নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পিতামাতা প্রতিপালন আইন চাই

২৮ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:২৮

সন্তান বিচ্ছিন্ন প্রবীণ দম্পতি, একাকী বিধবা অথবা বিপত্নীকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া কোন সুস্থ সমাজের লক্ষণ হতে পারে না। কিন্তু দু:খজনকভাবে পারিবারিক বন্ধন ও শৃংখলা ভেঙ্গে পড়ায় বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিতে হচ্ছে প্রবীণদের। প্রবীণ-প্রবীণার ফ্ল্যাটে ডাকাতি হওয়া, গৃহপরিচারকের হাতে খুন হওয়া, বন্ধ বাড়িতে নি:সঙ্গ বৃদ্ধ কিংবা বৃদ্ধার লাশ পাওয়া যাওয়ার মর্মন্তুদ কাহিনী প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে।

বৃদ্ধাশ্রম নিজের পরিবারের সান্নিধ্য না পাওয়ায় বৃদ্ধ বয়সে মানুষ সীমাহীন একাকিত্বে ভূগেন। তার সন্তান, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে একত্রে থাকার ইচ্ছে পূরণ হয় না। ফলে এই সময়টাতে প্রবল মানসিক যন্ত্রণা আর ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আবেগ-আপ্লুত হয়ে ওঠেন তারা। বিভিন্ন উৎসবে, যেমন ঈদের দিনেও যখন তারা তাদের সন্তানদের কাছে পান না। সন্তানের কাছ থেকে একটি ফোনও পান না। তখন অনেকেই নীরবে অশ্রুপাত করেন আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। বিশেষ দিনগুলোতে হতাশা আর শূন্যতা নিয়ে সন্তানের স্মৃতি হাতড়ে বেড়ান তারা।

বৃদ্ধ বয়সের বাবা মাদের জন্য সুন্দর জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরি করাই সন্তানেরই কর্তব্য। সন্তান দায়িত্বশীল ও আন্তরিক হলে পিতা-মাতার ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম হয় না। প্রত্যেক বাবা-মা’র জন্য তৈরি করতে হবে একটি নিরাপদ ও সুন্দর পৃথিবী তৈরি খুব কঠিন নয়। বাবা-মা’র শুধু চায় শেষ বয়সে আদরের সন্তানদের পাশে থাকতে। তাদের সুখ-দুঃখের সাথী হতে। এই ছোট আশা নিয়েই তারা মৃত্যুর প্রহর গুণতে থাকেন। কিন্তু অনেকেরই সেই সন্তানের কাছে আশ্রয়টুকুও মেলে না।

যেসব সন্তানেরা বাবা মাকে পুরনো আসবাবের মতো অপ্রয়োজনীয় মনে করে তাদের ঠাঁই হয় ‘প্রবীণ নিবাসে’। এখানেও বাবা মা ডাক শোনার জন্যে তাদের ব্যাকুলতা কাজ করে। ছেলেমেয়ে, পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনির সঙ্গে আনন্দে সময় কাটাতে না পেরে কেঁদে কেঁদে একাকি দিন অতিবাহিত করেন। শুধু বৃদ্ধাশ্রমে নয়, এই সমাজের রাস্তা-ঘাটেও থাকেন অসংখ্য মা। যাদের সন্তানরা মাতৃত্বের বাঁধন ছিন্ন করেছেন। মমতাময়ী মায়ের আদর-ভালোবাসা ভুলে গেছেন।

দিন দিন বাংলাদেশের মতো যৌথ পরিবারকেন্দ্রিক দেশগুলোতেও মা-বাবার প্রতি টান এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে- শেষ বয়সে যখন সন্তানের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি, তখনই তাঁদের যেতে হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। সইতে হচ্ছে মানসিক যন্ত্রণা।বর্তমানে বাংলাদেশে বৃদ্ধাশ্রম আছে প্রায় ৫৫টির মতো। ২০০৯ সালে সরকার প্রতিটি বিভাগে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সিদ্ধান্তের পূর্ণ বাস্তবায়ন এখনও হয়নি।

আমাদের সবার উচিৎ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা। যেসব সন্তান পিতামাতাকে দেখে না তাদের জন্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে এমন কঠোর আইন প্রণয়ন করা দরকার যাতে বাবা মার দেখাশোনা করতে বাধ্য হয়। সরকার একদিকে বৃদ্ধাশ্রম বাড়াবে, অন্যদিকে বাবা মা প্রতিপালনে আইন প্রণয়ন করে সন্তানদেরকে এব্যাপারে সচেতন করবে। আমরা চাই পিতামাতা প্রতিপালন আইন এবং এই ব্যাপারে সামাজিক সচেতনতা। প্রবীণদের জন্যে নিরাপদ ও আনন্দময় বাসস্থান নিশ্চিত করতে চাই সম্মিলিত প্রয়াস।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.