নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি সর্বাঙ্গীন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আত্মকাহিনী

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:১৩

গণতন্ত্র একটি অতি বিদঘুটে পদ্ধতি। এখানে ইলিশমাছের যা দাম কচু ঘেঁচু মূলারও একই দাম। আচ্ছা, বলুন দেখি একজন ব্যারিস্টার কি ডক্টর বা চাটার্ড একাউন্ট্যান্ট এর ভোটের যা মূল্য একই মূল্য কি একজন রিকসাওয়ালা কি ভিক্ষুকের হওয়া উচিত? এফবিসিসিআই এর সভাপতির যে এক ভোট, ডুলার চরের আলু বেপারিরও সেই এক ভোট। এটা কি কোন বুদ্ধিবৃত্তিক যুক্তিসঙ্গত কোন পন্থা হল?


গণতান্ত্রিক পন্থার এইযে দূর্বলতা এ নিয়ে অনেক মনিষী, দার্শনিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরাও চিন্তিত ছিলেন। কিন্তু কেউ সত্যিকারের কোন সমাধান দিতে পারেননি। যে সমস্যার কোন তাত্তিক সমাধান আজ পর্যন্ত আসেনি সেই সমস্যার খুবই সুন্দর সমাধান পাওয়া গেল আটাশে এপ্রিলের নির্বাচনে। আমাদের নিবেদিত ভোটকর্মীরা অত্যন্ত সুন্দরও সুচারু রূপে সে দায়িত্ব পালন করেছেন। তবুও বিরোধীপক্ষ চিৎকার চেঁচামেচি করছে ভোট সুষ্ঠ হয় নাই, নিরপেক্ষ হয় নাই। আজ পর্যন্ত কোন হারু পক্ষ নির্বাচনকে সুষ্ঠ বলেছে এই নজির বাংলাদেশে নাই। সুতরাং হারু পক্ষের কথায় কান দেয়ার কোন মানে দেখি না। সুতরাং হারু পক্ষের কথায় না গিয়ে আমরা বরং দেখি কিভাবে এই এরকম সুন্দর, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হল; ভবিষ্যতে এই নির্বাচনের শিক্ষা কিভাবে কাজে লাগানো যাবে সে বিষয়ে বরং আমাদের মনোনিবেশ করা দরকার।

বড় বড় নির্বাচনগুলোতে মারামারি, ধাওয়া-পালটা ধাওয়া, জখম, খুনাখুনি অল্প বিস্তর হয়েই থাকে। এমন কি আমাদের পার্শ্ববর্তী গণতান্ত্রিক দেশ ভারতেও এই ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু গতকালের নির্বাচনে সেধরনের কিছু ঘটে নাই। একটা মাত্র ছবি দেখেছি একজন মহিলা এজেন্টের নাক ফাটিয়ে দেয়া হয়েছে। যত বড় নির্বাচন তার তুলনায় অতি নগণ্য। বিভিন্ন জায়গায় যেসব সহিংস ঘটনা ঘটেছে তাকে ফ্রেন্ডলি ফায়ার বলা যায়। বিরোধী পক্ষ যেহেতু ছিল না, তাই নিজেরা নিজেরা একটু রিহার্সেল দিচ্ছিলেন। না দিয়েই বা করবেন বলুন, সবাই তো প্রস্তুতি নিয়েই এসেছিলেন এখন যাদের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে আসা তাদের কাউকে যদি হাতের নাগালে না পাওয়া যায় তাহলে কি করা যাবে? মনজুর, তাবিথ আর আব্বাসের কর্মীরা তো সব ভয়েই পালিয়েছে। এরকম ভীতুর ডিম কর্মী নিয়ে যারা নির্বাচন করতে আসে তাদেরকে এভাবেই শিক্ষা দিতে হয়। গতকাল ছুটি পেয়ে অনেকেই সারাদিন ঘুমিয়ে কাটিয়েছেন, নানা ধরনের আশংকায় তারা ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নিরাপদ মনে করেন নি। তাঁরা আসলে স্বার্থপর লোক। দেশের চেয়ে নিজেকে বেশি গুরত্ব দিয়েছেন। তারা নাগরিক দায়িত্ব পালন করেননি। তারা দায়িত্বহীন বলে তো সবাই ওরকম নয়। তাই তাদের হয়ে অন্যরা প্রক্সি দিয়েছেন। আপনারা যারা শেয়ার ব্যবসার সাথে মোটামুটি জড়িত তারা জানেন কোম্পানি আইনে প্রক্সি ভোটের বিধান আছে। কোম্পানির ভোটে যদি প্রক্সির বিধান থাকে তাহলে সিটি কর্পোরেশনের মত একটি গুরত্বপূর্ণ বিষয়ে কেন প্রক্সি থাকবে তা আমার মাথায় ঢুকে না। এটাকে প্রক্সি না বলে সবাই এটাকে জাল ভোট বলছে। কি অবিচার!

এবার শুরুর কথায় আসি, এক ভোটার এক ভোট এই নিয়ম যে কি ভয়াবহ তা আমরা শুরুতেই বলেছি। আমজনতার জন্য এক ভোটার এক ভোট নিয়ম ঠিক আছে তাই বলে গুরুত্বপূর্ণ নেতাকর্মী হেভিওয়েট প্রার্থীদেরও এক ভোট ব্যাপারটা মানা যায় না। সনাতন এই প্রথাভেঙে নিজেদের শক্তি ও ওজন অনুসারেই ভোট দিয়ে বাক্স পূরন করেছেন। ভোট দিলেই তো হবে না, তা রক্ষা করতে হবে। সেজন্য সিটি এলাকার আশে পাশে বিপুল জনশক্তি আমদানী হয়েছিল যেন পাহারা দেয়া যায়। আগেরদিন বিভিন্ন মার্কা নাম উল্লেখ করে কারা কারা যেন বলেছিল ঐসব মার্কা গলায় দেখলে খবর আছে। কিন্তু কি খবর আছে তা না বুঝে সেই সব মার্কার লোকজন বাসায় বসে ফিডার খাচ্ছিল। আর সেজন্য ঢাকা কেন্দ্রে গুলোতে টেবিলঘড়ি আর ইলিশমাছ এবং চট্টগ্রামের কেন্দ্রগুলোতে হাতি ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। এই সব মার্কার কর্মী, সমর্থক আর পাহারাদারদের ভিড়ে লোকে লোকারণ্য ছিল সব কেন্দ্রগুলো। এরপরও যারা বলে ভোটার উপস্থিতি কমছিল তাদের বলব দয়া করে একবার চক্ষু হাসপাতাল থেকে ঘুরে আসুন।


মূলকথা হল বিবেক বুদ্ধি বিবেচনা সকলের সমান নয়। বিবেকহীন বুদ্ধিহীনদের দায়িত্ব বুদ্ধিমান বিবেকবানদের তো নিতেই হবে। মানুষ যে বেকুব আর বেয়াক্কেল তা তাবিথের ভোটের পরিমান দেখেই বুঝা যায়। একটা চ্যাংড়া পোলা (যদিও আনিসের চেয়ে ট্যাক্স বেশি দেয়) তিন লাখ পঁচিশহাজার ভোট পেয়ে গেল। সারারাত ধরে যদি সিল না মারলে, এজেন্টদের বের না করে দিলে, নেতাকর্মীরা ছুটির আমেজে বাসায় না ঘুমালে কি সর্বনাশ হত চিন্তা করে দেখুন। আনিসের মত একজন সুইট, কিউট প্রার্থী পরাজিত হত। ঢাকা উত্তরের জন্য আনিসের যে বিশদ পরিকল্পনা (যার কিছু নমুনা তার ঝাড়ু দেয়া, সাইকেল চালানোর মাধ্যমে আপনারা লক্ষ্য করেছেন) পুরোটাই মাঠে মারা যেত। ঢাকাবাসী বঞ্চিত হত একজন সুমহান মেয়র হতে। আনিসুল হক সব সময়ই চেয়েছেন ঢাকাবাসী শ্রেষ্ঠ মেয়র নির্বাচিত করুন। গতকাল তাই হয়েছে। শ্রেষ্ঠ মেয়রই নির্বাচিত হয়েছে। ঢাকাবাসী অর্বাচীনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। শ্রেষ্ঠ মেয়র নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার তা করলে আপনারা যদি বলেন নির্বাচন সুষ্ঠ হয়নি, নিরপেক্ষ হয়নি তাকে অবিমৃষ্যকারিতা ছাড়া আর কি বলব! চট্টগ্রামে যদি মনজুর হত তাহলে কি হত? নগরবাসী পানির নিচে ঢুবে থাকত। সেই থেকে কি ভাল নয় কর্মবীর নাছিরের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে আসা। আর আব্বাসের কথা কি বলব আজ পর্যন্ত কোন ভোটার তাকে দেখতেই পেল না। ভোটের আগে যাকে দেখা যায় না, ভোটের পরে কি হবে তা বলায় বাহুল্য।

নির্বাচনে আবার কিছু নতুন মুখও দেখা গেছে। জোনায়েদ সাকী ইত্যাদি। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি বিরক্ত সাধারণ জনগণ না বুঝে এই সব নতুন প্রার্থীদের প্রতি ঝুঁকে পড়লে সেটা কি ভাল দেখাত। কাজের কাজ কিছুই হত না। যা হয়েছে ভালই হয়েছে।

অতএব সুপ্রমাণিত হল নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে, নিরপেক্ষ হয়েছে। নগরবাসীর জন্য কল্যাণকর হয়েছে। যারা মনে করেন নির্বাচন সুষ্ঠ হয়নি তাঁরা আসলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটাই বুঝেন না। তাদের প্রথমে গণতন্ত্র কি সেটা শিখতে হবে।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩৭

ফেরদাউস আল আমিন বলেছেন: ঠিকই বলেছেন, জনগণকে গণতন্ত্র শিখতে হবে।
ভোটার হয়েছেন ভাল কথা, কষ্ট করে ভোট কেন্দ্রে যাবার দরকার নেই। সরকার তো আছেনই আপনাকে সাহায্য করার জন্য!

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:২৫

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অবশ্যই সরকারের একটা দায়িত্ব আছে না!
সেজন্যইতো সরকারী কর্মীরা রাত জেগে সিল মেরেছে, আশে পাশের এলাকা থেকে এসে পাহারা দিয়েছে।
নির্বাচনের জন্য তারা কি না করেছে।

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৫৫

ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: অতএব সুপ্রমাণিত হল নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে, নিরপেক্ষ হয়েছে।

এতক্ষণে কলজেটা ঠান্ডা হল ! আপনি গাণিতিক যুক্তিতে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ হওয়ার প্রমাণ না দিলে আমি মন্দ লোকের কুপ্রচারণায় এখনও বিভ্রান্ত থেকে যেতাম.

5-star +

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:২৮

আনু মোল্লাহ বলেছেন: কি মুশকিল বলুন তো দেখি! সব পত্র পত্রিকা সমানে বলে যাচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য হয় নাই। এমুন কি সরকারের দালাল মিডিয়া গুলো পর্যন্ত মিন মিন করে হলেও বলছে।

৩| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:০২

মোহামমদ অাবুল বাশার বলেছেন: সরকার যেহেতু ২০১৯ সাল পর্যন্ত খমতায় থাকবে সেহেতু আববাসের মতো গাবগাছে পালিয়ে থাকা দলের কেউ নির্বাচিত না হয়ে সিটি বাসি কে মুক্তি দিয়েছে .এখন উন্নয়ন হবে .আর নির্বাচিত তিন জনই যোগ্য ও ভদ্রলোক ।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩১

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ২০১৯ হলে হবে না। ২০৪১ কে টার্গেট করতে হবে। প্রতি নির্বাচনেই এভাবে ভোটের আগে ব্যালটবাক্স ভরতে হবে। তাহলে একচল্লিশ সালেও বিএনপি কিছু করতে পারবে না।

৪| ৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৭

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: নির্বাচনে আবার কিছু নতুন মুখও দেখা গেছে। জোনায়েদ সাকী ইত্যাদি। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি বিরক্ত সাধারণ জনগণ না বুঝে এই সব নতুন প্রার্থীদের প্রতি ঝুঁকে পড়লে সেটা কি ভাল দেখাত। কাজের কাজ কিছুই হত না। যা হয়েছে ভালই হয়েছে।

ঠিক ই ভাই -যা হইছে ভালাই হইছে :)
ভালো থাকবেন আনু ভাই

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:২১

আনু মোল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় মাহমুদ ভাই।
দেরিতে রেসপন্স করার জন্য দুঃখিত স্যার।

৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: এমনই এক হঠকারী দু:সময়কে ধারন করছি আমরা! যেখানে মন্দকে মন্দ বলাও মন্দ!

একটি জাতির পতনের জন্য কি এই যথেষ্ট নয়- নেতৃত্বের তোষামুদি, মিথ্যাচার আর স্বেচ্ছাচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়া!

আমাদের ভবিষ্যত আমরা যদি না রচি- ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে ক্লিবতার দোষ দুষ্ট হতেই হবে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:২৫

আনু মোল্লাহ বলেছেন: এমনই এক হঠকারী দু:সময়কে ধারন করছি আমরা! যেখানে মন্দকে মন্দ বলাও মন্দ!

খুবই সত্য বলেছেন স্যার। এই সময়ে আপনি সাহস সত্য বলেন আমার ভাল লাগে তাই আপনার লেখাগুলি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.