নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিচ্ছুক নাম প্রকাশে

আমি অতি সাধারণ মানুষ। সাতে পাঁচে নাই...খাই দাই ঘুমাই। লিখতে চেষ্টা করি। লেখা আমাকে ধরা দেয় না

অনিচ্ছুক নাম প্রকাশে › বিস্তারিত পোস্টঃ

অন্ধকার ভারত: আশরাফী দেবী বেচে আছেন এই স্বীকৃতির জন্য তার ২৪ বছর সংগ্রাম

৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:২৭

ঐশ্বরিয়া-দীপিকাদের কোমড়ের ঘূর্ণিতে বেসামাল তামাম দুনিয়ার বেটা-বেটিরা। রুপালী পর্দার আলোক ঝলকানিতে কত পুরুষই যে অন্ধ হয়েছে তার হিসাব মেলানো মুশকিল। সেলুলয়েড দাবি করে ভারতের নারী শক্তিশালী, সুন্দরী, সম অধিকারভোগী। কিন্তু এর উল্টো দিকে যে একটা অন্ধকার ভারত আছে তা কয় জন জানে? রন্ধে রন্ধে দুনীতি, ধর্ষণের শিকার নারীদের যন্ত্রণা, দ্বারে দ্বারে ঘুরেও চরম পুরুষতান্ত্রিক ভারতীয় সমাজে নরীর বিচার না পাওয়া ও বিভিন্নভাবে বঞ্চিত নারীদের কথা কী জিটিভি, জিসিনেমা ও স্টার জলশায় দেথায়? যারা স্টার জলশা বা জলসা মুভিজে ভারতীয় গৃহবধূদের দিনরাত কড়া মেকআপে দেখে ঈর্ষা করেন তাদের আরো কিছু দেখার চাহিদা থাকলেও দেখতে দেয়া হয় না। যদি দেখানো হত তাহলে দেখা যেত ওখানে বাস্তবতার ব ও নেই। ......দেখুন এক আশরাফীর ভাগ্যে কী ঘটেছে।



১৯৬০ সাল। আশরাফী দেবী নামে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর বিয়ে হচ্ছে।লাল শাড়ি পড়েছে শিশুটি। সারা বাড়ি সাজানো হয়েছে লাল নীল কাগজ কেটে। বাড়ির বাইরে মাইকে বাজানো হচ্ছে হিন্দি গান। লোকজন এসেছে নেমন্ত্রণ খেতে। সারা বাড়িতে আনন্দ- হাসি।

আশরাফীর বর কৃষক। বাড়ি বিহারে। তার বাবা-মা-ই এ্‌ই বিয়ে ঠিক করেছেন। ছোট্ট আশরাফী জানত না তার স্বামী তার জন্য কত চমক উপহার হিসেবে রেখেছেন। বিয়ের পর আশরাফী জানতে পারে তার জামাই বিয়েতে সিদ্ধহস্ত। এ সংক্রান্ত শুভকাজ তিনি এর আগে একবার সম্পাদন করেন। যদিও সতীনকে দেখার সৌভাগ্য তার হয়নি, কারণ সেই সতীন তাদের বিয়ের আগেই মারা গেছেন।

আশরাফীর বয়স যখন ১৯, তখন সে একটি কণ্যা সন্তান জন্ম দেন্। এর পর শুরু হয় তার স্বামীর শারীরিক ও মানসিক নিযার্তন। এভাবে চার বছর কেটে গেল। পরে আশরাফীর স্বামী তাকে ও কন্যাকে ত্যাগ করেন। আশরাফী মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হন।

এভাবেই কষ্টে দিন কাটত লাগল মা মেয়ের। দিন যায় আশরাফীর মেয়ে বিমলা বড় হয়। মেয়েকে ফেরি করে সবজি বেচে আছেন এমন এক পাত্রের কাছে বিয়ে দেন আশরাফী। বিমলার নানা এবং মামা তার বিয়েতে খরচ দেন।

দুযোর্গ যেন আশরাফীর পিছু ছাড়ছে না। সম্পত্তিতে যাতে ভাগ না বসাতে পারে সেজন্য তার গুণধর জামাই রাম জনম ঘোষণা দিলেন আশরাফি মারা গেছেন। আশরাফীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল যখন তার স্বামী মশাই তার ডেড সার্টিফিকেট পযর্ন্ত ম্যানেজ করে ফলেলন। এর পর তিনি তার তিন নম্বর শুভ বিবাহওটা সেরে ফেলেন। ওই ডেড সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয় ১৯৮৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। তার তখন ৪০ বছর বয়স।

আশরাফী দেবী যে জীবিত এটা প্রমাণে থানা পুলিশ, রাজনীতিক ,স্থানীয় গণমাণ্য ব্যাক্তি এমনকি আদালতের শরাণাপন্ন হন। কিন্তু কেউ বিষয়টির সুরাহা করেনি।

মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে সাথে নিয়ে তিনি তার অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয় চালিয়ে যতে থাকেন। কোন কিছুতেই যখন কাজ হচ্ছে না, তিনি তখন তার সেই স্বামীর বাড়ির কাছে গিয়ে দাবি তুলেন।

আশরাফির ভাষায়, ১৯৯৩-৯৪ সালে স্বামী রাম জনম সিংহ আমাকে মিথ্যা চুরির দায়ে জেল খাটান। আমাকে মৃত ঘোষণা দেয়ার পর তিনি তার সব সম্পত্তি তৃতীয় স্ত্রীর নামে লেখে দেন।

গ্রামীণ ভারতে বেশিরভাগ ক্ষেত্র বিয়ে নিবন্ধন করা হয় না। অন্য মহিলাদের মত আশরাফী দেবীর কাছেও বিয়ের কোন প্রমাণ পত্র ছিল না।



দীর্ঘ ২৪ বছর এখানে সেখানে ঘুরে আশরাফী গ্রাম্য পঞ্চায়েতে একটি নালিশ করেন। পরে পঞ্চায়েত এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তি, পুলিশ ও বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের ডেকে আনেন। গ্রামবাসীর বক্তব্য, বাদীর অভিয়োগ ও সব পক্ষের কথা শুনে পঞ্চায়েত এই রায় দেন আশরাফী জীবিত।

২০১২ সালের মে মাসে ৬৪ বছর বয়সে আশরাফী এই রায় পান। এই রায়ের জন্য তাকে ২৪ বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়েছে। এই রায়ের পরও তিনি তার স্বামীর কাছে স্ত্রীর মর্যাদা পাননি।

পরে সাংবাদিকরা রাম জনম সিংহের কাছে গেলে তিনি বলেন, আশরাফী দেবী ১৯৮৮ সালে মারা গেছনে। আমি জানি না কেন এই মহিলা নিজেকে আমার স্ত্রী দাবি করছে । তাকেই জিজ্ঞেস করুন কেন তিনি এটা করছে।





লিংকে যান

Indian woman's 24-year fight to prove she is alive

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.