নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাকে বুঝতে চেষ্টা করিও না, এটা তোমার সামর্থ্যের বাইরে। তুমি হয়তো চেনো আমি কে, কিন্তু তুমি কখনোই বুঝতে পারবেনা কি।
সকাল ৮ টা থেকে ১ টা পর্যন্ত ক্লাস করে আর মন চায় না ৪ টায় আবার ল্যাব ক্লাসে যাই। যদিও এমন নির্যাতন সহ্য করেই জীবন চলতেছে বহু বছর ধরে। কিন্তু এবারের বিষয়টা একটু ভিন্ন। বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রোগ্রামিং না জানা বা কোডিং না পারা টা একটা উচ্চমাধ্যমিক অপারগতা। তাই সুযোগ পেয়ে সেটা আর হাত ছাড়া না করে মন ভরা অনিচ্ছাসত্ত্বেও সময় মতো ল্যাবে চলে আসি।
যাই হোক অনেক অজানার ভিড়ে আসতে আসতে কোডিং এর ABC থেকে শিখতে শুরু করেছি।
প্রথম দিকের প্রজেক্ট গুলো যেমন হয় আর কি!
তো আমরা ভিজুয়াল ব্যাসিকে ক্যালকুলেটর বানালাম। দেখি সে ক্যালকুলেটর কাজ ও করে। অনেক ভুলভ্রান্তির পরে এমন ক্ষুদ্র সফলতা রীতিমতো আনন্দ দেয়।
কাজ শেষ করে নিজেই নিজেকে বলতেছি, "ক্যালকুলেটর তো বানালাম, হিসাব করবো কি! টাকাই তো নাই।"
তৎক্ষণাৎ, পাশে বসে থাকা দবির বলে উঠলো পাশেই তো ব্যাগভর্তি টাকা, বের করে হিসাব করা শুরু করে দে।
প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে ওর ইশারায় পিছনে তাকিয়ে দেখি দুইটা সাইড ব্যাগ। অবশ্য সেগুলো আপুদের। মানুষ যেমন নিজের কলিজা সবসময়ই সাথে সাথে রাখে, তেমনি ব্যাগ গুলোর ক্ষেত্রে তারা একই কাজ করে। তাই মনে হলো ব্যাগভর্তি টাকা থাকলেও থাকতে পারে। প্রথমে দবিরের কথায় কান না দিলেও, পরে অন্য পাশে থাকা নিঠু গুরুর যোগানো ইন্ধন আর উপেক্ষা করতে পারলাম না।
এবার ঠিক করে ফেললাম, "কি আছে ব্যাগের ভিতর সেটাই দেখবো।"
শুরু হলো আমাদের ফন্দি আর্ট করা, প্লান করা, অভিযানে নামার বিশেষ প্রয়াস। অভিযানের নাম রাখলাম "Project Calculator"!
ব্যাগের পিছনেই ব্যাগের মালকিনরা বসে।
যা করতে হবে, সাবধানে!
যেহেতু ব্যাগগুলোর কাছাকাছি আমিই ছিলাম, তাই সেগুলো তে অনুসন্ধান চালানোর গুরু দায়িত্ব এসে পড়লো আমার ঘাড়ে।
মাশাল্লাহ্! আল্লাহ দিছে দুইটা লম্বা লম্বা হাত।
ক্লাসভর্তি শিক্ষার্থীর মাঝে এখন আমার নজর শুধুই ব্যাগগুলোর দিকে।
অবশেষে বুকভরা সাহস নিয়ে হাত দিলাম ব্যাগের ভেতর।
কিন্তু এ কি?
টাকা কই?
প্রথমে হাত পড়লো একটা পানির বোতলে, তবে বোঝা যাচ্ছিলো তার ৯৫% ই খালি।
বুকের ভেতর হতাশা পাখা ঝাপটিয়ে উঠলো। হাত টা আর একটু সরিয়ে দিলাম।
আউচ!
কি যেনো একটা আঙ্গুলে বিঁধেছে।
শুধু চিৎকার দিতে পারলাম না। ব্যথায় আমার কুনুই পর্যন্ত কাঁপতে শুরু করলো।
.
এই পর্যায়ে হাত টা বের করে, এসে আগে নিঠু কে ঝারি মারা শুরু করলাম। শালার গুরু, কি সব অভিযানে পাঠায় আমায়।
যাই হোক, নিঠু আর দবির আবার আমার উৎসাহ জোগালো। আবার মিশনের ২য় ধাপের অভিযানের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।
ক্লাস জুড়ে সবাই তখন কম্পিউটারের মনিটরে নজর দিতে ব্যস্ত। শুধু আমি অভাগা আছি "ব্যাগতত্ত্ব" আবিষ্কারে।
.
আবার হাত দিলাম ব্যাগে। এবার মনে হচ্ছে চুলের ব্যান্ডে হাত পরেছে। কিন্তু তা দিয়ে আমি কি করবো, ব্যান্ড দেওয়ার মতো চুল তো আমার মাথায় নাই।
তাই হাত সরালাম আবার। এবার মনে হচ্ছে কাঙ্খিত কিছু একটাতে হাত পরেছে।
স্পর্শের অনুভূতি টা স্লিপি, মসৃণ! বুঝে উঠতে পারলাম না কি সেটা। তাই আসতে করে বের করে আনলাম। কিন্তু কষ্ট লাগলো যখন দেখলাম আসলে সেটা আর কিছু না, চকলেটের প্যাকেট ছিলো।
ধ্যাৎ! মন টাই খারাপ হয়ে গেলো। ব্যাগে তো দেখি কিছুই থাকেনা।
বুক ভরা হতাশা নিয়ে আমি আমার কম্পিউটারের মনিটরে তাকিয়ে পরবর্তী প্রজেক্টের কাজে মনোনিবেশ করলাম।
.
.
তবে "Project Calculator" থেকে এটা বুঝলাম, একই শ্রেণীকক্ষে ক্লাস করা আপুরা রাগী হতে পারে, সুন্দরী হতে পারে, অনেক রক্ষণশীল হতে পারে, ঝগড়ুটেও হতে পারে।
আর হ্যাঁ, টোকাই ও হতে পারে।
(নইলে কি আর চকলেটের খোসা ব্যাগে নিয়ে কেউ ক্লাস করে!)
৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ ভোর ৬:২০
আওলাদ হোসেন জয় বলেছেন: হে হে, ধন্যবাদ ইব্রাহীম আই কে।
২| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: মোটামোটি।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:১৫
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: শেষের লাইনটা ভালো ছিল।