নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনোয়ার ভাইয়ের কথার কথা

আনোয়ার ভাই

কিছু একটা করি

আনোয়ার ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

এক নারীর শত্র“ আরেক নারী

০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২০





স্ত্রী মারা যাওয়ার পর হালিম মিয়া ২য় বিয়ে করেন। আগের ঘরের এক ছেলে ও এক মেয়ের দায়িত্ব পড়ে নতুন বউয়ের কাঁধে। ছেলেটিকে সহ্য করতে পারলেও মেয়েটিকে মানতেই পারে না সৎ মা। তার ধারনা, মেয়েটি তাদের বোঝা। ওকে বিয়ে দিতে অনেক টাকা লাগবে। তাই পড়শীদের কাছে বলে বেড়ান, সতীন নেই তবে সতীনের পিঁড়ি আছে। বছর ঘুরতেই তার জন্ম নেয় তার নিজের কণ্যা সন্তান। এতে খুশী না হয়ে ছেলের আশায় পর পর তিনটি কণ্যা জন্ম নেয় তার ঘরে।



এসএসসি পাশ করার পরই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসেন হাসেম মিয়া। যেন মাথা থেকে একটা বোঝা কমল। নতুন ঠিকানায় স্বামীর সোহাগ, শশুরের স্নেহ, দেবরের ভালবাসার কোন ঘাটতি নেই মেয়েটির কপালে। তবে শাশুড়ি ও ননাস যেন একটু ভিন্ন চরিত্রের। পান থেকে চুন খসলেই কয়েক মিনিটের একটা ভাষন না শুনিয়ে ছাড়েন না শাশুড়ি মাতা। ভাষনের সিংহভাগ জুড়ে থাকে পুত্রবধুর মায়ের বদনাম। ‘ কেমন মা যে মেয়েকে সংসারের কোন কাজ শেখায় নাই’ কিংবা ‘ মা’র কোলে বসে বসে শুধু গিলেছে’ এমন কত কথা। মাঝে মধ্যে স্বামীর বড় বোন এসে বলে ‘ আমরা শাশুড়ির কত সেবা করি আর তোমার পুত্র বধু দেখ শুধু তার স্বামীকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তোমাকে নিয়ে ভাবার সময় কই তার ’।



সেদিন এক বন্ধু বলল- তার স্ত্রীকে পাশের বাসার এক ভাবী বুদ্ধি দিয়েছে তাদের হাই স্কুল পড়–য়া মেয়েকে যেন দুধ ডিম না খাওয়ানো হয়। এসব খাওয়ালে নাকি তাড়াতাড়ি যৌবন এসে যাবে- এতে সমস্যা বাড়বে। ওই ভাবীর মতে, দুধ ডিম জাতীয় পুষ্টিকর খাওয়া নাকি শুধু ছেলেদের জন্য।



আমার ছোট বোনের প্রথম সন্তান কণ্যা হলে তার শাশুড়ি, ননাস-ননদ বেজায় রাগ করেছিল। যেন কণ্যা জন্ম দেয়ার সব অপরাধ আমার বোনের। সমাজের অভিশাপ যৌতুক সংক্রান্ত ঘটনা গুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছেলের মা ই যৌতুক নিতে আগ্রহী থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে অবশ্য পুরুষেরও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।



পাঠক, এ লেখা পড়ে কারো মনে হতে পারে আমি নারী বিদ্বেষী। মোটেই নয়। আমি শুধু বলতে চাইছি এ সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীদের শত্র“ নারীরাই। একজন নারী শশুড় বাড়িতে স্বামী শশুড় দেবরের ভালবাসা পেলেও শাশুড়ির মন পাওয়া খুব দায়। নারী গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনাগুলোতে বেশীরভাগ সময়ে নির্যাতনকারী নারীই থাকে। কর্মস্থলে সহকর্মীর পুরুষের সাথে সম্পর্ক ভাল থাকলেও সহকর্মী নারীর সাথে মনের মিল হয় খুব কম। এ বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। দেশের প্রধান দু’টি দলের প্রধান দুইজন নারী থাকলেও তাদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ কথাবার্তার বিষয়টি পূর্ণিমার চাঁদকেও হার মানায়।



৮ মার্চ ঘটা করে পালিত হল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সব ধরনের মিডিয়া এ নিয়ে বেশ সরব ছিল। ৯ মার্চ দৈনিক আমাদের সময় এর শেষ পৃষ্ঠার একটি ছবিতে দেখলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীদের হস্তশিল্প প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করছেন। এর ঠিক পাশে এক কলামের নিউজের হেড লাইন ‘ নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রী- ধর্মের নামে নারীকে গৃহবন্দী রাখা যাবে না’। তার এ কথায় আমি পুলকিত হই।



তবে একই পত্রিকায় অন্য একটি দেখে বিষ্মিত হলাম। ছবিতে দেখা যায় বিএনপির নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রবেশধারের কলাপসিবল গেইটের ভিতর এক রঙা শাড়ি পড়া কিছু নারীর মুখ। তাদের সামনে গেইটের বাইরে দাঁড়িয়ে নারী পুলিশ সদস্যরা। ক্যাপশান পড়ে জানা গেল ‘ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদি মহিলা দল নেতাকর্মীরা র‌্যালি বের করতে চাইলে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ।



প্রধানমন্ত্রী বলছেন নারীকে গৃহবন্দী রাখা যাবে না। আবার তার সরকারের আমলেই অন্য দলের নারী নেত্রীদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে নারী পুলিশ। তাও আন্তর্জাতিক নারী দিবসে।



আমি জানি না পুলিশের এক কর্মে সরকারের সায় আছে কি না। তবে এইটুকু বুঝি নারী দিবসে অন্তত এটা না করলে মহা ভারত অশুদ্ধ হত না।









মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ‘ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদি মহিলা দল নেতাকর্মীরা র‌্যালি বের করতে চাইলে তাদের অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ।

প্রধানমন্ত্রী বলছেন নারীকে গৃহবন্দী রাখা যাবে না। আবার তার সরকারের আমলেই অন্য দলের নারী নেত্রীদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে নারী পুলিশ। তাও আন্তর্জাতিক নারী দিবসে।

তাই বরং বলুন- হাসিনার শত্রু হাসিনা নিজেই!!!!!!

মূখে্র প্রগলভতা যদি বাস্তবতাকে ঢাকতে পারত- তবে ভিন্ন হিসাব হতো!
কিন্তু মিথ্যাচার, দ্বিমূখীতা আর স্বৈরাচারিতাকে ঢেকে রাখা যায় না!!!!!!!

২| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:০৩

আনোয়ার ভাই বলেছেন: তাও আন্তর্জাতিক নারী দিবসে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.