নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন। বাংলাদেশী লেখক। দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক বাংলা ও কিশোর বাংলায় গল্প লিখি।

আনু মোল্লাহ

আন্‌ওয়ার এম হুসাইন এর ব্লগ

আনু মোল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্পঃ এই গল্পটি নীলার

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৯

রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি ট্রেনের জন্য। রাত এগারোটা। ট্রেন সোয়া এগারোটায়। সেটা আরো লেট হবে। স্টেশনের পর্দায় বলছে ট্রেন আসবে সাড়ে বারোটায়, এখান থেকে ছাড়তে ছাড়তে একটা বাজবে। আরো দেরিও হতে পারে। দীর্ঘ আট বছর সিলেটে কাটিয়ে আজ সিলেট ছেড়ে যাচ্ছি। আমার অবশ্য এইভাবে অপেক্ষে করতে খারাপ লাগছে না। এই ক’বছরে এই শহরটার জন্য অল্প হলেও মায়া জমেছে। সুতরাং ক’ঘন্টা যদি এই শহরে বেশি থাকা যায় সেটা খারাপ না। এমনিতেই এইসব বিষয় খারাপ লাগেনা। স্টেশনে নানান রকম মানুষ, হইচই-কথাবার্তা, ফেরিওয়ালা, মুচিওয়ালা এই সব দেখতে দেখতে সময় বেশ কাটে। একটা ছোট ছেলে জুতা পালিশ করার জন্য একজন মাঝবয়সী ভদ্রলোককে ধরছে। ভদ্রলোক কি বলেছেন কে জানে, ছেলেটি হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে। নির্মল হাসি, দেখতেও ভাললাগে। ভদ্রলোক নিজেও দাঁত বের করে হাসছেন। তাদের পাশ দিয়ে তাড়াহুড়ো করে একজন মহিলা পার হচ্ছিল। হাসাহাসি দেখে তাদের দিকে তাকাতে তাকাতে তিনি পার হচ্ছিলেন। মহিলাকে ভালকরে দেখেই বুকের রক্ত ছলকে উঠল। বহু আগে হারিয়ে যাওয়া জোছনাভরা রাত যেন হটাৎ যেন আবার উঁকি দিল। ভদ্রমহিলা দেখতে পুরো নীলার মতন । কি আশ্চর্য গত কয়েকদিন ধরে খুব বেশি করে নীলার কথা মনে হচ্ছিল। নীলাকে নিয়ে অনেক দিবাস্বপ্ন দেখেছি একসময়। কবিতার পর কবিতা পড়েছি নীলাকে মনে করে। সেই সব কবি আর কবিতার ভাব চুরি করে অসংখ্য চিঠিও লিখেছি। সেই চিঠি কোনদিন সাহস করে দেয়া হবে না জেনেও। সত্যি সত্যি দেয়া হয়নি কোনদিন। অত সাহসী ছিলাম না, আলাপি, স্মার্ট কোন কিছুই না। ছেলেদের যেসব গুণাবলী মেয়েদের কাছাকাছি হতে সাহায্য করে তার কোন কিছুই আমার ধাতে ছিল না। উলটো কিছুটা ভীতু কিছিমের মনে হত নিজেকে। তবে ক্লাসে বন্ধুবান্ধবেরা সবাই জানত নীলাকে পছন্দ করি। এমনকি এককান দুকান করে সেটা নীলার কান পর্যন্ত পৌঁছেছিল। শুধু নীলার কানে বিষয়টা পৌঁছেছে এতেই আমি কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম।

এর কারন হল আমি যে চলাফেরা দোষে গুণে কমতি ছিলাম ঐ রকম না। নীলা বেশ ধনী পরিবারের মেয়ে। আমাদের ক্লাসে একমাত্র সেই গাড়িতে করে আসত। আমার বাবার ওরকম গাড়ি না থাকলেও গ্রামে আমাদের অবস্থান বেশ জোতদারের মতই। আমাদের ভূ-সম্পত্তি, লোক-লস্কর, মান-সম্মান কোন কিছুরই অভাব নাই। আমাদের চালে-চলনে-বলনে এখনো সাবেকী জমিদারী ঝাঁঝ পাওয়া যায়। আমি নিজেও দোষে গুণে চলন সই। দেখতে শুনতে আহামরি কিছু না যে, অকারনেই মেয়েরা আমার সাথে ভাব করতে চাইবে। আবার এত বদখতও না যে মুখ ফিরিয়ে নেবে। আমার যা দোষ, আমি আসলে গ্রাম থেকে উঠে আসা ভদ্রঘরের ছেলে, শহুরে ফিটফাট ভাব ঠিক নিজের মধ্যে আনতে পারছিলাম না, সেজন্য কোন আফসোস বা চেষ্টাও আমার ছিল না। বিয়ের বাজারে আমার হয়ত কদর ছিল। বিয়ের বাজারে যেসব ব্যাকরণ মেনে চলা যায়, প্রেমের রসায়নে তার মূল্য কানাকড়িও নাই। অতি স্মার্ট শহুরে ছেলেদের মত কথায় কথায় নাক সিটকানোটা আমার আসত না, অতি পড়ুয়াদের মত চশমার ফাঁক দিয়ে কথা কইতেও আমার আটকাত।

নীলা ছিল প্রেমে পড়ার মতই মেয়ে। সরু লম্বা দেহ, প্রশস্ত কপালের পেছনে দীর্ঘ চুল, টোল পড়া গাল। সবচেয়ে যে বিষয় ভাল লাগত তা হল নীলার স্নিগ্ধ টানা চোখ। এই চোখ দেখলেই মনে হত শান্ত স্নিগ্ধ টলটলে দীঘি। নীলাকে দেখলেই আমার গোলাপের পাপড়ির কথা মনে পড়ত। অনেক দিনই নীলার কথা মনে করে গোলাপ কিনেছিলাম আর সেই সব জমিয়ে রাখতাম নিজের ডায়েরিতে। আমার কাছে এখনো সেসময়ের জমানো শুষ্ক গোলাপের পাপড়ি, বকুলের মালা আছে।

আমি ছিলাম স্বপ্নাক্রান্ত কল্পনা বিলাসী বালক। নীলাকে আমার ভাল লাগত। কিন্তু নীলাকে গিয়ে প্রপোজ করা অথবা অন্যান্য ছেলেদের মত কারনে অকারনে সাহায্য করতে চাওয়া, এসাইনমেন্ট প্রিন্ট করে দেয়া, ফটোকপি সাপ্লাই দেয়া এইসব ঠিক আমার পছন্দসই কাজ ছিল না। তখন আমার বাজে ধরনের একটা অভ্যাস ছিল মেয়েদের সাথে কথা বলতে গেলেই আমার ভ্রু কুঁচকে যেত। একবার আমাদের ব্যাচের একটা অনুষ্ঠানে আমার নাম দেয়া হয়েছিল কুঁচকা বাবা। আমাদের ক্লাস মনিটর ফারিহা এই কাজটি করেছিল। সহজ কথা হল সরোবরে ফোটা পদ্ম দেখলে যেমন ভাললাগে আমারো নীলাকে সেরকম ভাললাগত। কিন্তু সরোবরে নেমে সেই পদ্ম নিজের করা আমার ধাতে ছিল না। সরোবরের পদ্ম সরোবরেই থাকুন। আমি পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকি। নীলা আসলেই সরোবরের পদ্ম।


নীলার জন্যই মাস্টার্স পরীক্ষার ভাইভাতে সর্বনিম্ন মার্ক নিয়ে কোন রকমে পাশ করেছি। অনার্সে এবং মাস্টার্সের রিটেন কোর্সে আমার রেজাল্ট ভালই ছিল। যে কেউ আমার রিটেন এবং ভাইভার মার্ক দেখলে অবাক হয়ে যায়। ভাইভার দিন সকালে ডিপার্টমেন্টে গিয়ে শুনি নীলার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সবাই ওকে কনগ্রাচুলেট করছে। নীলাকে নিয়ে আমার কল্পনার ভেলা অনের দূরেই যেত, কিন্তু সত্যিকার অর্থে নীলাকে প্রপোজ করব বিয়ে করব, এসব কখনো ভাবিনি। হয়ত ছেলেমানুষি কল্পনায় ভেবে ছিলাম জীবনটা আজীবন এরকমই যাবে। সেই দিন হঠাৎ নীলার বিয়ের কথা আর সত্যি সত্যি বিয়ের সিম্পটম দেখে আমার মাথা ঘুরে গিয়েছিল। ভাইভা বোর্ডে গিয়ে কি বলেছি না বলেছি আমার মনে নেই। ভাইভা বোর্ডের সামনে আমি দেখতে পাচ্ছিলাম নীলার মেহেদী রাঙা হাত আর এতেই আমার মাথা ঘুরে উঠছিল বারবার। হাকিম স্যার অত্যন্ত নিষ্ঠুর ভাষায় ননসেন্স বলে আমাকে বের করে দেন। ভাইভা তে যে ফেল করিনি তাই মনে হচ্ছে ভাগ্য।

মাস্টার্স শেষ করে বন্ধুরা যখন সরকারী বেসরকারী নানা জায়গায় জুড়ে বসার জন্য উঠে পড়ে লাগল আমি তখন স্থির করলাম মাস্টারি করব। দুনিয়ার যেকোন কাজে যখন আমার বুদ্ধি বিগড়ে যায় মাস্টারিটা নিশ্চয় ভাল করব এই স্থির বিশ্বাস আমার ছিল। বিসিএস এর প্রথম সুযোগেই মাস্টারিটা পেয়ে গেলাম। পোস্টিং সিলেটে। সেই থেকে গত ছয় বছর এইখানে ছেলেমেয়েদের রাষ্ট্রনীতি শিখাই। অন্যদের তুলনায় বেশ আগেই প্রমোশনও পেয়ে গেলাম। নতুন পোস্টিং ঢাকা, নজরুল কলেজে।


সত্যি বলছি নীলাকে এখনো আমি মাঝে মাঝে স্বপ্নে দেখি। ঘুম ভাঙার পর আর ঘুম আসে না। আমি সেই সময়ে লেখা প্রেমের চিঠিগুলো নিয়ে আবার পড়ি। কল্পনায় নীলার সাথে কথা বলি। খুনসুটি করি। কল্পনার নীলা আমি যেমন চাই তেমন। না ঘুমিয়ে রাত পার হয়, ভোর বেলা নীলার কথা ভাবতে ভাবতে ক্লাসে যাই। তবে সবদিন এমন হয় না, মাঝে মাঝে হয়। মাসে দু-একবার। আমার জীবনে নীলার অবস্থান ভোর বেলার স্বপ্নের মত নয়, তার চেয়ে সুতীক্ষ্ণ। পকেটভর্তি সোনালী পয়সার মত; ঝনাৎকার নাই, ওজন আছে।


নীলাকে দেখেই আমি দে ছুট। কিন্তু আমি কাউন্টারের এদিকে থাকতে থাকতেই নীলা দৃষ্টির আড়াল হয়ে যায়। স্টেশনে নারী-পুরুষ-ছেলে-ছোকরা-বুড়ো-বুড়ির কমতি নাই। আমি ভীড় ঠেলে দ্রুত প্লাটফর্মে গিয়ে খুঁজি। খুঁজে পাইনা। প্লাটফর্মে, বেঞ্চিতে, অয়েটিং রুমে, ক্যান্টিনে, চায়ের দোকানে সম্ভাব্য কোন জায়গাতেই খুঁজে পেলাম না। আমার এখন খোঁজাখুঁজির দক্ষতা শূণ্যতে নেমে এসেছে। দরকার হলেই ফোন করে জিজ্ঞেস করি তুই কই। কিন্তু নীলাকে পাই কি প্রকারে? উত্তেজনা নামাতে সিগারেট ধরাই। চারিদিকে চোখ ঘুরাই। প্লাটফর্মে লাইট সব ভাঙা, কোন কোনটা মৃদু জ্বলে, আলো-আঁধারি অবস্থা। লাল ইটের রঙ কল্পনায় বুঝে নিতে হয় সেটা লাল। দিনের বেলা হলে সহজ হতো। কোথাও না পেয়ে এদিক সেদিক হাঁটতে হাঁটতে দেখি প্লাটফর্মের একেবারে শেষ মাথায় আলো-অন্ধকারে জুবুথুবুমত কে একজন দাঁড়িয়ে আছে, দূরে কোথায় চাঁদের আলোয় তার দৃষ্টি সেটা বোঝা যায় না। কাছে গিয়ে বুঝতে পারি নীলা। অন্ধকারে ধ্যানমগ্ন ঋষির মত জুবুথুবু এ নীলাকে আমি কখনো কল্পনা করিনি। কাছে যেতে সাহস হল না, চিনতে পারে কি পারে না সে টেনশন আছে। ঋষিমূর্তির উপর চোখ রেখে আমি এদিক ওদিক সময় কাটাতে লাগলাম। আরো চল্লিশ মিনিট পরে ট্রেন এলে ঋষিমূর্তি ধ্যান ভগ্ন করে ট্রেনের দিকে ফিরে আসে। এই চল্লিশ মিনিটে আমার বুকের উপর দিয়ে যেন ট্রেনের চল্লিশটা বগি পার হয়ে গেল।
‘নীলা---, চিনতে পারো?’
সেই নীলা আর নাই। না ঘুমানোর চিহ্ন চোখে-মুখে স্পষ্ট, সমস্ত চেহারার উপর দিয়ে পঙ্গপাল উড়ে গিয়েছে যেন। আমার দিকে তাকিয়ে হা হয়ে গেল মুখ। যেন বন্ধই হতে চায়না। এই রাতে এভাবে আমাকে কল্পনা করেনি। আমিও না।
‘তু- -তুমি, কোত্থেকে?’

দু কাপ চা খেতে খেতে আর আলাপ-পরিচয়ে হালনাগাদ করতে করতে ঢাকার দিকে যাওয়ার জন্য ট্রেনের ইঞ্জিন নিজেকে পুরোপুরি সতেজ করে নিলে আমাদের উঠে পড়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। সাহস করে নীলাকে আজও বলতে পারলাম না, তোমার নাম্বারটি দাও। সেই পুরনো সংকোচ, অন্ধ সংস্কারের/মুদ্রাদোষের মত আমার সমস্ত চেতনা দখল করে আছে যে। শুধু জেনেছি জ কোচের ১৮ নম্বর সিটটি তার। সাথে কেউ নাই। একা একা ঢাকা যাচ্ছে এত রাতে, কেউ ট্রেনে তুলে দিতেও আসেনি। আমি বেশ অবাকই হলাম। নীলার কথাবার্তা আচার আচরণে বেশ রহস্যজনক লেগেছে। চেহারায় পরিবর্তন সুস্পষ্ট। চোখের নিচে কালি, রাতের পর নির্ঘুম কাটিয়েছে বেশ বোঝা যায়। আগের মত বালিকা বালিকা ভাবটি নাই। তবে আমাকে দেখে অসামান্য খুশি হয়েছে সেটা বোঝা গেছে। হয়ত এই রাতে একা একা ঢাকা যাওয়ার চেয়ে পরিচিত কেউ আছে সেটা ভাবতে একটু নিশ্চিন্ত লাগে সেজন্য এত আনন্দিত মনে হয়েছে। আস্তে আস্তে দুলুনি দিয়ে অজগরটি এগোতে শুরু করল। আমি আমার স্লিপিং বার্থ থেকে বের হয়ে নীলার পাশের ভদ্রলোককে কনভিন্স করে আমার বার্থ পাঠিয়ে দিয়ে আমি নীলার পাশে বসলাম। ‘সেই কতদিন পরে দেখা ভাবলাম তোমার সাথে যাই।’ নীলা অল্প একটু হাসল, শীতকালে ঠোঁট ফেটে গেলে লোকে যেমন হাসে। খুশি হল না বিরক্ত হল ভিতরে খচ খচ করতে লাগল।

আমি কোনদিন নীলার সাথে একসাথে বসিনি, চা খাইনি, আড্ডা দিইনি, গল্প করিনি। নীলার সাথে অতীতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের সারাজীবনে যা আলাপ হল তার কয়েকগুণ বেশি এই কিছুক্ষণে চা খেতে খেতে হয়েছে। এই এতবড় ট্রেনে হাজার মানুষের ভীড়ে আমি নীলার সাথে, পাশাপাশি বসে। সহস্র অপরিচিত মুখের ক্লান্তিকর ভীড়ে আমিই নীলার কাছের মানুষ, অন্তত এই ট্রেনের জন্য তা ঠিক, ভাবতেই বুকের ভিতর শিহরণ খেলে গেল। ঝিক ঝিকা ঝিক করে ট্রেনের গতি বাড়ছে। শহরের গন্ডি ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। গত ছয় বছর এ পথ দিয়ে বহু বার এসেছি গেছি। নীলা কথা শুরু করে, “তারপর, তোমার বাসা কোথায়?” আমি যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। নীলার পাশে বসে এমন এক আধো ঘোর আধো জাগরণ অবস্থা ছিল যে কথা শুরু করব না কি করব বুঝতে পারছিলাম। কি করি আজ ভেবে নাই পাই গোছের অবস্থা। আজ বহু বছর পরে দুইজন পরিচিতের দেখা হয়েছে, হাজারো অপরিচিত মুখের সাথে শত মাইল যাওয়ার জন্য। সেক্ষেত্রে দুজনের আলাপচারিতা হওয়াই ঠিক। এই সহজটাই আমি বুঝতে পারছিলাম না।
বললাম, “কলাপাড়া থাকি।’’
“তোমার বাসা কোথায়?”
“আম্বরখানা, মাজারের পাশেই। তুমি সিলেট কতদিন হল? এতকিছু থাকতে মাস্টারিতে ঢুকলে কেন?”
-আর কোন কিছু করার ছিল না। অন্য কিছু হয়ত আমার দ্বারা সম্ভব ছিল না। না সরকারি না বেসরকারি। জানতো যার নাই কোন গতি সে করে পন্ডিতি। তুমি কি কর?
-আমি যে কি করি! আমি নিজেই জানি না। এতদিন জেলখানায় ছিলাম। তুমি এইটা নিশ্চয় জান, কয়েদীদের কিছু করার থাকে না। তবে কয়েদখানার নানান কাজকর্ম করতে দেয়, সেগুলো করতে হয়। যাকে বলে তোমার সশ্রম কারাদন্ড।
হতাশা মিশ্রিত শ্লেষভরা গলায় কথাগুলো বলল। সামনের ট্রে টা নামিয়ে তাতে দুই হাতে ঠেক দিয় আমার চোখের দিকে তাকাল। সেই দীঘল চোখ, সেই টলটলা দীঘি। তবু মনে হল প্লাবন বিধৌত বিধ্বস্ত। আমার বুকে যেন অজানা করুন সুর বেজে উঠল।
বললাম, ‘তোমার কথা ঠিক বুঝতে পারছি না। তবে তুমি ঢাকার বাইরে এটা জানতাম। এই ভিন্ন আর কোন খবর কেউ দিতে পারেনি। আমি প্রতি বছরই ডিপার্টমেন্টের রিইউনিয়নে থাকি। তোমার খোঁজ-খবর করার চেষ্টা করেছি। ফেসবুকেও সার্চ করেছি তোমাকে। কি এক আশ্চর্য ডুব যে তুমি দিলে, কেউ জানে না। এমনকি ফারিহা পর্যন্ত তোমার কোন খোঁজ দিতে পারে নাই। তোমার ফোন নাম্বারও নাই কারো কাছে।
আমার অতি সাবধানী কন্ঠেও যেন অভিমানের রেশ পাওয়া গেল।
- কারো সাথে আমার যোগাযোগ করার কোন সুযোগ ছিল না। আমি আক্ষরিক অর্থেই জেল খানাতে ছিলাম। ফারিহার সাথে তোমার দেখা হয়? ফারিহার কি খবর?
- ফারিহার সাথে কাদাচিৎ যোগাযোগ হয়। সে ঢাকাতেই থাকে একটা প্রাইভেট ইউনিভারসিটিতে পড়ায়। কিন্তু তোমার কথা আসলে কিছুই বুঝতে পারছি না, ক্লিয়ার করে বল।, কোথায় ছিলে, কি অবস্থা বিস্তারিত।
- শোন গত নয় বছরে আমি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছিলাম। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ছিলাম দুই বছর। ওখান থেকে রাজশাহী। শেষে সিলেট অঞ্চলে আছি ছয় বছর ধরে। আমার হাজবেন্ড বিসিএস এডমিনে ঢুকেছিল। এই সব জায়গা ঘুরে এখন বিয়ানীবাজারের ইউএনও। কিন্তু আমার জন্য সবই সমান। তুমি কবে সিলেটে এলে?
- আমার জয়েনিং সিলেট দিয়েই শুরু। গত ছয়বছর আমি সিলেটেই আছি। এবার অনেক ধরাধরি করে বদলির ব্যবস্থা করা গেছে, সাথে একটা প্রমোশনও জুটেছে। নজরুল কলেজে। তাই একেবারেই গুছিয়ে চলে যাচ্ছি আজ।
- কনগ্রাচুলেশন্স, বন্ধু।
- থ্যাঙ্ক য়ু।
- দেখ কি আশ্চর্য আমিও আজ সিলেট থেকে একেবারে চলে যাচ্ছি। চলে যাচ্ছি না। চলে যেতে বাধ্য হয়েছি। কেন বাধ্য হয়েছি সেটা না বললে বুঝবে না। তোমার হয়ত ধারনা আমি খুব ধনী পরিবারের মেয়ে। আসলে সেরকম নয়। আমার দাদা খুব ধনী ও ক্ষমতাবান ছিলেন। আমার বাবা শুধুমাত্র পিতার উত্তরাধিকারের উপরেই নির্ভর ছিলেন। সে নির্ভরশীলতা ছিল অতিমাত্রায়। কিন্তু আমাদের চালচলনে আগের সেই ঠাঁট বজার রাখতে গিয়ে বাবা আরো হিমশিম খান। একসময় আমাদের নাম ছাড়া আর কিছুই নাই। আমার বাবা সবসময় ক্ষমতার দিকে অন্ধ ছিলেন। তাই এডমিন ক্যাডারের ছেলে পেয়ে খুব তাড়াতাড়িই তিনি আমার বিয়ে দিয়ে দেন। তাতে তাঁর দোষ নেই। ছেলে ভাল, পরিবার ভাল। বলতে গেলে একেবারে সোনায় সোহাগা। কিন্তু আমার কপাল মন্দ। তুমি হয়ত মনে মনে হাসছ। এই যুগে এসে কেউ কপালের কথা বলে! আমার বাবা এ যুগে এসেও সে যুগের হাঁকডাক ছাড়তে পারলেন না, আর আমাকেও এযুগে বসে সেযুগের যন্ত্রনা পোহাতে হল। বিয়ের পরে আমি ভালই ছিলাম। পুরোদস্তুর সংসারি। মাঝে মাঝে কিছু করার ইচ্ছে হত। পত্রিকা দেখে এখানে সেখানে সিভি পাঠাতাম। পাঠাতাম মানে ওকে দিতাম পাঠানোর জন্য। কোথাও থেকে কোন ডাক আসত না। পরে বুঝতে পেরেছি, ও আসলে আমার খাম কোথাও পাঠাতই না। নষ্ট করে ফেলত।

- কেন?

- সে চাইত না। আমি চাকরি বাকরি করি। আচ্ছা তা নাহয় না করলাম। তাতে কোন সমস্যা নাই। সবাই সবকিছু হয় না। আমি বাচ্চা কাচ্চা নিতে চাইলাম। সে রাজি না। সে নাকি প্রিপেয়ারড না। বিয়ের নয় বছরেও সে প্রিপেয়ারড হয়নি। আমাকে যেদিন সে পরিপূর্ণ বুঝবে সেদিন নাকি সে বাচ্চাকাচ্চা নিবে। আমাকে যেহেতু বোঝা হচ্ছে না। তাই বাচ্চা-কাচ্চাও হবে না। এটা জানার পরেই চলে এসেছি। শোন, সবচেয়ে নির্মম ও নিষ্ঠুর যে বিষয়টি তা হল, সে আমাকে তালাবদ্ধ করে রেখে যেত। প্রথমদিকে আমি টের পেতাম না। একদিন খুব সামান্য একটা কাজে বের হতে গিয়ে দেখি এই অবস্থা। তখন ফোন করলে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে নিজেই তালা খুলে আর ভাব দেখায় সে কিছুই জানে না। আমিও ভেবেছি হয়ত তার ভুল হয়েছে অথবা ভুল কিংবা দুষ্টুমি করে আশে পাশের কেউ করেছে। সে সারাদিন ব্যস্ত থাকে সারাদিন এদিক সেদিক দৌড়ায়, কোনদিন মাঝরাতে বাসায় আসে, আসুক, তাতে আমার আপত্তি নেই। যখন আস্তে আস্তে আবিষ্কার করলাম সে আমাকে কানাকড়িও বিশ্বাস করে না। আমার কাছে তখন সবকিছু অর্থহীন মনে হল। তার সাথে সরাসরি আলোচনায় বসেছি। কোন লাভ নাই। চুপ করে থাকে। বাইরে খুব স্বাভাবিক। নিয়মিত প্রমোশন হয়েছে। ডিপার্টমেন্টে তার সুনাম আছে। শুধু আমার কাছে খুব স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে। কিন্তু সারাক্ষণ এক অবিশ্বাস তাকে কুরে খায়। আমার ফুফাত ভাই নতুন বিয়ে করে বউ নিয়ে বেড়াতে এসেছিল সিলেটে। আমি তাদের আমার বাসায় আসতে বলেছিলাম। আমাকে এ নিয়ে জবাবদিহি করতে হয়েছে কেন তাদের আসতে বলেছি। আমার মরে যেতে ইচ্ছে হল যখন বলল ফুফাত ভাইয়ের সাথে আমার আগের সম্পর্ক রিভাইভ করার জন্যই তাকে আমি ডেকে পাঠিয়েছি। এ নিয়ে আমার সাথে তুমুল ঝগড়া। ঝগড়া বলা ঠিক হবে না। বকাবাজি। আমি ঝগড়া করি না। রুচি হয় না। চুপ করে থাকি। সে মুখে যা আসে তা বলে গেল আমার ফুফাত ভাইকে নিয়ে।

এই পর্যন্ত বলে নীলা থামল। তার চোখের কোনা চিকচিক করছে। যে কোন কপোল ভিজে যাবে অশ্রুতে। আমি যেন সহ্য করতে পারছিলাম না এই দৃশ্য। বাইরে চাঁদনী রাত। আমাদের কম্পার্টমেন্টের সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। ট্রেনে বাসের মত বাতি নিভিয়ে দেয় না, তাই বিচিত্র লোকের বিচিত্র ভঙ্গির ঘুমানো সকলের চোখে উন্মুক্ত। জার্নিতে আমার ঘুমানো হয় কদাচিৎ। আজকে তো ঘুম আসার প্রশ্নই নাই। বাইরে ঘন বন-বিথীকা আবছা কুয়াশা আর চাঁদের আলোয় রহস্যময় লাগছে। এই দুঃখিনী রাতে তারাও যেন বিব্রত! ঝড়ের বেগে পেছনে রেখে যাচ্ছি তাদের। আমি ভাবতে পারিনা কি করে এই রকম শিক্ষিত সুবেশি লোকজন তাদের কুটিল হিংস্র মনের কোণে অন্ধকারে কালোকালো শয়তানের ডিমে তা দিতে পারে! আমার সমস্ত রক্তকণিকা, প্রতিটি স্নায়ুতন্ত্রী অনুভব করল নীলার দুঃস্বপ্নের দিনগুলো। মনে হল – কিন্তু ঠিক কি মনে হল বুঝতে পারি না। একদিন সরোবরের পদ্ম ভেবে আমার হৃৎপিন্ডের পুরোটা দিয়ে যাকে মনে মনে অঞ্জলি দিতাম আজ সেই পদ্মকে পদদলিত স্পিষ্ট দেখে আমার হৃদয়ের তন্ত্রীগুলো যেন ছিঁড়ে যেতে শুরু করল।

আমি বললাম, “কিন্তু তোমার সাথে তার এইরকম আচরনের কারন কি?”

- সেকথা আমি কি করে বলব। তবু আমি চেষ্টা করেছি বুঝতে, জানতে। সে এনিয়ে কখনো খোলাখুলি আলাপ করেনি। তার বাইরের রূপ আর ঘরের রূপ সম্পূর্ণ আলাদা। রহস্যময় ব্যপার। আমার ধারনা সে হয়ত কোন মেয়ে বা মেয়েদের নিকট হতে আঘাত পেয়ে থাকবে। তার প্রতিশোধ আমার উপর নিচ্ছে। তার ধারনা আমার আগে কোন একটা সম্পর্ক ছিল। আমি সুযোগ পেলে তার সাথে চলে যাব! এ সবই আমার অনুমান। তার মনের প্রকৃত কথা তো জানিনা। তোমরাতো জান ভার্সিটিতে আমার তেমন কেউ ছিল না। ভার্সিটির বাইরেও না। মাস্টার্সের শেষদিকে বাবা তাকে ধরে আনল, আমি কবুল বলে দিলাম। কিন্তু কবুল যে এভাবে কোরবান হবে আমি দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। আর আমার কাছে তাকে সুস্থ্য মনে হয় না। মানসিক রোগী মনে হয়। সে কথা তাকে বলেছিও। কোন সাইক্রিয়াটিস্টের কাউন্সেলিং নেয়া উচিত তার। বন্ধুভাবেই বলেছি। কিন্তু সে সহজ ভাবে নেয়নি। উলটো বলে আমি তার বউ না হলে সে মানহানির মামলা দিত। এছাড়া আরো একটা বিষয় আছে। তার ধারনা ছিল আমার বাবার উপর লেভেলে বেশভাল যোগাযোগ। তার ক্যারিয়ারে তা বেশ কাজে দিবে। আমার দাদার সূত্রধরে সে ধরনের যোগাযোগ যে বাবার নাই তা বলব না। কিন্তু বাবাকে সে এই ব্যপারে খুব একটা কাজে লাগাতে পারেনি। তার দরকারও ছিল না। আর বাবা বলছিল, এতে অনেকক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হতে পারে। কিন্তু তার একগুঁয়ে বোধে সে ধরে নিয়েছে বাবা তাকে সাহায্য করতে চায়না। বাদদাও, এইসব জঘন্য আলোচনা। আমার এইসব আলোচনা করতেও রুচি হয় না। জানিনা কেন তোমার সাথে এসব বলতে ইচ্ছে হল। অথচ আমাদের দেখা হওয়ার কথা কখনো ভাবিনি। তোমার কথা বল। ঘর-সংসারের খবর বল।

- ঘর সংসার আগের মতই। মা আর বাবা বাড়িতে। ছোট বোনের বিয়ে হল গত বছর। ওর হাজব্যান্ডসহ নিউজিল্যান্ড থাকে। ছোট ভাই ঢাকাতে। আমি গিয়ে তার সাথে যোগহব।
- তোমার নিজের কথা বল, ঘর-সংসার-বিয়ে-শাদির কথা বল।
- আমার সংসার এদেরকে নিয়েই। বিয়ে করিনি এখনো।
- বল কি??
নীলা আকাশথেকে পড়ল। সে ধরেই নিয়েছে জগতে যা কিছু ব্যাতিক্রম অসহিষ্ণুতা, অসুন্দর অনিয়ম তা শুধু তার জন্যই বরাদ্দ। এই দুনিয়ার আর সকলেই থাকবে সহজ সুন্দর স্বাভাবিক। কিন্তু নীলার অজান্তে এমনকি এক হিসেবে বলা যায় আমার নিজেরও অজান্তে আমার নিজের বেলায়ও কিছু অসঙ্গতি রয়ে গেছে। আগেই বলেছি আমাদের ঘরে স্বচ্ছলতা কম নাই, সুতরাং মাস্টার্স শেষ হওয়া মাত্রই আমার সামনে পিছে ডানে বাঁয়ে সকল পক্ষ আমার বিয়ের তোড়জোড় নিয়ে রীতমত ঘৌড়দৌড় শুরু করে দেয়। রেসকোর্সের ঘোড়দৌড় শেষ হলেও আমার বেলা শেষ হয়নি। কেন শেষ হয়নি এ এক বিরাট ইতিহাস। তবে কেউ যদি ধরে নেন নীলার বিরহে আমি নিজেকে বিয়ের আসরে নিয়ে যাইনি তবে ভুল করবেন। এই জগতে এখন আর এইসব অসঙ্গত বিষয় অবশিষ্ট নাই। তবু আত্মীয় বন্ধু গুরুজনের অনুরোধে যে কয়েকবার ঢেঁকি গিলতে গিয়ে কারো চোখের দিকে তাকিয়েছি আমার শুধু সেই শান্ত স্নিগ্ধ টলটলা দীঘির কথাই মনে হত। এই টুকুই। সত্যি বলতে আমাকে কেউ যদি স্পষ্ট করে জিজ্ঞেস করে আমি বুঝাতে পারব না। নীলার সাথে আমার আজকের দিনের চেয়ে বেশি আলাপ কোনদিন হয়নি। ভালবাসায় আহ্লাদে অলস সময় কাটাইনি কোনদিন। এমনকি দুএকবার ইঙ্গিতপূর্ণ চোখাচোখিও হয়নি। নীলা নামের কোন এক বায়বীয় কারনে আমি বিয়ে করছি না এ শুনলে আমার পরিবার অপরিবার সকলের হাতেই নিগ্রহীত হবার সম্মভাবনা আছে। আমার পরিবার এখনো নিরাশ নয়। আমিও না। বিয়ে নিশ্চয় একদিন হবে!

সুতরাং কেন বিয়ে করিনি এইনিয়ে নীলাকে সন্তুষ্ট করা সম্ভব হয়নি। সে কি বুঝেছে জানি না। চুপচাপ শুয়ে আছে। যার অন্তরে আগ্নেয়গিরি, কবেকার কোন ক্লাসমেট আধাবয়স পর্যন্ত বিয়ে করেনি তাতে তার কি আসে যায়। বরং বাইরের কুয়াশাচ্ছন্ন চাঁদের আলো ট্রেনের ঝিক ঝিকা ঝিক, ভেতরের এই নিশ্চুপ আলো, নির্ভাবনায় ঘুমন্ত যাত্রীর এই নিশ্চিন্ত পরিবেশ সমস্তই যেন দুঃখের ঐকতান। মন যখন দুঃখে থাকে তখন কুয়াশা আর চাঁদের আলো চাবাগানের পাতার উপরে রহস্য তৈরি করলেই কি আর পাশের ঘুমন্ত শিশু হটাৎ জেগে কেঁদে উঠলেই কি। পেছনের সিটে নব দম্পতির অস্ফুট কপট ঝগড়া আর সামনের বৃদ্ধ অসুস্থ যাত্রীর গোঁঙানি সবই সমান। মন তখন নিজেতে মগ্ন, লোকে বাঁচলেই কি আর মরলেই কি! কিছুতেই কিছু যায় আসে না।

আমরা যখন ঢাকা নামি তখন সূর্য উঠে গেছে। আমার ব্যাগপত্র তেমন কিছু ছিল না। সবকিছু আগেই এস এ পরিবহনে করে পাঠিয়ে দিয়েছি। নীলার সাথে শুধু একটা ট্রলি। আমি নামিয়ে দিয়ে একটা ট্যাক্সি ঠিককরে উঠিয়ে দিলাম।
টাক্সিতে উঠে বলল, “কালকের জার্নি আমি কোনদিন কল্পনাও করিনি। সাহস ছিল না করার। তবু কালকের এই রাত আমার জীবনের সেরা রাত।কিছু বীজ আছে প্রতিকূল পরিবশে মরার মত পড়ে থাকে। তারপর হটাৎ একদিন অনুকূল পরিবেশ ফেলে আবার জীবিত হয়ে উঠে। আমার জন্য কালকের রাতটা যেন সেই রকম। আমার জাহান্নামের মাঝেও হটাৎ হটাৎ তোমার কথা মনে পড়ত। ভারিক্কি ভঙ্গিতে ক্লাসে বসে থাকতে আর হটাৎ হটাৎ আমার দিকে তাকাতে। ভাবতে আমি বুঝতে পারিনি। অশান্তির মাঝে এইটুকু ছিল আমার সুখের ঠিকানা।

আমি কিছু বলবার আগেই ট্যাক্সিকে বলল, “মামা চলেন।”

কিছু বুঝবার আগেই ট্যাক্সি অনেক দূর। তার কোন মোবাইল নাম্বারও নিতে পারি নাই। কারন তার স্বামী বহু আগেই তার মোবাইল সিজ করেছিল।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৬

তরিকুল ফাহিম বলেছেন: বাহ অসাধারণ

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১১

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ফাহিম ভাই :)
ভাল থাকুন সবসময়।

২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:০৮

মাকড়সাঁ বলেছেন: অসাধারণ শেয়ার নিঃসন্দেহে ।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১২

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অজস্র ধন্যবাদ প্রিয় মাকড়সাঁ।
শুভেচ্ছা নিবেন :)
ভাল থাকুন সতত।

৩| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৫

রায়হান চৌঃ বলেছেন: অসাধারণ......... অনেক ভালো হইছে

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১২

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় রায়হান ভাই।
আপনাদের ভাল লাগা আমার জন্য আনন্দের।

৪| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২২

হাসান মাহবুব বলেছেন: একেই বলে নিয়তি। ভালো লাগলো।

০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৪

আনু মোল্লাহ বলেছেন: হ্যাঁ মাহবুব ভাই, তাই।
আপনার ভাল লাগা আমার জন্য প্রেরণা।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা নিবেন প্রিয় :)

৫| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২০

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: খুব সুন্দর| আপনার বর্ণনাগুলো এত চমৎকার যে কি বলব| মাঝে মাঝে ভাবছি, গল্পটা বেশি ভাল না আপনার বর্ণনরীতি| এখন বুঝছি, দুটো নিয়েই তো গল্প

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫

আনু মোল্লাহ বলেছেন: আপনার মন্তব্যে খুবই প্রীত হয়েছি প্রিয় অরণ্যক রাখাল।
আপনিও খুবই ভাল লেখেন।
ভাল থাকুন সবসময়। :)
আবারো কথা হবে।

৬| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সেকি!

শেষ বেলাতেও এসে শূন্যেই ঝুলীয়ে দিলেন? না না এটা অবিচার হয়ে গেল। :P

অবশ্য লেখক যেভাবে চান- এটলিষ্ট গল্পের ইশ্বরতো লেখকই :)

++++++++++++++++

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬

আনু মোল্লাহ বলেছেন: অজস্র শুভেচ্ছা নিবেন প্রিয় বিদ্রোহী :)
আপনার মন্তব্যে আমি বরাবরই উৎসাহিত হই। ভাল থাকুন সতত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.