নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছায়া নয়, আলো ...

আরমান আরজু

সত্য ও অসীমের পথে

আরমান আরজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সালাত (নামায) জাহান্নামেরও চাবি – ২য় পর্ব

০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৩৭

সালাত পড়লে কিংবা মসজিদে গেলেই মুসল্লি নয়, তবে মুসল্লি কে?
”(মুসল্লি তারা) যারা তাদের সালাতের উপর চিরকাল সার্বক্ষণিকভাবে থাকে” (সুরা মা’আরিজ, আয়াত: ২৩)।
কারা মুসল্লি আয়াতটিতে সুস্পষ্ট। আয়াতটিতে কোন ওয়াক্তের কথা উল্লেখ নেই। সালাতে সার্বক্ষণিকভাবে যাঁরা থাকবে তাঁদের জন্যই সালাত জান্নাতের চাবি। সালাতে সার্বক্ষণিক কীভাবে থাকবে? সারাক্ষণ যদি রুকু-সেজদায় পড়ে থাকি তবে তো পৃথিবীতে বসবাস দুরূহ হয়ে পড়ে! কোরআনে মহান আল্লাহ যে সালাতের কথা বলেছেন তা কি রুকু-সেজদার সালাত? মোটেই না। কোরআন হল মূলনীতি, কোরআন কোন যুগের ঘেরাটোপে আবদ্ধ থাকার গ্রন্থ নয়, কোরআন-এর বাণী সর্বযুগের জন্য চিরন্তনরূপে বিরাজ করছে। আর সেজন্য কোরআনে ওয়াক্তিয়া সালাতের কোন উল্লেখ নেই। আমার জানা মতে ’আন্তর্জাতিক মহাকাশ ষ্টেশনে’* যদিও এখন পর্যন্ত কোন ইসলামের অনুসারী মহাকাশবিজ্ঞানী যাননি, যদি অদূর ভবিষ্যতে কেউ যান আর তিনি যদি সেখানে নামায পড়ার ইচ্ছা করেন তবে তিনি কোন শরীয়ত মানবেন যেখানে দৈনিক প্রায় ১৫ বার সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত হয়! যদি তিনি দাবি করেন যে সেখানে শরীয়ত অচল আর তাই কোন ইবাদতও লাগবে না কিন্তু কোরআনে মহান আল্লাহ বলছেন,
”আমি জ্বীন ও ইনসানকে শুধুমাত্র ইবাদতের জন্যই সৃজন করেছি” (সুরা আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬)।
এখন আপনি পৃথিবীতে থাকেন কিংবা আকাশে থাকেন অথবা মহাকাশে আন্তর্জাতিক ষ্টেশনে থাকেন আপনি কিন্তু আয়াতটির বাইরে নয় যেখানে বলা হচ্ছে শুধুমাত্র ইবাদতের জন্যই সৃজন করা হয়েছে আপনাকে। আপনি আকাশে না পাতালে থাকছেন, আপনি সুস্থ না অসুস্থ, বাহ্যিক পবিত্রতা আপনার আছে কি নেই এসব বিষয় থেকে উক্ত আয়াতটি অনেক উপরে। আপনি যেখানে যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন আপনি ইবাদত থেকে মোটেই বিচ্ছিন্ন থাকতে পারবেন না। আয়াতটির মর্মার্থ এটাই। প্রশ্ন আসতে পারে যদি শুধুমাত্র ইবাদতের জন্যই আমাদের সৃজন করা হয় তবে বেঁচে থাকার জন্য যে কাজ বা উপার্জন সেটি করার সময় কোথায়। কাজ বা উপার্জন অবশ্যই করবেন কিন্তু ইবাদত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নয়। কারণ কোরআনে কোথাও বলা হয়নি খাওয়ার জন্য, পরার জন্য, আনন্দ-ফুর্তি করার জন্য আমাদের সৃজন করা হয়েছে। জীবনের প্রয়োজনে এগুলোরও দরকার আছে তবে ইবাদত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নয়। সুতরাং আমাকে আগে বুঝতে হবে ইবাদত আসলে কী। ইবাদতের রূপরেখা কী। দৈনন্দিন পাঁচবার মাটিতে মাথা ঠেকালে মাথা নত হয়, ইবাদত হয় না। ইবাদত চার প্রকারঃ ১. ইবাদতে মা’লি (আর্থিক ইবাদত, যেমন-যাকাত, ফিতরা, সদকা); ২. ইবাদতে বদলি (শারীরিক ইবাদত, যেমন-নামায, রোযা, হজ্ব); ৩. ইবাদতে লিসানি (মৌখিক ইবাদত, যেমন-আল্লাহর যিকির) এবং ৪. ইবাদতে রূহানি (আত্মিক ইবাদত, উদাহরণ পরে আসছে)। ধরা যাক, আপনার অর্থ-বিত্ত একদম নেই, শরীরও অকেজো, হুশ-জ্ঞান নেই কিন্তু রাইস টিউব দিয়ে খাওয়া চলছে তাহলে আপনার দ্বারা ইবাদতে মা’লি, বদলি ও লিসানি হচ্ছে না। যেহেতু আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস আছে এবং খাওয়াও চলছে সুতরাং ইবাদতও চলবে। কিন্তু কীভাবে? কোন সে ইবাদত? সেটা হল ইবাদতে রূহানি। যার অপর নাম স্বয়ংক্রিয় ইবাদত। আর এ ইবাদতের জন্য একটি শক্তির আশ্রয় আপনাকে নিতেই হবে। ইবাদতে রূহানি যার নেই তার দ্বারা বাকি তিনটি ইবাদত (মা’লি, বদলি ও লিসানি) সঠিকভাবে কার্যকর করা কস্মিনকালেও সম্ভবপর নয়। করলেও তা হবে লোক দেখানো। ইবাদতে রূহানি-ই হল সার্বক্ষণিক ইবাদত। আর সেজন্যই মহান আল্লাহ বলছেন, ’মুসল্লি তারা যারা তাদের সালাতের উপর চিরকাল সার্বক্ষণিকভাবে থাকে’। আমাদের বাসা-বাড়ি থেকে বহুদূরে উৎপাদিত হয়ে বিদ্যুৎশক্তি যখন বাতি-পাখা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সচল রাখে তখন আমরা আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম ভালভাবে সম্পাদন করতে পারি। শক্তি নেই কিছুই নেই। রূহানি ইবাদতেও রূহানি শক্তির আশ্রয় আপনাকে নিতেই হবে যা আপনার আত্মিক সত্তাগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সচল রাখবে। এ শক্তির উৎস মহান আল্লাহ। কীভাবে তাঁর থেকে সে শক্তি আপনি সংগ্রহ করবেন? সমাধানও আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন,
”নিশ্চয় আল্লাহর রহমত মুহসীন বান্দাদের অতি নিকটে” (সুরা আ’রাফ, আয়াত ৫৬)।
মুহসীন বান্দা তথা আওলিয়া আল্লাহ তথা মু’মিন তথা মুর্শিদ এঁরা সকলেই একই, এঁদের কাজকর্মও একই (যদিও কোরআনে ভিন্ন ভিন্ন নামে এসেছে) আর তাহল মানুষের অন্তরে রূহানি শক্তির সঞ্চার করা যার প্রভাবে মহান আল্লাহর স্মরণ মানুষের ক্বলব তথা অন্তরে সদাসর্বদা জাগ্রত থাকবে। সাথে সাথে রূহানি ইবাদতও চলবে।

(*আন্তর্জাতিক মহাকাশ ষ্টেশন একটি বাসযোগ্য কৃত্রিম উপগ্রহ। মহাকাশ ষ্টেশন আসলে কোন ষ্টেশন না, এটি একটি বিশাল মহাকাশযান। অন্যভাবে বললে আবার একে কৃত্রিম উপগ্রহও বলা যায়। যেটা পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ২২০ মাইল উপরে একটি অক্ষপথ ধরে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে বেড়াচ্ছে ঘন্টায় ১৭৫০০ মাইল বেগে। এই মহাকাশযানে মহাকাশবিজ্ঞানীরা একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে সেখানে বসবাস করেন এবং মহাকাশ বিষয়ক গবেষণা করেন। এই গবেষণাগুলো মূলত NASA-ই পরিচালনা করে থাকে। এ ধরণের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য মহাকাশকে আরও ভালোভাবে চেনা জানা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ ষ্টেশনগুলোতে কর্মরত মহাকাশচারীরা দৈনিক প্রায় ১৫ বার সূর্যোদয় ও ১৫ বার সূর্যাস্ত দেখেন।)
১ম পর্বঃ Click This Link

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:৫৪

হানিফঢাকা বলেছেন: সালাত অর্থ কি? সালাত কাকে বলে?

মুসল্লি অর্থ কি? মুসল্লি কাকে বলে?

২| ১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪

কল্যানপুর বলেছেন: মহাকাশ স্টেশনে নামাজের নিয়ম কি?

১২ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৪

আরমান আরজু বলেছেন: মহাকাশ স্টেশনে কবে যাচ্ছেন একটু জানাবেন কি? যিনি পৃথিবীতে শরীয়ত দিতে পারেন তিনি মহাকাশেও পারেন। দেখতে হবে তাঁর সাথে আপনার সম্পর্ক কতটুকু?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.