নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছায়া নয়, আলো ...

আরমান আরজু

সত্য ও অসীমের পথে

আরমান আরজু › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন আপনাকে কবরস্থ করতে হবে?

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:১৭

প্রাণী মাত্রই মারা গেলে পচন ধরে- তা মাটিতে পুঁতে ফেলা হোক কিংবা মাটির উপরে রাখা হোক। প্রাণীদের কোন জানাজা-দাফন নেই, নেই কোন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কিংবা সৎকার। মরে গেলে পচে যাবে এবং একসময় মাটির সাথে মিশে যাবে, অতএব এত আয়োজনের কী দরকার, তাই না? মানুষও একপ্রকার উন্নত (!) প্রাণী। মানুষও মারা গেলে পচে যায় (!) এবং একসময় মাটির সাথে মিশে যায় কিন্তু তার জন্য এত আয়োজন কেন? কেন এত জানাজা, পবিত্র গ্রন্থ থেকে মন্ত্র উচ্চারণ, চিতা কিংবা দাফনের আয়োজন, কবরস্থান কিংবা সমাধির ব্যবস্থা? অন্য আর দশটা প্রাণী যেমন বাঘ, শুয়োর, হরিণ, ঘোড়া, গরু ইত্যাদি মারা গেলে যেমন পচে যায় তেমনি মানুষেরও তো একই পরিণতি হচ্ছে। তো আর দশটা প্রাণী হতে মানুষ আলাদা কোথায়? বলবেন মানুষ উন্নত (!) প্রাণী, সে বড় বড় ডিগ্রী নিতে পারে, ভবিষ্যতে পৃথিবীর বাইরে থাকার পরিকল্পনা করছে। বাঘ, শুয়োর, হরিণ, ঘোড়া, গরু কি এগুলো পারবে? সবই মানলাম কিন্তু আমার সমস্যা অন্য জায়গায়। মারা যাবার পর তার বড় বড় ডিগ্রী কিংবা পৃথিবীর বাইরে থাকা তো কোন কাজে আসছে না। সে তো আর দশটা প্রাণীর মতোই পচে যাচ্ছে, তার জন্য এত আয়োজন কেন? জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসলে তো হয়। অন্ততঃ মাংসাশী প্রাণীগুলোর আহার্যের যোগান হবে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অনেক বাঙ্গালীর মৃতদেহ দাফন কিংবা সৎকারের অভাবে মাটিতে পড়ে ছিল এবং একসময় সেগুলো মাটির সাথে মিশে গিয়েছে।
আমি বুঝতে পারছি এতটুকু পড়তে গিয়ে আপনার খুব কষ্ট হচ্ছে। কাউকে কষ্ট দেয়া আমার উদ্দেশ্য নয়। বিবেকের সম্মুখে পৃথিবীর মানুষদের দাঁড় করিয়ে দেয়ার জন্যই এই লেখা।
পবিত্র কোরআন অনুযায়ী মু’মিন কিংবা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করলে আপনার জন্য যত আয়োজনই করা হোক না কেন যেমন- আগরবাতি জ্বালানো, পবিত্র গ্রন্থ থেকে আবৃত্তি, দাফন কিংবা চিতার জন্য কাঠ বা অন্যান্য সামগ্রী, আলিশান কবর বা সমাধির ব্যবস্থা ইত্যাদি সবই বেকার। বলে রাখা ভাল ইসলাম ধর্মের অনুসারী পিতা-মাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করলে কিন্তু মু’মিন কিংবা মুসলিম হয় না যেভাবে চিকিৎসকের সন্তান চিকিৎসক হয়ে জন্ম নেয় না। তাকে লেখাপড়ার মাধ্যমে চিকিৎসক হতে হয়। ঠিক মু’মিন কিংবা মুসলিম হয়ে কেউ জন্ম নেয় না। সাধনা আর চরিত্র বলে মু’মিন কিংবা মুসলিম হতে হয়।
হাদীস শরীফে উল্লেখিত কবর জিয়ারতের দোয়াটি ভাল করে আরেকবার পড়ে দেখুন তো কী বলা হয়েছে- ”আসসালামু আ’লাইকুম আহলাদ্দিয়ারি মিনাল মু’মিনীনা ওয়াল মুসলিমীনা …” অর্থাৎ ’হে গৃহসমূহের অধিবাসী মু’মিন ও মুসলিমগণ, তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।’ হাদীসে মিনান ’নাস’ (মানুষ), মিনাল ’ইনসান’ (মানুষজাতি), মিনাল ’আমানু’ (ঈমানদার) ইত্যাদি তো বলা হল না। বলা হয়েছে শুধু ’মিনাল মু’মিনীনা ওয়াল মুসলিমীনা’।
এবার পবিত্র কোরআন শরীফটি রেহেল থেকে নামিয়ে শুধু রোযার মাসে ছো-ও-য়া-বে-র উদ্দেশ্যে না পড়ে একটু খুলে দেখুন তো কী লেখা আছে। কোরআন বলছেন,
”নিশ্চয়ই মু’মিনরা সফলকাম” (সূরা মু’মিনুন, আয়াত: ১),
”ওহে ঈমানদারগণ তাকওয়া কর আল্লাহর নিরেট তাকওয়া এবং তোমরা মৃত্যুবরণ করিও না মুসলিম না হয়ে” (সূরা আল ইমরান, আয়াত: ১০২)।
পুরো কোরআনে ’ইনসানরা সফলকাম’ কিংবা ’ঈমানদাররা সফলকাম’ কিংবা ’নাসরা সফলকাম’ কিংবা ’আলেম, মুফতি, হাফেজ, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদরা সফলকাম’ নামক কোন বাক্য আপনি পাবেন না। আবার ’ইনসান না হয়ে মৃত্যুবরণ করিও না’ কিংবা ’নাস না হয়ে মৃত্যুবরণ করিও না’ কিংবা ’ঈমানদার না হয়ে মৃত্যুবরণ করিও না’ কিংবা ’আলেম, মুফতি, হাফেজ, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ না হয়ে মৃত্যুবরণ করিও না’ নামক বাক্যও আপনি পাবেন না। দেখা যাচ্ছে কোরআন এবং হাদীস একই সুরে কথা বলছেন। বলবেনই তো কারণ,
”তিনি (নবী) প্রবৃত্তি (নিজ ইচ্ছামত) হতে কথা বলেন না” (সূরা নজম, আয়াত: ৩)।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম যদি নিজ প্রবৃত্তি হতে কথা না বলেন তবে তিনি কোন প্রবৃত্তি হতে কথা বলেন? কোরআন কেন বারবার আল্লাহর সাথে সাথে নবীকেও অনুসরণ করতে বললেন বুঝতে পারছেন কি? এরপরও কোন দল কিংবা গোষ্ঠি যদি বলে যে ’আল্লাহ আমার রব তিনি মোদের সব’ কিংবা ’আল্লাহ ছাড়া আর কোন কিছু মানি না’ বুঝতে হবে এখানে শয়তান ঢুকে গেছে। আদমের সামনেই শয়তান বলেছিল ’আল্লাহ ছাড়া আর কোন কিছু মানি না’ তাই সে মাটির (!) তৈরী আদমকে সেজদা দেয়নি। অনেক তাফসীরকারক মু’মিন, মুসলিম এবং ঈমানদারকে এক করে ফেলেছেন তাঁদের কোরআন ব্যাখ্যায় (!)। মাদ্রাসা কিংবা আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের তোতা পাখি মার্কা বিদ্যা অর্জন করে কোরআন ব্যাখ্যায় হাত দিতে গেলে এমনই হবে। কোরআন যে স্থান হতে নাযিল হয়েছে সে স্থান সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকলে কীভাবে একজন মানুষ কোরআনের মত একটি মহাজ্ঞানভান্ডারের রহস্য উন্মোচনে হাত দেন? তাঁদের বুক কি এতটুকু কাঁপেনি? আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহে কোরআনের পাঁচটি তাফসীর গ্রন্থ থাকার পরও একটি আয়াতের অনুবাদে আমাকে পনের থেকে বিশটি কোরআন সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে যেতে হয় শুধু এ ভয়ে যে যদি আমি মহাশক্তিমানের বার্তা ভুল ভাবে উপস্থাপন করি তবে তো আমার বারোটা বেজে যাবে। এজন্য প্রায়ই চিন্তা করি লেখালেখি বন্ধ করে দেব, কী দরকার এত কষ্ট করার, লোকজনের কাছে সত্য সন্ধানের চেয়ে টাকার সন্ধানই এখন বড়। কিন্তু ভেতর থেকে কে যেন বলে তোমাকে সত্যের সন্ধান দেয়া হয়েছে চুপচাপ বসে থাকার জন্য নয়।
আমি ওদিকে যাবো না, আমার প্রসঙ্গ কবর সম্পর্কিত। আমাদের সেখানো হয়েছে কোন কবরস্থানের পাশ দিয়ে গেলে কবরবাসীকে যেন সালাম দিই এ বলে যে ”আসসালামু আ’লাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর”। আপনি কাকে সালাম দিচ্ছেন? কবরে যিনি আছেন তাকে? তিনি তো কবেই মাটির সাথে মিশে গেছেন! হাড্ডি থাকলেও থাকতে পারে। আরো বড় প্রশ্ন হল সালাম কার জন্য – জীবিত না মৃত ব্যক্তির জন্য। অবশ্যই জীবিত ব্যক্তির জন্যই সালাম। কারণ সালাম দিলে উত্তর দেয়ার প্রশ্ন জড়িত। যিনি কবরেই নেই কিংবা কোথায় আছেন তাও আপনার জানা নেই তো তাকে আবার সালাম কেন? তার জন্য আপনি বড়জোড় দোয়া করতে পারেন কোরআন শরীফ থেকে কিছু আয়াত এবং দরূদ শরীফ পাঠান্তে। সালাম শুধুমাত্র জীবিত ব্যক্তির জন্য। তবে হাদীস শরীফে কবর জেয়ারতের দোয়ায় যে সালাম দেয়া হল সেটার কী হবে। ভাল কথা। দেখতে হবে হাদীসে কোন ব্যক্তিবর্গের উদ্দেশ্যে সালাম দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ’মিনাল মু’মিনীনা ওয়াল মুসলিমীনা’ অর্থাৎ ’মু’মিন’ এবং ’মুসলিম’ আর কেউ নয়। আবার কোরআন বলছেন মু’মিনরা সফলকাম এবং মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করিও না। যাঁরা সফলকাম তাঁরা কি পৃথিবীতে কি পৃথিবীর বাইরে সর্বত্র সফলকাম আর মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করলে আপনি কবরেও মৃত। আর যারা আসলেই মৃত মাটি, আগুন কিংবা জীবজন্তু তাদের খেয়ে ফেলবেই যতই তাদের শান্তির উদ্দেশ্যে হাজার হাজার গরু, ছাগল, পাঠা, মহিষ, দুম্বা, মুরগী, মাছ জবাই দেয়া হোক না কেন। মু’মিন এবং মুসলিম জীবনের সর্ব পর্যায়ে একমাত্র মহান আল্লাহ ও রসূলকেই প্রাধান্য দেন, তাঁদের জীবন ও মৃত্যু আল্লাহর উদ্দেশ্যেই। আর তাই তারা সর্বদা জীবিত শুধু স্থানান্তর হন। কোরআনে আছে,
”এবং মনে করিও না তারা মৃত, যারা আল্লাহর নিমিত্তে কতল হয়। বরং তারা জীবিত রবের নিকট রেজেকপ্রাপ্ত” (সূরা আল ইমরান, আয়াত: ১৬৯)
[আয়াতটিতে ’ফী সাবিলিল্লাহ’ অর্থ ’আল্লাহর রাস্তা’ নয়, এর অর্থ ’আল্লাহর ওয়াস্তে’ বা ’আল্লাহর নিমিত্তে’। আল্লাহর রাস্তা বলে কিছু নেই। যারা বলে আছে দয়া করে তাদেরকে একটু দেখিয়ে দিতে বলবেন। রসূলকে অনুসরণই হল আল্লাহর অনুসরণ]।

তাঁরা কীভাবে জীবিত এবং কীভাবে রবের নিকট থেকে রেজেকপ্রাপ্ত হন সেটাও জানা যাবে তাঁদের কবরের নিকটে গেলে তবে আপনাকে আগে ”জীবিত” হতে হবে। পৃথিবীতে খেয়ে-পরে-বেঁচে থাকার নাম ”জীবিত” নয়। ওটা চিন্তা করলে একটি চতুষ্পাদ প্রাণীর সাথে আপনার কোন পার্থক্য থাকে না। মায়ের পেটে আপনি যখন নড়াচড়া করতেন তখন মাও বুঝতেন আপনি জীবিত। সেই জীবিত আর মায়ের পেট থেকে বের হয়ে এই জীবিত কি এক? মায়ের পেটে এক জীবন আবার মায়ের পেট থেকে যখন স্থানান্তরিত হলেন এ পৃথিবীতে তখন আরেক জীবন। এর বাইরেও আরেকটি ”জীবন” আছে আর সেটা কামেল মুর্শিদের নিকট না গেলে অধরাই থেকে যাবে। আর ওটাই শ্রেষ্ট জীবন কারণ ঐ জীবনের কোন মৃত্যু নেই আছে শুধু স্থানান্তর। এ কারণেই প্রায় চৌদ্দশ বছর পরও ১৯৩২ খ্রীষ্টাব্দে ইরাকের সালমান পাকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর সম্মানিত দুই সাহাবীর লাশ মোবারক দজলা নদীর নিকটবর্তী এলাকা থেকে তাঁদের নির্দেশে অন্যত্র আবার দাফন করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায় লাশ মোবারক দুটি অক্ষত তো ছিলই সাথে তাঁদের কাফনের কাপড়েরও কিছু হয়নি। সিরিয়ার দামেস্কতে হযরত শেখ মুহাম্মদ আইয়ুব তাহির কুর্দি (রহ.) নামে মহান আল্লাহর এক প্রিয় বান্দা আছেন যিনি নবীও নন, সাহাবীও নন কিংবা শহীদও নন। কবর থেকে ওনার একটি পবিত্র চরণ এখনও পর্যন্ত বের হয়ে আছে যে চরণের পবিত্র নখ গুলো প্রতি সপ্তাহান্তে কেটে দিতে হয়। জানা যায় কোন এক বেয়াদবকে কবর থেকে লাথি মারার ফলে ওনার পবিত্র চরণ যে বের হয়েছিল সেটি সে অবস্থায়ই আছে। এই একবিংশ শতাব্দীতেও মাঝে মাঝে পত্রিকায় আসে যে বহু বছর কবরে থাকার পরও আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের পবিত্র লাশে একটুও পচন ধরেনি। এ ধরনের কোন ঘটনা আপনি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কিংবা অন্যান্য পাড়ায় পাবেন না। হিন্দুরা তো ভয়ে নিজেদের জ্বালিয়ে ফেলে। অথচ ’মু’মিন’ কিংবা ’মুসলিম’ কে আগুনও পোড়াতে পারে না। কারণ বহুপূর্বে আগুনের রব বলেছিলেন,
”হে আগুন, আরাম এবং শান্তিদায়ক হও ইব্রাহিমের উপর” (সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ৬৯)।
সদ্য জন্ম নেয়া একটি নিষ্পাপ শিশু যদি কোন কারণে নাম রাখার পূর্বেই মারা যায় দেখা যাবে তার লাশও এক মাস পর আর কবরে পাওয়া যাবে না। কেন? শিশুটি তো নিষ্পাপ। পৃথিবীর বিন্দুতম পঙ্কিলতা তাকে স্পর্শ করেনি। কোন ধর্মও তার জন্য নির্ধারিত হয়নি। তবু কেন শিশুটি মাটির সাথে মিশে গেল? কারণ একটাই। ’মু’মিন’ কিংবা ’মুসলিম’ হতে না পারলে কারো রক্ষা নেই। কাঁচা ইট আর পাকা ইট, দু’টোই ইট কিন্তু পার্থক্য বিশাল। কাঁচা ইট মাটিতে কয়েকদিন রাখলে ঝড়-বৃষ্টিতে এমনিই সে মাটির সাথে মিশে যাবে। আর যেটি ভাটার আগুনে জ্বলে-পুড়ে নিজের স্বভাবজাত রং পাল্টে অন্য রং (লাল) ধারণ করে সেটিকে মাটির যত গভীরেই প্রোথিত করা হোক না কেন তা কস্মিনকালেও মাটির সাথে মিশবে না। মাটির মানুষ (!) যদি কোন একজন কামেল মুর্শিদের নিকট থেকে দীক্ষা নিয়ে সাধনা আর চরিত্র বলে নিজের ভেতরটাকে ’মু’মিন’ কিংবা ’মুসলিম’ বানিয়ে ফেলতে পারেন তবে তিনিও অমর হয়ে যান। কেউ কেউ হয়ত দাবি করতে পারেন আমি হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইসলামি কিংবা অন্য আর যাই কিছু হই না কেন নিজে ঠিক থাকলে তো হল। আবার কামেল মুর্শিদের নিকট যেতে হবে কেন? উত্তর একদম সোজা। যেখানে একটি নিষ্পাপ শিশুও নিজেকে তার নির্দোষিতা দিয়ে মাটির গ্রাস থেকে রক্ষা করতে পারল না সেখানে আপনার নিশ্চয়তা কী? কাঁচা ইটকে পোড়ানোর জন্য যেভাবে ভাটার আগুনের নিকট যেতে হয় সেভাবে কাঁচা মানুষকে আল্লাহ প্রেমের আগুনে পোড়ার জন্যও কামেল মুর্শিদের নিকট যেতে হবে। আর কামেল মুর্শিদের একমাত্র কাজ ’মু’মিন’ কিংবা ’মুসলিম’ বানানো, মুরিদ (ভক্ত বা শিষ্য) বানানো নয়। যারা ’মুরিদ’ বানায় (যেমন- ’পীর’ বাবা, ’আলেম’ বাবা, ’গুরু’ বাবা, ’লোকনাথ’ বাবা, ’ভান্তে’ বাবা, ’পোপ’ বাবা ইত্যাদি) তাদের নিকট থেকে এক হাজার মাইল দূরে থাকবেন কারণ তারা ’পীর’, ’আলেম’, ’গুরু’, ’লোকনাথ’, ’ভান্তে’, ’পোপ’ নামক উপাধি গায়ের জোরে নিজের স্কন্ধে লাগিয়ে দেদার ব্যবসা করে কোটি কোটি মানুষদের অন্ধকারে রেখে দিচ্ছে। কারণ তারা নিজেরাও তো অন্ধ। এক অন্ধ কি আরেক অন্ধকে পথ দেখাতে পারে? পুস্তকের জ্ঞান দিয়ে হয়ত পৃথিবীতে খেয়ে-পরে চতুষ্পাদ প্রাণীর মত বেঁচে থাকা যায় কিন্তু অন্ধত্ব দূর করা যায় না।

মৃত্যুর আগে মানুষের কত দাপট দেখি কিন্তু মৃত্যুর পর সেই দাপুটের সাথে একটি মাছেরও কোন পার্থক্য থাকে না। উভয়কে পচন থেকে রক্ষার জন্য হিমায়কে (ফ্রিজার) রাখতে হয়! মৃত্যুর পর সেই দাপুটের দাপট আর থাকে না। চট্টগ্রামের হালিশহরের একজন বিশিষ্ট বিত্তশালী ব্যবসায়ীর (নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকলাম) ইচ্ছা হয়েছিল মৃত্যুর পর তার কবর যেন ’মাযারের’ মত করে দেয়া হয়। বাবার অসিয়ত মতে তার সন্তানেরা তাই করল। কিন্তু দু’দিন না যেতেই তার সন্তানেরা বাবার মাযারটি ভেঙ্গে সাধারণ কবর করে দিল। পরে জানা গেল ওই বিশিষ্ট বিত্তশালী ব্যবসায়ী স্বপ্নে তার সন্তানদের নির্দেশ দিলেন দ্রুত যেন ’মাযার’টি ভেঙ্গে ফেলা হয়। মাযার অর্থ ঘর আর ঘরে কোন মৃত মানুষ থাকে না।
কিন্তু যাঁরা ’মু’মিন’ এবং ’মুসলিম’ তাঁদের যেহেতু ”মৃত্যু” নেই তাই তাঁদের দাপট পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পরও থেকে যায়। বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। গাজী ভঙ্গি শাহ (রহ.)-এর মাযার আশা করি সবাই চেনেন। চট্টগ্রামের বটতলী ষ্টেশন মসজিদের পাশে সড়কের মধ্যেই তাঁর মাযার। ব্যস্ততম রাস্তার মাঝে যে শুয়েছেন আর উঠার নাম নেই। কারো সাহস নেই তোলার, কি সরকার কি জনগণ। কবরে অথচ কী দাপটের সাথে শুয়ে আছেন। তাঁর স্থানে যদি অন্য কারো কবর হত তবে এতোদিনে হয়ত মাটির সাথে মিশে যেত। পাশেই কিন্তু ’চৈতন্য গলি’ কবরস্থান যেখানে শুয়েছিলেন চট্টগ্রামের ইয়া বড় বড় মানুষেরা যাদের অভাব ছিল না অর্থের, অভাব ছিল না সম্পদের কিন্তু তাদের কবর গুলো খুঁড়ে দেখুন হাড্ডি ব্যতীত আর কিছুই পাওয়া যাবে না। তাদের এত এত অর্থ-সম্পদ তাদেরকে সামান্য মাটির করাল গ্রাস থেকে বাঁচাতে পারেনি।

আর বেশি কিছু বলার দরকার নেই। এবার সিদ্ধান্ত আপনার। আপনি কি ’মু’মিন’ কিংবা ’মুসলিম’ হয়ে অমর হবেন নাকি মাটি আর কীটের আহার্য হবেন?

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার এই পোষ্ট ধার্মিকদের জন্য।
নাস্তিকেরা আপনার পোষ্ট পড়ে হাসবে।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:০৯

আরমান আরজু বলেছেন: ধার্মিকই বা কারা আর নাস্তিকই বা কারা? আপনি যাদের ধার্মিক কিংবা নাস্তিক ভাবছেন তারা একেকজন ভন্ড। অশিক্ষিতরাই ধার্মিক কিংবা নাস্তিক হয়।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১০:০১

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: অনেক কথাই ভাল লিখেছেন। তবে, কামেল মুর্শিদের কাছে যেতে হবে সেটার রেফারেন্স দেন। ভঙ্গি শাহ(রাঃ)-এর কবরে হাড্ডি আছে না অন্য কিছু আছে আপনি কীভাবে জানলেন?

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:১৭

আরমান আরজু বলেছেন: ভাল-খারাপ লেখার জন্য আসিনি। এসেছি অন্ধ মানুষগুলোকে আলোর সন্ধান দেয়ার জন্য। আমার সব লেখার মূল সুর কিন্তু 'কামেল মুর্শিদ' নিয়েই। বুঝতে পারলে ভাল আর না বুঝলে কিছু করার নেই। 'ভঙ্গি শাহ(রাঃ)-এর কবরে হাড্ডি আছে না অন্য কিছু আছে' জানতে হলে আগে আপনাকে জীবিত হতে হবে। অন্ধ লোকে মন্দ বলবে এতে ভঙ্গি শাহ (রহ.)-এর কিছুই যায় আসবে না।

৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৬

অন্তরন্তর বলেছেন: খুব ভাল লিখেছেন। আল্লাহ্‌ আপনার মঙ্গল করুন। অনেক দিন পর আপনার লিখা দেখলাম মনে হয়। আপনার সাথে কিছু কথা বলা দরকার কিন্তু আমি দেশের বাইরে থাকি। আপনাকে আমার ইমেইল এড দিলাম। কষ্ট করে যদি মেইল করেন উপকৃত হব।[email protected]

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:৩৩

আরমান আরজু বলেছেন: আসসালামু আ'লাইকুম।
আপনাকে ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ার জন্য। আমার লেখার মূল উদ্দেশ্য মানুষদের সত্য পথের সন্ধান দেয়া যেহেতু আমি নিজেই তা বুঝে পেয়েছি, আলহামদুলিল্লাহ। চমৎকার চমৎকার লেখা লিখে মানুষদের নিকট থেকে তুচ্ছ বাহবা পাওয়া কিংবা দলে ভিড়িয়ে নিজের স্বার্থসিদ্ধি এসব থেকে আমি যোজন দূরে। অজানার রহস্য এবং সত্য পথ সম্পর্কে যদি আরো কিছু জানতে চান তবে যোগাযোগ করুন। আমি আপনাকে মেইল করেছি। আপনি ইচ্ছা করলে এখানেও (সামহোয়্যার ইন ব্লগে) প্রশ্ন করতে পারেন। ধন্যবাদ।

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১২:০৭

সনেট কবি বলেছেন: পড়লাম

৫| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:৩৫

নতুন বলেছেন: এ কারণেই প্রায় চৌদ্দশ বছর পরও ১৯৩২ খ্রীষ্টাব্দে ইরাকের সালমান পাকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর সম্মানিত দুই সাহাবীর লাশ মোবারক দজলা নদীর নিকটবর্তী এলাকা থেকে তাঁদের নির্দেশে অন্যত্র আবার দাফন করা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায় লাশ মোবারক দুটি অক্ষত তো ছিলই সাথে তাঁদের কাফনের কাপড়েরও কিছু হয়নি। এই ইরাকেই হযরত আবু সালেহ কুর্দি (রহ.) নামে মহান আল্লাহর এক প্রিয় বান্দা আছেন যিনি নবীও নন, সাহাবীও নন কিংবা শহীদও নন। কবর থেকে ওনার একটি পবিত্র চরণ এখনও পর্যন্ত বের হয়ে আছে যে চরণের পবিত্র নখ গুলো প্রতি সপ্তাহান্তে কেটে দিতে হয়। জানা যায় কোন এক বেয়াদবকে কবর থেকে লাথি মারার ফলে ওনার পবিত্র চরণ যে বের হয়েছিল সেটি সে অবস্থায়ই আছে। এই একবিংশ শতাব্দীতেও মাঝে মাঝে পত্রিকায় আসে যে বহু বছর কবরে থাকার পরও আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের পবিত্র লাশে একটুও পচন ধরেনি।

উপরের দুইটা ঘটনার প্রথমটার মতন অনেক কাহিনি প্রচলিত আছে...

আর দ্বিতীয়টা তে বললেন যে্ এখননো পা বের হয়ে আছে আর প্রতি সপ্তাহান্তে তার নখ কেটে দিতে হয়???

এটা যদি আপনি বিশ্বাস করে তবে কি বলবো সেটা ভেবে পাচ্ছি না।

এই গুজব আপনি ইচ্ছা করলেই মিথ্যা সেটা বুঝতে পারবেন.... কিন্তু সেটার চেস্টা না করে আপনি নিজে ভুল বিশ্বাস করে বসে আছেন এবং অপরকেও এখানে একটা মিথ্যা জিনিস বোঝাচ্ছেন...???

আপনার কাছে ইন্টারনেট আছে.... এমন কি ইরাকেও দুইএকজন ব্লগার পাবেন...তাদের জিজ্ঞাসা করুন তারা এমন কোন বিষয় জানে কিনা????? ফেসবুকে ইরাকের বন্ধু বানাতে পারেন... আপনার এলাকাতেও এমন বাংলাদেশি পাবেন যারা ইরাকে গিয়েছিলো....

ইচ্ছা থাকলে অনেক উপায়ই হয়.... সেটা না করে এমন মিথ্যাকে বিশ্বাস করার কথা ইসলামে কোথাও বলেনাই।

ধম`ভীরুতা ভালো... কিন্তু ধমান্ধতা অবশ্যই ক্ষতিকর।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:০৫

আরমান আরজু বলেছেন: বাস্তব বিষয় আবার বিশ্বাস করতে হবে কেন? ইন্টারনেটে সার্চ দিলে কি 'আল্লাহ' পাওয়া যায়? আমি নাম পর্যন্ত বলে দিলাম আর আপনি গুজব বলে চালিয়ে দিলেন! ইন্টারনেটে না পেলে গুজব! কী হাস্যকর আপনাদের জ্ঞান গরিমা! ধর্মভীরুতা, ধর্মান্ধতা এবং ইন্টারনেট আসক্ততা তিনটিই ক্ষতিকর।

৬| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:২৯

নতুন বলেছেন: আমি আপনার এলাকার মানুষ যারা ইরাকে ছিলেন তাদের জিঙ্গাস করতেও বলেছি।

বলেছি ব্লগের যদি কেউ ইরাক থাকে তাকে জিঙ্গাস করতে....

বলেছি এমন ভাবে আরো অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে এমন একটা বিষয় সত্যি কিনা সেটা পরখ করতে....

লাসের পা বের হয়ে আছে আর সেটার নখ প্রতি সপ্তাহ কেটে দিতে হয়.... এটা যদি বিশ্বাস করতে বলেন তাহলে কিছুই বলার নাই। /:) /:) /:) /:)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.