নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সেই ভালো সেই ভালো আমারে না হয় না জানো...

গুলশান কিবরীয়া

ফেসবুকে চারুলতা আরজু নামে পরিচিত।

গুলশান কিবরীয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মহত্যা কোন অপরাধ নয়। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে হয়তো এই ধূসর দুঃখ জগত থেকে মানুষকে বের করে আনা সম্ভব।

১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১৩

The Suicide Act 1961 কার্যকারী হওয়ার আগে পর্যন্ত আত্মহত্যা ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে বেআইনি এবং অপরাধ ছিল। কেউ যদি আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হতো এবং সেটা যদি প্রমানিত হতো তবে তাকে কারাবাস দেয়া হতো অথবা জরিমানা করা হতো। আর যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করতো সে মরে গিয়েও নিষ্কৃতি পেত না। তার অপরাধের দায় মৃত ব্যক্তির পরিবারের উপর আসতো আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই। তাছাড়া সামাজিক ভাবে ঘৃণিত হওয়ার ব্যপার তো আছেই। আত্মহত্যাকে পৃথিবীর উন্নত একটি দেশ ইংল্যান্ডই অপরাধমূলক দায় অথবা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবেই ধরে নিতো আজ থেকে ৬০ বছর আগ পর্যন্ত । এখনও অনেক অনুন্নত এবং স্বধর্মপরায়ণ জাতি এই আত্মহত্যাকে অপরাধ এবং বেআইনি বলেই ধরে নেয়। অথচ আধুনিক মনবিজ্ঞান এবং চিকিৎসবিদ্যা প্রমাণ করেছে যে আত্মহত্যাকারী অথবা আত্মহত্যায় প্রচেষ্টাকারীর মানসিক অবস্থা একজন স্বাভাবিক মানুষের অবস্থার মত নয়।এটা এক প্রকার মানসিক অসুস্থতা, অপরাধ নয়। এর জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন জেল জরিমানা নয়। অপরাধ করার জন্য একজন মানুষের যে মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা থাকে সেটা আত্মহত্যার চিন্তাকারীর থাকে না।

অনেকেই তাই প্রস্তাব করছে ‘Commit suicide’ এর পরিবর্তে ‘die by suicide’ ব্যবহার করার কথা । কারন ‘Commit’ এর সাথে crime জড়িত। অথচ আত্মহত্যা কখনোই ক্রাইম বা অপরাধ নয়। আত্মহত্যাকারী অথবা আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকারীকে ক্রিমিনাল লায়াবিলিটি না দিয়ে অথবা মহাপাপের ভয় না দেখিয়ে মানসিক চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন । আত্মহত্যাকে ঘৃণা অথবা শাস্তি প্রদান করে আত্মহত্যাকারীকে দমিয়ে রাখা যায় না। কারন যে নিজের জীবন নেয় তার মন এমন ভাবে জটিল দুঃখ এবং সমস্যা দিয়ে মেঘাচ্ছন হয়ে থাকে যে সেটা ভেদ করে কোন প্রকার ধর্মীয় অনুশাসন, নীতি, আদর্শ কোন কিছুই পৌঁছাতে পারে না তার মনে।সে তখন এক দুর্ভেদ্য জটিল সমস্যার ভেতর দিয়ে যায়। যেখানে ঘৃণা বা শাস্তি প্রদান ভালো করার চেয়ে খারাপটাই করে বেশী।

আত্মহত্যা দুই রকম আবেগ তাড়িত হতে পারেঃ

১।তড়িৎ আবেগের নিয়ন্ত্রনহীনতা এবং;
২। দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক অসুস্থতা ( ডিপ্রেশন, বাইপুলার ডিসঅর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার ইত্যাদি)

হঠাৎ আবেগের বশবর্তী হয়ে অনিয়িন্ত্রিত আবেগ অনেক সময় মানুষকে আত্মহত্যার দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। এই ধরনের আত্মহত্যাকে রোধ করা হয়তো একটু কঠিন। তবে দুই নাম্বারটি অর্থাৎ দীর্ঘ সময় ধরে যারা মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন তাদেরকে হয়তো থেরাপি অথবা কাউসিলিং দিয়ে সুস্থ করে আনা যায়। এরকম দুইটি ঘটনা আমার চোখের সামনে ঘটেছিলো যখন আমি ষষ্ট অথবা সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি।

সেই নব্বই দশকের কথা। আমাদের পাড়ায় একটি পরিবার ভাড়া এসেছিলো আমার বাসার ঠিক সামনের বিল্ডিং এ। মেয়েটির নাম রিকি( ছদ্মনাম)। বয়স ১৬ কি ১৭ হবে। দেখতে ভীষণ সুন্দরী। তাই অতি উৎসাহি পাড়ার ছেলেরা মেয়েটির বাড়ির আশপাশ দিয়ে ঘুরঘুর করতে শুরু করলো । মেয়েটিও সেটা উপভোগ করতো। হয়তো কারো সাথে কোন সম্পর্কেও জড়িয়েছিল। সমাজ এই বিষয়টি মেনে নেয়নি অর্থাৎ মেয়েটিকে বাজে মেয়ে এবং রিকির মাকে বাজে মা হিসেবেই ভাবতে পছন্দ করতো বেশিভাগ মানুষ । রিকির মা একদিন রাগ করে মেয়েটিকে খুব বকাঝকা করে। ফলশ্রুতিতে মেয়েটি নিজের জীবন নিয়ে নেয়। এটা ছিল এক প্রকার তড়িৎ আবেগের অনিয়ন্ত্রন। সমাজের চোখে সেই মেয়েটি জঘন্য অন্যায় করেছে আত্মহত্যা করে। তাই তার জানাজা পড়ানো হবে না বলে ঠিক হয়। কিন্তু মেয়েটির বয়ফ্রেন্ড দুর্ধর্ষ মাস্তান। তাই তোপের মুখে মেয়েটির জানাজা শেষপর্যন্ত পড়ানো হয়। এই ধরনের মৃত্যুর জন্য কী আমরা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে দায়ী করতে পারি? আমার মতে অবশ্যই পারি । আর এই আত্মহত্যার কন্ট্রিবিউটরি ফ্যাক্টর ছিল মায়ের বকুনি। মা বকেছে কেন? কারন মা সমাজের চোখে ছোট হয়ে গিয়েছে। তাই সমাজের এখানে এই আত্মহত্যার পেছনে একটি বড় ভূমিকা রয়েছে।


আত্মহত্যা নিয়ে কেউ আলোচনা করতে চায় না। কারন আলোচনা করলেই ভাবে এটাকে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। অথচ আধুনিক মনবিজ্ঞান অন্য কথা বলে।এটা যে পাপ নয় এবং এরকম চিন্তা আসাটাও যে অস্বাভাবিক নয় সেটা হয়তো আমাদের সমাজ এখনো মেনে নিতে পারে না। এরকম আত্মহত্যার চিন্তা করা স্বাভাবিক এবং অন্যায় নয়- এরকম বললে আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকারী তার মনের এই অসুখ তার প্রিয়জন অথবা কাছের মানুষকে শেয়ার করবে এবং প্রয়োজন বোধে সঠিক চিকিৎসাও নিতে আগ্রহী হবে । তবেই আত্মহত্যা হয়তো কিছুটা রোধ করা যাবে। এজন্যই সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিটা পাল্টানো খুব জরুরী এরকম অকালে ঝরে যাওয়া প্রাণগুলোর জন্য।

ইংল্যান্ডে সুইসাইড হটলাইন রয়েছে,যেখান থেকে মানুষ ২৪/৭ কথা বলতে পারে যদি সুইসাইডাল টেন্ডেন্সি হয়। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে সামারিতান্স(Samaritans)। যখন মানুষ ইমোশনালি অনেক ডাউন ফিল করে এবং আত্মহত্যার চিন্তা আসে তখন তারা তাদের মনের চিন্তাকে অন্য আরেকজনের সাথে শেয়ার করে অনেক সময় অনেক হালকা হয়। কিছু কিছু সময় ঐ ধূসর জট বাঁধানো দুঃখ থেকে বেরিয়ে আসতেও সক্ষম হয় তার মনের অবস্থা অন্যের কাছে শেয়ার করে। কিন্তু আমাদের বাঙালী সমাজ এই ধরনের চিন্তার কথা কাউকে শেয়ার করলে উল্টা ব্যক্তিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ব্যক্তির মানসিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটিয়ে দেয়।

পরিশেষে বলতে চাই, আমাদের সকলের উচিৎ আত্মহত্যাকারী, আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকারী অথবা এরকম চিন্তাকারীকে ঘৃণা না করে মানসিক ভাবে সাহায্য করা এবং প্রয়োজনীয় মানসিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা করা।


----গুলশান কিবরিয়া

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২৩

শের শায়রী বলেছেন: একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত মানুষ আবেরগ তাড়িত হয়ে আত্ম হত্যা করতে পারে যেটা রিকির ক্ষেত্রে ঘটছে। কিন্তু তার বেশী বয়সে আত্মহত্যা করলে সেটা আমার কাছে এক ধরনের কাওয়ার্ডনেস। কোন সিমপ্যাথি নাই।

১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২৯

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান বক্তব্যের জন্য। মানসিক রোগ কিন্তু যে কোন বয়সে হতে পারে। অনেক দিনের দুঃখ , স্ট্রেস , ফ্রাস্ট্রেশন ইত্যাদি দীর্ঘ সময় ধরে চললে এবং এঁর কোন চিকিৎসা না হলে মানুষ অনেক সময় এই পথ বেছে নেয়। আমাদের উচিৎ এরকম মানুষকে সাহায্য করা , তাদের কটাক্ষ না করে।

২| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৩৪

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: কিলিং তো এজপ্রকার ক্রাইমই! সুইসাইডের নিউজ মিডিয়ায় কিভাবে আসবে এটা নিয়ে কিছুদিন কাজ করেছিলাম। গল্প উপন্যাস কবিতা এমনকি গণমাধ্যমও অনেক সময় আত্মহত্যাকে মহিমান্মিত করে যা অন্যদের উৎসাহিত করে। হিন্দি সিনেমা কেয়ামত সে কেয়ামত তক এর জনপ্রিয়তার সময় ভারতবর্ষেআত্মহত্যার পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছিলো।

১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৬

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: এ জাতীয় ফিল্ম তৈরি করলে সেটা এইজ রেজট্রিকশন করে দেয়া উচিৎ। উন্নত বিশ্বগুলো তাই করে। আর অনুন্নত সমাজের সাহিত্য থেকে শুরু করে ফিল্ম, সবকিছুতেই এ ধরনের জিনিস এমন ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয় যেটা সত্যিই উৎসাহিত করতে পারে ভালনারেবল মানুষকে। সুইসাইডের দৃশ্য অবশ্যই আসবে না নিউজ মিডিয়াতে, সেটা গুরুতর ভুল হবে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অনেকের জন্যই। তবে সুইসাইডকে মহা পাপ বলে সুইসাইড যারা করতে চায় অর্থাৎ মানসিক ভাবে যারা বিপরজস্থ অবস্থায় আছে তাদেরকে আরও বেশী ক্ষতির দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে। ইংল্যান্ডে দেখেছি যারা সুইসাইডের এটেম্পট নেয় বা চিন্তা করে তাদেরকে খোলা মনে সব প্রকাশ করতে উদ্ভূত করে যাতে তারা তাদের জমায়িত কষ্ট থেকে রেহাই পায় এবং তাকে কাউন্সিলিং করা হয়। আর আমাদের দেশে আত্মহত্যার চিন্তা করছ তো মাইর , না হলে জাহান্নামি বলে রোগটিকে আরও বেশী খারাপ করে ফেলা হয়। সেটাই আমি বুঝাতে চেয়েছি মূলত।

৩| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৩

শের শায়রী বলেছেন: দেখেন বোন, মানসিক সমস্যা যে কোন বয়সে হতে পারে, এগ্রি। বিভিন্ন কারনে আমি নিজেও এখন ভয়াবহ সিচ্যুয়েশানের মাঝ দিএই যাচ্ছি। কিন্তু কখনো আত্মহত্যার চিন্তাও মাথায় আসে না, প্রতি মুহুর্তে লড়ে যাচ্ছি। হয়ত বলতে পারেন সবার মানসিক ষ্ট্রেন্থ এক না। তাতেও এগ্রি। কিন্তু মানসিক সমস্যার মাঝে আত্মহত্যার প্রবনতা আমার কাছে অত্যন্ত অপ্রীতিকর, যেমন ধরুন পেডোফেলিয়া বা হোমোসেক্সুয়ালিটিও এক ধরনের মানসিক সমস্যা। তাদের কে কি আপনি সহায়তা দিয়ে ঠিক করতে পারবেন? আবার ক্ষেত্র বিশেষ এই এই সব বিকৃতিতা সামাজিক স্বীকৃতিও লাভ করছে।

ভুলে গেছি, পত্রিকায় পড়ছিলাম কোন কোন দেশে নাকি যে সব অসুখে বাচার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না তাদের আত্মহত্যা বৈধ করা হয়েছে। তাহলে এই যে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি আস্তে আস্তে এই সব বিকৃততার সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে তাকে আমি কিভাবে সমর্থন দেব। অবশ্যই আমার সামনে কেউ আত্মহত্যা করতে চাইলে বাধা দেব। কিন্তু যাদের মাঝে এই প্রবনতা আছে তাদের প্রতি আমার সহমর্মিতা নেই কেন যেন।

ক্ষমা প্রার্থনা করছি যদি আমি ভুল কিছু বলে থাকি।

১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১৪

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: অবশ্যই আপনি আপনার মত করেই ভাববেন। প্রতিটি মানুষেরই তার নিজ নিজ চিন্তা সুন্দর এবং সুচিন্তিত উপায়ে প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে, যেটা আপনি করেছেন। তার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। পেডফেলিয়া অবশ্যই মানসিক রোগ, এটা ভয়ংকর একটি অসুখ যার চিকিৎসা হয়তো প্রয়োজন। এটা একটি বিশাল বিতর্ক যেটা সম্পন্ন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়, কারন আমি মনবিজ্ঞানি নই। আমি আমার উপরোক্ত বক্তব্যে কিছুটা আইন , মনবিজ্ঞান এবং সামাজিক সমস্যা নিয়ে সংক্ষিপ্ত একটি আলোচনা করেছি। অনেক দেশই পেডফেলিয়াকে চরম শাস্তি না দিয়ে তার মানসিক ব্যপার নিয়ে স্টাডি করছে, রিহ্যাবের মাধ্যমে থেরাপির চিন্তাও করে থাকে।

আর আসিস্টেট সুইসাইড এখনো অনেক উন্নত দেশেও ক্রাইম, কারন এসিস্টেট সুইসাইড লিগ্যাল করে দিলে অনেক বড় প্রবলেমের ফ্লাডগেট ওপেন হয়ে যাবে, যেটাকে কন্ট্রোল হয়তো সম্ভব নয়। তাছাড়া অন্যান্য অনেক কারন রয়েছে। কিন্তু এসিস্টেত সুইসাইড অনেক সময়ই ব্যক্তি বিশেষে অনেক বেশী জরুরী হয়ে পরে। কিন্তু একটি দেশ আনুসাঙ্গিকতা , পারিপার্শ্বিকতা , ধর্ম , বিশ্বাস ইত্যাদির কথা চিন্তা করেই অনেক ধরনের আইনকে লিগ্যাল ইল্লিগাল করে থাকে।

আর হোমোসেক্সুয়ালের বিষয়টি এখানে অপ্রয়োজনীয়। তাই আর কিছু বলছি না।

এই আত্মহত্যার ব্যপারটি বর্তমানে বড় একটি সামাজিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। তাই আমি মনে করি এই সমস্যাকে যে কোন মূলেই সমাধানের উপায় খোঁজা একটি সমাজের উচিৎ ।

৪| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৯

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: But to die to escape from poverty or love or anything painful is not the mark of a brave man, but rather of a coward; for it is softness to fly from what is troublesome, and such a man endures death not because it is noble but to fly from evil...

এ্যারিস্টটল


যদিও প্লেটো সক্রেটিস সহ সবাই একে আনইথিক্যাল বলেন। আসলে মানুষকে ঘৃনা করা এবং কোনো কিছুর জন্য দোষারোপ কার যাদের কুঅভ্যাস তাঁরাই এসব বিষয়ে পন্ডিতি এবং একজন আত্মহত্যাকারীকে ঘৃনা করে।

অথচ যারা ডিপ্রেশনে ভোগে তাদেরকে দুটো মিনিট সময় দিলেই তারা আরো ভালো কিছু করতে পারে। গত বছর চেস্টার বেনিংটন আর ক্রিস কর্নেল মারা গেলো। হয়তো তাদেরকে যদি বাঁচানো যেতো, আরো সৃষ্টিশীল কিছু গান শুনতে পারতাম। খুব খারাপ লেগেছিলো গতবছর

১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:২৯

গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: আধুনিক মনবিজ্ঞান বলে একজন আত্মহত্যার চিন্তাকারী কোনভাবেই এথিকাল চিন্তা করার মত অবস্থাতে থাকে না। তার মন জটিল বলয়ে আবৃত থাকে। সক্রেটিসের আত্মহত্যার কাহিনী তো অন্য রকম, সেটা সম্পন্ন হয়েছিলো সুস্থ মস্তিষ্কেই। এটাও সম্ববত তিন নাম্বার আত্মহত্যা, আমি উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছি। হিটলারের আত্মহত্যাটিও তিন নম্বরেই পরে।

আজকাল মানুষের ডিপ্রেশনটা অনেক বেশি। যেমন সুযোগ সুবিধা বেশী, কোন কিছুই যেন দুষ্প্রাপ্য নয়, প্রতিযোগিতা বেশী, টিকে থাকার লড়াই বেশী। তাই মানসিক সমস্যাও অনেক বেশী। তাই এ বিষয়ে মানুষকে, সমাজকে রিথিংক করতে হবে। সেই ম্যরম্যারা পুরাতন ধ্যানধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সেজন্যই বললাম একে মহাপাপ না বলে এই ধরনের মানুষকে সাহায্য করা উচিৎ। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো উচিৎ। ধন্যবাদ উদাসী। অনেক দিন পরে কথা হলো।

৫| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৫০

হাবিব ইমরান বলেছেন: আত্মহত্যা কোন সমস্যার সমাধান নয়। বৈধ হোক বা অবৈধ আত্মহত্যা কোন সমাধান না। আমাদের দেশের উঠতি বয়সের পোলাপান প্রেমে কাটতি খেয়ে আত্মহত্যা করে, পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহত্যা করে, বউয়ের অন্যের সাথে পরকীয়া দেখে আত্মহত্যা করে, ব্যবসায় লস খেয়ে আত্মহত্যা করে, এরকম হাজারো অকারণে আত্মহত্যা এদেশে প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এদেশের কোন আত্মহত্যাই যৌক্তিক কারণে হয় না। এটা একধরণের অসুস্থতা। আর অসুস্থ ব্যক্তিরাই আত্মহত্যা করে। তাই কোন অসুস্থ ব্যক্তিরই সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার সক্ষমতা নেই। মানসিকভাবে অসুস্থদের মানবিক চিকিৎসা প্রয়োজন।

তবে হ্যাঁ, মার্সি কিলিং এর বিষয়ে একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে আসা উচিত ৷

৬| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৫০

কল্পদ্রুম বলেছেন: আত্মহত্যা করা কোনো অপরাধ না।আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া অপরাধ।যিনি আত্মহত্যা করে ফেলেছেন তাকে ভালোবাসি কি ঘৃণা করি তাতে তার কিছু যায় আসে না।তবে যিনি এর চেষ্টা করে বেঁচে আছেন তাকে অন্য অপরাধীর মতই রিহ্যাবিলিটেশন করা উচিত।তবে দীর্ঘ শারীরিক রোগের কারণে কেউ এ পথ বেছে নিলে আগে রোগের চিকিৎসা করতে হবে।

৭| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:৫৬

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: আজকে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট একটা দারুন রুলিং দিছে হোমো আর ট্রান্সদের জন্য যার ফলে কর্মক্ষেত্রে যারা বৈষম্যের শিকার তারা যাতে আরো ভালো প্রটেকশন পায়। আসলে কুশিক্ষা ও শঠতায় পূর্ন যাদের মন তাঁরাই দাঁতের জোরে হোমোসেক্সুয়ালদের মানসিক বিকৃতি বলে। জানি না এরা কোথা থেকে এসব মিথ্যা ও ঘৃনা শিক্ষা পেয়েছে।

এদের মতো জ্ঞানপাপীদের করুনা করতেও দ্বীধায় ভুগি

৮| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০১

মৌরি হক দোলা বলেছেন: এক সুশান্ত সিং রাজপুত এর আত্মহত্যায় (আদৌ কি এটা আত্মহত্যা? ‘খুন’ হতে পারে বলেও কানাঘুষা শুনছি) মানুষ তার মেন্টালিটিকে খুব সুন্দরভাবে প্রকাশ করে দিচ্ছে। আমরা যে এখনো কতটা ‘মানুষ’ হতে অক্ষম তা বোঝা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের প্লাটফর্মে। আত্মহত্যা হয়তো আবেগের বশে করে ফেলা ভুল হতে পারে, তবে এটা কখনোই অপরাধ বলে বিবেচিত হওয়া উচিৎ না। কারণ যে হুট করে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়, সে তো তার ভুলটা বোঝার সময়ই পেলো না। আর যে দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক অসুস্থতা ( ডিপ্রেশন, বাইপুলার ডিসঅর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার ইত্যাদি)র কারণে আত্মহত্যার সম্মুখীন হয়, সে হয়তো জীবনের প্রতি আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছে! বেঁচে থাকাটাই হয়তো তার কাছে মরে থাকার সমান। এই কারণে, আপু, আপনি যেটা বলেছেন,
আমাদের সকলের উচিৎ আত্মহত্যাকারী, আত্মহত্যার প্রচেষ্টাকারী অথবা এরকম চিন্তাকারীকে ঘৃণা না করে মানসিক ভাবে সাহায্য করা এবং প্রয়োজনীয় মানসিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা করা।

, এভাবেই হয়তো সম্ভব স্বেচ্ছায় হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোকে নতুন করে জীবন দেওয়া।

৯| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অনেক কিছু জানতে পারলাম।

১০| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:০৫

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
আত্নহত্যা কোন সমাধান নয়।
বাঁচতে হবে ।

১১| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:১৭

শায়মা বলেছেন: আত্মহত্যার প্রবনতা বা মানুষ যখন কোনো সমস্যার সমাধান খুঁজে পায় না বা আর কখনও পাওয়াই হবেনা ভাবে তখন জীবনের উপরে আর হবালোবাসায় থাকেনা।

কিন্তু সকল সমস্যারই আসলে সমাধান আছে। অতি আবেগী মানুষেরা সেটা বুঝতেই পারে না। বা জানে না।

সঙ্গহীনতা এক দারুণ অধ্যায় যা মানুষকে এই প্ররোচনা দেয় নিজের মাঝেই।তাই এই ধরণের সমস্যার মানুষের আসলেই দরকার কথা বলা বা তার কথা শোনার জন্য কিছু মানুষ......

১২| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৩

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আত্মা হত্যা কাপুরূষতা । জীবনের সৌন্দর্য হতে পালিয়ে যাওয়া

১৩| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৪১

আহা রুবন বলেছেন: প্রত্যেক মানুষই সবচেয়ে বেশি ভালবাসে নিজেকে। সেই ভালবাসা যখন নষ্ট হয়ে যায়, নিজেকে যখন ঘৃণা করতে শুরু করে সেটা অবশ্যই স্বাভাবিকতার লক্ষণ নয়। আমরা এই মানসিক রোগিদের প্রতি সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে তাচ্ছিল্য প্রদর্শন করি। এক সময় তার পালিয়ে বাঁচে।

১৪| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৫৬

উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: এই পোস্টকে স্টিকি করার দাবী জানাইলাম বর্তমান প্রেক্ষাপটে

১৫| ১৫ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: আসলে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতাটা দিন দিন অনেক বেশী ফিকে হয়ে যাচ্ছে। এই সমাজে কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। চারিদকে সব প্রতারক, ঠগ, বাটপার, ভন্ড। অদ্ভুত মুখোশে ঢাকা। সমস্ত শহর খুজে একজন সহজ সরল ভালো মানুষ পাওয়া যাবে না। তাই তো, নিজের কষ্ট বা ব্যর্থতা ঢাকার কি আপ্রাণ প্রয়াস আমাদের চারিদিকে।

১৬| ১৬ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৪২

মানতাশা বলেছেন: @রাজীব নূরের হাত চলছে তাহলে।

১৭| ১৬ ই জুন, ২০২০ রাত ৩:৫৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: কোনে ব্যাক্তির জীবন তার নিজের চেয়ে অন্যের কাছে বেশী প্রিয় না।
কেউ যদি নিরাময় অযোগ্য শারীরিক বা মানসিক সমস্যার কারণে না থাকতে চায়,সেই সিদ্ধান্ত তার নিজস্ব অধিকার।

এজন্য সুইজারল্যান্ডসহ অনেক দেশে চিকিৎসকদের সহায়তায় স্বেচ্ছামৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে, যাতে কেউ নিজে সেটা করতে গিয়ে আরো বেশী বিপদে না পড়ে।
এটা অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত।এটা নিয়ে সমালোচনা করাই অন্যায়।Euthanasia and assisted suicide laws around the world

১৮| ১৬ ই জুন, ২০২০ বিকাল ৪:৪১

মিরোরডডল বলেছেন: মূল বক্তব্যের সাথে একমত । কোন মানুষ সুস্থ অবস্থায় আত্মহত্যা করতে পারেনা । হয় সে একটা মানসিক ব্যাধির মধ্যে দিয়ে গেছে । কাছের মানুষ পরিবার পরিজনের কাছে সেটা অজানা ছিল । অথবা একজন পুরোপুরি সুস্থ মানুষও সামিয়িক ভাবে মানসিক চাপ কন্ট্রোল করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে পারে ।

যে দুটো স্টেজের কথা বলেছেন, সেরকম দুটো ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা হয়েছে ।

খুবই অল্প বয়সী একটি ছেলে ১৯/২০ বছর হবে । শান্ত ভদ্র নম্র মেধাবী , সুখী পরিবার, তার জীবনও স্বাভাবিক বলেই সবাই জানে । সেই ছেলেটি তার পরিবারের উপস্থিতিতেই কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই ট্রেনের নীচে ঝাঁপ দেয় । সেই শক পরিবার এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি । কারণটি এখনও অজানা । এরকম কেইস কন্ট্রোল করা ডিফিকাল্ট । এক্ষেত্রে ভিকটিম নিজে ছাড়া তাকে কেউ সাহায্য করতে পারবেনা যদি না সে শেয়ার করে তার প্রবলেম ।

সেকেন্ড স্টেজ যেটা, মানসিক ব্যাধি এটার প্রপার চিকিৎসা করা দরকার । যদিও ট্রিটমেন্ট সব সময় কাজ হয়না । এই কেইসে যার কথা বলছি একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে । এটা এখন শুধু তার একার না তার পরিবার এবং কাছের মানুষ সবার জন্য একটা মানসিক চাপ । অনেকটা ড্রাগ এডিক্টেডের মতন । প্রতিবার রিহ্যাবে থেকে বের হয়ে আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যায় । নট ইজি টু রিকভার । তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে ।

অনেক কারনের একটা মূল কারণ একজন মানুষ যখন নানারকম মানসিক ক্রাইসিসের পর একসময় মনে করতে শুরু করে তার জীবন থাকা না থাকায় কারও কিছু যায় আসে না, তাকে কারও দরকার নেই, জীবনের প্রতি আর কোন আকর্ষণ বোধ করেনা অথবা ভালোবাসা আনন্দ এই অনুভূতি আর কাজ করেনা, তখন এরকম একটা সিদ্ধান্ত নেয় বুঝে না বুঝে ।

আর ঠিক সেই কারনেই তাদেরও যেমন উচিৎ প্রবলেম চেপে না রেখে কাছের মানুষের সাথে শেয়ার করা, একইভাবে আমাদের সবারও উচিৎ কাছের বা প্রিয়জন যে এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাকে সময় দেয়া , প্রবলেম শোনা , ভুল ভাঙ্গিয়ে দিয়ে তাকে বোঝানো যে জীবনটা শুধু তার একার না, এই জীবনের সাথে অনেকগুলো মানুষ সম্পৃক্ত । তার থাকা না থাকা আমাদের জীবনে অনেক ম্যাটার করে । অনেক সময় প্রফেশনাল ডক্টরদের চেয়েও অনেক কাজে দেয় কাছের মানুষের সংস্পর্শ আর কেয়ার ।

আত্মহত্যা কখনোই সাপোর্ট করিনা কিন্তু এটা সাপোর্ট করি যে কাছের মানুষের ভালোবাসা আর কেয়ার দিয়ে অনেককে এই পথ থেকে ফেরানো যায় ।
কমেন্ট অনেক বড় হয়ে গেলো :|

১৯| ১৬ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১৩

বিজন রয় বলেছেন: অনেক দিন পর আপনার পোস্ট!!

আপনি ভাল আছেন নিশ্চয়ই।

সময়োপযুক্ত পোস্ট। স্টিকি হতে পারতো বোধহয়।

২০| ১৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:০২

জাফরুল মবীন বলেছেন: আসসালামু আলাইকা। আত্মহত্যা বিষয়ক ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা গুরুত্বপূর্ণ এই পোস্টটির লিংক আত্মহত্যা বিষয়ক স্টিকি পোস্টে সংযুক্ত করলে সেটা পাঠকদের জন্য উপকারি হবে বিবেচনায় আপনার কাছে এ সংক্রান্ত অনুমতি প্রার্থনা করছি।ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.