নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জড়তার কাব্য শুনি, ক্লীব লিঙ্গ বলিয়া কিছু নাই

অ রণ্য

পুলকে পুলক আর সাদা দুধ, সাদা ঘর, মেঘের দোসরযে তুমি ঘুমিয়ে আছো, যেন ঘর ছেড়ে উড়ে গেছোআরব সাগর আর যাদু-কাঠি-ঘ্রাণগাগল, পাগল আমি রাত-দিন বসে টানিযাদুর ঝালর

অ রণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেসবুক অথবা মোবাইল বাস্তবতা !!!

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৬

হাঁটা, আমার পুরোনো অভ্যাস, এবং এই অভ্যাসটির কারণেই অনেক ঘটনা, দৃশ্যাবলী বহুবার কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি, কিন্তু কখনোই আমাকে থামতে হয়নি। শুধু দেখি, উপলব্ধি করি, তারপর এগিয়ে যাই। কতশত দৃশ্য প্রতিদিন-ই ভিন্ন ভিন্ন বোধ ও রূপে ধরা দেয়। যেমন, সেই পাগলটি, যে কিনা রোজ পুলিশ হেড কোয়ার্টারের সামনে রাস্তার পাশে ল্যামপোস্টের গোড়ায় চুপচাপ বসে অপলক তাকিয়ে থাকে একদিকে, কিংবা অফিসার্স ক্লাবের সামনের সেই পৌঢ়া মহিলাটি, যিনি সন্ধ্যা হতে না হতেই রাস্তার পাশেই বিছানা পেতে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়েন। এমন কী রিক্সার হুড তোলা প্রেমিক-প্রেমিকাদ্বয়, যারা সামান্য আড়াল পেয়েই একে অপরের দিকে নামিয়ে আনে মুখ, অথবা পহেলা বৈশাখে কানে ভেসে আসা কোনো এক প্রেমিকার কাতর অভিমানের স্বর, ‘আমাকে তুমি চুড়ির আলনাটা কিনে দিলে না!’ এ সবই চোখে পড়ে, আর আমি আমার মতো হাঁটতে থাকি, এগিয়ে যাই, কখনও থামার প্রয়োজন বোধ করিনি। কিন্তু আজ আমাকে থামতেই হলো, কেন না গলির মধ্যে ঢুকে দেখি, কোনো এক যুবতীর রিক্সা ধরে দাঁড়িয়ে আছে এক যুব্ক, তাদের উচ্চস্বর, আশেপাশে লোকজন জমে গেছে, সবাই শুনতে বা বুঝতে চেষ্টা করছে বৃত্তান্ত, আর আমি বিভ্রান্তের মতো একবার তাকাই যুবতীটির দিকে, আরেকবার যুবকটির দিকে, কেন না দু’জনকেই মনে হলো শিক্ষিত, এবং কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অথবা কলেজের ছাত্র/ছাত্রী। কানে ততক্ষণে দুটো শব্দ আটকে গেছে, ‘ফেসবুক’ আর ‘চার-পাঁচটি মোবাইল সীম’।



যুবক ও যুবতীদ্বয় অত লোকের মাঝেই চিৎকার করতে করতে একে-অপরকে যা বলছে; যুবতীটির ভাষ্য-‘তুমি ফেসবুকে যা ইচ্ছে তাই করো, আর সবাইকে তেমন ভাবো’। অপরদিকে যুবকটির অপবাদ’ ‘তোমার চার-পাঁচটি মোবাইল সীম, একেকটির জন্য একটি করে প্রেমিক। বের করো মোবাইল আমি দেখব’। যুবতীটি দেখাবে না কিছুতেই, বরং তার পাল্টা চিৎকার, ‘আমি আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলি, তোমার কী তাতে? ততক্ষণে কেউ একজন বলে ফেলেছে, ছেড়ে দেন না ভাই মানুষ কী বলবে, শুনে যুবকটির আরও উচ্চস্বরে তীব্র অভিযোগ, ‘না ভাই ছেড়ে দেয়া যাবে না, এই মেয়েটির চরিত্রই এমন, চার-পাঁচটা মোবাইল সীম, আমি এখন না দেখলে বাড়ি গিয়েই সব ডিলেট করে দেবে, তখন আর প্রমাণ করতে পারব না’।



এতটুকু শোনার পর আশেপাশের লোকজনের দিকে আরেকবার তাকাতেই যে কথাটি মনে হলো, এই দুই যুবক-যুবতীর পিতা-মাতা যদি সামান্যতমও রুচিবান হোন, তবে তাদের সন্তানদের রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে লোকজনের মাঝে এমন নির্লজ্জতা কী করে মেনে নেবেন? আমার রুচি হলো না আর শুনতে, পা বাড়িয়ে সামনে এগিয়ে আসার পর দেখি, ওদের রিক্সা আমাকে পাশ কাটিয়ে সামনের দিকে যাচ্ছে। যুবকটি তখনও রিক্সা ধরে পাশে পাশে হাঁটছে আর বলেই চলেছে, ‘বের করো মোবাইল আমি চেক করব’, আর যুবতীটির সেই একই কথা, ‘দেখাব না’। আমার সামনে এসে পড়া সেই যুবক-যুবতীকে দুটি কথা বলতে খুব ইচ্ছে হলো-



যুবকটিকে:

যদি তোমার নিতান্তই মনে হয় যুবতীটি এমন, এবং তোমাকে ধোকা দিচ্ছে এভাবে, তবে তুমি কেন থাকবে বা থাকতে চাইবে তার সাথে? ভালবাসা তো কেবল দুর্বলতা নয়, বিশাল এক শক্তিও বটে। তুমি তবে ওর থেকে উত্তম হলে কীভাবে?



যুবতীটিকেঃ

যে মানুষটি তোমাকে সন্দেহ করে, এবং যখন জেনেই গেছে সে চরিত্রহীন, তবে কেন সন্ধ্যেবেলায় তার সাথে এক রিক্সায় বেরিয়ে পড়েছ? তার থেকে দূরে থাকাই তোমার জন্য শ্রেয়, এবং তোমার নিজস্ব সম্ভ্রম ও সম্মান তোমাকেই বাঁচাতে হবে, কেন না তুমি জানো এবং জেনে গেছ সে কেমন।



কিন্তু পারলাম না, কেন না আমি জানি, মানুষকে বদলে দেবার সাধ্য মানুষের নেই, যতক্ষণ না মানুষটি নিজে বদলে যেতে চাইছে, এবং মানুষ যখন লুকাতে বা আড়াল করতে শেখে, তখন মানুষটি ধীরে ধীরে নিজেই নিজের কাছে আড়াল হয়ে পড়ে।



পরিশিষ্টঃ হয়ত আমরা অধিকাংশই এমন, হয়ত আমাদের সবারই নিজস্ব গোপনীয়তা কিংবা ফ্যান্টাসী আছে, কিন্তু “নীতিবোধ’’-এর অস্তিত্ব যেন আমাদের মধ্যে শূন্য হয়ে না পড়ে, কেন না একজন নীতিবান মানুষের সাথে এক জীবন নয় সহস্র জীবন কাটানো যায় অনায়াসেই।





১৮.১১.১৩

মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১২

মনে নাই বলেছেন: ছেলে বা মেয়ে বলে বলছিনা, উভয়ের জন্যই সমান: যারা অফিসিয়াল কারন ব্যাতীত একাধিক মোবাইল ফোন ইউজ করে তাদের সততার লেবেল নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ কাজ করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.