ফিল পেলাম।
এরপর পর্দায় ‘হেল্পিং হ্যান্ড’ হিসেবে আগমন ঘটল এক নতুন চরিত্র আংকেল ইভানের। চরিত্র বটে!! তাকে কি বলা যায়; কবি, জাদুকর, আত্মাভিমানী, নিজেকে জাহিরকারী, বিরক্তিকর—এগুলোর ককটেল। তো যাই হোক, এনাকে দেয়া হয় বেনজামিন এর উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব। ও বলা হয়নি, ভিশন দেখার সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে বেনজামিন। তো স্কুলে একবার বেনজামিন একই সমস্যায় পড়লে এলিসিয়ার পরামর্শে আংকেল ইভানের দ্বারস্থ হয় তারা।
এডভেঞ্চার বিগিনস। ভ্যালি অফ নেক্সাসে এসে তারা দেখা পায় একজনের। তারপরে বিভিন্ন বুদ্ধি করে তারা পৌঁছে যায় দুঃস্বপ্নের শুরু হয় যেখানে ঠিক সেখানে। মৃত আগ্নেয়গিরি আবার হয়ে ওঠে উত্তপ্ত। উগরে দেয় গরম লাভা। আর তার সাথে সেখানে জেগে ওঠে......... বুঝতেই পারছেন কে।
এরপর ওটিয়োসাসে শুরু হয় ত্রাসের রাজত্ব। গভর্নর হাউসের দুই দলের কোন্দলের সাথে আমাদের আওয়ামী লীগ ও বি এন পির দ্বৈরথ এর মিল আছে অনেক। এমন শংকাজনক অবস্থায় ওদের তিনজনের সাথে যোগ দেয় আরেক জাদুকর আনিকা। এই ক্যারেক্টার টা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। সত্যি বলছি, মনে হয়েছে, অনেক ভিনদেশী লোকের মাঝে এ একেবারে আমাদের পাড়ার মেয়ে। সময়ের সাথে সাথে লেখক এই ক্যারেক্টার এর ডেভেলপমেন্ট এমনভাবে করেছেন যে, কিছুক্ষণের জন্য হলেও তার ছায়ার ঢাকা পড়ে গেছে বেনজামিন উইলোবি।
যাই হোক, এরপর বিভিন্ন শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা পরিক্রমায় আর ব্রেনস্টর্মিং এর সাহায্যে বইয়ের কাহিনী পরিণতির দিকে এগোয়। এখানে পাঠকের জন্য অপেক্ষা করে আছে বিশাল এক টুইস্ট। যা কিনা কোনভাবেই আগে থেকে ঠাওর করা সম্ভব নয়।

লেখক, আশরাফুল সুমনের ‘মাদার ন্যাচার’ নামে আরেকটা লেখা আগে পড়া ছিল আমার। সেটাও ফ্যান্টাসি। লেখক সম্পর্কে বলতে চাই যে, তার সবচেয়ে বড় গুন হল কাহিনীর এন্ডিং। অসাধারণ!!! পাঠকের মনে উদ্ভুত প্রায় প্রত্যেকটা প্রশ্নের উত্তর উনি বিভিন্ন ডায়লগের মাধ্যমে দিয়ে দেন। শেষ করার পর মনে হয়, আরে তাই তো। এমনই তো হবার কথা।
অনেকের লেখা দেখেছি, শুরু টা বেশ প্রমিজিং হলেও লাস্টে গুলিয়ে ফেলেন; একেবারে লেজে গোবরে না হলেও, কিছুটা। কিন্তু এই লেখক সবকিছুর এন্ডিং ভালমতই নামিয়েছেন। মেটাফিকশন লেখা আসলে দুরহ ব্যাপার। বেশ সফলতার সাথেই এই দুরহ কাজটা করতে পেরেছেন লেখক।
ডায়লগের ব্যাপারে বলব, ভাল হয়েছে। মাঝে মাঝে কিছু চাইল্ডিশ ডায়লগ থাকলেও সেটা দৃষ্টিকটু মনে হয় নি। বরং কাহিনীর সাথে ভালমতই মানিয়ে গেছে। হিউমার টা ছিল মাপা। মোটেও ভাঁড়ামো মনে হয় নি।
শেষদিকে কয়েকটা অসাধারণ ইমোশনাল ডায়লগ ছিল। কয়েকবার করে পড়েছি সেগুলো।

মোটকথা আমার জন্য একটা এডভেঞ্চারাস জার্নি ছিল বইটা।
রেটিং- ৪.৫/৫
লেখককে ধন্যবাদ এমন অসাধারণ একটা মেটাফিকশন লেখার জন্য। বাংলা ফ্যান্টাসি দুরন্ত গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাক এই কামনা করে শেষ করছি আমার প্যাচাল।

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: চমৎকার বুক রিভিউ !

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০০

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ :)

২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৮

শাহাদাত হোসেন বলেছেন: চমৎকার বুক রিভিউ

৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:০২

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
baah. porar iccha jagLo. sujog peLe kine nibo.

৪| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: কত কী পড়ার আছে বাকি! বইমেলার বাজেট শেষ আপাতত। রিভিউ পড়ে চেখে দেখতে ইচ্ছে করছে। দেখা যাক...

৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: বাংলা ফ্যান্টাসি খুবই আন্ডারডেভলপড। ভালো লাগছে এভাবে লেখকেরা উঠে আসছেন দেখে।

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ২:৫৭

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: আন্ডারগ্রাউন্ডে লেখা চলছে :) বেশ কয়েকজনের কথা জানি যারা উচ্চাভিলাসি প্রজেক্ট নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ফ্যান্টাসির ক্ষেত্রে। সবাই সাথে থাকবেন আশা করি :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.