নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আজাইরা পঁ্যাচাল

আমরা সকলেই এক এক জন বন্দি, আমাদের নিজস্ব গণ্ডীর ভিতর।

আজাইরা পঁ্যাচাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছিন্ন আত্মা

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ৮:৪৪



আমি চলে যাচ্ছি তপু।

তপুর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো চিঠাটা হাতে নিয়ে এই লাইনটা পড়ে। পুরোটা পড়ার সাহস খুঁজে পাচ্ছে না তারপরও পড়া শুরু করল।

শুরুটা দেখেই উত্তেজিত হয়ে যেওনা, সব খুলে বলছি তোমাকে কেন আমি এই সিদ্ধান্ত নিলাম। আমাদের বিয়ে হয়েছে আজ এক বছর তিন মাস আঠারো দিন। তার আগে আমাদের সম্পর্ক ছিল দুই বছর। সম্পর্কের প্রথম দিকটাই সবকিছু ঠিক ছিল। আস্তে আস্তে যখন তুমি বুঝতে শুরু করলে যে আমি তোমাকে প্রচণ্ড ভালবাসি তখন থেকে তুমি আস্তে আস্তে সবকিছু হাল্কাভাবে নিতে শুরু করলে। আমি যখন তোমাকে বুঝাতাম কিংবা বলতাম তুমি কিছুদিন ঠিক থাকতে তারপর আবার সেই আগের অবস্থায় চলে আসতে। তুমি কি জানো যে তুমি একটা জিনিষ খুব ভালো পারো সেটা হল মানুষকে বুঝিয়ে মানিয়ে নিতে? তোমার ভালো একটা গুন এইটা। কিন্তু তোমার এই গুনটা আমার জন্য কাল হয়েছিল। তোমাকে আমি শুধু ভালবাসার জন্য ভালবাসিনি, মনে প্রাণে তোমাকে পেতে চেয়েছিলাম, সারাটা জীবন ভালবাসতে চেয়েছিলাম। তোমার সকল অন্যায় আবদার মেনে নিয়েছিলাম আমি। তোমাকে আমি পেয়েছিলাম ও আমি হয়তো আমার বেরথতা যে তোমাকে পেয়েও ধরে রাখতে পারিনি।

আমার সম্পূর্ণ অনিচ্ছায় তুমি বিয়ের আগেও আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছিলে, তুমি কি একবার ও কখন বুঝতে পারনি যে আমি চাইনা এই বেপারটা আমাদের মধ্যে বিয়ের আগে হোক??

পারনি আমি জানি কারণ পারলে বিয়ের পরেও এই বেপারটা নিয়ে আমাকে জোর করতেনা সবসময়।

তারপরও আমি তোমার সাথে সারাজীবন থাকতে চেয়েছিলাম, যে একদিন না একদিন তুমি বুঝবে কিন্তু না কখনো বুঝইনাই তুমি।

সম্পর্কের শুরুতে যা করেছ আমি মেনে নিয়েছিলাম কারণ আমি বিশ্বাস করতাম যে তুমি আমাকে ভালোবাসো। কিন্তু সুধু ভালোবাসাটাই যথেষ্ট একতা সম্পর্কের ক্ষেত্রে????

যাক, সম্পর্কের কথা ছেড়ে দিলাম। বিয়ের পরে মানুষের অনেক বড় ধরনের একটা পরিবর্তন আসে। সবকিছু নিজের হয়। আত্মার একতা বন্ধন হয়। একটা সংসার হয়, কিছু দায়িত্ব আসে, সবচাইতে বড় আস্থার একটা জায়গা হয় যেখানে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে গুমান যায়। তুমি কি এইভাবে ভেবেছিলে কখনো?

হতে পেরেছিলে আমার সেই জায়গাটা?

আমি ঘুমাতে আসলে তোমার বুকে মাথা রাখতে ভয় পেতাম কারণ আমি জানতাম তোমার বুকে মাথা রাখলে আর ঘুমান হবেনা।

বিয়ের পরে একতা মানুষের আর আগের জীবনটা কাটানর অবস্থা থাকেনা। তাকে তার পরিবার কে সময় দিতে হয়। সবকিছু থাকবে কিন্তু পরিবার এর জন্য সময় ও থাকবে। তুমি কি আমাকে বলতে পারবে, যে কখনো রাত বারটার আগে তুমি বাসায় এসেছ??

এমনকি ছুটির দিনেও তোমাকে কখনো পাইনি কাছে। কোন কিছুতে তুমি ছিলেনা।

যেই মানুষটাকে পাওয়ার জন্য এতটা পাগল হয়ে ছিলাম সেই মানুষটা তো থেকেও নেই। বিয়ের প্রথমদিন থেকে বুঝিয়েই গেছি আমি কিন্তু তোমার কোন পরিবর্তন দেখিনি এবং আমি জানি কখনো দেখব ও না। সম্পর্করে সময় মনে হতো বুঝতে চেষ্টা কর, আমরা একসাথে থাকলে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু না হয়নি।

তুমি কি বুঝ যে একটা মানুষের মন অনেক সময় অনেক কিছুই না চাইতে পারে কিন্তু এই না চাইতে পারা অবস্থাই আমি কখনো তোমার হাত টা আমার মাথাই পাইনি। সবকিছুতে তোমার জোর ছিল সেটা শারীরিক সম্পর্ক বল কিংবা অন্য যেকোনকিছু।

বিয়ের আগে তোমার অন্য কারো সাথে শারীরিক সম্পর্ক ছিল কিনা আমি জানতাম না কারণ আমি তোমাকে বিশ্বাস করতাম কিন্তু এখন আছে সেটা আমি জানি।

আমি এইটা কখনো মানতে পারবনা, এর জন্য আমি কখনো তোমাকে মাফ করবোনা। অন্য যে কোনকিছু আমি হয়তো তুমি বুঝিয়ে বললে আমি তোমাকে আর একটা সুযোগ দিতাম কিন্তু এখন অবশ্যই না।

আমাকে ফিরানোর চেষ্টা করোনা।



পুনশ্চঃ শুধু ভালোবাসাই একটা সম্পর্কে সবকিছুনা। এর সাথে বিশ্বাস, সন্মান, অন্যজনের সিদ্ধান্ত কে সন্মান করা এবং আরও অনেক কিছুই জড়িত। ভালোবাসা মানেই দুর্বলতা না, এইটা একটা শক্তি।আর বিয়ে মানেই শুধু বাসায় একটা বউ আছে বেপারটা এমন না, তার প্রতি দায়িত্ব আছে। তার নিজস্ব চাওয়া পাওয়া আছে। বিয়ে মানে শুধু বিয়ে না বিয়ে মানে দুটা আত্মার একটা জায়গায় মিলে মিশে একাকার হয়ে যাওয়া।

ভালো থেকো

তিন্নি।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬

মহসিনা বলেছেন: অনেক কষ্ট লাগলো লেখাটা পরে।আপনি তাকে ফিরিয়ে আনেন এবং আবার নতুন করে জীবন শুরু করেন,আমাদের দোয়া আপনার সাথে থাকবে।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪২

আজাইরা পঁ্যাচাল বলেছেন: আমার সাথে গল্পের কোন মিল নেই। :D
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
সাথে থাকার জন্য। :)

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৩

ডি মুন বলেছেন: বিয়ের পরে মানুষের অনেক বড় ধরনের একটা পরিবর্তন আসে। সবকিছু নিজের হয়। আত্মার একতা বন্ধন হয়। একটা সংসার হয়, কিছু দায়িত্ব আসে, সবচাইতে বড় আস্থার একটা জায়গা হয় যেখানে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে গুমান যায়। তুমি কি এইভাবে ভেবেছিলে কখনো?
হতে পেরেছিলে আমার সেই জায়গাটা?



বিষাদপূর্ণ লেখা। ভালো লাগলো। তবে চাই না কেউ বিষাদে আক্রান্ত হোক। কারণ বেদনার ভার বহন করা ভীষণ যন্ত্রণার। আর শেষের দিকে ঠিকই লিখেছেন --

শুধু ভালোবাসাই একটা সম্পর্কে সবকিছুনা। এর সাথে বিশ্বাস, সন্মান, অন্যজনের সিদ্ধান্ত কে সন্মান করা এবং আরও অনেক কিছুই জড়িত।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৪

আজাইরা পঁ্যাচাল বলেছেন: এই বিষাদটাই আমাদের সমাজের বাস্তবতা হয়ে যাচ্ছে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। :)

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪

অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: :(

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৫

আজাইরা পঁ্যাচাল বলেছেন: মন খারাপ করবেন না, আসা করবো এইরকম হবেনা আপনার। :)

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৩

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: গল্পে ভাললাগা রইল ভ্রাতা ।

ভাল থাকবেন :)

৫| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৬

আজাইরা পঁ্যাচাল বলেছেন: ভালো লাগল সাথে পেয়ে আপনাকে।
ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন আপনিও :)

৬| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০১

কলমের কালি শেষ বলেছেন: হুম । এইসব লোকদের এই রকম হওয়া উচিত । দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝে না । B-))

০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৬:০৭

আজাইরা পঁ্যাচাল বলেছেন: ভালো বলেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.