নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জড়তার কাব্য শুনি, ক্লীব লিঙ্গ বলিয়া কিছু নাই

অ রণ্য

পুলকে পুলক আর সাদা দুধ, সাদা ঘর, মেঘের দোসরযে তুমি ঘুমিয়ে আছো, যেন ঘর ছেড়ে উড়ে গেছোআরব সাগর আর যাদু-কাঠি-ঘ্রাণগাগল, পাগল আমি রাত-দিন বসে টানিযাদুর ঝালর

অ রণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারপরও আমি গার্বিত বাঙ্গালী হিসেবে !!!

০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৫২

।। তারপরও আমি গার্বিত বাঙ্গালী হিসেবে ।।



পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রিদের এমন সব উদাহরণ দেখি যে, মাঝে মাঝে মনে হয়, আহা, তারা কতই না দেশপ্রেমিক; নিজের দেশ, প্রসাশনকে কতই না ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে! এমন সব উদাহরণের জন্য আমাদের বেশিদূর কী আর যেতে হবে, ঘর থেকে মাথা বের করে পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়াতেই উঁকি মারলে ভুরি ভুরি উদাহরণ পাওয়া যাবে এমন, যা আমাদের অনুপ্রাণিত করতে সক্ষম, দারুণভাবে। কিন্তু, হায়,আমরা তাদের সেই সব উদাহরণ কেন অনুকরণ করব,আমরা তো তাদের ছুঁড়ে দেয়া আবর্জনাকে মহামূল্যবান ভেবে নিজেদের সমৃদ্ধ করব, এবং চারিদিকের বাড়তে থাকা অনাচারে নিজেদের আরেকটু অধিক নির্বিকার করে তুলব, নতুবা প্রতিবছর লঞ্চ ডুবে হাজার হাজার মানুষ মরলেও কারও কোনো হুশ নেই কেন? সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া অনিয়ম, দুর্নীতি আর অনাচারের আবহে আমরা সবাই কেমন জানি নেশাগ্রস্থের মতো বুদ হয়ে আছি। সকাল হয়, দিন শেষ হয়, আর কর্মক্লান্ত শরীরে বিছানায় যাবার পর আমরা আর সুন্দর স্বপ্ন দেখি না, বরং পরবর্তী দিনের জন্য আরেকটু অধিক নেশাগ্রস্থ হবার আয়োজন করি, জ্ঞানত অথবা অজ্ঞানত!



এভাবেই চলছে, এবং চলবে, কেন না আমাদের যে চোখ তা অন্ধ, আমার যে মস্তিষ্ক, তা নেশগ্রস্থ হওয়া ব্যতীত ভিন্ন কিছু জানে না, এবং আমাদের যে মানবিকতা, উদারতা, সচেতনতা, তা কেবল চায়ের আড্ডা কিংবা খোশ গল্পের মজলিশেই মুখর ও সীমাবদ্ধ। থাক না ওভাবে, কার কী যায় আসে, দিন শেষে তো সেই আমাকেই ঘরে ফিরতে হবে শত শত মানুষের মধ্যে নারকীয় যন্ত্রণায় বাসে ঝুলে ঝুলে,কিংবা পরবর্তী দিনে একই প্রকারে কর্মক্ষেত্রে যেতে হবে। জেনে শুনে আমাকেই তো বিষাক্ত ফরমালিন যুক্ত খাবার খেয়ে আতংকিত হবার পরিবর্তে ধীরে ধীরে শরীরটাকে বিষাক্ত ও রোগের আস্তাকুড় বানিয়ে সীমাহীন ভয় ও শংকা নিয়েই যেতে হবে ডাক্তাররূপী কসাইয়ের ছোরার নিচে! কিংবা সীমাহীন অন্যায়-অতাচার দেখার পরও, রাজনৈতিক নেতাদের হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির দায় বেমালুম ভুলে গিয়ে নিজ অথবা নিজ সন্তানদের পাঠিয়ে দেব তাদের কিংবা যে কোনো দলের পালিত কুত্তা হয়ে উঠতে। অথবা শিক্ষাঙ্গন কিংবা যে কোনো আন্তজার্তিক বিদ্যাপিঠে নিজ সন্তানদের অস্ত্র হাতে সন্ত্রাসী কার্য-কলাপ জাতীয় দৈনিকে ফটোসহ দেখে গর্বিত বোধ করব। কিংবা সমাজে নারীরা দিনের পর দিন অসম্মানিত হতে থাকলে ভাবব, বস্তুত, তারাও পুরুষ হয়ে উঠছে! দিনের পর শ্রমিকের ন্যায্য দাবী বারবার করে প্রত্যাখ্যাত হলেও নিজেদের বলব, চলছে তো এভাবে, চলুক না, কতদিন আর ফরমালিন শরীরে বিষ ছড়াবে? কত-শত হাজার কোটি টাকা তারা আর লুটে-পুটে খাবে? কত সহস্র একর জমি অন্যায়ভাবে দখল করবে? কত আর তারা আমাদের ঠেলে দেবে অনিয়ম-অনাচার ও দুর্নীতির কবলে? এই টুকুনই তো দেশ, এই সব কী আর মহামারির আকার ধারণ করে ছাড়িয়ে পড়বে পাশ্ববর্তী দেশসমূহে কিংবা বর্হিবিশ্বকে আক্রমণ করবে? ফলে চিন্তা কি, চলছে তো, বেঁচে তো আছি, মরে তো আর যাই নি, চলুক না!



কার কী যায় আসে? রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রি অথবা দেশপ্রধানরা তো আর কখনও বুঝবে না, প্রচন্ড গরমে ঘন্টার পর ঘন্টার বিদ্যুৎ না থাকলে শরীরের কোন কোন অংশ কীভাবে ঘামে ভিজে চরম অস্বস্তি তৈরী করে! তারা তো এও বুঝবেও না, মাত্র ১০ মিনিটের পথ অতিক্রম করার জন্য হাজার হাজার মানুষ কীভাবে বাসে নারকীয় কষ্ট আর ভীড়ে ঘন্টা-দু’ঘন্টা ঝুলে থাকে!বরং, তারা তো ৫মিনিটের পথও অতিক্রম করার কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই সবগুলো রাস্তা হাইওয়ে করে রাখে, তাতে জনগণের দুর্ভোগ হোক বা না হোক কার কী যায় আসে! তারা এ্ কখনোই জানবে না, ডাক্তাররূপী কসাইয়ের ছোরার নিচে যেতে কতটা ভয় ও শংকা তৈরী হয়; কিংবা দুর্নীতিপরায়ণ, অযোগ্য শিক্ষকদের নিকট নিজ সন্তানদের শিক্ষার জন্য পাঠাতে কতটা অসহায় লাগে! তারা আসলে কিছুই বোঝে না, আর তাদের চেয়ে অধিক আমরা কিছু বুঝি না, দেখি না , শুনি না, জানি না; কেন না আমাদের চোখ-কান-মাথা সব গেছে, কেবল যা অবশিষ্ট রয়েছে তা অভূতপূর্ব মানসিক ও শারিরীক শক্তি। এত রোগ-শোক, অপ্রাপ্তি, অপুষ্টি, অশান্তি, অনাচার, আপদ--বিপদ, তারপরও আমরা সবাই মিলে এই দেশটাকে কেবল টিকিয়েই রাখিনি, বরং একটু একটু করে হলেও অগ্রগতির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছি। এ যেন অগভীর জলে বিশাল এক জাহাজকে মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়ে গন্তব্যের দিকে কেবলমাত্র শক্তি ও সাহস দিয়ে টেনে নিয়ে যাওয়া, যার তলা মাটির সাথে অনেক আগেই ঠেকে গেছে! এমন বাস্তবতায় কেবলই মনে হয়, যদি আরেকটু অধিক জল পেতাম, যদি আরেকটু সুষম বাতাস ও গতি পেতাম, তবে এই সুবিশাল জাহাজ কোন সে গতিতে এগিয়ে যেত গন্তব্যের দিকে।



এবং এও মনে হয়, আমরা ছাড়া পৃথিবীর আর কোনো জাতীর পক্ষেই এত কিছুর পরও এইভাবে টিকে থাকা বা এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, কেন না যত কিছুই আমাদের থেকে কেড়ে নেওয়া হোক না কেন, কিংবা যত কম সুবিধাই আমাদের দেওয়া হোক না কেন, দিনে ৩ বেলা না হোক, কেবলমাত্র ২ বেলা, এমন কী তা না হলেও শুধুমাত্র ১ বেলাও যদি আমরা পেট ভর্তি ভাত পাই, তবে তা দিয়েই খুশিমনে উদর পূর্তি করে আমরা সেই সুবিশাল জাহাজকে কেবলমাত্র মাটির উপর দিয়েই ঠেলে গন্তব্যে পৌঁছে দেব।



সশ্রদ্ধ সালাম বাঙ্গালী জাতী তোমাকে! তুমি নিজেই বিশ্বের বুকে জলজ্যন্ত এক উদাহরণ!

আমি গর্বিত বাঙ্গালী হিসেবে!



০৬.০৮.১৪

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০৭

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
এত রোগ-শোক, অপ্রাপ্তি, অপুষ্টি, অশান্তি, অনাচার, আপদ--বিপদ, তারপরও আমরা সবাই মিলে এই দেশটাকে কেবল টিকিয়েই রাখিনি, বরং একটু একটু করে হলেও অগ্রগতির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছি।


সশ্রদ্ধ সালাম বাঙ্গালী জাতী তোমাকে! তুমি নিজেই বিশ্বের বুকে জলজ্যন্ত এক উদাহরণ!
আমি গর্বিত বাঙ্গালী হিসেবে!


সময়োপযোগী দারুণ লেখা,

আশায় থাকি,
আশায় বাঁচি !


ভালো থাকুন ।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩

অ রণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ স্বপ্নচারী। আপনিও ভাল থাকুন।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ২:৩১

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:



স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
এত রোগ-শোক, অপ্রাপ্তি, অপুষ্টি, অশান্তি, অনাচার, আপদ--বিপদ, তারপরও আমরা সবাই মিলে এই দেশটাকে কেবল টিকিয়েই রাখিনি, বরং একটু একটু করে হলেও অগ্রগতির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছি।


সশ্রদ্ধ সালাম বাঙ্গালী জাতী তোমাকে! তুমি নিজেই বিশ্বের বুকে জলজ্যন্ত এক উদাহরণ!
আমি গর্বিত বাঙ্গালী হিসেবে!

সময়োপযোগী দারুণ লেখা,

আশায় থাকি,
আশায় বাঁচি !

ভালো থাকুন ।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫

অ রণ্য বলেছেন: ধন্যবাদ শোভন_______আপনিও ভাল থাকুন।
শুভ কামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.