নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অন্তনীল

হাবিবুর অন্তনীল

সাধারণ মানুষ

হাবিবুর অন্তনীল › বিস্তারিত পোস্টঃ

(ছোটগল্প): কিছুকথা মনেই থাকে

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৪


বছর দুই হলো ঘুমের ঔষুধ ছাড়া রঞ্জনের ঘুম হয় না ৷ দিনের বেলায় বাছাধন কি করে, কেউ ঠিকঠাক বলা তো দুরের কথা আন্দাজও করতে পারে না ৷ দশম শ্রেনি পর্যন্ত পড়েছে সে, পরিবারের একটি মাত্র সন্তান, বাবার অঢেল সম্পত্তি তাই পড়ার জন্য কেউ তাকে চাপাচাপি করে নি ৷
ছাত্র বেশ ভালো ছিল, সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহারও করত, এলাকায় বেশ সুনামও আছে তার ৷
এমন একটি সোনার ছেলে, আজ তার কি হাল !
'
শরীফ বাড়ির সামনে একটি বাধাই করা ঘাট আছে, পুকুর পাড়ে কিছু নারিকেল গাছও আছে ৷
পুকুরের পানি খুবই নোংরা ও গন্ধ, খাবার সন্ধানী হাসের দল ছাড়া পুকুর ত্রি-সীমানায় কেউ যায় না ৷ রঞ্জন দিনের বেশি সময় এখানেই কাঁটায় ৷
'
উঠন্ত বয়সের ছেলেদের বাবা মায়েরা তাদেরকে রঞ্জনের সাথে মেলামেশা করতে বারন করে,
তাদের ধারনা রঞ্জন একটা নেশাখোর মাতাল তার সাথে সঙ্গ দিলে তাদের সন্তানেরা নষ্ট হয়ে যাবে নেশা করা শিখে যাবে ৷
বড় আশ্চর্য লাগে !
দুই তিন বছর আগেও এই বাবা মায়েরা তাদের ছেলেদের বলত, রঞ্জনের সাথে মিশবে ওর মত ছেলে হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি ৷
'
"এই ছেলে তুমি আর এখানে আসবা না, তোমাকে তো এর আগেও কয়েক বার নিষেধ
করেছি" ৷ রঞ্জন, হুমায়ুন শরীফের কথার কোন জবাব না দিয়ে তার মুখের দিকে একটি বার থাকায়, তারপর সেখান থেকে উঠে যায় ৷
মুখে যাদের বসন্তের দাগ, তারা বোধহয় একটু খাচ্চর টাইপের হয় ৷ সেটা হুমায়ুন শরীফকে দেখে বোঝা যায় ৷
'
মুনিয়াদের বাড়তে, থেমে থেমে আতস বাজি ফুঁটাচ্ছে ছোট্ট ছেলেমেয়েরা ৷ দুই দিন পর মুনিয়ার বিবাহ ৷
ওর যেদিন গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান ছিল, রঞ্জন সেদিন একটার বদলে গুনে গুনে চারটি ঘুমের ঔষুধ খেয়েছিল ৷ এমনিতেই দুর্বল শরীর তার উপর চারটি ডিসিপিন ২ ট্যাবলেট, যা হবার তাই হয়েছিল হাসপাতালে ছিল এক দিন ৷ এখন একটু সুস্থ আছে, ডাক্তার ওকে রেষ্টে থাকতে বলেছে সাথে এটাও হুশিয়ার করে দিয়েছে বেশি চিন্তা করলে বড় ধরনের রোগ হতে পারে ৷
'
মুনিয়ার সাথে রঞ্জনের প্রথম দেখা হয়েছিল প্রায় চার বছর আগে ৷ একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহিদ মিনারে তাজা বকুল ফুলের মালা দেওয়ার জন্য, মুনিয়া শরীফদের পুকুরের সামনে যে বাগানটা আছে সেখানে ফুল কুড়াতে এসেছিল ৷
সেখানেই রঞ্জন ওকে প্রথম দেখে মনে মনে ভালোবেসে ফেলে ৷
পৃথিবীতে অনেক কম পুরুষই আছে যারা নিজের প্রেমের কথা সরাসরি নিজে বলতে পারে ৷ রঞ্জন সেই কম দলেরই একজন ৷ তার এক বন্ধুকে দিয়ে মুনিয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়, সাথে চিঠি ও একটি গোলাপ ফুলও পাঠায় ৷
মুনিয়া চিঠিটাকে না পড়েই ছিড়ে ফেলে, ফুলটাকে পায়ের তলে পিষে দেয় সঙ্গে দেয় রঞ্জনের জন্য মুখ ভরা অপমান ৷
সে দিনের পরেও রঞ্জন ওর কাছ থেকে অনেক লাঞ্ছিত হয়েছে, তবুও বেচারা একার্থক ভাবে ভালোবেসেছে মুনিয়াকে ৷
শত অপমানের পরেও তার অন্তরে মুনিয়ার জন্য তীল পরিমানও ঘৃনা জন্মায় নি ৷ প্রেম এইভাবে রঞ্জনের সাথে লুকোচুরি খেলবে এটা সে মেনে নিতে চায় নি, তাইতো একদিন সব ভয়কে উপেক্ষা করে শেষ বোঝাপড়ার করতে স্কুল গেটের সামনে মুনিয়ার পথ আটকে দাড়ায় রঞ্জন ৷
মুনিয়ার মুখ থেকে ফাইনাল কথাটি শুনতে চায়, এমন সময় মুনিয়ার কিছু বান্ধবী রঞ্জনের এই ক্ষিপ্ততা দেখে হেডমাষ্টারকে তৎক্ষণাৎ বিচার দেয় ৷ স্কুলের সুনাম রক্ষার্থে রঞ্জনকে টি. সি দিয়ে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় ৷ তখন থেকে পড়ালেখা বন্ধ হয় ওর ৷
'
আজ মুনিয়ার বিয়ে, আজও বাজি ফুটছে বিয়ে বাড়িতে ৷ রঞ্জন, মুনিয়াকে শেষ দেখা দেখার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে আছে ৷
হটাৎ একটা এ্যাম্বুলেন্স এসে রঞ্জনের কাছে ব্রেক করল !
"আচ্ছা ভাই বিয়ে বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটা কোন দিকে" ?
ড্রাইভারকে রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে রঞ্জন ভিষন চিন্তায় পড়ে গেল, ওদের বাড়েতে এ্যাম্বুলেন্স যাবে কেন? তাহলে কি কারো কোন বিপদ হয়েছে ৷ বাজি ফোটানোর শব্দটাও তো আর শোনা যাচ্ছে না ....
'
পরের দিন লোকমুখে শোনা গেল, মুনিয়া নিজেই ইচ্ছে করে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল ৷
সে রঞ্জন কে ভিষন ভাবে চাইতো কিন্তু বলতে পারেনি কোনদিন ৷
ভেবেছিল রঞ্জনের সামনে এস.এস.সি পরিক্ষা, এমন সময়ে যদি সর্ম্পকে জড়িয়ে যায় রঞ্জনের রেজাল্ট খারাপ হবে, কিন্তু নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তারই কারনে রঞ্জনের পড়ালেখা ধংশ হয়ে যায় ৷
যেই ছেলেটির সাথে মুনিয়ার বিয়ে হয়েছিল সেটা ভেঙে গেছে ৷ মুনিয়ার শরীর খানিকটা পুড়ে গেছে ৷
মুনিয়ার আত্মবিশ্বাস আছে রঞ্জন তাকে এখোনো চায় ৷

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০২

গেম চেঞ্জার বলেছেন: কি বিধ্বংসী প্রেম কাহিনী রে ভাই ??

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১০

হাবিবুর অন্তনীল বলেছেন: হুমমম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.