নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
i am used to use full liberty. any kind of discussion and criticism will be welcome.
গতকাল সকালে হকার পত্রিকা দিলো। পত্রিকা খুলতেই এক টুকরা লিফলেট হাতে পেলাম............... খুলে দেখলাম-বিজ্ঞাপন। তো চোখ বুলালাম। বিজ্ঞাপনটা হল #educationpark 'এডুকেশন পার্ক' নামের একটা প্রতিষ্ঠানের। মনে হয় কনসালটেন্সি ফার্মের। সোজা বাংলায় যাকে আমরা 'দালালী' বলি। তাদের দেয়া কিছু 'সেবা' এখানে উল্লেখ করছি--- ব্যাখ্যা দেয়াটা প্রয়োজন, তাই দিচ্ছি......
লেখাটা ছিল এরকম----
১) "DU, JNU & JU সহ দেশের সকল ভর্তি পরীক্ষায় যাতায়াতের জন্য বিশেষ সুবিধায় ট্রেন সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে"---- এমনটা ভাবার কোন কারণই নাই যে, দেশের সরকার বেসরকারী খাতে রেল সেবা ছেড়ে দিয়েছে কি না.....? বা এই ‘এডুকেশন পার্ক’ মালিক পক্ষ আস্ত রেল লাইন ও রেল গাড়ী কিনে নিয়ে দেশে আলাদা রেল সার্ভিস চালু করলো কি না.....? না...... এর একটিও না।
২) “কয়েকজন মিলে পাশাপাশি রোল নিয়ে বা সিটে বসে একসাথে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যোগাযোগ করুন”। (শর্ত প্রযোজ্য)--- যেন মামার বাড়ীর আবদার, একসাথে কয়েকজন মিলে মাছ ধরতে যাবে বা কারও গাছ থেকে ডাব পেড়ে খাবে.......!
৩) “অভিভাবকগন শিক্ষার্থীদের সাথে যাওয়ার সুব্যবস্থা আছে”। যেন একপাল ছাগল পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে, তাদের দেখাশুনার জন্য অভিভাবকের মনে একটা ‘জুজু’র ভয়’ ঢুকিয়ে দেয়া, আর মাঝখান থেকে এই সেন্টিমেন্টের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া।
সরকারের সেবা খাতের অন্যতম হলো রেল খাত। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য থেকে এই খাত কখনই পরিচালিত হয়নি বলেই আমার বিশ্বাস। তা না হলে বছর বছর সরকার এই খাতে ভর্তুকি দিত না। আর পাশাপাশি ‘টিকেট ব্ল্যাকার’ বা ‘কালোবাজারী’ বলতে যা বুঝি তাদের নিয়ে এতো ধরপাকড় ও হল্লাবাজী হতো না। উল্লেখ্য ‘টিকেট ব্ল্যাকার’ বা ‘কালোবাজারী’ বলতে বোঝায়- ঐ সকল ব্যক্তি যারা রেলওয়ের কাছ থেকে ন্যায্য দামে অধিকাংশ টিকেট কিনে নিয়ে একটি কৃত্রিম ‘সংকট’ সৃষ্টি করে, এবং পরবর্তীতে সাধারণ মানুষদের নিকট কয়েকগুণ দামে বিক্রি করে। এটাই হল কালোবাজারী। আর ‘এডুকেশন পার্ক’ নামের প্রতিষ্ঠানটির ‘ট্রেন সার্ভিস’ দেয়া এই কালোবাজারিরই নামান্তর।
(২) নং ‘সেবা’ খাতে চোখ দিলেই বুঝতে পারবেন এটা যে একটা সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। পাশাপাশি সিটে বসে পরীক্ষা দেয়ার সুবিধাটা আসলেই নিয়ম সিদ্ধ কি না, তা আইনজ্ঞরাই ভালো বলতে পারবেন। কিন্তু এই ‘সুবিধাটা’ যে বেশ অনৈতিক তা চিন্তক মানুষ মাত্রই বুঝবেন। এবং এর পেছনে মোটা অংকের টাকার লেনদেন যে হচ্ছে তাও বেশ পরিষ্কার। ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে – এমন সিন্ডিকেট যে প্রশ্ন ফাঁসে সহায়তা করছে না, বা পরীক্ষায় অনৈতিক উপায় বাতলে দিচ্ছে না—তা নিশ্চিত করবে কে.......?
আমাদের শিক্ষামন্ত্রী সজ্জনব্যক্তি। সৎ ও কর্মঠ বলে তাঁর সুনাম আছে। এমন একজন ব্যক্তি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে থাকতে এমন দুরাচারী ব্যবসা কিভাবে চলছে, সেই প্রশ্ন থেকে যায়। পাশাপাশি রেলের সেবা এভাবে প্রকাশ্যে ‘কালোবাজারী’ ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে, সেক্ষেত্রে রেল মন্ত্রণালয় কি করছে এবং স্থানীয় প্রশাসন কি পদক্ষেপ নিচ্ছে তা দেখার বিষয়।
উপরোক্ত ব্যাপারটি দেশের চলমান সমস্যার সামনে ক্ষুদ্র বৈকি! কিন্তু মনে রাখবেন – ‘কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ বের হওয়া’ প্রবাদটির উদ্ভব হয়েছেই এমন ঘটনার জন্য। এমন ছোট ছোট ঘটনা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য অশনি সংকেত। এখনই মনযোগ দিতে হবে.............
লাল সালাম........................
©somewhere in net ltd.