নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিচ্ছুক নাম প্রকাশে

আমি অতি সাধারণ মানুষ। সাতে পাঁচে নাই...খাই দাই ঘুমাই। লিখতে চেষ্টা করি। লেখা আমাকে ধরা দেয় না

অনিচ্ছুক নাম প্রকাশে › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাবিথ-আনিসুল, আব্বাস-সাঈদরা ভাই ভাই , তাদের কাছ থেকে আমাদের পাওয়ার কিছু নাই

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৯

ঢাকার দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ভোট ডাকাতি, ভোটারদের ভোট দিতে না দেয়া, সাংবাদিকদের মারধর, পুলিশ ও প্রশাসনের লেজুড়বৃত্তি, ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের গুন্ডামি, সিইসি রকিবউদ্দিনের মিথ্যাচার-বেহায়াপনায় আমি মোটেও বিস্মিত নই। আবার বিএনপি জোটের ছেলেমানুষী রাজনীতি, দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে রাজনৈতিক নোংরামি, তাদের আজগুবি-কাল্পনিক অভিযোগ, সাধারণ নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা ও এদেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা নিয়েও আমি চিন্তিত নই।
আমার চিন্তা আমাকে নিয়ে, আমার পরিবারকে নিয়ে আমার কর্মস্থল ও বাঁচার জায়গা ঢাকাকে নিয়ে। যে ঢাকা আমাকে, আমাদেরকে বাঁচিয়ে রেখেছে সেই ঢাকাকে নিয়েই আমার যত চিন্তা। যে ঢাকাকে নিয়ে এত রাজনীতি এত মিথ্যা কথার ফুলঝুড়ি সেই ঢাকার অবস্থার পরিবর্তন হবে না বলেই আমি চিন্তিত, আমার কষ্ট।
গত এক মাস ধরে এই ঢাকার সেবক হওয়ার জন্য মিথ্যাচার, ভন্ডামি, অপচয় ও মিথ্যা আশ্বাসের নগ্ন প্রতিযোগিতা চলল। যারা করলেন, এদের কেউ কী আমাদের সত্যিকার সেবক হওয়ার যোগ্য? তারা কি সত্যিই সাধারণ মানুষের সেবক হতে চেয়েছিলেন?
সবাই বলছে এমন ভোট ডাকাতি নাকি আগে কখনো হয়নি, এমন কারচুপি নাকি বাংলাদেশের মানুষ আগে দেখেনি। এমন অভিনব নাটক এর আগে নাকি মঞ্চস্থ হয়নি। আমি বলি ভালইতো, যা আগে দেখা যায়নি, কেউ কখনো দেখেনি তা সবাই মিলে দেখে ফেললাম। যা হোক একটা আফসোস তো গেল।
এই যে আনিসুল হক, আ.জ.ম নাছির ও সাঈদ খোকন মেয়র হলেন আর তাবিথ আউয়াল, মনজুর আলম ও মির্জা আব্বাস হতে পারলেন না, তাতে পরিস্থিতির কী পরিবর্তন হলো? দেশ ও জাতির কি লাভ-লোকসান হলো?
তাবিথ আউয়াল মেয়র হলে কী বনানীর যানজট উধাও হয়ে যেতো? তুরাগ নদে দখল ও দূষণ বন্ধ হতো? উত্তরের মানুষেরা কী কোপেনহেগেনের নাগরিক সুবিধা পেয়ে যেতেন?
মনজুর মেয়র হলে কী সুপারম্যানের মতো রাতারাতি চট্টগ্রামের জলাবন্ধতা দূর করে দিতেন? চট্টগ্রামকে সত্যিকার অর্থে যানজট মুক্ত ও হেলদি সিটি করতে পারতেন?
কিংবা মির্জা আব্বাস মেয়র হলেই কী মতিঝিল, কামরাঙীরচর বদলে যেত? রাজধানী সন্¿াস, মাদকমুক্ত কিংবা পরিচ্ছন্ন নগরী হতো?
আর যারা ‘নির্বাচিত’ হলেন তারাই কি সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারবেন? তারা কি যানজট ও দূষণমুক্ত ঈর্ষণীয় বাসযোগ্য নগরী আমাদের উপহার দিতে পারবেন ? তারা মঞ্চে যে ডায়লগ দিয়েছেন, সেই ডায়লগ কি বাস্তব রূপ পাবে? আমি বিশ্বাস করতে চাই তারা তাদের ওয়াদা রাখবেন, তাদের মান রাখবেন। কিন্তু আমার বিশ্বাস যে বালু বাধের মতো অচিরেই ভেঙে যাবে তাও তো আমি জানি।
বাসা থেকে অফিস যেতে আমার দেড় ঘন্টা লাগবেই, পাবলিক বাসে লটকে লটকে আমাকে যাতায়ত করতে হবে। আমি হকারমুক্ত কোন ফুটপাতে ইচ্ছামতো হাটতে পারবো না। ওয়াসার পানি দিয়ে গোসলের পর আমার শরীর চুলকাবেই। ঘনঘন লোডশেডিংয়ে ঘেমে অসুস্থ হয়ে যাবে আমার মেয়ে। মশা বাবাজিরা আমাকে মনে করিয়ে দেবে বাছা তুমি ঢাকার বাসিন্দাই। আমার মেয়ে এই শহরে খেলতে পারবে না কোনদিনই, পারবে না সবুজ ঘাসে হাঁটতে। আমার মেয়ে পারবে না কোনদিনই বুক ভরে তাজা বাতাস নিতে। ভূমিকম্প হলে মৃত্যু আতংকে লুঙ্গি পরে আমার মেয়েকে বুকে নিয়েই আমাকে পাঁচ তলা থেকে নিচে নামতে হবে। তাই আমার কাছে তাবিথ- আনিসুল, আব্বাস- খোকন একই ব্যক্তি।
তারাতো আসলে একই মানুষ। তারাতো একই দেশে গিয়ে চিকিত্সা নেয়। ওরা একই মার্কেট থেকে শপিং করে। ওরা একই হোটেলে একই টেবিলে বসে খায়।
এই ‘জয়’ আনিসুল, নাছির ও সাঈদ খোকনকে বৈধভাবে অনিয়ম করার লাইসেন্স দিয়েছে। কয়েক বছর পর কাগজে বের হবে তাদের সম্পদ বেড়েছে কয়েকশ’ গুণ।
তাবিথ আউয়াল, মনজুর আলম ও মির্জা আব্বাসদেরও তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। মনজুর ও তাবিথ আউয়াল তাদের পারিবারিক ব্যবসা দেখবেন। মির্জা আব্বাস ঢাকা নিয়ে তার রাজনীতি চালাতেই থাকবেন।
যা ক্ষতি হলো আমার, আমাদের। আমাদের স্বপ্ন ও আশা ভেঙ্গে গেল। অবশ্য আমাদের স্বপ্ন ভাঙলেই বা কার কী?
তবে ক্ষতি শুধু আমাদের একারই হয়নি। ক্ষতি হল আমাদের প্রধানমন্¿ী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার। ক্ষতি হয়েছে পুলিশ ও প্রশাসনের। এই মানুষ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আমাদের নড়বড়ে বিশ্বাস ও আস্থা আরো একটু কমে গেলে। যদিও তাতে তাদের কিছুই যায় আসে না।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি শেখ হাসিনার মত প্রবল ব্যক্তিত্বের মানুষ, তার নেতাকর্মীদের ভোট ডাকাতি করার নির্দেশনা কখনই দেননি। আমার বিশ্বাস উনার দলের কিছু অতি উত্সাহী নীতি নির্ধারকদের কারণেই ভোট নিয়ে এসব ঘটনা ঘটেছে।
এটা আবারো প্রতিষ্ঠিত হলো বিএনপি আসলে কোন রাজনৈতিক দলের জাতই না। ৫ জানুয়ারির অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে নির্বাচিত মেয়রদের জেলে ঢোকানোর ঘটনারও পরও তারা কোন আক্কেলে নির্বাচনে গেল? অবশ্য যে দলে শিমুল বিশ্বাসদের মতো কর্মচারী পার্টির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় সে দলের কাছ থেকে পরাজয় আর অভিযোগ ছাড়া আর কীই বা আশা করা যায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.