নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিন্তার দর্পণ থেকে

০১ লা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:০২

দুবলের চেয়ে সবলের আত্মসমপণ বেশি দরকার। কারণ সবলের ঔদ্ধত্য ও অহংকার তুলনামূলকভাবে প্রভাব বিস্তারে বেশি সক্ষম হওয়ায় বেশি বিপদজনক। কারণ যার শক্তি সামথ্য যত বেশি সে সীমালংঘনকারী হলে ভয়ানক পরিস্থিতি তৈরি হয়। তার অশুভ শক্তির দাপটে ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ দৃশ্যত সম্মান প্রদশন করলেও কাযত ঘৃণা ও ক্ষোভে ফেটে পড়ে। মনের গভীর থেকে উৎসারিত শ্রদ্ধাবোধ-আন্তরিকতা-সম্মানবোধ ছাড়া আসলে জনপ্রিয় মানুষ হওয়া যায়না। ভয়ে সালাম দেয়া আর শ্রদ্ধায় সালাম দেয়াটা এক নয়।



এখন প্রশ্ন হল যে শ্রেষ্ঠ-বিজয়ী-সেরা সে আবার কার কাছে নিজেকে সমপণ করবে? প্রতিপক্ষ-শত্রু-প্রতিযোগীর কাছে হেরে যাওয়ার পরবতীতে আর সামনে এগিয়ে থাকার পরের আচরণ কি এক হবে? আসলে যার সম্মান-মযাদা-ক্ষমতা বেশি সে নিজেকে সমপণ করবে মানবতা-মনুষত্ব-বিবেকের কাছে। আত্মসমপণ মানে হিংসা-বিদ্বেষ-লোভ-লালসা-কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে রক্ষায়,বিনয়ী হওয়ায়। ছোট থেকে স্বাথকতা পাওয়ার মানে জ্ঞানে-সম্পদে-ক্ষমতায় পশ্চাদপদ থাকা নয় নিজেকে দাম্ভিকতা-অহংকার-নীচতা-সংকীণতা মুক্ত রাখায়।



অহংকারী, খোটা দানকারী, নিজের বড়ত্ব-শ্রেষ্টত্ব জাহিরকারী অনেকের অপছন্দের বা বিরক্তি উদ্রেকের কারণ।মানুষের স্বভাব প্রকৃতিটা এমন যে, অন্যের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য-উপহাসে সে কষ্ট পায়।কখনও প্রতিবাদ করে লিখে-বলে-ভেবে, কখনো নিরবে সয়ে যায় তবে অভিশাপ দেয়-ধ্বংস কামনা করে, কখনো বিদ্রোহী হয়, কখনো মানসিক জ্বালা যন্ত্রনায় দগ্ধ হয়।সাধারণত শারীরিক-আথিক-মানসিক অনেক আঘাত মানুষ সহ্য করে তবে ব্যক্তিত্বে-চরিত্রে-আত্মপরিচয়ে আঘাতকে মেনে নিতে পারেনা।দু:খ-কষ্ট-যন্ত্রণায় ব্যথিত মনে বেদনাসক্ত মানুষ কখনো কাঁদে-অশ্রু ঝরে কমে যায় তার বুকের দহন,কখনো ধ্বংস ও উন্মত্ততায় মেতে উঠে কষ্টের তীব্রতা কমায়, যখন অন্য কারো সাথে শেয়ার করার মত পায়না তখন নিজের চুল ছিড়ে-বিলাপ করে-আতনাদ-আহাজারি করে হালকা হবার চেষ্টা করে, যখন এজগৎকে আর মেনে নিতে পারেনা স্বপ্ন-আশা ফুরিয়ে যায় তখন জীবন যাপনে দেখা দেয় অস্বাভাবিকতা এমন কি যখন জীবনকে স্বাদহীন-অপেক্ষাকৃত ভাল ভবিষ্যতহীন-অস্তিত্বকে মূল্যহীন মনে করে তখন কারো আত্মহত্যা-কারো এড়িয়ে চলা-কারো লুকিয়ে থাকার প্রবণতা জাগে।



কেউ তার দুবলতা ও সীমাবদ্ধতা ভুলে গেলে তার সীমালংঘনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দু’ধরনের মানুষ আছে। এক. নিজকে অতিমাত্রায় গুরুত্ব দিতে যেয়ে জগৎকে ভুলে যায়। দুই. যারা জগৎকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়ায় নিজেকে ভুলে থাকে। আসলে এই জগতের ধম হচ্ছে, যে মানুষ নিজেকে ভুলে- আমিত্বকে বিসজন দিয়ে জগৎকে-অন্যকে-পরের জীবনকে ভালবেসেছে তাকেই শুধু মনে রাখা।যে মানুষ নিজেকে উপরে ওঠাতে যেয়ে অপরকে টেনে নীচে নামাতে চায় কিংবা নিজের বড়ত্ব জাহির করতে যেয়ে অন্যের কৃতিত্ব দিতে কাপণ্যতা করে সে আসলে নিজেকেই ছোট করে, উপহাসের পাত্র করে।অন্যকে ছোট করতে চাইলে নিজেকে বড় বানানো যায়না।



মানুষের অস্তিত্ব বিদ্যমান ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখার স্বাথে? মানব সৃষ্ট বৈশ্বিক ব্যবস্থার বাইরেও প্রাকৃতিক যে নিয়ম-নীতি-পদ্ধতি তা গুরুত্বপূণ। মানুষের টিকে থাকা এই ব্যবস্থাকে সচল রাখার স্বাথে অপরিহায।এখন মানুষের প্রয়োজনে এই ব্যবস্থা টিকে থাকবে নাকি এই সিস্টেমের প্রয়োজনের তাগিদেই মানেুষের টিকে থাকা।দেখুন অনেকে পৃথিবীতে এসেছে, অনেকে চলে গেছে, কেউ আছে এখনও, কেউ আসবে ভবিষ্যতে।কেউ থাকছেনা কিন্তু বহাল আছে জন্ম-মৃত্যু,সূয উদিত হচ্ছে আবার অস্ত যাচ্ছে। কিন্তু যে প্রাকৃতিক নিয়ম-পদ্ধতি-ব্যবস্থা একে সক্রিয় রাখায় মানুষের ভূমিকা কতটুকু? মানুষের সূযের উত্তাপ দরকার, অক্সিজেন দরকার, বাতাস-পানি দরকার কিন্তু মানুষ না থাকলেও এসবের অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকায় কি কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে? সম্ভবত না। অথাৎ যখন এ সিস্টেম থাকবেনা তখন মানুষও থাকবেনা আবার মানুষ না থাকলেও এ সিস্টেম সচল থাকতে পারে। তাহলে মানুষের এত গব অহংকার আসে কোথা থেকে ? সম্ভবত অজ্ঞতা থেকে।



আবিষ্কারক-গবেষক-সাধক-বিজ্ঞানীর অবদানে মানুষের জীবন প্রশান্তিময়-সুখময়-আনন্দময়-গতিময় হয়ে ওঠেছে। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম-ত্যাগ-কষ্টের বিনিময়ে জীবন সুন্দর-সহজ হয়েছে তাদেরকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণটাও অকৃতজ্ঞ মানুষ করতে পারেনা।যারা ঘমাক্ত হয়েছে,অশ্রু বিসজন দিয়েছে,আরাম-আয়েশ-বিলাসিতা ভুলেছে,সৃষ্টির নেশায় কাটিয়েছে বিনিদ্র রজনী তাদের সাধনার ফলভোগ করে যারা অলস হয়েছে,অকমা-নিষ্কমা হয়েছে,মূল্যবান সময়ের অপচয় করেছে, জীবনী শক্তির অপব্যবহার করেছে তার সত্যি হতভাগা-অভিশপ্ত।আমার ভাবতে অবাক লাগে যে তার সবটুকু উজার করে দিয়ে বিদ্যুৎ আবিষ্কার করেছে তার সৃষ্টিকে ব্যবহার করে ফ্যানের বাতাসে গল্প-গুজব করা, টিভিতে নাটক-সিনেমা-খেলা দেখে অনুৎপাদিত খাতে জীবন ব্যয় করা কত বড় মূখতা। যারা মানবতার জন্যে ভাল-নতুন-কল্যাণকর কিছু রেখে গেছে তার ব্যবহার করে যারা নিজের শারীরিক-মানসিক ক্ষতি, পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্রের জন্যে বিড়ম্বনা-অমঙ্গল বয়ে আনছে তারা চরম মূখ-অপদাথ।যারা তার সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেনা, লাগানোর চেষ্টা করেনা কিংবা সময়-শ্রম-মেধাকে উপযুক্তভাবে ব্যবহার করার চিন্তাও করেনা তাদেরকে পরিপূণ মানুষ-স্বয়ংসম্পূণ-পূণাঙ্গ মানুষ বলে বিবেচনা করাটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।



লেখার সময়কাল: ১জুলাই ২০১৩ইং

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.