নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ঋণের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৮


প্রত্যেক মানুষই অফুরন্ত সম্ভাবনাময়। ন্যূনতম প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জিত হলেই কেবল এই সম্ভাবনার বিকাশ সম্ভবপর হয়। যখন ব্যক্তির জ্ঞানগত মাত্রা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে,ব্যক্তি অর্জিত জ্ঞান ব্যবহার করে সম্মানজনক জীবিকা ও মানসম্মত জীবন যাপন নিশ্চিত করতে পারে-তখনই বুঝতে হবে তার জ্ঞানগত অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ন্যূনতম জ্ঞান বলতে আমি অতটুকু দক্ষতা অর্জন বুঝাচ্ছি, যতটুকু ব্যক্তির যাপিত জীবনকে উপভোগ্য এবং জীবিকা আহরণটাকে সহজতর করে। জ্ঞানগত স্তরে তুলনামূলক উচ্চসীমায় পৌঁছানোর মাধ্যমে বিশেষ পারদর্শীতা লাভ হয়, যা সম্মান-মর্যাদা-শ্রেষ্টত্ব প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকা রাখে। তবে মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি মানুষের মতো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার জন্য যে কান্ডজ্ঞান ও বুদ্ধি দরকার তা’ অবশ্যই নিশ্চিত হওয়া দরকার।

আপনার পকেটে টাকা আছে কিন্তু বাজারে চাল সরবরাহ নেই কিংবা বাজারে চাল আছে কিন্তু পকেটে টাকা নেই- দু’টোই যেমন অস্বাভাবিক অবস্থা; তেমনি যদি কারো অনেকগুলো সনদপত্র থাকে, ডিগ্রি থাকে কিন্তু চাকরি বা আয়-রোজগারের সুযোগ-সুবিধা না থাকে তবে সেটিও ভারসাম্যহীন অবস্থা। আসলে স্বাভাবিক জীবনের জন্য অস্বাভাবিক পরিবেশ কাম্য হতে পারে না। তখনই জীবন অর্থপূর্ণ যখন জীবনের অস্তিত্ব কাঙ্ক্ষিত ও আনন্দদায়ক। মনে করুন, আপনার খাবার টেবিলে অনেক খাবার আইটেম আছে কিন্তু শারীরিক অক্ষমতার জন্য বা ডাক্তারের বিধি-নিশেধের কারণে আপনি খেতে সামর্থ্যহীন হয়েছেন। আপনার সাধ পূরণে অর্থনৈতিক সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও দৈহিক দুর্বলতা বা রোগাক্রান্ত অবস্থার কারণে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারছেন না। এখানে দক্ষতার সাথে প্রয়োজন পূরণের উপায়-উপকরণের যথার্থ ব্যবহারের সামর্থ্যই বেশি মূল্যবান হয়ে ওঠে।

আপনার কি আছে কি নেই এই জিজ্ঞাসার চেয়ে মোটেও কম গুরুত্বপূর্ণ নয় আপনার যা আছে তার যথার্থ ব্যবহার আপনি করতে পারছেন কি-না। একজন ঋণ নেয়ার পর অদক্ষতার কারণে, জ্ঞানের অভাবে বা প্রশিক্ষণের ঘাটতি থাকায় যদি উপযুক্ত ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে না পারে তাহলে সে আরো বেশি বিপদগ্রস্ত হবে। তাই আগে ঋণ না দিয়ে প্রশিক্ষণ দিন, প্রয়োজনীয় জ্ঞান সরবরাহ করুন। একজন অশিক্ষিত ও মূর্খ মানুষের হাতে দামি কলম দিয়েও যেমন লাভ নেই, একজন বোবার হাতে যেমন মাইক্রোফোন ধরিয়ে দিলেও লাভ হবে না; তেমনি কোনো টেকসই পথ-পদ্ধতি বের না করেই ঋণদান করলে তা দারিদ্র্য নিরসনের সঠিক উপায় বলে বিবেচিত হবে না। কাউকে যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য-দক্ষ করে গড়ে তোলা যায় তবে শিক্ষিত জ্ঞানী মানুষটি নিজেই নিজের প্রযোজন মেটানোর পথ-পদ্ধতি বের করে নিতে পারবে।

তখনই মানুষ তার মানবিক মর্যাদা নিয়ে বেঁচে আছে বলা যাবে যখন সমাজের কাছ থেকে সে ন্যায্য আচরণ পাবে। মানুষের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন যাপন নিশ্চিত না হলে সমাজে-রাষ্ট্রে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ বিরাজ করছে বলা যাবে না। কারণ প্রত্যেকটি ব্যক্তিই এই জগতের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই কাউকে অযৌক্তিক বিড়ম্ভনা বা বিরক্তিকর বাধ্যবাধকতায় রেখে সবকিছু সুন্দরভাবে চলছে- এটা বলা যাবে না। স্বাধীনতা মানেই হচ্ছে সামর্থ্যের উন্নয়ন বা সক্ষমতা অর্জন। আপনি যদি বলেন- ‘আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে রক্ত দিয়েছি, পঙ্গুত্ব বরণ করেছি। এখন আমি পাঁচ তারকা হোটেলে থাকবো, হেলিকপ্টারে চড়ে ঘুরবো।’ আপনার পরিচিতি দেশপ্রেম-মানবপ্রেমের প্রমাণ দেবে, কিন্তু অর্থনৈতিক সামর্থ্য না থাকলে আপনার বস্তুগত বা জাগতিক চাওয়া-পাওয়া পূরণ হবে না। তাই স্বাধীন মানচিত্র, স্বাধীন পতাকা ও স্বাধীন দেশের নাগরিক হওয়াটাই সবকিছু নয়।

স্বাধীনতা তখনই পরিপূর্ণভাবে অর্থবহ হয়- ১.যখন ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সামর্থ্য অর্জিত হয়। ২.অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ও রাজনৈতিক সচেতনতা লাভ হয়। ৩.মতামত প্রকাশ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অর্জিত হয়। ৪.ব্যক্তির অস্তিত্ব, টিকে থাকার প্রক্রিয়াটা সম্মানজনক হয়। ৫.জ্ঞানগত যোগ্যতা ও সম্ভাবনার বিকাশটা গ্রহণযোগ্য হয়। ৬.সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা লাভ হয়। ৭.কোনো অযৌক্তিক বাধ্যবাধকতা বা অযাচিত হস্তক্ষেপের বিড়ম্বনা না থাকে। স্বাধীনতার মানে আপনি যা ইচ্ছে তা করবেন যেমনিভাবে এমনটি নয়, তেমনিভাবে স্বাধীনতার নামে অন্য কোনো শক্তি আপনাকে নিয়ে যা ইচ্ছে তা’ করবে এমনটিও নয়। অর্থাৎ স্বাধীনতার মানে নিজেকে ততটুকুই স্বাধীনতা প্রদান, অন্যের ওপর কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতায় ততটুকুই নিয়ন্ত্রণ আরোপ। বল্গাহীন স্বাধীনতা প্রকৃত পক্ষে নীতিবর্জিত বাস্তবতাকেই স্বাগতম জানায়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৮

চাঁদগাজী বলেছেন:

শিক্ষা সম্পর্কিত আপনার সব উপলদ্ধি সঠিক।

নীচের বাক্যটি আপনি না বুঝা লিখেছেন; কোন মুক্তিযোদ্ধা নিজের জন্য যুদ্ধ করেননি, নিজের জন্য কিছু চাহেননি; কিন্তু স্বাধীনতায় যাদের অবদান নেই, যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্হান নিয়েছিল, তারা দেশ চালনা করতে গিয়ে দেশকে ভুল পথে নিয়েছে; ফলে, সব মানুষের সাথে, মুক্তিযোদ্ধারা ভুগছে।

নীচের বাক্যটি যোগ করা ভুল,
" আপনি যদি বলেন- ‘আমি দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে রক্ত দিয়েছি, পঙ্গুত্ব বরণ করেছি। এখন আমি পাঁচ তারকা হোটেলে থাকবো, হেলিকপ্টারে চড়ে ঘুরবো।’"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.