নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শ্রমিক শিশু, নিযাতিত শিশু ও অভিভাবকের নিরবতা

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:১০

মৃণাল সেন পরিচালিত মর্মস্পর্শী চলচ্চিত্র খারিজ (The Case is Closed) অনেকেই দেখেছেন। আজকের সময়ে সমাজের বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে এটিকে বুঝা জরুরী। মধ্যবিত্ত সমাজের নীতিবোধকে তুলে ধরা হয়েছে খারিজে। এটি রমাপদ চৌধুরীর উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি, যা ১৯৮২ সালে মুক্তি পেয়েছিল। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের অপ্রাপ্তবয়স্ক চাকর রান্নাঘরের ভিতরে রাত্রে রহস্যজনকভাবে মারা যায়।



পুলিশের তদন্ত এবং পোস্টমর্টেম থেকে জানা যায় যে রান্নাঘরের মধ্যে জ্বলন্ত কয়লা থেকে নির্গত কার্বন-মনোক্সাইড থেকে তার মৃত্যু হয়েছে। ঠান্ডার মধ্যে নিজেকে গরম রাখার জন্য ছেলেটি রান্নাঘরে কয়লা জ্বালিয়ে রেখেছিল। সুখী পরিবারটি হঠাৎ করেই একটি মনস্তাত্বিক আঘাতের মধ্যে পড়ে। অপরাধবোধ, পুলিশ কেস এবং লোকলজ্জার ভয়ে তারা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। তারা চেষ্টা করে যে করেই হোক ছেলেটির বাবাকে খুশি করতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কিছুই হয় না। ছেলেটির বাবা ছেলেটির শেষকার্যের পর চুপচাপ বিদায় নেয়। কিন্তু এই ঘটনা পরিবারটিকে সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত ও বিবেকের কাছে পরাজিত করে দেয় ।



মধ্যবিত্ত একটি বাড়ির কাজের ছেলের মৃত্যু নিয়ে ছবির কাহিনী। ‘খারিজে’ দেখা যায়, সে-বছর কলকাতায় প্রচন্ড শীত পড়েছিল, কাজের ছেলেটি ঘুমাত আরেক বাড়ির কাজের ছেলের সাথে নিচে সিঁড়ির পাশে। অত্যধিক শীতের কারণে সে দোতলায় যে বাড়িতে কাজ করতো সে বাড়ির রান্নাঘরে ঘুমাতে যায় এবং শীতের প্রকোপ কমানোর জন্যে গ্যাসের চুলো চালিয়ে রাখে, রান্নাঘরে ভেন্টিলেটর না থাকার কারণে সে নিঃশ্বাস আটকে মারা পড়ে। থানা পুলিশ মাস্তান অনেক কিছুর শেষে বাড়ির লোকেরা রেহাই পায়।



‘পালান’ নামের কাজের ছেলেটির লাশ পুড়িয়ে গ্রাম থেকে আসা তার বাবা ‘অদৃষ্টের দোষ’ মেনে নিয়ে আবার গ্রামে ফিরে যায়। ছেলের মৃত্যুর খবর দিয়ে হতদরিদ্র বাবাটিকে গ্রাম থেকে আনানো হয়েছিল। বাড়ির লোকেরা ভেবেছিল ক্ষতিপূরণ বাবদ কিছু হয়তো বাবাটি চাইবে কিংবা তারা কিছু বাবাটিকে দেবে। কিন্তু বাবাটি কোনো অভিযোগ না করে এবং কিছুই না চেয়ে বরং বাড়ির লোকদের মঙ্গল কামনা করে গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।



প্রতিবাদ না হলে কি আর অপরাধী পরিবারটির কোনো বোধোদয় ঘটে? তারা নিশ্চয় আবার একটি শিশুকে কাজের ছেলে হিসেবে বাড়িতে রেখেছিল এবং পূর্ব অভ্যাসবশতঃ একই রকম আচরণ করে গিয়েছিল তার সাথে। এদেশে শিশুশ্রম বিরোধী আইন ইত্যাদি বইপুস্তকে থাকলেও বাস্তবে তো নেই। তাছাড়া কাজের জন্য শিশু ছেলে মেয়ে পাওয়া অতি সহজ। এরা খায় কম। এদের কাপড় চোপড়ও কম লাগে। বেতনও দিতে হয় সামান্য। দূর গ্রামের হতদরিদ্র পিতা-মাতা তাদের সন্তানেরা যাতে পেট ভরে দুটো খেতে পায় এবং শক্ত ছাদের তলায় ঘুমাতে পারে এ আশায় বড় শহরে এদের পাঠায়। বেতন হলো বাড়তি পাওনা। আর এদের সাথে যে তথাকথিত বড়লোক, শহুরে ভদ্র! মানুষগুলি কেমন নির্মম ব্যবহার করে আদুরীই তার প্রমাণ। এরকম দৃষ্টান্ত মোটেই কম নয়।



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.