নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্নে সমুদ্র পারি দেওয়া ছেলেটি জেগে উঠে দেখে সে মাত্র বিছানার এপাশ ফিরে ওপাশে শুয়েছে মাত্র

অমিত বসুনিয়া

পৃথিবীর মৃত্যু ঘটুক শূধু তৃনলতাগুলো বেড়ে উঠুক , ছুয়ে দিক নীল আকাশের ভ্রান্ত সীমানা ।

অমিত বসুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

অস্পষ্ট ভালোবাসা - ৬ ( Little bit romantic )

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮

তুমি যদি কাউকে মন থেকে চাও , তাহলে সে চাইলেও আর তোমার থেকে দূরে থাকতে পারে না । কে জানি বলেছিলেন কথাটা ?
ট্রেন থেকে নামলাম ।
বাইরে ঠান্ডা বাতাস বইছে । দুপুরের কড়া রোদ এসে চোখে লাগছে । সুর্য দুপুর বেলায়ও মাথার উপরে না থেকে একদিকে হেলে আছে । চোখে রোদ লাগায় কেমন জানি ঝাপসা ঝাপসা দেখতেছি ।দুরের চায়ের দোখান তজেকে অরিজিত সিং এর তুম হি হো বাজছে । সামনে তাকিয়ে দেখি মিস কিন্ডারগার্ডেন । তার পরনে নীল শাড়ি , সেই নীল শাড়িতে আবার হালকা সবুজ ফুটকি । কপালে একটা সবুজ টিপ ।চুল গুলো খোলা , কিছু চুল বার এসে পরছে তার মুখে সেও সুন্দর করে সেটা সড়িয়ে দিচ্ছে । তার পিছনে একটা হেলে পড়া শিরিশ গাছ । মাঝে মাঝে শিরিশ গাছে পাতা এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে । আমার কাছে মনে হলো স্বয়ং সৌন্দর্যের দেবী "আফ্রোদিতি" দাঁড়িয়ে আছে । পাশে তাকিয়ে দেখি রিফাত সালাও ক্যাবলা মফিজ হয়ে দেখছে । কেউ এভাবে একটা মেয়ের দিকে তাকায় ? আমি ইচ্ছা করে তার পায়ে পারা দিয়ে বাস্তব জগতে ফিরিয়ে আনলাম ।
- কিরে কি হইছে ?
- নাহ কিছু হয় নাই তবে এবার হবে ?
আমি হন হন করে এগিয়ে গেলাম মেয়েটার দিকে । সেও আমাকে দেখে একরকম আশ্চার্যই হলো মনে হয় । তবে চেহারায় জোর করে কঠোর ভাব নিয়ে এসে বললো
- তুমি ? নাহ মানে আপনি ?
তার ডাক শুনে মনে হলো তার স্কুলের কোন ছাত্র আরেক টা মেয়েরে খেলার ছলে কিস করেছে আর সে সেটার বিচার করতেছে ।
সে যতটা গরম হয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করলো , আমি তার থেকেও কয়েক গুন কোমল স্বরে বললাম ,
- এইতো ফ্রেন্ড এর বাসা বেড়াতে আসছি ।
- ওহ ।
- তো আপনি কই যাচ্ছেন ?
- আমার বাসা এখানে ।
হঠাৎ করে মনের ভেতর কেমন জানি সুখানুভুতি খেলা করছিলো । আমি কোন কথা না বলে ঠিক এলাকার বখাটে ছেলেগুলোর মতো তার দিকে আছি । কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম জানিনা হঠাৎ দেখি কে জানি তাকে ডাকছে ,
এই মেঘলা ।
সে আমার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসি দিয়ে চলে গেলো ।
আমার ও হুশ ফিরে এলো পেছনে তাকিয়ে দেখি সাদিক,রিফাত দুইজনেই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে । আমি তাদের কাছে ফিরে গেলাম । রিফাত বললো ,
- কি মাম্মা , মাইয়াডা কে ?
- কেউ না বে ।
- কদ্দিন থেইকা চলছে এইসব ?
- ধুর ব্যাটা যাহ । কিরে সাদিক তোর বাসা কতদূর ?
- বেশি নাহ অল্প , দ্বাড়া একটা রিকশা নিয়ে নেই ।
আমরা তিনজন এক রিকশায় চড়ে যাচ্ছি । আবার দেখি মন আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সেই মেঘলার দিকে । তার চোখের চাহনী , তার বা হাতে ব্যাগ ধরে দাঁড়িয়ে থাকা , তার মুখের হালকা মেকআপ । ভাবছি তার হাসি টা কতো সুন্দর হবে ?
আমি আমার বিছানায় শুয়ে আছি আর আমার বিছানার সামনে হাসি মুখে এক কাপ চা নিয়ে সে দ্বাড়িয়ে আছে । আমি চায়ের কাপ না নিয়ে তার হাতটা স্পর্শ করছি আর সে মিটি মিটি করে হাসছে ।
কি সব আজগুবি কল্পনা করতে করতে সাদিকের বাড়ি এসে গেলাম ।
একটা বাশের বেড়ায় ঘেড়া বাড়ি উপরে টীনের ছাদ । বাশের বেড়ায় বাশের অনেক রকম কারুকাজ । ভেতরে ঢুকে আমরা ফ্রেশ হয়ে খাওয়াদাওয়ার পাট টা শেষ করে নিলাম । দেখি সাদিকের বাবা মা দুজনেই খুশি খুশী মুখে আমাদের সাথে কথা বলছে । উনাদের মুখের হাসিটার মধ্যে কোন রকম নকল বা মেকি ভাব নাই ।একদম নির্মল হাসি ।আমাদের শহরের লোকগুলোও হাসে , কিন্তু তাদের হাসিতে কোথাও একটা কমতি থেকেই যায় ।
খেয়ে দেয়ে আমরা সটান হয়ে শুয়ে পড়লাম বিছানার মধ্যে ঘুম ভাংলো সাদিকের ডাকে । উঠে দেখি তখন পরন্ত বিকাল । সাদিক বললো চল নদীর পাড় থেক ঘুইরা আসি । তিনজনে আবার চোখে মুখে পানি দিয়ে বের হয়ে পড়লাম , অনেক্ষন সিগারেট খাওয়া হয় না । বাইরে এসে হাটতে হাটতে সিগারেট ধরালাম ।
তিন জনে হাটতে হাটতে নদীর পাড়ে এসে পড়েছি ততক্ষনে সন্ধ্যা প্রায় । আকাশ থেকে এক লাল আভা বেড়িয়েছে ।হঠাৎ সামনে দেখি মেঘলা এবং তার সাথে কয়েক টা মেয়ে হাসতে হাসতে আমাদের দিকে আসছে । এই প্প্রথম আমি তার হাসি দেখলাম । এই রক্তিম আলো যেন মেঘলাকে আরো সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছে । কে জানে আমি নিজের নিয়ন্ত্রন হারিয়েছিলাম কিনা , সাদিক আমার হাত ধরে ঝাকি দিলো ।
- আরেহ রুপক সাহেব । কি ব্যাপার
- সবই কিসমতের খেল , একদিনে দুইবার দেখা ।
মেঘলা কিছু না বলে হাসতে হাসতে চলে গেলো ।ওদিকে তাকিয়ে দেখি সাদিক একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে । আমি সাদিক কে ডেকে বললাম ,
- মামা , তুই কার সাথে কথা কচ্ছিস ?
- ব্যাট্টা এটা তোর মামী , আমার গার্লফ্রেন্ড ।
এইসময় রিফাত বলে উঠলো
- দোস্ত লাল জামার ঐ মেয়েটার উপর ক্র্যাশ খাইছি ?
সাদিক হঠাৎ চিল্লায় উইঠা বল্লো
- এই নিয়ে কয়বার ?
মেয়েগুলা দেখি আমাদের এইসব কাহিনী দেখে হাসতে হাসতে চলে গেলো ।আমি সাদিক কে বললাম , মামা তোর গার্লফ্রেন্ড রে কইয়া , মেঘলার ফেসবুক আইডি টা নিয়া দিবি ?
- নাহ
- এক প্যাকেট ব্যান্সন নিয়া দিমু
- নাহ
- সাথে চিকেন ফ্রাই খাওয়ামু ।
-আচ্ছা দেখি
আমরা সাদিকের বাড়িতে বসে টিভি দেখতেছি , হঠাত সাদিক এসে মেঘলার ফেসবুক আইডি , নাম্বার দুইটাই দিলো ।
আমি ফোন টা নিয়া সার্চ দিলাম। দেখলাম একটা বার্বি ডলের ছবি দেওয়া আইডী আমার সামনে আসলো । টাইম্লাইনে গেলাম । কিছুক্ষন আগে একটা স্ট্যাটাস লিখেছে ,
" সেই পাগল টাইপ ছেলেটারে আবার দেখলাম । নদীর পাড়ে , হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । "
তার টাইমলাইন এর আরো ভেতরে গেলাম ,
একটা স্ট্যাটাস দেখলাম ,
" আজকে এক ছেলের সাথে দেখা হলো ,
সে রাস্তায় দ্বাড়িয়ে আমার বাসার দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে , কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছিলো আমার । গিয়ে দিলাম ইচ্ছা মতো ঝাড়ি , আমি তাকে যতই ঝাড়ি দেই সে ততই লির্লিপ্ত ভাবে হাসে । আজিব একটা চীজ "
কমেন্ট করতে চাইলাম , যে আমি আসলে কোন কারন ছাড়াই সেখানে স্বারিয়ে ঐভাবে তাকিয়ে ছিলাম , তাকে দেখিও নাই " শেষ পর্যন্ত আর করলাম না ।
আমি কাপা কাপা হাতে তারে রিকুয়েস্ট পাঠালাম সাথে বেহায়ার মতো তার ইনবক্স এ মেসেজ দিলাম
" When I look into your eyes ,
It's something different .
It's like sky , with full of star
and every star say love
say love to me . "

( ভালোবাসা জিনিসটা হচ্ছে তলহীন সাগরের মতো যেটাতে ডোবার পর তার সঠিক অনুভুতি চাইলেও কেউ দিতে পারবে না , আমিও পারলাম না )

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১

বিজন রয় বলেছেন: ভাল লাগল গল্পটি।
+++

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৬

অমিত বসুনিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ । এটা সিরিজ গল্প । এর আগেও এটার ৫ টা পার্ট লিখেছি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.