নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আনোয়ার ভাইয়ের কথার কথা

আনোয়ার ভাই

কিছু একটা করি

আনোয়ার ভাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

দল ক্ষমতায় থাকলে ডেক বাড়ে !

১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:২৪




নিম্ন আয়ের দেশ †থকে নিম্ন মধ্যম আয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। দেশের গড় আয়ু ও মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এমনসব দারুন খবর শুনে মনটা চাঙ্গা হয়ে উঠে। দেশ সত্যিই এগিয়ে যাচ্ছে তাহলে। ‘৯০ এ স্বৈরাচার পতনের পর থেকে এ দেশে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটছে। দিন দিন বহুতল ভবন, শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটছে। কৃষি বিপ্লবের কারনে খাদ্যে আমরা স্বয়ং সম্পূর্ণ। আমরা এখন স্বপ্ন দেখছি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত হওয়ার। রাজনৈতিক হানাহানি না থাকলে তা সম্ভব বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। সরকারি দল থেকেও এমনটা বলা হচ্ছে। তারা বিএনপি জামায়াত জােটকে দােষী করে বলছে জ্বালাও পোড়াও না করলে দেশ আরো এগিয়ে যেত। প্রবৃদ্ধি আরো বাড়ত। তাদের কথায় বুঝা যায় - দেশ পিছিয়ে নেয়ার জন্য শুধুমাত্র বিএপি-জামায়াতই দায়ী।

আবার বিএনপি-জামায়াত বলছে ‘ সরকারি দল ক্ষমতায় থেকে সব কিছু দলীয় করণ করেছে। দূর্নীতির অভিযোগও তুলছে তারা’। একে অপরকে দােষারোপের এই চিত্র নতুন কিছু নয়। তবে একজন সাধারন মানুষ হিসেবে অবলোকন ও উপলব্ধি করে দুই দলের অভিযোগেরই সত্যতা পেয়েছি। বিএনপি-জামায়াত জােট আন্দোলনের নামে সত্যিই দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। তারা শুধুমাত্র ক্ষমতার †মােহে জ্বালাও পােড়াও করে দেশের সাধারন মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। তাদের দেয়া আগুনে পুড়েছে যারা তাদের অধিকাংশই সাধারন মানুষ। যারা রাজনীতির প্যাচ বুঝে না, ক্ষমতার মসনদে আসীন হতে চায় না, কাজ না করে ফাউ খাওয়ার চিন্তা করে না। ফাউ খাওয়া মানে কােন কাজ না করে অঢেল কামানো। ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি বাড়ি, গাড়ির মালিক হওয়া। অর্থাৎ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়া।

কারা ফাউ খায় ? কারাই বা ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয় ?

আমি বলব, যারা ক্ষমতায় থাকে ।

চমকাবেন না। থমকেও যাবেন না। আর চােখ রাঙাবেন না দয়া করে। কেননা সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ‘ গঠনমূলক সমালোচনা করতে’। তাইই করছি।

ক্ষমতার নানা রুপ আছে। দল ক্ষমতায় গিয়ে সরকার গঠন করে। আবার সরকারি বিভিন্ন দফতরে যারা চেয়ারে বসে থাকেন তারাও ক্ষমতাবান। দূর্নীতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ‘ আমার কৃষক- শ্রমিক দূর্নীতি করে না। যারা লেখাপড়া শিখেছে তাদের মধ্যেই কেউ কেউ দূর্নীতি করে’। তাঁর এ কথার বাস্তবতা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। বিদ্যুত অফিস, ভূমি অফিস, হাসপাতাল, শিক্ষা অফিসসহ সরকারি সব ধরনের সেবাখাত, পুলিশ-প্রশাসনসহ সর্বস্তরে দূর্নীতি ঝেকে বসে আছে। টাকা দিবেন কাজ হবে, দিবেন না তাে ফাইল নড়বে না। একজন সরকারি চাকুরে যা পায় তা দিয়ে কােন রকম দিনানিপাত করা যায় বৈকি। তা দিয়ে কিন্তু বাড়ি-গাড়ি হাঁকানো যায় না। অথচ েখাঁজ নিয়ে দেখুন, পুরো ভিন্ন চিত্র পাবেন। অবৈধ টাকা কামিয়েও তারা কিন্তু লজ্জায় নিজেকে লুকিয়ে রাখছে না। বরং টাকার গরমে নিজেকে ইচ্ছে মত প্রকাশ করছে। আমার দেখা ‘ সরকারি অফিসের একজন পিয়ন ৩ হাজার টাকার নীচে জামা পড়ে না’। তার বাসায় সেগুন কাঠের ফার্নিচার। দেড় লাখ টাকার মােটরসাইকেলে চড়ে। আবার কর্মকর্তা পর্যায়ের কয়েকজনকে জানি যারা লাখের উপর টাকা দান করে। অথচ তার বেতন সর্বসাকুল্যে মাত্র ২০ হাজার টাকার †বশী নয়। বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলের এক প্রধান শিক্ষককে জানি যিনি বছর বছর ইন্ডিয়া ভ্রমন করেন, হজ্জ পালন করেছেন। এ হল দাফতরিক চিত্র।

আরেক চিত্রে দেখা গেছে ক্ষমতাসীন দল করেন এমন কিছু পদওয়ালা, পদহীন মানুষ রাতারাতি অঢেল টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের গলায় এখন বঙ্গবন্ধুর নামে শ্লোগান †শানা যায়। তারা জাতীয় শােক দিবসে ডিজিটাল পােস্টার করেন । তাতে নিজের ছবি বড় করে দেন, বঙ্গবন্ধুর মত পৃথিবীবরণ্য নেতার ছবি দেন ছােট করে। হায় বঙ্গবন্ধু প্রেমিক ! এই তালিকায় পদহীনরা যেমন রয়েছে তেমনি আওয়ামীলীগ যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারাও রয়েছেন। অনেকেই বলাবলি করেন ‘ এই ক’ দিন আগে পর্যন্ত ওদেরকে ছা পােষা দেখা গেছে। এখন তারা মস্ত ধনী’। কি করে ? অবশ্য এ চিত্র সব আমলে সব দলের বেলায়ই দেখা গেছে। রাজনৈতিক বােদ্ধাদের মতে, তারা যদি বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসত তবে তার নির্দেশ †মনে চলত । ১৯৭৩ সালের ১৯ আগস্ট সােহরাওয়ার্দি উদ্যানে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে প্রদত্ত বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কিছু অংশ তুলে ধরা হল-

“বাবারা, একটু লেখাপড়া শিখ। যতই জিন্দাবাদ আর মুর্দাবাদ কর, ?ঠিকমত লেখাপড়া না শিখলে
কােন লাভ নাই। আর লেখাপড়া শিখে যে সময়টুকু থাকে বাপ-মাকে সাহায্য কর। প্যান্ট পরা
শিখেছো বলে বাবার সাথে হাল ধরতে লজ্জা করো না। দুনিয়ার দিকে চেয়ে দেখ। কানাডায় দেখলাম
ছাত্ররা ছুটির সময় লিফট চালায়। ছুটির সময় দু'পয়সা উপার্জন করতে চায়। আর আমাদের ছেলেরা
বড় আরামে খান, আর তাস নিয়ে ফটাফট †খলতে বসে পড়েন। গ্রামে গ্রামে বাড়ীর পাশে বেগুন গাছ
লাগিও, কয়টা মরিচ গাছ লাগিও, কয়টা লাউ গাছ ও কয়টা নারিকেলের চারা লাগিও। বাপ-মারে
একটু সাহায্য কর। কয়টা মুরগী পাল, কয়টা হাঁস পাল। জাতীয় সমপদ বাড়বে। তােমার খরচ তুমি
বহন করতে পারবে। বাবার কাছ থেকে যদি এতোটুকু জমি নিয়ে ১০ টি লাউ গাছ, ৫০ টা মরিচ
গাছ, কয়টা নারিকেলের চারা লাগায়ে দেও, দেখবে ২/৩ শত টাকা আয় হয়ে গেছে। তােমরা ঐ টাকা
দিয়ে বই কিনতে পারবে। কাজ কর, কঠোর পরিশ্রম কর, না হলে বাঁচতে পারবে না। শুধু বিএ। এমএ
পাস করে লাভ †নই। আমি চাই কৃষি কলেজ, কৃষি স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল, কলেজ ও স্কুল, যাতে
সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবে। কেরানী পয়দা
করেই একবার ইংরেজ শেষ করে দিয়ে গেছে দেশটা। †তামাদের মানুষ হতে হবে ভাইরা আমার।
আমি কিন্তু সােজা †সাজা কথা কই, রাগ করতে পারবে না। রাগ কর, আর যা কর, আমার
কথাগুলো শােন। †লখাপড়া কর আর নিজেরা নকল বন্ধ কর। আর এই ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি-ডাকাতির
বিরুদ্ধে গ্রামে গ্রামে থানায় থানায় সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে †তাল। প্রশাসনকে সঠিকভাবে চালাতে
সময় লাগবে। এর একেবারে পা থেমে মাথা পর্যন্ত গলদ আছে। মাজেহ মাঝে ছােট-খাট অপারেশন
করছি। বড় অপারেশন এখনো করি নাই। সময় আসলে করা যাবে। †তামাদের আমি এইটুকু অনুরোধ
করছি, তােমরা সংঘবদ্ধ হও। আর মেহেরবানী করে আÍকলহ করো না। এক হয়ে ক আজ কর।
দেশের দুর্দিনে স্বাধীনতার শত্রুরা সংঘবদ্ধ, সামপ্রদায়িকতাবাদীরা দলবদ্ধ, তােমাদের সংঘবদ্ধ হয়ে
দেশকে রক্ষা করতে হবে।”

বঙ্গবন্ধুর এ উপদেশ পড়ার সময় কি এখনকার স্টাইলিস্ট সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পড়া ছাত্রনেতাদের হবে ?

এবার ১৫ আগস্ট পালনের সংবাদ পড়লাম অনলাইন, পত্রপত্রিকায়। বিজ্ঞাপন দেখলাম অনেক সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের। এই সব প্রতিষ্ঠানগুলো কিন্তু অন্য সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বিজ্ঞাপন দেয় না। যে দল ক্ষমতায় থাকে ওই দলের নেতার জন্ম বা মৃত্যু বার্ষিকীতে তারা বিজ্ঞাপন দেয়। এ বিজ্ঞাপন নিয়েও দূর্নীতির কথা শােনা যায়। বিজ্ঞাপনের পুরো টাকা পত্রিকা বা বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পায় না। এর একটা অংশ প্রতিষ্ঠানের কোন কােন কর্মকর্তার পকেটে চলে যায়। আর বিজ্ঞাপন দেয়ার অতি উৎসাহের মূল রহস্য এখানেই। মৌসুম বুঝে দেয়া এই ধরনের বিজ্ঞাপনে শ্রদ্ধার কিছু থাকে কি ? বিষয়টি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। জাতির জনকের জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকীর বিজ্ঞাপনে মৌসুম ব্যবহার লজ্জাজনক। তারচেয়ে এ ধরনের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা দরকার। এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আরেকটি উক্তি -

"আমি আমার জন্মদিনের উৎসব পালন করি না।এই দু:খিনী বাংলায় আমার জন্মদিনই-বা কি আর মৃত্যুদিনই-বা কি? "

বড় মনের মানুষেরা কখনো নিজকে নিয়ে ভাবেন না।বঙ্গবন্ধুর উদার মনের পরিচয় কােন বাঙ্গালী না জানে। তার জাত শত্রুও স্বীকার করবেন তিনি কতটা বড় মনের মানুষ ছিলেন। গােটা দেশটা ছিল তাঁর মনে, তাঁর হৃদয়ে। মােদ্দা কথায় ‘ বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ’।

তাই তাঁর মত মহান নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে মৌসুমী ভক্তদের নড়াচড়া লাগে না। ওরা নড়লেও তিনি বঙ্গবন্ধু, ওরা না নড়লেও তিনি বঙ্গবন্ধু।

বাংলাদেশের মানুষ ভালবেসে তাকে বঙ্গবন্ধু ডাকতেন, আজীবন ডাকবেন। আরা নতুন প্রজন্ম যারা ভালবাসতে চান তাদের কে বঙ্গবন্ধুর উত্তির আলোকেই বলব ‘ পড়াশুনা করুন, জ্ঞান অর্জন করুন, দেশকে ভালবাসুন, বাবা-মা পরিবারকে ভালবাসুন দেখবেন আপনি বঙ্গবন্ধুক জেনে গেছেন। ডেক বাড়িয়ে, ফেস্টুনি টানিয়ে সত্যিকারের ভালবাসা প্রকাশ হয় না। যারা তাঁকে ভালবাসে তারা শুধু এদিনে নয় সব সময়ই শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। এ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামীলীগের বর্তমান কান্ডারীদেরও ভূমিকা রাখা উচিত। মৌসুমী নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করা উচিত।
শেক্সপিয়ারের সেই বিখ্যাত উক্তিটি একটু আবার পড়ে দেখবেন ‘ সবাইকে ভালোবাসুন, খুব কম লােকের উপর ভরসা রাখুন, কারো প্রতিই ভুল কিছু করবেন না” ।







মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.