নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছায়া নয়, আলো ...

আরমান আরজু

সত্য ও অসীমের পথে

আরমান আরজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সালাত (নামায) জাহান্নামেরও চাবি – ৩য় পর্ব

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:২২

”ওহে ঈমানদারেরা, তোমরা সালাতের (নামাযের) নিকটবর্তী হও না এবং তোমরা নেশাগ্রস্ত, যতক্ষণ পর্যন্ত না বুঝ তোমরা কী বলছ” (সূরা নেসা, আয়াত: ৪৩)।
আমাদের অনেক মাথামোটা তাফসীরকারক আয়াতটির ব্যাখ্যায় লিখেছেন, মদের নেশায় মাতাল হয়ে যারা নামায পড়তে যেতেন তাদের জন্য নাকি আয়াতটি এসেছে! হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছি না। এসব তাফসীরগুলোকে বাঙালির হাসির গল্প বললে কম বলা হবে। আমার বিশ্বাস বর্তমানে যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে যেয়ে আদায় করেন তারা আশা করি মদ্য পান করেন না। যারা মদ্য পান করেন তারা নামায পড়েন বলে মনে হয় না। তবে কি আয়াতটির কার্যকারিতা শেষ? মোটেই না। আয়াতটির গভীরে যাওয়ার আগে আরেকটি প্রসঙ্গে আসি। কোন সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে আয়াতটি নাযিল করা হয়েছে তা আগে আমাকে দেখতে হবে। বলা হয়েছে, ’ওহে ঈমানদারেরা’ (আরবীতে ’ইয়া আইয়ুহাল্লাজীনা আ’মানু’), বলা হয়নি, ’ওহে মানুষেরা’ (আরবীতে ’ইয়া আইয়ুহাল ইনসানু’)। ঈমানদার এবং মানুষ কিন্তু এক জিনিস নয়। আবার সব মানুষেরা কিন্তু ইসলামের অনুসারী নয়। কোরআনে কোথাও ইনসান অর্থাৎ মানুষকে সালাতের (নামাযের) জন্য সৃজন করা হয়েছে বলা হয়নি, বলা হয়েছে শুধু ইবাদতের জন্য সৃজন করা হয়েছে। ইবাদত কী? সোজা কথায় মহান আল্লাহর স্মরণ। তো সালাতও তো এক প্রকার ইবাদত। মানুষকে দেয়া হয়েছে শুধু ইবাদতের নির্দেশ আর ঈমানদারকে সালাতের। কেন? দেড় মাসের বাচ্চাটি খেয়েছে বললে আমরা বুঝবো বাচ্চাটি মায়ের দুধ (অথবা বর্তমানে বোতলের দুধ যেহেতু মায়েরা অত্যধিক ব্যস্ত!) খেয়েছে আর আপনি খেয়েছেন বললে বুঝবো আপনি ভাত বা এ জাতীয় কিছু খেয়েছেন। উভয়ে খেয়েছে কিন্তু উভয়ের খাওয়া কি এক? মানুষও ইবাদত করবে ঈমানদারও ইবাদত করবে, ইবাদত ঠিক আছে কিন্তু উভয়ের ইবাদত এক নয়। বুঝা গেল সালাত কায়েম করতে হলে ইনসান অর্থাৎ মানুষ হতে পদোন্নতি পেয়ে ঈমানদার হতে হবে। নচেৎ সালাত করবেন বটে তবে এ সালাত আপনাকে আবারও নিয়ে যাবে পাপের বাজারে এবং অবশেষে জাহান্নামে।
এবার আয়াতটিতে আসি। ঈমানদারদেরকে মহান আল্লাহ বলছেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের নিকটেও যেও না। সালাত মানে কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামায নয় (সালাত জাহান্নামেরও চাবি – ২য় পর্ব দেখুন), সালাত একটি সার্বক্ষণিক বিষয়। নেশা কিন্তু অনেক প্রকার। মদ্যপান একটি নেশা। বর্তমানে অনেককে দেখা যাচ্ছে ক্রিকেট নামক একটি নেশায় বিভোর হয়ে থাকতে, এক্ষেত্রে দাড়ি-টুপি ওয়ালারাও কম যান না তারা আবার পাঁচ ওয়াক্ত নামায খুব যত্ন সহকারে পড়েন! মহিলারা মেতে আছেন আধুনিক বাহারি কাপড়ের নেশায়, আবার কেউ কেউ মেতে আছেন মহিলাদের নেশায়, কেউ টাকার নেশায়, কেউ বাড়ি, কেউ গাড়ি, কেউ নিত্যনতুন মোবাইল ফোন ইত্যাদি হরেক নেশায় আমরা বিভোর হয়ে আছি আল্লাহকে পাওয়ার নেশা ব্যতীত। কিন্তু একজন ঈমানদারের এসব নেশা থেকে থাকতে হবে অনেক দূরে কারণ সে ঈমানের অধিকারী। ঈমানের মূল্য কোন কিছুর বিনিময়ে দেয়া সম্ভব নয়। ঈমানের অধিকারী হওয়া মহান আল্লাহর দয়া ছাড়া আর কিছু নয়। সুতরাং যাকে আল্লাহ দয়া করবেন তাকে চাইবেন জগতের সমস্ত প্রকার নোংরামি থেকে দূরে রাখতে নইলে ঈমান হারা হয়ে সে আবার শয়তানের পথে চলে যেতে পারে। তাই মানুষ হতে পদোন্নতি পেয়ে ঈমানদার হতে গেলে দুনিয়ার যাবতীয় নেশা অন্তর থেকে আপনাকে ফেলে দিতে হবে। পারলে জান্নাতী আর না পারলে জাহান্নামী।

২য় পর্বঃ Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.